আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচী

আজ থেকে আনুষ্ঠিতভোবে দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে।

জানা যায়, রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুর জামিয়া সিদ্দীকিয়া নূরানী মহিলা মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়।

জামিয়া সিদ্দীকিয়া নূরানী মহিলা মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা রফিকুল ইসলাম  জানান, আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ থেকেই আমাদের প্রতিষ্ঠানে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ও অধিদপ্তরের করোনার টিকাবিষয়ক কমিটির সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক।

তিনি আরো জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে শুরু হওয়া এ ভ্যাকসিন কার্যক্রমে আজ প্রায় ৫৭০জন শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ বছরের উপরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও টিকা দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে সরকারের করোনা টিকা ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শামসুল হক জানান, আজ থেকে ঢাকায় ভাসমান মানুষ ও ঢাকাসহ সারা দেশে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। পরে বাদ পড়া অন্য জনগোষ্ঠীদেরও টিকা দেওয়া হবে।

এদিকে কওমি মাদরাসায় টিকা কার্যক্রমের জন্য সারাদেশে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ৬ বিভাগে ১৭৪টি মাদরাসাকে প্রাথমিকভাবে টিকা সেন্টার হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এসব কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে।

দুই মাস আগে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু করে সরকার। তখন একই বয়সী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। সরকারি হিসাবে দেশে কওমি মাদ্রাসা আছে ১৯ হাজার ১৯৯ টি। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি।

এর আগে, সারাদেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশের কওমি মাদরাসারগুলোর সর্বোচ্চ শিক্ষা অথরিটি আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ।

ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রেখে শিক্ষার সুশৃংখল পরিবেশ বজায় রাখতে প্রত্যেক জেলার সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এই টিকা প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয় বোর্ডটি।

অপরদিকে দেশে এক দিনের ব্যবধানে করোনার রোগী কমলেও মৃত্যু ও শনাক্ত হার বেড়েছে। এক দিনে শনাক্ত কমে ৮ হাজারের ঘরে এসেছে। আর মৃত্যু বেড়েছে ৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৫৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। পরীক্ষায় বিবেচনায় শনাক্ত হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর আগের দিন শুক্রবার শনাক্ত হয়েছিল ৯ হাজার ৫২ জন এবং মৃত্যু হয় ৩০ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত এক দিনে দেশে ৩৫ হাজার ৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫৮৮টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ও মৃত্যু নিয়ে দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৮৭ ও মারা গেছে ২৮ হাজার ৫৬০ জন।

Print

সম্পর্কিত পোস্ট

''আপনার মতামত দিন''

ডিএনবি নিউজ ২৪.কম