ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :
প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার ফুলমিয়া নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে । এ নিয়ে একাধিক সালিশ করেও কোনা প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা।
এ ছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে ইতিমধ্যে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশে পঞ্চায়েত নামা করেও তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করা যায়নি। ফুলমিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের এরুয়াখাই গ্রামের মৃত ছায়েদ মিয়ার পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফুলমিয়া গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে আসছে। তার এসব প্রতারণায় অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষসহ এলাকার আলেম ওলামারাও।
একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেছেন, ফুলমিয়া এক সময় দিন মজুর হিসেবে কাজ করতো। গত ৫ আগস্টের পর রাতারাতি যুবদল নেতা বনে যাওয়ার দাবি করে সে। শুরু হয় তার দৌড়ঝাঁপ। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের পোস্টার ব্যানার দিয়ে উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চকবাজারে অস্থায়ী অফিসও গড়ে তুলে। এক সময় নিজেকে ইউনিয়ন যুবদলের সেক্রেটারি দাবিসহ কখনও ঠিকাদার ও কখনও ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে এলাকার বিভ্ন্নি ব্যবসায়ী ও ইটভাটা থেকে লাখ লাখ টাকার ইট ও নির্মাণ সামগ্রী বাকীতে ক্রয় করে এবং পরবর্তীতে ওইসব টাকা পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
ফুলমিয়ার এমন অভিনব প্রতারণার শিকার হয়েছেন উপজেলার একই ইউনিয়নের এরুয়াখাই গ্রামের মাওলানা মোস্তফা কামাল। সরকার পতনের পরপরই ২০২৪ সালের ৭ই আগস্ট মাওলানা মোস্তফা কামালের কাছ থেকে ৯০ হাজার ইট ক্রয় করেন যুবদল নেতা দাবি করা ফুলমিয়া। বাকীতে নেওয়া ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার ইটের ম্যল্য থেকে এক টাকাও পরিশোধ করেনি। টাকা চাইতে গেলেই নানা প্রতারণার আশ্রয় নেয় এবং নানাভাবে প্রভাব প্রতিপত্তি দেখায়।
এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকে বসলে টাকা পরিশোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় সে। পরবর্তীতে পাওনাদাররা টাকা চাইতে গেলে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় গত ০৭ জানুয়ারি এলাকার ২৮জন মুরুব্বি ও গণ্যমান্য ব্যাক্তি একটি একটি পঞ্চায়েতনামাও প্রদান করে তার বিরুদ্ধে।
শুধু তাই নয় একই ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের নুর বানু নামের সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার ১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ফুলমিয়ার বিরুদ্ধে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী গ্রামের ইটভাটার মালিক মাহবুবুর রহমানের ৭ লাখ টাকা এবং এরুয়াখাই গ্রামের মফিজ মিয়ার ১ লাখ টাকাসহ উপজেলার অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে ১০/২০ হাজার করে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে লুপাট করারও অভিযোগ রয়েছে। জনমনে প্রশ্ন উঠছে, ফুলমিয়ার খুটির জোড় কোথায়।
উপজেলার বেঠাখাই সোনাপুর গ্রামে স্থাপিত ‘এফবিএম ব্রিকস ফিল্ডে’র ম্যানেজার শীতল কান্তি রায় জানান, ফুলমিয়ার কাছে ইটের ৭ লাখ ১৪ হাজার ৩ শ’ টাকা পাওনা আমাদের। সে দলের নাম ভাঙিয়ে এবং রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা দিচ্ছে না। এরকম আরও অনেক মানুষের লাখ লাখ টাকা সে আত্মসাৎ করে আসছে।
স্থানীয় বিএনপি ও যুবদল নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ফুল মিয়া বিএনপি বা যুবদলের কোন পদধারী নেতা নয়। তার সাথে বিএনপির আদৌ কোন সম্পর্ক নেই। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এসব প্রতারণা করছে।
জানতে চাইলে ফুল মিয়া লেনদেনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাওলানা মোস্তফা কামাল আমার কাছে ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা পাওনা ছিল, আমি তা দিয়ে দিয়েছি। এখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।