দুর্গাপুরে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় আনোয়ার হোসেন (২২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের গাঁওকান্দিয়া গ্রাম থেকে মৃতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।

ওই গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের মেঝো ছেলে আনোয়ার হোসেন দুর্গাপুর ডিগ্রী কলেজের স্মাতক (পাস) শেষ বর্ষের শিক্ষাথী এবং গত প্রায় দুই বছর যাবত মানসিক সমস্যায় ভূগছিলেন তিনি। মৃতের নিকট আত্মীয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন ওরফে মোতালেব জানান, আনোয়ার দুর্গাপুর ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রী শেষ বর্ষে শিক্ষার্থী ও প্রায় দুই বৎসর ধরে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তার। এরপর থেকে সর্বদা সে তার মা’র নজরদারীতে থাকত। আজ (বুধবার) ফজরের নামাজ মসজিদে পড়বে একথা মাকে বলে ঘর থেকে বের হয়।

আসতে দেরী দেখে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তাদের নতুন হাফ-বিল্ডিং ঘরের পশ্চিম পাশে জানালা দিয়ে দেখা যায় গলায় ওড়না প্যাঁচানো ঘরের ধরনার সাথে ঝুলে আছে আনোয়ার। পরে জানালার গ্রীল ভেঙে পরিবার ও আশপাশের লোকজন প্রবেশ করে দেখে মেঝেতে টুপি পড়ে আছে ও পাঞ্জাবীর পকেটে তজবি রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।

দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহনুর-এ আলম ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃতদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে এবং মৃতদেহ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।




দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলেন ২শ ৫০জন পরিবার

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জিআর নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের ২শ ৫০জন অসহায়, গরীব ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে এ অর্থ বিতরণ করা হয়।

দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিতরণ কার্যক্রমে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউএনও মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, ট্যাগ অফিসার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর আলম সাজু ও সকল ইউপি সদস্য বৃন্দ।

 




দুর্গাপুরে নিজ অর্থায়নে ৭ হাজার পরিবারকে ঈদ সামগ্রী বিতরন

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিজ অর্থায়নে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৭ হাজার অতিদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পৌরসভার মুজিবনগর আবাসন প্রকল্প এলাকায় এ সামগ্রী বিতরন শুরু করেন পৌর মেয়র মো. আলা উদ্দিন।

স্থানীয় আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট পৌর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়া হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে প্যানেল মেয়র মশিউজ্জামান বাদল, পৌর সচিব তৌহিদুল ইসলাম, প্রকৌশলী নওশাদ আলম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনার ইব্রাহিম খলিল টিপু, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য: পৌর মেয়র আলা উদ্দিন প্রতিবছরই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য পৌরবাসীর মাঝে নিজ অর্থায়নে ঈদ সামগ্রী বিতরন করে আসছেন।




দুর্গাপুরে চোরাইকৃত সরকারি পাথর আটক: মামলা-জরিমানা আদায়

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর বিভিন্ন বালুমহাল থেকে ¯‘প করা পাথর সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যা”েছ একটি চক্র। এমনই এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে বিরিশিরি ২নং বালু মহাল থেকে ৫টি ট্রাকসহ পাথর আটক করা হয়।

জানা গেছে, সোমেশ্বরী নদীতে পাঁচটি বালুমহাল রয়েছে। এর মধ্যে এক বছরের জন্য পাঁচটি ঘাটের শুধু বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও বালুর সঙ্গে উত্তোলিত পাথর কোনো ইজারা না দেওয়ায় সেগুলো সরকারি হাওলাতেই থেকে যায়। উত্তোলিত পাথরগুলো বছরের কোনো একসময় উপজেলা প্রশাসন সরকারিভাবে নিলামে বিক্রি করেন। ইতোমধ্যে ইজারাকৃত বালুমহাল থেকে জমাকৃত পাথরগুলো রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যা”েছ পাথরখেকো চক্র। এমনই সংবাদ যুগান্তর সহ নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হলে সক্রিয় হয়ে ওঠেন উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার গভির রাতে পাথর খেকো চক্র ৫টি ট্রাক যোগে সরকারি পাথর নি”েছ এমন সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট রুয়েল সাংমার নেতৃত্বে দুর্গাপুর থানা পুলিশের সহায়তায় পাথর গুলো জব্দ করে পরিবহন আইনে মামলা দিয়ে ৫টি গাড়ী থেকে কুড়ি হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হয়।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান এ যুগান্তর কে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিরিশিরি ব্রীজ এলাকা থেকে চোরাইকৃত পাচ গাড়ী সরকারি পাথর আটক করা হয়েছে। পরিবহন আইনে চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।




পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটেই বিপুল বিজয় মমতার

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মুসলিম ভোটার ঐক্যবদ্ধ হয়ে মমতার দল তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। আর মূলত তাদের ভোটের মমতা এই ঐতিহাসিক বিজয়।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নির্বাচনে মুসলিম ভোটই মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার আসনগুলোর মধ্যে ৬৩টি আসনে মুসলিমরা প্রাধান্যপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি আসনে এবার নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থদের মৃত্যুর কারণে দুটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এই ৬১টি আসনের মধ্যে মমতার তৃণমূল পেয়েছে ৫৮টি আসন, বিজেপি দুটি, সংযুক্ত মোর্চা একটি। মুসলিম মিরর পত্রিকায় এ পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। মুসলিম প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর বেশির ভাগই চারটি জেলায়- মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগানা। মুর্শিদাবাদে রয়েছে ১৬টি আসন। বাকি তিনটি জেলার প্রত্যেকটিতে আছে ৯টি করে আসন। মজার ব্যাপার হলো, মুসলিম প্রাধান্যপূর্ণ ৬১টি আসনের মধ্যে যে ৫৮টি তৃণমূল জিতেছে, তার মধ্যে ৩০টিতে তারা জয় পেয়েছে ৪০ হাজার বা তার চেয়ে বেশি ভোটে। আবার মালদার সুজাপুরের এস কে জিয়াউদ্দিন, ফারাক্কার মনিরুল ইসলাম, ভাঙ্গাবনগোলার ইদ্রিস আলীর মতো প্রার্থীরা ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন।

বিজেপি মুসলিম প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছে। এ দুটির একটি হলো উত্তর দিনাজপুর, অপরটি হলো মুর্শিদাবাদে। আর সংযুক্ত মোর্চার সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট জিতেছে একটি আসনে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মুসলিম ভোট ব্যাংক সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুসলিমদের ভোটের ওপর ভর করেই বাম ফ্রন্ট ৩৪ বছর রাজত্ব করে পশ্চিমবঙ্গ। পরে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম বিক্ষোভের জের ধরে মুসলিমরা বাম ফ্রন্ট ত্যাগ করে তৃণমূলে ভোট দিতে থাকে। অন্যদিকে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জির পাশেই থেকেছেন রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটাররা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওই ভোটাররাই হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের পর পর তিনবার সরকার গড়ার অন্যতম কারিগর। তবে যে যে কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম, সেখানে তৃণমূলের থেকে অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও, চমকপ্রদভাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি।

নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সংখ্যালঘু প্রভাবিত কেন্দ্রগুলো নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এক নজরে তা দেখে নেওয়া যাক। রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭৪টিতে সংখ্যালঘু ভোটার ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। ওই সব কেন্দ্রের বেশির ভাগেই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। জোড়াফুল শিবির ওই ৭৪টি আসনের মধ্যে ৬৯টি দখল করেছে। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২টি আসন। ভাঙড় আসনটি পেয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। অবশ্য মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জ আসনে ভোট এখনও বাকি রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গড় মুর্শিদাবাদে ধস নেমেছে হাতশিবিরের। সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণে ওই জেলার একাধিক কেন্দ্র দখল নিজের ঝুলিতে পুরেছে তৃণমূল। মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র।

রাজ্যের মোট ৫৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট ২৫ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে। ওই ৫৭টি আসনের মধ্যে ৪৬টি পেয়েছে জোড়াফুল শিবির। আবার ওই রকম ১১টি আসন দখল করেছে বিজেপি-ও। রাজ্যের সার্বিক ফলে তৃণমূল এবং বিজেপি— এই দুই শক্তিধরের লড়াইয়ের মাঝে তৃতীয় পক্ষের কোনও উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। সেই ধারা বজায় রয়েছে মালদহ, কোচবিহারসহ কয়েকটি জেলার এমন আসনগুলিতে এই ৫৭টি কেন্দ্রগুলোতে।




বগুড়ায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে গুলি করে হত্যা

শাহজাহানপুর থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক জানান, উপজেলার কৃষি কলেজ এলাকায় বগুড়া- নাটোর মহাসড়কে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত মোজাফফর হোসেন (৫৫) বগুড়া শহরের নিশিন্দারা এলাকায় ‘আল জামিয়া আল আরাবিয়া জারুল হেদায়া কওমি হাফিজিয়া মাদ্রাসার’ প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে মোজাফফর নিশিন্দারা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। এসআই রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, “বগুড়া থেকে অটোরিকশায় করে সিংড়া যাচ্ছিলেন মোজাফফর। কয়েকজন তার পথ রোধ করে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।” কারা কেন মোজাফফরকে হত্যা করে থাকতে পারে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেনি পুলিশ। মোজাফফর সম্পর্কেও বিস্তারিত বলতে পারেননি এসআই রাজ্জাক।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “কারা কী কারণে হত্যা করেছে তা জানতে পুলিশ মাঠে নেমেছে। মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা এক নারী ও এক পুরুষ যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ”আজমল হোসেন নামের এক প্রতিবেশী জানান, মোজাফফরের স্ত্রী দুইজন। মাদ্রাসার কাজের পাশাপাশি তিনি ঝাড়ফুঁক করতেন এবং ‘কবিরাজি চিকিৎসা’ দিতেন। তবে কারও সঙ্গে তার কোনো বিরোধ ছিল কি না, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়নি ওই প্রতিবেশীর কথায়।




জয়লাভ করে মমতার পদত্যাগ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল বুধবার টানা তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। তাই নিয়ম মেনে এ পদ থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন তিনি।

মমতার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন পশ্চিমবাংলার গভর্নর জগদীপ ধনখড়। এ সময় তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রধানকে শুভেচ্ছাও জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, সোমবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। তিনি সেখানে দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন। এরমেধ্যে পদত্যাগ পত্র জমা দিলে সেটি গ্রহণের পর মমতাকেই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে মমতাকেই দায়িত্বভার সামলানোর অনুরোধ করেন ধনখড়। বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে শপথগ্রহণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে শপথ অনুষ্ঠানে অতিথির সংখ্যাও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। তারপর ৬ ও ৭ মে শপথ নেবেন বিধানসভা নির্বাচনের নবনির্বাচিত বিধায়করা। বরাবরের মতো এবারও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার হতে চলেছেন বিমান বন্দোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী কারা হবেন, তা ঠিক করেবেন তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী নিজেই।

গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৭টিতে।




মমতার মন্ত্রিসভায় কে হবেন অর্থমন্ত্রী, আলোচনায় মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী

ডিএবি নিউজ ডেস্ক:

বিধানসভা ভোটে নজরকাড়া সাফল্যের পর তৃতীয়বার মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রেও বড়সড় চমক দিতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, এ বারের মন্ত্রিসভায় অনেক নতুন মুখ পাওয়া যাবে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে মন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তারুণ্য ও যোগ্যতাকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ভোটে জিতলেও বাদ যেতে পারেন বেশ কয়েক জন পুরোনো মন্ত্রী। মন্ত্রিসভায় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অর্থমন্ত্রী কে হবেন, এই নিয়ে চলছে জল্পনা। গতবার অর্থমন্ত্রী ছিলেন অমিত মিত্র। এবছর তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে নির্বাচণে অংশ নেননি।

এদিকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো নিয়ে বেশ ধন্দে রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। নতুন অর্থমন্ত্রীর ব্যাপারে চারটি সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এক, মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই অর্থ দপ্তর রেখে দিতে পারেন। দুই, অর্থনীতি বোঝেন, এমন লোককে জিতিয়ে এনে অর্থমন্ত্রী পদে বসানো হতে পারে। তিন, অনেকে আবার ভাবী অর্থমন্ত্রী হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। চার, সাবেক গণশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে করনা হতে পারে অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রীর আলোচনায়ও এগিয়ে আছেন তিনি। কারণ টানা তিনবারের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত মমতার খুব কাছের পরীক্ষিত নেতা মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। ধারণা করা হচ্ছে এবার অর্থমন্ত্রী করা হতে পারে তাকেই। এর আগে তিনি গণশিক্ষা মন্ত্রী ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ভারতের মঙ্গলকোট বিধানসভা আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করলেন। ভারতে দেওবন্দী আলেমদের সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতিও তিনি।

বিদায়ী অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র গত ১০ বছর ধরে নীরবে রাজ্যের অর্থনীতিকে সচল রাখার গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর আমলেই রাজস্ব আদায় সব চেয়ে বেশি বেড়েছে। জিএসটি কার্যকর করার পিছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। গত এক দশকে রাজ্যে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, খাদ্যসাথী-সহ একের পর এক সামাজিক প্রকল্প চালু হয়েছে। চালু হয়েছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের সংশোধিত বেতনক্রম। করোনা অতিমারী এবং উম্পুন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সামাল দিতেও কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তারপরও রাজ্যের অর্থনীতি যে এখনও বেশ সাবলীল, সেই ব্যাপারে অনেকটা কৃতিত্ব প্রাপ্য অমিত মিত্রর। অর্থের পাশাপাশি তিনি শিল্প দপ্তরও সামলেছেন।




দুর্গাপুরে মানহানি মামলায় ব্যবসায়ী ঝুলন কুমার সাহা গ্রেপ্তার

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা (ঝুমা) তালুকদার কর্তৃক মানহানির মামলায় ব্যবসায়ী ঝুলন কুমার সাহাকে (৪৫) নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেন দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহনুর-এ আলম। ঝুলন কুমার সাহা পৌর সদরের মধ্য বাজার এলাকার মৃত হরিমোহন সাহার ছেলে। মানহানি মামলাটি দায়ের করেন দুর্গাপুর-কলমাকান্দা আসনের তিনবারের প্রাক্তন সাংসদ মরহুম জালাল উদ্দিন তালুকদারের কন্যা বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার। থানা পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, ঝুলন কুমার সাহা গত ২০১৯-২০ খ্রি. এক বছরের জন্য (বিরিশিরি-কেরণকলা) বালু মহালের ইজারাদার ছিলেন। সেখানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাহিত করে উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্থানীয় অর্থলোভী সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে গত বছরের ১২ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলন করে ইজারাদার ঝুলন কুমার সাহা। উপজেলা চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী দ্বারা অভিযুক্ত ব্যক্তির নিকট চাঁদা দাবি করে আসছিল বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। ওই মিথ্যা ও অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় উপজেলা চেয়ারম্যান এর মানহানী ও সামাজিকভাবে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যানকে সন্ত্রাসী, অর্থলোভী আখ্যায়িত করে ও তার নিজস্ব সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনীর দিয়ে চাঁদা দাবির বিষয়টি জোড়ালো করে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার বাদী হয়ে গত বছরের ১ নভেম্বর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত দুর্গাপুর চৌকিতে ৫০০/৫০১/৫০২দ- বিধি আইনে মামলা দায়ের করেন। সি.আর মোকাদ্দমা নং-১৪৫/২০। মামলাটি আমলে বিজ্ঞ বিচারক ঝুলন সাহার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এর মানহানির মামলায় ঝুলন কুমার সাহাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি শাহনুর-এ আলম এ প্রতিবেদকে জানান, ঝুলন কুমার সাহার বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। ওই নির্দেশ মুলে ঝুলন কুমার সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে ইতোমধ্যে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।




ই’তিকাফে বসে যা করা যাবে, যা করা যাবে না

সারিব সুইজা,

ইবাদতের মাস রমজান মাস। আল্লাহর রহমত,মাগফেরাত,নাজাতবেষ্টিত এই মাস। বেশি বেশি আমল করে নিজের নেকির থলে সমৃদ্ধ করার মাস এটি। এই মাসের প্রধান আমল হচ্ছে রোযা আদায় করা। এর পাশাপাশি আরো কিছু আমল রয়েছে। তন্মধ্যে ইতেকাফ অন্যতম। আজ থেকে দেশের মসজিদে ও বাসাবাড়িতে ধর্মপ্রাণ মানুষ বসবে ই’তিকাফে। কিন্তু এ ই’তিকাফে বসে কী করা যাবে? কী করা যাবে না? তা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। তাই আসুন জেনে নেয়া যাক তখন কী করা যাবে, কী করা যাবে না-

যেসব কারণে ই’তেকাফ ভেঙে যায়-
যেসব কাজ করলে ই’তেকাফকারীর ইতেকাফ ভেঙে যায় তা হলো;
১.যেসব জরুরতের কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া যায় সেসব ক্ষেত্রে বের হয়ে বাইরে সেই জরুরত ছাড়া একটু বেশি সময় অবস্থান করলে।
২.শরয়ী জরুরত ছাড়া মসজিদ থেকে বের হলেই ইতেকাফ ভেঙে যাবে।চাই তা ইচ্ছে করে হোক অথবা ভুলে হোক।
৩.ই’তেকাফকারী ব্যক্তি মসজিদের সীমানা মনে করে বের হয়েছে,পড়ে জানতে পারলো এটা মসজিদের সীমানার বাইরে ছিলো তাহলে সেক্ষেত্রেও ইতেকাফ ভেঙে যাবে।
৪.ই’তেকাফের জন্য রোযা শর্ত।তাই কেউ যদি রোযা ভেঙে ফেলে তাহলে তার ইতেকাফও ভেঙে যাবে।
৫.স্ত্রীর সাথে সহবাস করার দ্বারা ইতেকাফ ভেঙে যাবে,চাই সহবাস ইচ্ছে করে হোক বা অনিচ্ছাকৃত। ৬.স্ত্রীকে চুমু বা স্পর্শ করলে যদি ‘মনি’ বের হয়,তাহলে সেক্ষেত্রেও ইতেকাফ ভেঙে যাবে।
৭.ওযুর কারণ ছাড়া শুধু এমনিতেই ব্রাশ, মেসওয়াক করতে বের হলে।
৮. বিড়ি খাওয়ার জন্য বের হলে।
৯.খাবার খাওয়ার পর হাত পরিষ্কার করার জন্য বের হলে ইতেকাফ ভেঙে যাবে।

যেসব কারণে ই’তেকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারবেন-
বর্তমানে অনেক মানুষ ই’তেকাফ করে যে কোনো ঠুনকো অজুহাতে মসজিদ থেকে বের হয়। অযথা মসজিদের বাহিরে সময় নষ্ট করে। অথচ ই’তেকাফকারীর জন্য যে কোনোও কারণেই মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই। বরং তার বের হওয়ার নির্দিষ্ট কিছু কারণ আছে। নিম্মে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
ই’তেকাফকারী ব্যক্তি ‘শরয়ী জরুরত’,’মানবীয় জরুরত’ বা একান্তই জরুরি কাজ ছাড়া মসজিদ থেকে বের হতে পারবেন না।যেমন;

১. মলত্যাগ করার জন্য। ২.ফরয গোসল করার জন্য, যদি মসজিদে সম্ভব না হয়।কিন্তু ফরয গোসল ছাড়া অন্য যেকোনো গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতেকাফ ভেঙে যাবে। হ্যাঁ এটা করা যেতে পারে যে, ঠাণ্ডার জন্য, জুমার দিন জুমার জন্য গোসল করতে চাইলে মসজিদের সীমানার ভেতরে থেকে শরীরে তাড়াতাড়ি হালকা পানি দিয়ে নিতে পারবে তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেনো মসজিদের ভেতর পানি না যায়।৩.ওযু করার জন্য, যদি মসজিদের সীমানার ভেতর থেকে সম্ভব না হয়।৪.খাবার আনার জন্য বাড়িতে যাওয়া, যদি খাবার এনে দেওয়ার কেউ না থাকে।৫.মোয়াজ্জেন আজান দেওয়ার জন্য। ৬.যেই মসজিদে ইতেকাফ অবস্থায় আছে সেই মসজিদ জুমার মসজিদ না হলে জুমা আদায় করার জন্য। ৭.মসজিদের ক্ষয়ক্ষতি হলে,জালেম মসজিদ থেকে বের করে দিলে তিনি সেই মসজিদ থেকে বের হয়ে অন্য মসজিদে গিয়ে ইতেকাফ করতে পারবেন।
এখানে আরেকটি বিষয় জনসাধারণের জন্য জেনে নেওয়া জরুরি যে, জানাযা এবং অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া।

আল্লামা তাকী উসমানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন,এক্ষেত্রে হুকুম হলো সর্বাবস্থায় অর্থাৎ শুধু জানাযার জন্য বা অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয নেই।কিন্তু কেউ যদি মলত্যাগ করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে রাস্তার পাশেই চলা অবস্থায় কোন জানাযা বা অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ নেয় তাহলে কোন সমস্যা নেই। তবে শর্ত হলো বের হওয়ার সময় মলত্যাগ করার উদ্দেশ্যে বের হতে হবে।জানাযা বা অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখার উদ্দেশ্যে বের হলে ইতেকাফ ভেঙে যাবে।আরেকটি শর্ত হলো রাস্তা থেকে দূরে যাওয়া যাবে না এবং রাস্তার ভেতর দাঁড়ানো যাবে না।
এগুলো ছাড়া আর কোন কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না। বের হলে ই’তেকাফ ভেঙ্গে যাবে।

ই’তেকাফ ভেঙে গেলে করণীয়-
১.কোন ব্যক্তির যদি সুন্নাত ইতেকাফ ভেঙে যায় তাহলে সেই ব্যক্তি শুধু ওই দিনের ইতেকাফ কাযা করবে।পুরো দশ দিনের কাযা করতে হবে না। তবে যেদিন কাযা করবে সেদিন রোযাও রাখতে হবে।
২.কোন কারণে ভেঙে গেলে উচিৎ মসজিদই অবস্থান করা।সুন্নাত ইতেকাফ না হলেও নফল ই’তেকাফের ফজিলত পাওয়া যাবে।

ইতেকাফ ভাঙা জায়েজ যে কারণে-
১.ইতেকাফকারী যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে, যার চিকিৎসা মসজিদের বাইরে যাওয়া ছাড়া সম্ভব নয় তবে তার জন্য ইতেকাফ ভেঙে দেওয়ার অনুমতি আছে। (শামী)
২.বাইরে কোনো লোক ডুবে যাচ্ছে বা আগুনে দগ্ধ হচ্ছে তাকে বাঁচানোর আর কেউ নেই, অনুরূপ কোথাও আগুন লেগেছে, নেভানোর কেউ নেই তবে অন্যের প্রাণ বাঁচানোর এবং আগুন নেভানোর জন্য ইতেকাফকারীর ইতেকাফ ভেঙে দেওয়ার অনুমতি আছে।
৩ জোরপূর্বক মসজিদ থেকে ইতেকাফকারীকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় যেমন ওয়ারেন্ট এসে গেলে ইতেকাফ ভেঙে দেওয়া জায়েজ। সেরূপ ইতেকাফকারীর যদি এমন সাক্ষ্য দেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে, যা শরিয়তানুযায়ী তার জন্য ওয়াজিব সেরূপ সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ইতেকাফ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি আছে।
৪.মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তান-সন্ততির কঠিন অসুস্থতার কারণেও ইতেকাফ ভেঙে দেওয়া জায়েজ। তেমনি পরিবারের কারো প্রাণ, সম্পদ বা ইজ্জত আশঙ্কার সম্মুখীন হলে এবং ইতেকাফ অবস্থায় তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা সম্ভব না হলে ইতেকাফ ভেঙে দেওয়া জায়েজ।
৫.এ ছাড়া যদি কোনো জানাজা হাজির হয় এবং জানাজা পড়ানোর কেউ না থাকে তখনো ইতেকাফ ভেঙে দেওয়া জায়েজ। (ফতহুল কবীর) উল্লিখিত প্রয়োজন পূরণ করতে বের হলেই ইতেকাফ ভেঙে যাবে, তবে গোনাহ হবে না। (বাহরুর রায়েক)

ইতেকাফ অবস্থায় যেসব কাজ মাকরূহ-
ইতেকাফ অবস্থায় চুপ থাকলে সওয়াব হয় এই মনে করে চুপ থাকা মাকরূহে তাহরীমী।
বিনা প্রয়োজনে পার্থিব কোনো কাজে লিপ্ত হওয়া যেমন ;বেচাকেনা করা মাকরূহ। তবে একান্ত প্রয়োজনে মসজিদে মালামাল উপস্থিত করা ব্যতিত বেচাকেনার চুক্তি করা যাবে।

ইতেকাফ অবস্থায় করণীয়-
ইতেকাফ অবস্থায় ভালো এবং নেক কথা বলা। অতিরিক্ত কথাবার্তা না বলা। বেকার বসে না থেকে নফল নামাজ পড়া কোরআন তেলাওয়াত করা। তাসবিহ-তাহলীলে মশগুল থাকা। বেশি বেশি দোয়া করা।আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করা।শবে কদরের রাত্র খোঁজ করা।তবে ইতেকাফ অবস্থায় বিশেষ কোনো ইবাদত নেই। তাই যেকোনো ইবাদত মন চাইলে করা যাবে।
সুতরাং আমাদের ভালো করে ই’তেকাফের বিষয় গুলো বুঝতে হবে।সমাজে অহরহ দেখা যাচ্ছে মানুষ ই’তেকাফে বসছে কিন্তু মাসয়ালা না জানার কারণে তার সুন্নাত ইতেকাফ আদায় হচ্ছে না।ই’তেকাফ যেমন অনেক ফজিলতের তেমনিভাবে বিষয়টি অনেক সুক্ষ্ম। তাই সোচ্চার হয়ে কাজ করতে হবে।তখনই না আমরা ই’তেকাফের ফজিলত পাবো।

মহিলাদের ই’তেকাফ-
ই’তেকাফের ফজিলত শুধু পুরুষদের জন্য নির্ধারিত নয়,মহিলাদের জন্যও রয়েছে এর ফজিলত।
১.তবে মহিলারা মসজিদে ইতেকাফ করতে পারবে না।তারা ঘরের একটি জায়গাকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করে সেখানে অবস্থান করবে।
২.বিবাহিত মহিলা হলে স্বামীর অনুমতি নিয়ে ই’তেকাফে বসতে হবে।
৩.স্বামীর অনুমতি নিয়ে ই’তেকাফে বসার পর যদি স্বামী আবার নিষেধ করে তাহলে স্বামীর কথা মানা জরুরি নয়।
৪.মাসিক দিনগুলো থেকে পবিত্র হয়ে ই’তেকাফে বসতে হবে।অর্থাৎ মহিলা খেয়াল করবে যে, ই’তেকাফের দিনগুলোতে তার মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা।
৫.কোনো মহিলা ইতেকাফ শুরু করে দেওয়ার পর মাসিক শুরু হলে ওইদিনের ই’তেকাফ ভেঙে যাবে এবং সেইদিনের ইতেকাফ কাযা করতে হবে।
৬.মহিলা ঘরের যেই জায়গায় ই’তেকাফে বসবে সেই জায়গা তার জন্য মসজিদের হুকুমে হবে।সুতরাং কোনো শরয়ী বা একান্ত মানবীয় জরুরত ছাড়া সেখান থেকে বের হলে তার ই’তেকাফ ভেঙে যাবে।
৭.পুরুষদের জন্য যেসব কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয আছে তেমনিভাবে সেই সকল কারণে মহিলাদের জন্যও ঘরের সেই নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বের হওয়া জায়েয আছে। যেসব কাজ করলে পুরুষের ই’তেকাফ ভেঙে যায়, একজন ই’তেকাফকারী মহিলা সেই কাজ করলেও তার ইতেকাফ ভেঙে যাবে।

আমাদের সমাজে মহিলাদের এই ফজিলতের কাজটি করতে কম দেখা যায়।এক্ষেত্রে তাদের অবহেলা দেখা যায়।যাদের বিশেষ কোনো জরুরি নেই তাদের জন্য ই’তেকাফে বসে ইবাদতে কাটিয়ে দিয়ে উল্লিখিত ফজিলত গুলো পাওয়াই কাম্য।
জ্ঞাতব্য – অনেক এলাকায় দেখা যায় কেউ মসজিদে ইতেকাফে বসে না বিধায় এলাকার কোন এক ব্যক্তিকে সকলে টাকা দিয়ে মসজিদে বসায়।যা কোনভাবেই জায়েয নয়।এভাবে ই’তেকাফে বসালে ই’তেকাফ আদায় হবে না উলটো গুনাহগার হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পবিত্র মাহে রমজানে মসজিদে ইতিকাফ করার মাধ্যমে গুনাহের পাপরাশি থেকে বেঁচে থেকে অশেষ নেকি লাভের মোক্ষম সুযোগ দান করুন।