ইসলামে দৃষ্টিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সৌন্দর্য ও সাজসজ্জার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। এই ধর্ম তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয় যে, তারা যেন সর্বদা নিজেদের জীবন থেকে কদর্যতা ও কুৎসিততার চিহ্নগুলো দূর করে এবং অন্যদের সাথে দেখা করার সময় সুসজ্জিত ও সুন্দরভাবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করে।

এই নিবন্ধে আমরা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব।

সাজসজ্জার সংজ্ঞা

‘সাজসজ্জা’ অর্থ সুসজ্জিত হওয়া। আভিধানিকভাবে এর অর্থ ‘সাজানো বা অলংকৃত করা’। তবে এর আরও কিছু অর্থ রয়েছে, যেমন সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি হওয়া, সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া এবং প্রস্তুত থাকা।

কুরআনের দৃষ্টিতে সাজসজ্জা

পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে সৌন্দর্য উপলব্ধির সক্ষমতা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের আত্মায় প্রদত্ত একটি স্বভাবজাত গুণ। সৃষ্টিজগতে সুন্দর বস্তুর উপস্থিতি এই স্বভাবজাত চাহিদারই প্রতিক্রিয়া এবং এটি মহান স্রষ্টার অমূল্য নিদর্শন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন: “নিশ্চয়ই আমরা নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সৌন্দর্য দ্বারা সজ্জিত করেছি।” (সূরা সাফফাত: ৬)

এই আয়াত অনুসারে, আল্লাহ নক্ষত্রগুলোকে আকাশের সৌন্দর্য হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং এটিকে তাঁর নিয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইমামদের দৃষ্টিকোণ থেকে সাজসজ্জার গুরুত্ব

আমাদের পবিত্র ইমামরা সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং নিজেরাই এই নীতি মেনে চলেছেন। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেন: “আল্লাহ পবিত্র, পবিত্রতাকে ভালোবাসেন; পরিচ্ছন্ন, পরিচ্ছন্নতাকে ভালোবাসেন।”

হজরত আলী (আ.) যিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও সরল জীবনযাপন করতেন, তবুও সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতায় অবহেলা করতেন না। তিনি বলেন:
“তোমাদের প্রত্যেকে যেন তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য সাজে, ঠিক যেমন সে অপরিচিত ব্যক্তির জন্য সাজে যে তাকে সর্বোত্তম অবস্থায় দেখতে চায়।”

সাজসজ্জার ধরন

সাজসজ্জা দুই ধরনের হয়:

১. আত্মিক সাজসজ্জা ২. বাহ্যিক সাজসজ্জা

আত্মিক সাজসজ্জাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:

১. চিন্তাভাবনার সাজসজ্জা– এর মধ্যে জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও শিষ্টাচার অন্তর্ভুক্ত।

২. বাক্যের সাজসজ্জা

৩. আচরণের সাজসজ্জা

বাহ্যিক সাজসজ্জা

বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও সাজসজ্জা ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং এটি মানুষের প্রাকৃতিক চাহিদা ও প্রকৃতির সাথে যুক্ত।

মহানবী (সা.) বলেন: ‘পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ’।




এবার পবিত্র ঈদুল আযহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ঈদুল আজহা মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারের ঈদুল আজহায় সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি করা হয়েছে। এরই ধারাবহিকতায় এ বছর বাংলাদেশে ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি করা হয়। এর মধ্যে গরু ও ছাগলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

১০ জুন মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. মামুন হাসান।

সরকারি সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ২০২৫ সালে দেশে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে গরু/ মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি; ছাগল / ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ টি; অন্যান্য ৯৬০ টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মূলত পশু কোরবানির হিসাব করে থাকে। অধিদপ্তর বলছে স্তরায়িত দৈব নমুনায়নের (স্ট্র্যাটিফায়েড র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং) ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এবারের হিসাব করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার ৩টি গ্রাম (ছোট, মাঝারি এবং বড়) থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে হিসাবটি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির পশু অবিক্রীত ছিল ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩ টি। কারণ হিসেবে অধিদপ্তর বলছে, এবার কোরবানির পশুর উৎপাদন বেশি ছিল। তাই পশু অবিক্রীত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩ টি। এরপর কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ গাজার ১৬২ টি। আর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এই সংখ্যা ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১ টি গবাদি পশু। এর পর বেশি কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই সংখ্যা ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০ টি। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২ টি গবাদিপশু। খুলনা বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪ টি গবাদিপশু।

বরিশাল বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৪ লাখ ৭৮৩ টি গবাদিপশু। রংপুর বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টি গবাদিপশু।




আজ পবিত্র হজের দিন: লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফা ময়দান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক  :

আজ পবিত্র হজের দিন, ইওয়ামুল আরাফাহ। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে পবিত্র আরাফার পাহাড় ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত ।

স্থানীয় সময় সূর্যোদয় পর্যন্ত মিনায় অবস্থান শেষে ফজরের পর পরই আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হন মুসল্লিরা। সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে হজের খুতবা শুনবেন লাখো মুসল্লিরা।

আরফাতের ময়দানে অবস্থানকেই মূল হজ বিবেচনা করা হয়। এবার পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ। যা ৩৪টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

আজ প্রভাত থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীর আরাফার আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময় শুভ্রতায় ভরে উঠেছে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিদের অবস্থানের কারণে সাদা আর সাদায় একাকার। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন।

আজ ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত ২৫ লক্ষাধিক মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে উপস্থিত হচ্ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৭ হাজারের বেশি। আজ ৯ জিলহজ মূল হজের দিন তারা এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন।

আরাফার ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মসজিদে হারামের প্রখ্যাত খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ।

সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তা’আলার জিকির আসকার ইবাদতে মশগুল থাকবেন। অতঃপর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন। সেই সঙ্গে জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে পুনরায় মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।

১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত।

জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত।

১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ।

স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাত বার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের মতো পবিত্র হজের খুতবা এবারও বাংলাসহ বহু ভাষায় অনুবাদ করা হবে। বাংলায় অনুবাদ করবেন চার জন বাংলাদেশি। তারা হলেন ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান ও নাজমুস সাকিব। তারা সবাই মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন।




শাপলার গণহত্যায় হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত: আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

২০১৩ সালের ৫ মে রাতের আঁধারে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন এর জন্য তার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার দায়ের করা উচিত বলে মনে করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ এখানে এসেছি। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো গণহত্যার জন্য এখনো কোনো মামলা হয়নি শেখ হাসিনার নামে। কেন আপনারা মামলা করেননি তা আমি জানি না। যারা শাপলায় গণহত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের মামলা করা  উচিত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমরা মুসলমান। উম্মতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকতে হবে। গাজার শহীদ এবং কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর যুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন করতে হবে।

নারী কমিশন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ইউনূস সরকারের কাছে আমার একটি প্রশ্ন, আপনারা অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করছেন। এই অপ্রয়োজনীয় ইস্যুর জন্য জুলাই আন্দোলন হয়নি। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে কি নারী সংস্কার কমিশন গঠন করার জন্য? না, ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আপনাদেরকে বলতে চাই, অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করবেন না ।অপ্রয়োজনীয় যত কমিশন গঠন করেছেন সব বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্রের সম্পদ অযথা কাজে নষ্ট করবেন না।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমাদের বৃহত্তর লড়াই ভারতের বিরুদ্ধে। আপনারা নারীনীতি নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের বৃহত্তর লড়াই নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না ।




হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদিতে পৌঁছলেন প্রথম ফ্লাইটের হজযাত্রীরা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

৩৯৮ জন হজযাত্রী নিয়ে প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দায় পৌঁছেছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৩ ফ্লাইটটি। এতে ছিলেন ৩৯৮ জন হজযাত্রী।

বোয়িং ৭৭৭-৩০০ মডেলের এই উড়োজাহাজটি সৌদি সময় সকাল ৬টায় জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হজ ফ্লাইট শুরুর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় মোট ১০টি ফ্লাইটে ৪ হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে আটটি ফ্লাইট জেদ্দায় এবং দুটি মদিনার প্রিন্স মুহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবে।

এ বছর তিনটি এয়ারলাইন্স ২৩২টি প্রাক-হজ ফ্লাইটের মাধ্যমে এদেশের হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাংলাদেশ বিমান ১১৮ টি প্রাক্‌-হজ ফ্লাইটে ৪৪ হাজার ৩০৭ জন, সাউদিয়া ৮০টি ফ্লাইটে ৩২ হাজার ৭৪০ জন ও ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইটে ১৩ হাজার ৬৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে। ৩১ মে প্রাক-হজ ফ্লাইট শেষ হবে। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি মাধ্যমে এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে।

হাজীদের জন্য যোগাযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন দরকারি ফিচার সম্বলিত একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এছাড়া তাদেরকে হজ প্রিপেইড কার্ড ও মোবাইল সিম রোমিং সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।




সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, আজ রাতেই শুরু হচ্ছে হজ ফ্লাইট-ধর্ম মন্ত্রণালয়

পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইট আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে। রাত ২টা ১৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি এয়ারলাইন্সের প্রথম ফ্লাইটটি জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এবারও ঢাকা থেকেই হজযাত্রীদের সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮৭ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে ৭৯ শতাংশের ভিসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে। হজ ফ্লাইট আজ থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।

এবছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজে যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন রয়েছেন। আজ সন্ধ্যায় হজ ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে হজযাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে আসা শুরু করেছেন।

বিমানবন্দরের এডিসি আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হজযাত্রীদের বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবং সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন শাহজালাল বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক দুই শতাধিক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও থাকবে।

হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার জানান, বিমান বাংলাদেশসহ মোট তিনটি এয়ারলাইন্সের ২৩২টি ফ্লাইট এ বছর হজযাত্রী পরিবহন করবে। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি যাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে এবং হজ ফ্লাইট পরিচালনায় কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়নি।




কলমাকান্দায় বজ্রপাতে দিদারুল হক (২৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বজ্রপাতে দিদারুল হক (২৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের হাফসা (রা.) মহিলা মাদরাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন।

দিদারুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামে মধ্যপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি খারনৈ এলাকার হাফসা (রা.) মহিলা মাদরাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির শিক্ষক ছিলেন।

খারনৈ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুল হক জানান, রোববার রাতে সাড়ে  ১০টার দিকে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় শিক্ষক দিদারুল হক বাজার থেকে মাদরাসায় যাচ্ছিলেন। এই সময় বিকট শব্দ একটি বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। পরে মাদরাসার মাঠে গিয়ে দিদারুল হকের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই স্থানীয় প্রশাসন ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়।

কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, বজ্রপাতে দিদারুল হক নামে একজন মাদরাসার শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ রাতেই তার স্বজনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।




যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মাদরাসা শিক্ষায়ও আধুনিকায়ন আনা হয়েছে। : ধর্ম উপদেষ্টা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, নৈতিক শিক্ষা এখন কেবল মাদরাসা থেকেই পাওয়া যায়। মাদরাসা অঙ্গনে ইয়াবা খায় না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে নেশা করা হয়।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার কামালপুর গ্রামে আল হেরা জামেয়া ইসলামিয়া একাডেমির শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এ দেশের ক্ষমতার চেয়ারে যে বসে সে সব কিছু লুটেপুটে খেতে চায়। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে বিদেশে বাড়ি করে। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশে এমন দৃষ্ঠান্ত নেই। আমাদের দুর্ভাগ্য রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নে শিক্ষাব্যবস্থা বন্দি।

মাদরাসা শিক্ষায় যারা শিক্ষিত তারা অপরাধের সাথে জড়িত কম হয়। এজন্য যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মাদরাসা শিক্ষায়ও আধুনিকায়ন আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সবদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা ক্লাসের সময় শুনশান নিরবতার মধ্য দিয়ে ক্লাস করে। আমাদের দেশে ক্লাসের সময় শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দেয়।

আফসোসের কথা শিক্ষার্থীরা সুকুমারবৃত্তি পরিবার থেকে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিখবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন শিক্ষার্থীদের শিষ্টাচার, ভদ্রতা, নৈতিকতা শিক্ষা দেয় না।

ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের দাবি তুলে তিনি বলেন, রাজনীতি যদি করতে হয়, ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করেন। রাজনীতিতে একটা সহমর্মিতা বজায় রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বুয়েটের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ও একাডেমির ট্রাস্টি প্রকৌশলী ড. আবুল খয়ের।

একাডেমির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিক মিয়ার সভাপতিত্বে ও একাডেমি প্রধান মাওলানা আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুনতাসীর আলী,  লাউয়াই মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা রওনক আহমদ, জামেয়া মোহাম্মদীয়ার বাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা ফয়জুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের আমীর নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান মানিক, মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা ওলিউর রহমান, ক্যামব্রিয়ান কলেজের পরিচালক শাহিন আহমদ রাজু, মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মুফতি শিহাব উদ্দিন, হাফিজ মাওলানা শরিফ উদ্দিন, মাওলানা হাসান বিন ফাহিম, সংগঠক ময়নুল হক জানু মিয়া। ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা রুহুল আমিন দিলোয়ার।




ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। আজ সোমবার ভ্যাটিকানের একটি ভিডিও বার্তায় তার মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে।

ভিডিও বার্তায় কার্ডিনাল কেভিন ফারেল জানান, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবন কাসা সান্টা মার্টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন পোপ।

ভ্যাটিক্যানের টেলিভিশন চ্যানেলে ফারেল বলেন, “গভীর দুঃখের সঙ্গে আমাকে আমাদের পবিত্র ফাদার ফ্রান্সিসের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করতে হচ্ছে। রোমের বিশপ আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার পুরো জীবন প্রভু এবং তার গির্জার সেবায় নিবেদিত ছিল।”

“তিনি আমাদের বিশ্বস্ততা, সাহস এবং সর্বজনীন প্রেমের সাথে সুসমাচারের মূল্যবোধগুলো জীবনযাপন করতে শিখিয়েছিলেন, বিশেষ করে দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষের পক্ষে।”

ফারেল আরো বলেন, “প্রভু যীশুর একজন প্রকৃত শিষ্য হিসেবে তার উদাহরণের জন্য অপরিসীম কৃতজ্ঞতার সাথে, আমরা ঈশ্বরের অসীম করুণাময় প্রেমের কাছে পোপ ফ্রান্সিসের আত্মাকে প্রণাম জানাই।”

রবিবারই খ্রিস্টান ক্যাথলিক ধর্মালবলম্বীদের উদ্দেশে ইস্টারের বার্তা দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকার ব্যালকনি থেকে নিজের বার্তা শুনিয়েছিলেন তিনি। তার কথা শোনার জন্য ভ্যাটিক্যান স্কোয়ারে ভিড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা চলছিল তার। সম্প্রতি রোমের গেমেলি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান। তারপর থেকে ভ্যাটিক্যানে নিজের বাসভবনেই ছিলেন তিনি। সোমবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ।

২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

তিনি ছিলেন ৭৪১ সালের পর প্রথম নন-ইউরোপিয়ান পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরির মৃত্যুর পর রোমে আর কোনো নন-ইউরোপীয় পোপ আসেননি। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ ছিলেন ফ্রান্সিস। তিনি ক্যাথলিক গির্জায় সংস্কার কখনো বন্ধ করেননি। তারপরও তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।




আল-আকসা মসজিদটি ভেঙে থার্ড টেম্পল নির্মাণের প্রচারণায় ইসরায়েল

ডিএনবি নিউজ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের মুসলিমদের পবিত্রতম স্থানগুলোর একটি আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড গভীর উদ্বেগ ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। মসজিদটি ধ্বংস করে সেখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের আহ্বান এবং পরিকল্পনার অভিযোগে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সরকার।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার বরাতে জানা গেছে, সম্প্রতি হিব্রু ভাষায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে আল-আকসা মসজিদে হামলার উসকানি এবং সেই জায়গায় নতুন ইহুদি উপাসনালয় নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে। বিষয়টিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয় জানায়, এই ধরনের আহ্বান শুধু ধর্মীয় অবমাননা নয়, বরং এটি সরাসরি মুসলিম বিশ্বের অনুভূতিতে আঘাত এবং পবিত্র স্থানের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই প্রচেষ্টা জেরুজালেমে ইসরায়েলি আগ্রাসনের অংশ এবং ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দেওয়ার কৌশল।

সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে, আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে তৃতীয় ইহুদি মন্দির গড়ে তোলার দৃশ্য। আগামী বছর জেরুজালেমে শিরোনামের এই ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

ফিলিস্তিনিদের মতে, আল-আকসা শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি তাদের জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পবিত্র স্থান। যদিও প্রাঙ্গণের প্রশাসনিক দায়িত্ব জর্ডানের হাতে, ইসরায়েলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে প্রবেশ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা।

অন্যদিকে, ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ বিশ্বাস করে, এই স্থানেই প্রাচীনকালে প্রথম ও দ্বিতীয় টেম্পল স্থাপিত ছিল, যা রোমান সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ৭০ সালে ধ্বংস করে। সেই ঐতিহাসিক পটভূমিকে সামনে রেখেই তারা এখানে তৃতীয় মন্দির নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

ডানপন্থি ইসরায়েলি রাজনীতিবিদরা এই দাবি আরও জোরদার করছেন। জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ২০২৪ সালের আগস্টে আল-আকসা প্রাঙ্গণে টেম্পল মাউন্ট স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে বিতর্কে জড়ান। জানা গেছে, তিনি ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তত ছয়বার আল-আকসা সফর করেছেন। প্রতিবারই এই সফর ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সরকার এই ঘটনাগুলোকে একটি পরিকল্পিত উসকানি হিসেবে দেখছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বর্তমানে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ কার্যত ডানপন্থি ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও বসতি স্থাপনকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তারা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই জোরপূর্বক মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করছে এবং সেখানে ধর্মীয় আচার পালন করছে, যা বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক নিষিদ্ধ।

আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যে অনেকেই এই পরিস্থিতিকে হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন, যেখানে মুসলিম ও ইহুদি অংশে জায়গা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকে আশঙ্কা করছেন, আল-আকসার ক্ষেত্রেও হয়তো ইসরায়েল এমনই কিছু পরিকল্পনা করছে।

এই পরিস্থিতিতে আল-আকসা মসজিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন মুসলিম বিশ্ব ও ফিলিস্তিনি জনগণ আন্তর্জাতিক সংহতি ও প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছে। তারা বলছে, এই পবিত্র স্থানকে রক্ষা করা কেবল একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।