ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ
বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঘরে তোলা ভেজা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কৃষকরা। টানা বৃষ্টিতে বাড়িতে ওঠানো ভেজা ধান নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছেন তারা। এর ফলে ধান শুকাতে না পেরে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন পার করছেন চাষিরা। উপজেলার প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ভেজা ধান নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। দিনের বেশির ভাগ সময় বৃষ্টি হওয়াতে বিপাকে পড়েছেন ধান নিয়ে । অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্ন এলাকার প্রায় প্লাবিত হতে চলছে। মানুষের ধান শুকানোর মাটে পানি,ক্ষেত থেকে ধান কেটে আনতে পারলেও অনেকেই শুকাতে না পেরে ধান কেটে বাড়িতে এনে কেউ কেউ স্তুপ করে রেখেছেন। বৃষ্টির কারণে মাড়াই করে নিতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ মাড়াই করে নিতে পারলেও সেই ধান শুকাতে পারছেন না। ধান পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে ঘরের ভেতরে সিলিং ফ্যানের বাতাসে ধান শুকাচ্ছেন। অপরদিকে যেসব জমির ধান এখনও কাটা হয়নি সেসব ক্ষেতের ধান পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এছাড়াও বাড়িতে স্তুপ করে রাখা ধানে চারা গজাতে শুরু করেছে। সবমিলিয়ে ধান নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে চাষিদের।
জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সবগুলো ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ধান নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। টানা বৃষ্টিতে ধান শুকাতে না ফেরে অনেক ধান নষ্ট হতে চলছে এছাড়াও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের প্রায় এলাকার মাঠ-ক্ষেতে পানিতে পুরপুরি ভরপুর। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন অঞ্চল গুলোতে খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কারণে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতে মানবেতর জীবন যাপন করছে এসব এলাকার মানুষ। অনেকেই ভেজা ধান শুকাতে পারছেন না। ফলে কৃষকদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
উপজেলার গাওকান্দিয়া গ্রামের কৃষক মাওলানা মনজুরুল হক বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে ধান শোকাতে পারতেছি না, সারাদিনই বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি যেনো থামছেই না, আমার প্রায় একশ মণ ধান নষ্ট হতে চলছে, অনেক ধান পঁচে গিয়েছে গরুকে খাওতে হয়েছে, কষ্টের ফসল এইভাবেই নষ্ট হয়ে গেলো, আগেভাগে কেটে বাড়িতে তুলতে পারলেও শুকাতে পারিনি,এখন আবার পাহাড়ি ঢলে বাড়িতে পানি উঠতে বসেছে বাকিসব ধান গুলোর কি হবে আল্লাহ জানে, শুধু আমার না এলাকার অনেকেরই এমন দূর্দশা।
অপর এক কৃষক বলেন, আমরা ধান নিয়ে এমন বিপাকে পড়েছি। কোথাও শুকানোর মতো জায়গা পাচ্ছি না। মাড়াই করে রোদ না থাকায় ধানগুলো শুকাতে পারছি না। যার ফলে আমাদের গ্রামের সকল কৃষক আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছি।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, টানা বৃষ্টিতে ঘরে তুলা ভেজা ধান শুকাতে পারেনি কৃষকরা ,আগেভাগে ধান কেটে ফেলতে পারলেও বৃষ্টির জন্য ভেজা ধান শুকাতে না পেরে নষ্ট হচ্ছে। প্রতিনিয়তই আমরা কৃষকদের অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি।