ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:
বিগত ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহীদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মার্চে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শহীদ ১৯ জনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মোট ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
প্রধান অতিথি আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের আন্দোলনেই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেদিন সরকার নিরপরাধ ও নিরীহ হেফাজত কর্মীদের হত্যা করে ভেবেছিল, দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণমানুষের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে হত্যা করা যাবে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করে, জুলুম ও নির্যাতন কখনো স্থায়ী হয় না।
উপদেষ্টা বলেন, হেফাজত ইসলামের সেই আন্দোলনের সূত্র থেকেই ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের জন্ম। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিবাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ২০১৩ সালে নবম শ্রেণিতে পড়তাম। টেলিভিশনে দেখেছি লাখো জনতা কিভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেদিনের প্রকৃত তথ্য জাতিকে জানানো হয়নি।
তিনি আরও জানান, হেফাজত ইসলামের শহীদদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ শাপলা চত্বরে তৈরি করা হবে। এতে এই আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা যোগাবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল জুলুম-নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন দমন করা যাবে।
ওই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের একটি তালিকা প্রস্তুত করার হেফাজত ইসলামের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেদিন শাপলা চত্বরে সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। প্রায় দেড় লক্ষ গুলি খরচ করা হয়েছিল। তারপরও ইতিহাস থেকে সেই ঘটনা মুছে ফেলা যায়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী।
আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামাত ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, খেলাফতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর প্রমুখ।
শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।