সারা দেশে স্বতস্ফূর্তভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা শান্তিপূর্ণ হরতালে সাড়া দেয়ায় দেশের জনগণ ও আলেম-ওলামাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন হেফাজতের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, শুক্রবার আমাদের হাটহাজারী মাদ্রাসার শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী বিশেষ করে হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম গুলি করে ৭ জনকে নিহত করেছে। শহীদ করেছে। আরো অনেক আহত। একজন টেইলার। নিরীহ মানুষ। তাকেও নিহত করেছে। আরো শহীদ হয়েছে সারা দেশে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও হাটহাজারীসহ আমরা মোট ১৬ জনের নিহতের খবর পেয়েছি। এটা কোনো মামুলি কথা নয়। এর প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সারা দেশে হরতালের ডাক দেয়া হয়।
আলহামুদিল্লাহ আমাদের হরতাল সুশৃঙ্খল ছিল। শান্তিপূর্ণ ছিল। সফল ছিল। স্বতস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন হচ্ছে।
কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় সরকারের পেটোয়া বাহিনী এবং দলীয় ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে। হামলা করেছে। আক্রমণ করেছে। আহত-নিহত করেছে। আমাদের হেফাজতের নায়েবে আমীর, আল্লাহর অলি মধুপুরের পীর আল্লামা আব্দুল হামিদ সাহেবের উপর হামলা করেছে।
এই ১৬ জন নিহত হওয়া ছাড়াও আরো অনেক আহত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এ হামলা যেন বন্ধ করে। যারা নিহত হয়েছে তাদের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারের। যারা আহত হয়েছে তাদের ভালো চিকিৎসা চালানোর জন্য যে টাকা-পয়সা দরকার সেটা সরকারের পক্ষ থেকে দিতে হবে।
যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিভিন্ন মাদরাসায় হামলা করেছে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইউনুছিয়া, দারুল আরকাম, রাজধানীর ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও সাইনবোর্ড মাদরাসায় হামলা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী।
এগুলো যেন অবিলম্বে বন্ধ করে। আর যদি এভাবে হামলা চলতে থাকে, এবং আমাদের নেতাকর্মীদের যদি আহত করা হয়, নিহত আহত করা হয়, হেফাজতের দাবি দাওয়া যদি দাবী পূরণ করা না হয়, তাহলে পরামর্শ সাপেক্ষে হেফাজতের পক্ষ থেকে কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে।
এই হরতাল পালনে সারা দেশের জনগণ ও আলেম-ওলামারা সাড়া দিয়েছে। এইজন্য আমি তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। এ সময় পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
এরপর উপস্থিত সকলকে নিয়ে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন হেফাজতের এই আমীর।