ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ
এবার বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ হবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন হজে যেতে পারবেন।
হাবের সভাপতি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য ‘সাধারণ প্যাকেজ’ নামে একটি প্যাকেজ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক এজেন্সি নিজ নিজ স্পেশাল প্যাকেজ করতে পারবে। তবে কোনো প্যাকেজই হাব ঘোষিত সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য থেকে কম হবে না। হজযাত্রীদের প্যাকেজের পুরো টাকা আগামী ১৮ মে’র মধ্যে নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করার অনুরোধ জানিয়ে শাহাদাত হোসাইন বলেন, কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর হাতে টাকা দিয়ে প্রতারিত হবেন না। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পরিশোধ করতে হবে। তিনি বলেন, সাধারণ প্যাকেজের হজযাত্রীদের পবিত্র হারাম শরীফের বাইরের চত্বরের সীমানার এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ মিটার দূরত্বে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সৌদি আরব প্রান্তের অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জের তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি জানিয়ে তসলিম বলেন, প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার অতিরিক্ত কোনো ফি আরোপ করলে তা প্যাকেজের মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং তা হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। শাহাদাত হোসাইন আরও বলেন, কোরবানি খরচ বাবদ প্রত্যেক হজযাত্রীকে ৮১০ সৌদি রিয়ালের সম পরিমাণ টাকা আলাদাভাবে নিজ দায়িত্বে সঙ্গে নিতে হবে।
হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে হাব সভাপতি বলেন, বাড়ি ভাড়া, সৌদি আরবের সার্ভিস চার্জ, ভ্যাট, মুদ্রার রেট অব এক্সচেঞ্জ এবং বিমান ভাড়া বাড়ানোর জন্য হজের খরচ বেড়ে গেছে। ডেডিকেটেড ফ্লাইটে হজযাত্রীদের পরিবহনের জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ডেডিকেটেড ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহন করা না গেলে ঢাকায় হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন করা সম্ভব নয়। প্যাকেজের মূল্য পরিশোধের পর হজযাত্রীদের নিবন্ধন, আন্তঃএজেন্সি সমন্বয়, মোনাজ্জেম নির্ধারণ, ভিসা- এসব কাজ এখনো বাকি আছে। ৩১ মে হজ ফ্লাইট দিলে ঝুঁকি হয়ে যাবে। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা আগামী ১০ জুন থেকে হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এর আগে গত বুধবার সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় সরকারিভাবে দুটি ও বেসরকারিভাবে হজ পালনের ক্ষেত্রে একটি প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকের হজ প্যাকেজ সম্পর্কে ব্রিফ করেন। সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ এবং প্যাকেজ-২ এ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩০ টাকা। প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে এক লাখ ২ হাজার ৩৪০ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ১ লাখ ২ হাজার ১৫০ টাকা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৌদি সরকারের বিধিনিষেধের মুখে গত দুই বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীরা হজ পালন করতে পারেননি। সবশেষ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন হজযাত্রীরা। ২০২০ সালে প্যাকেজ ঘোষণা হলেও বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি। তখন হজ পালনে প্যাকেজ-১ এ ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ খরচ ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্যাকেজ-৩ এর খরচ ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন হজ প্যাকেজগুলো বেসরকারি হজযাত্রীদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল।