দুর্গাপুরে রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে কাকৈরগড়া ইউনিয়নের এলজিএসপি-৩ রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঐ ইউনিয়নের পূর্ব বিলাশপুর গ্রামের জামে মসজিদ সংলগ্ন নির্মিত রাস্তার কাজ শেষ করা হয়েছে।
রাস্তার দৈর্ঘ্য ৫৭ মি. প্রস্থ ২ দশমিক ২৮০ মি.। এই কাজে এলজিএসপি-৩(লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট) প্রকল্পের অর্থায়নে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঐ রাস্তাটি সম্পন্ন করার প্রকল্প কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সংশ্লিস্ট ইউপি মেম্বার মো.শফিকুল ইসলাম। বরাদ্দ অনুসারে কাজে উন্নতমানের সামগ্রি ব্যবহার করার কথা থাকলেও চিত্র দেখা গেছে ভিন্ন। বক্স কাটা মাটি আর নিম্ন মানের বালু মিশ্রিত করে ঐ রাস্তাটি নির্মিত হচ্ছে। বক্স কাটার পরে বালু ফিলিং না করেই কোথাও ৬ ইঞ্চি, কোথাও ৭ইঞ্চি ফাঁকা করে ব্রিক ফ্লাট সলিং করা হয়েছে। মাটি আর বালু মিশিয়ে রাস্তার কাজ পুরোটাই নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
কাকৈরগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর নুর মোহাম্মদ এইচবিবি’র রাস্তার কাজটি বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও প্রকল্প কমিটির সভাপতি শফিক মেম্বার নানা অনিয়মের মধ্য তড়িগড়ি করে কাজ শেষ করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিয়ম খবর আপনার মাধ্যমেই জানলাম। আমরা এসব কাজ করার পর অর্থ বরাদ্দ পাই। তবে আমি ঐ প্রকল্পের কাজটি পরিদর্শন করেছি। অনেকটা কাজ পুনরায় করেছি। আর ভুল ক্রুটি তো থাকতেই পারে। এ বিষয়টি পত্রিকায় না লিখলেও তো পারো। বর্তমান সরকার যেখানে গ্রামে শহরের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে বদ্ধ পরিকর সেখানে গ্রামীণ হেরিং বন্ড রাস্তার কাজে অনিয়মে হতাশ গ্রামবাসীরা। স্থানীয় প্রাক্তন ইউপি মেম্বার আলকাছ উদ্দিন অনিয়ম প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান মেম্বার শফিক নি¤œমানের সামগ্রি, চার লড়ি বালু, ৬/৭ ইঞ্চি দূরত্ব পরপর ইট বসিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় নব্বই ফুট রাস্তা ৭ফুট প্রস্থ করে নির্মাণ করে ফেলার পর সংশ্লিদের কাজের ইস্টিমেট চাইলে পরে ঐ নির্মিত রাস্তার উত্তর পাশ দিয়ে আরও ১ ফুট রাস্তা বৃদ্ধি করে। এসকল অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি ও স্থানীয় জনতাদের নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে পুণরায় কাজ নির্মাণের দাবীও জানান তারা। প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম ঐ এইচবিবি রাস্তার অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ রাস্তার বরাদ্দ অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। ব্রিক ফ্লাট সলিং বসানোর কাজটি পাতলা করে হয়তো মিস্ত্রি বসিয়েছে। এ বিষয়টি আমি দেখছি তবে এ ছাড়া আর কোন অনিয়ম আছে বলে আমি মনে করিনা। উপজেলা সাব-এ্যাসিসটেন্ড প্রকৌশলী মো.সারওয়ার প্রতিবেদককে বলেন, আমি শুধু মাত্র ইস্টিমেইট করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। কোন অনিয়মের ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই আমি সরেজমিনে যাবো।
এলজিএসপি’র জেলা ফ্যাসিলেটর মো. মাসুদ কবির এ প্রতিবেদককে জানান, দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দের কাজটি কোটেশন আকারে ঠিকাদারের মাধ্যমে করানো হয়ে থাকে। দশ লাখ থেকে শুরুকরে কাজ গুলি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে করানো হয়, পদাধীকার বলে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার এ কাজটি দেখভালের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ কাজে কোন ধরণের অনিয়মের সুযোগ নেই। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক বিল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রাপ্য অনুযায়ী বিল দেওয়া হবে। কতটুকু কাজ করা হয়েছে, তার মান নিয়ে উপজেলা সাব-প্রকৌশলী প্রত্যয়ন দিলেও রাস্তার কাজ দেখে বিল দেয়া হয় বলেও তিনি জানান। মেম্বার শফিকুল ইসলাম জানান কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল তা পরে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান এ প্রতিবেদককে জানান, রাস্তার কাজে কোন অনিয়ম কিংবা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হলে এবং এর প্রমান মিললে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।

Print

সম্পর্কিত পোস্ট

''আপনার মতামত দিন''

ডিএনবি নিউজ ২৪.কম