পরোক্ষ আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের প্রথম গোল: আরব বিশ্লেষক

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আরব বিশ্বের একজন সিনিয়র বিশ্লেষক ওমানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চলমান পরোক্ষ আলোচনার জন্য তেহরানের অনড় অবস্থানকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের প্রথম গোল বলে মনে করছেন।

আরব বিশ্বের সিনিয়র বিশ্লেষক আব্দুল বারি আতওয়ান শনিবার রাই আল-ইয়াওম ওয়েবসাইটে লেখা এক নিবন্ধে ওই মন্তব্য করেন। ওমানে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত নিবন্ধে তিনি আরও লিখেছেন: ওমানের রাজধানী মাস্কাটে শনিবার শুরু হওয়া ‘ইচ্ছার যুদ্ধ’ খেলায় ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি বড় গোল করতে সফল হয়েছে।

পার্সটুডে আরও জানায় আতওয়ান আরও বলেছেন: আলোচনার ‘পরোক্ষ’ প্রকৃতির ওপর জোর দিয়েই ওই সাফল্য অর্জিত হয়েছে। পরোক্ষ আলোচনার বিষয়টি আমেরিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেছে, তারা ‘সরাসরি’ আলোচনা করতে চেয়েছিল। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। এটা এমন একটি বিবৃতি ছিল যা নেতানিয়াহুকে অবাক করেছে এমনকি হতবাকও করেছে।

আরব এই বিশ্লেষক বলেছেন: ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বে আমেরিকার প্রতিনিধিদল দুর্বল এবং ভঙ্গুর এক অবস্থানে থেকে এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে। বিশেষ করে বিশ্বের ২০০ টিরও বেশি দেশ ও প্রতিষ্ঠানের ওপর শুল্ক আরোপে মার্কিন নীতির ব্যর্থতার পর-যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং এমনকি বিশেষ করে ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান) তাদের মিত্ররাও নতুন শত্রুতে পরিণত হয়েছে।

আতওয়ান আরও বলেন: ইরানিরা অভিজ্ঞ কূটনীতিক আব্বাস আরাকচির নেতৃত্বে ওই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। আরাকচি, যিনি ২০১৫ সালেও ৫+১ গ্রুপের সাথে পরমাণু চুক্তির আলোচনায় অভিজ্ঞতা এবং আলোচনার কৌশলে দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের নীতির কাছে নতি স্বীকার করেন নি তারা। উল্টো বরং তাদের সমস্ত শর্ত আমেরিকার ওপর চাপিয়ে দিতে সফল হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখা এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ড্রোন, কিংবা গাজা, লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সাথে সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো উত্থাপন না করা ইত্যাদি। শেষ পর্যন্ত আমেরিকা ইরানের শর্তগুলো মেনে নিয়েই আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়েছে।

আরব বিশ্বের এই অভিজ্ঞ বিশ্লেষক সর্বাত্মক সামরিক হামলার হুমকি থেকে ট্রাম্পের সরে আসার কারণ হিসেবে আমেরিকার সাথে লড়াইয়ে ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার নেতৃত্বে ইরানের দৃঢ় অবস্থানকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন: ইরানিরা ট্রাম্পকে বিশ্বাস করে না। কারণ তিনি ২০১৮ সালে একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ইরানিরা খুব ভালো করেই জানে যে ট্রাম্প ইসরা‌ইল সরকারের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে।

আতওয়ান আরও বলেন: ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতিত্বের প্রথম মাসগুলোতে আমেরিকা বিশ্ব মঞ্চে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছিল। বলা বাহুল্য যে ইরান এবং তার মিত্ররা এখন ওই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পেরে খুশি এবং আনন্দিত। প্রবাদে যেমনটি বলা হয়েছে: শেষ হাসি হাসে যে, সে সবচেয়ে ভালো হাসে…। ভবিষ্যৎই বলে দেবে এই যুদ্ধে আসল বিজয়ী কে।# পার্সটুডে

Print

সম্পর্কিত পোস্ট

''আপনার মতামত দিন''

ডিএনবি নিউজ ২৪.কম