সন্ত্রাসী ইসরায়েলের ১৩৬ ট্যাংক ধ্বংস, ১০০০ সেনা নিহত

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

গত ২৭ অক্টোবর রবিবার সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় বিভিন্ন অঞ্চলে দখলদার ইসরায়েল সেনারা স্থল অভিযান শুরু করে৷
হামাস সেনারা ও তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তুলে৷ আকাশ পথে বিমান হামলা করে ঘর বাড়ি ধ্বসিয়ে দিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করে হামাসকে নির্মূল করতে তারা যতটা সহজ ভেবেছিল, আসলে অতটা সহজ নয়৷ হামাস যোদ্ধাদের শক্ত প্রতিরোধ এবং ফাঁদে পড়ে দখলদার সেনারা এখন বিপর্যস্ত৷

প্রতিদিনই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির শিকার হচ্ছে৷ যদিও তারা হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ ইসরায়েলের অফিসিয়াল হিসেবে স্থলঅভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নিহত সেনার সংশ্যা ৩৪, ৭ ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহত সেনার সংখ্যা ৩৫০, সাজোয়া যান ও ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে ৩৬টি৷ কিন্ত গতকাল (৮/১১/২৩ বুধবার) আলজাজিরা ও স্টেপ নিউজ এজেন্সীর প্রতিবেদন উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷

প্রতিবেদনটির তথ্যানুযায়ী স্থলঅভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ৮/১১/২৩ পর্যন্ত ১৩৬ টি সামরিক যান ধ্বংস করেছে হামাস সেনারা৷ ৭অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার দখলদার ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে৷ সামরিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের থ্যানুযায়ী প্রতিটি ট্যাংকে ৩/৪ করে সেনা থাকে, সাজোয়া যানে থাকে অন্তত ১০/১৫ জন করে৷ সে হিসেবে হতাহতের সংখ্যা হিসেব করলে আরো বেশি হয়৷

মারকাভা ব্যাটেল ট্যাংক ইসরাইলের স্টান্ডার্ড ব্যাটেল ট্যাংক।এবং এটাকে ইসরাইলের সমর সক্ষমতার বা দম্ভের প্রতীক হিসাবে গন্য করা হয় ।১৯৮০ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে প্রায় ২২ বছর এই ট্যাংক ছিলো অজেয়। কিন্ত হামাস যোদ্ধাদের রকেট ও মর্টার শেলের আঘাতে তা এমনভাবে ধ্বংস হচ্ছে যা রিতীমত দখলদারদের অবাক করে দিয়েছে৷ সামরিক বিশ্লেষকরা ও ভেবে পাচ্ছেনা যে এটা কী করে সম্ভব? তবে কি আল্লাহ হামাস মুজাহীদদেরকে সাহায্য করছেন? এমনই তথ্য ওঠে এসেছে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ এবং সাংবাদিক ও খোদ ইহুদী কমাণ্ডারদের বক্তব্য থেকে৷ তাদের দাবী, যখনি ইসরায়েল সেনারা গাযায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে তখনি কোথা থেকে হঠাৎ যোদ্ধারা বের হয়ে ট্যাংক গুড়িয়ে দিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে৷ তারা শুধু তাদের ছায়া ই দেখতে পাচ্ছে৷

গতকাল আলজাজিরা তার ইউটিউব চ্যানেলে ইজ্জুদ্দী আল-কাসাম ব্রিগেডের সামরিক মুখপাত্র, “আবু উবাইদা”র একটি ১০মিঃ ভিডিও বার্তা শেয়ার করে৷ তিনি বলেন,
আলহামমদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমত এবং তাঁর সাহায্য আমাদের মুজাহিদরা দখলদারদের ১৩৬ টি যুদ্ধযান পুরোপুরি বা অনেকাংশে ধ্বংসে করেছে৷ প্রচুর সংখ্যক দখলদার সেনাকে হত্যা করেছে৷

আমাদের মুজাহিদরা বিরত্বের সাথে গাজার উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণে সমস্ত স্থল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মোকাবিলা করতে থাকবে। ফাঁদে ফেলে তারা জিরো পয়েন্ট দুরত্ব থেকে ট্যাংক ধ্বংস করছে৷ মর্টার শেল ও রকেটের আঘাতে বিল্ডিং ও দেয়ালের পাশে লুকিয়ে থাকা সৈন্যদেরকে হত্যা করছে৷ আমাদের মুজাহিদরা শত্রুদের সম্মুখ ও পিছন দিক থেকে আক্রমণ করে বিপর্যস্ত করে তুলছে৷

তিনি আরো বলেন, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ৩৩ দিন পরেও আল-কাসাম মুজাহিদরা এখনও মোকাবিলা করতে সক্ষম৷ আমাদের মুজাহীদরা দখলদারদের আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য ময়দানে প্রদর্শন বীরত্ব প্রদর্শন করেছে তা প্রত্যেক আরব মুসলিম এবং পৃথিবীর সকল স্বাধীন মুসলিমদের জন্য গর্ব৷

তিনি প্রতিরোধের জন্য বিশ্বমুসলিমদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা পশ্চিম তীর, গাজা এবং জেরুজালেমে এবং সমস্ত ফ্রন্ট এবং অঙ্গনে দখলদারদের প্রতি আমাদের ক্রোধ প্রতিরোধের আসন্ন নতুন কিছু ঘটার ঘোষণা করছি।”

সরকারী হিসাব মতে ৭ অক্টোবর থেকে নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫৩৮ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে এবং ৫৪৩১জন আহত হয়েছে। বন্দি হয়েছে ২৪২ জনেরও বেশি৷ এই বন্দিদের বিনিময়ে হামাস যোদ্ধারা দখলদারদের কাছে বন্দী থাকা শিশু ও মহিলা সহ ৬০০০ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময় করতে চায়।

যুদ্ধের ৩৩তম দিনেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় গণহত্যা এবং ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ চালাচ্ছে, যাতে যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪২৩৭ জন শিশু এবং ২৭১৯ জন মহিলা সহ ১০৩২৮ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং প্রায় ২৬০০০আহত হয়েছে।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১৬৩ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ২২১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা

Print

সম্পর্কিত পোস্ট

''আপনার মতামত দিন''

ডিএনবি নিউজ ২৪.কম