ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরশহরের ৮নং ওয়ার্ডের খুজিউড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রী নুর জামাল এখন মৃত্যুর মুখোমুখি। সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে নানা সমস্যায় ভোগছেন। তিনি ১ম স্ট্রোক করেন ২০১৮ সালে, তখন হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। ওইসময় টাকার অভাবে চিকিৎসা না করিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তিনি।
পরবর্তিতে চলতি বছরের জুন মাসে পুনরায় স্ট্রোক করলে হার্টে ৪টি ব্লক ধরা পরে। নানাবিধ সমস্যা নিয়ে আজ মৃত্যুর প্রহর গুনছে নুর জামাল। চিকিৎসা করাতে করাতে পরিবারটি এখন সর্বশান্ত হয়ে মানবতের জীবন কাটাচ্ছে। মেধাবী তিন মেয়ে ও এক ছেলের পড়াশোনাও এখন স্থবির হয়ে আছে। টাকার জন্য মাস্টার্স শেষ বর্ষে ভর্তি করাতে পারছেনা না বড় মেয়েকে। ডাক্তার বলেছেন হার্টে রিং পড়াতে হবে। চিকিৎসার খরচে সহায়তা করতে দেশবাসীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন নুর জামাল এর পরিবার।
এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে যখন পুনরায় স্ট্রোক করেন, তখন প্রথমেই ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ডফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয় নুর জামাল কে। অসহায় নুর জামালের আর্থিক না সঙ্গতি থাকায় পুনরায় তাকে ফিরে আসতে হয় বাড়িতে। ডাক্তার বলেছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাইপাস অথবা রিং পড়াতে না পাড়লে পরবর্তিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বড় মেয়ে এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ পেয়েছে। পরবর্তিতে অনার্সে ফাস্টক্লাশ পেয়েও টাকার অভাবে মাস্টার্সে ভর্তি হতে পারছেনা। এক মেয়ে ৯ম শ্রেনীতে রোল এক, আরেক মেয়ে ৭ম শ্রেনীতে রোল এক, ছেলে ৩য় শ্রেনীতে তার রোলও এক। মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়া সত্বেও স্কুলের ক্রুটির কারণে মিলছে উপবৃত্তি। ভালো জামা-কাপড় কি তাও তারা জানে না। কোন রকেমে খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের সংসার।
নুর জামালের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না তার। গত ৬ বছর ধরে বুকের তীব্র ব্যথা-যন্ত্রণা নিয়ে এ বাড়ি-ও বাড়িতে কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করে গেছে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা চালানোর জন্য। তীব্র ব্যাথা থাকলেও কাউকে বুঝতে দেয়নি নুর জামাল। নীরবে চোখের পানি ফেলে রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন। মাঝে-মধ্যে তীব্র ব্যাথা উঠলে স্থানীয় হাসপাতালে ডাক্তারের সাথে কথা বলে একটু আদটু ঔষধ খেয়ে গেছে। তীব্র ব্যাথায় স্বাভাবিক চলাফেরাও করা ছিলো কষ্টকর। চিকিৎসকদের মতে, প্রায় ৪লক্ষ টাকা লাগবে বাইপাস অথবা রিং পড়াতে। নয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিভে যাবে নুর জামালের জীবন প্রদীপ।
নুর জামালের অনার্স পড়–য়া মেয়ে অশ্রুভেজা চোখে বলেন, আমার বাবা ছাড়া আমাদের সংসারে হাল ধরার মতো কেউ নেই। গত প্রায় দুই মাস ধরে হার্টের চিকিৎসা করাতে করাতে আমরা নিঃস্ব। ডাক্তার জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে যদি বাইপাস বা হার্টে রিং না পড়ানো হয়, তাহলে বাবাকে বাঁচানো যাবে না। যার বাবা নাই একমাত্র সে জানে বাবা হারানোর ব্যাথা কি। বাবার অপারেশন করাতে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
অসুস্থ্য নুর জামাল বলেন, কিভাবে যে কি হলো আমি জানি না। আমার মতো গরীব মানুষের শরীরে এতা বড় রোগ হানা দিবে বুঝতে পারিনি। শরীরের চিকিৎসা করতে গিয়ে সহায় সম্বল যা ছিলো সব বিক্রি করেছি। এখন আমি সম্পুর্ন নিরুপায়। হার্ডের সমস্যার চিকিৎসা করাতে গিয়ে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনাও করাতে পারছি না। আমি দেশের বৃত্তবানদের কাছে আমার চিকিৎসার জন্য সহযোগীতা চাই। সহযোগীতার জন্য আমার মুঠোফোনে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। ০১৭৩৬৩৫৩৭২ (নুর জামাল)।