পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননাকারির ফাঁসির দাবীতে দুর্গাপুরে বিক্ষোভ মিছিল

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল ধর্ম নিয়ে কটূক্তি এবং পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিক্ষোভ  মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৮ অক্টোবর) বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার  যুবসমাজের আয়োজনে এই বিক্ষোভ মিছিল  ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা অংশ গ্রহণ করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা বলেন, আমরা ৯০ শতাংশ মুসলমানদের দেশে বসবাস করি। এর পরও এই দেশে সম্প্রীতি নস্ট করার জন্য, বারবার অন্য ধর্মের লোকেরাই আল কুরআন অবমাননার ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা কুরআন অবমাননাকারী অপুর্ব পালের ফাঁসি চাই। এই দেশে আর কেউ পবিত্র কুরআন অবমাননা করুক আমরা তা চাই না, কুরআনকে নিয়ে কটুক্তি করুক আমরা আর শুনতে চাইনা।

সমাবেশে মুফতি নুরে আলমের সভাপতিত্বে এবং জামাল উদ্দীন কারিমী‘র সঞ্চালনায়, অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, মুফতি সাব্বির আহমেদ, যুবনেতা সম্রাট গণি, মুফতি রেজাউল করীম, মুফতি বরকত উল্লাহ্, মাওলানা ইমরান। আলোচনা শেষে দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মনজুরুল হক।




বোমা মেরে মসজিদ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাকারী সাবেক মার্কিন সেনা রিচার্ড ম্যাক আজ ধর্মপ্রাণ মুসলিম!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মেরিন সেনা রিচার্ড ম্যাক ম্যাককিনি এক সময় ইসলাম ও মুসলমানদের চরম ঘৃণা করতেন। ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেন ঘটনার পর তার মনে ইসলাম বিদ্বেষ জন্ম নেয়। ঘৃণা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, তিনি নিজ শহরের একটি মসজিদে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেই মসজিদেই যখন তিনি প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য যান, তখন মুসলমানদের আচরণ ও ভালোবাসা তাকে বদলে দেয়। আজ সেই মানুষটিই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম, এমনকি এখন সেই মসজিদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন।

সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের মান্সি শহরে ফিরে আসেন ম্যাককিনি। তখন তার মনে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আরও গভীর হয়। তিনি ঠিক করেন, নিজের শহরের মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এ একটি বোমা রেখে সেটিকে উড়িয়ে দেবেন।

তবে হামলার আগে পরিকল্পনা ও তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি মসজিদে যান “গোয়েন্দা সেজে”। তার ধারণা ছিল, মুসলমানরা তাকে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করবে, যা তার হামলার পরিকল্পনাকে নৈতিক বৈধতা দেবে।

কিন্তু ঘটনাটি ঘটে সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে। মসজিদে গিয়ে তিনি পান উষ্ণ অভ্যর্থনা, ভালোবাসা এবং খোলামেলা আলাপের পরিবেশ। মুসলিম সদস্যরা তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন, তাকে সাদর আমন্ত্রণ জানান এবং কোনোভাবেই তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখেন না।

এরপর টানা আট সপ্তাহ ধরে তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানতে থাকেন, কোরআন-এর অনুবাদ পড়েন এবং মুসলমানদের সঙ্গে সময় কাটান।

অবশেষে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নাম রাখেন মুহাম্মদ ম্যাককিনি। বর্তমানে তিনি মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এর বোর্ড প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ মসজিদের প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন।

তার জীবনের এই পরিবর্তন নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি ফিল্ম) — “স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট” (Stranger at the Gate) — যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং অস্কার মনোনয়নও পেয়েছে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন: “আমি যাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিলাম, তারাই আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছে।”
“ইসলাম আমাকে শান্তি দিয়েছে, আর মুসলমানরা আমাকে নতুন জীবন।”

এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় ঘৃণার জবাব ঘৃণা নয়, বরং ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে মন পরিবর্তন করতে। আর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন।




খুলনা মহানগরীর এক ইমামকে রাজকীয় বিদায়

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

খুলনা মহানগরীর পশ্চিম টুটপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুস সালামের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় দিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে মসজিদ কমিটির উদ্যোগে পাগড়ি পরিয়ে ও ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে তাকে বিদায় জানানো হয়। দীর্ঘ ৩৭ বছর ৮ মাস ইমামের দায়িত্ব পালন শেষে ৮৫ বছর বয়সে অবসরে গেলেন তিনি।

তার বিদায়ের দিন জুমার নামাজ শেষে মসজিদে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। দীর্ঘদিনের ইমামকে হারানোর বেদনায় চোখ ভিজে ওঠে বহু মুসল্লির।

জানা যায়, মাওলানা আব্দুস সালাম ১৯৮৭ সালে পশ্চিম টুটপাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকে একনিষ্ঠভাবে ইসলামের দাওয়াত ও নামাজের ইমামতি করে গেছেন তিনি। এর আগে খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। প্রায় ১৫ বছর আগে শিক্ষকতা থেকে অবসর নিলেও মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন আজ অবধি। কিন্তু বয়সজনিত নানা শারীরিক জটিলতা এবং দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম হয়ে পড়ায় এবার দায়িত্ব থেকে অবসর নিলেন তিনি।

টুটপাড়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আবুল খায়েরের উপস্থাপনায় মাওলানা আব্দুস সালামের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার দারুল উলুম মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা মোসতাক আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুফতি জিয়াউর রহমান। মসজিদের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য খান আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পশ্চিম টুটপাড়া জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লি এস এম শামছুল আরিফ ও ইসলামিয়া জামে মসজিদের সভাপতি কামরুল ইসলাম।

নামাজ শেষে মাওলানা আব্দুস সালাম বিষাদ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সবার দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারছি না। তাই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি। আল্লাহ যেন আমাকে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার তৌফিক দেন। সবার কাছে সেই দোয়া চাই।

পরে তাকে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে পুরো টুটপাড়া এলাকায় শোভাযাত্রা করে ঘোরানো হয়। মোটরসাইকেল বহরসহ মুসল্লিরা তাকে নগরীর ছোট খালপারের বাসায় পৌঁছে দেন। এই ব্যতিক্রমী আয়োজনকে এলাকাবাসী এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।




ইসলামে দৃষ্টিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সৌন্দর্য ও সাজসজ্জার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। এই ধর্ম তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয় যে, তারা যেন সর্বদা নিজেদের জীবন থেকে কদর্যতা ও কুৎসিততার চিহ্নগুলো দূর করে এবং অন্যদের সাথে দেখা করার সময় সুসজ্জিত ও সুন্দরভাবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করে।

এই নিবন্ধে আমরা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব।

সাজসজ্জার সংজ্ঞা

‘সাজসজ্জা’ অর্থ সুসজ্জিত হওয়া। আভিধানিকভাবে এর অর্থ ‘সাজানো বা অলংকৃত করা’। তবে এর আরও কিছু অর্থ রয়েছে, যেমন সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি হওয়া, সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া এবং প্রস্তুত থাকা।

কুরআনের দৃষ্টিতে সাজসজ্জা

পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে সৌন্দর্য উপলব্ধির সক্ষমতা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের আত্মায় প্রদত্ত একটি স্বভাবজাত গুণ। সৃষ্টিজগতে সুন্দর বস্তুর উপস্থিতি এই স্বভাবজাত চাহিদারই প্রতিক্রিয়া এবং এটি মহান স্রষ্টার অমূল্য নিদর্শন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন: “নিশ্চয়ই আমরা নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সৌন্দর্য দ্বারা সজ্জিত করেছি।” (সূরা সাফফাত: ৬)

এই আয়াত অনুসারে, আল্লাহ নক্ষত্রগুলোকে আকাশের সৌন্দর্য হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং এটিকে তাঁর নিয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইমামদের দৃষ্টিকোণ থেকে সাজসজ্জার গুরুত্ব

আমাদের পবিত্র ইমামরা সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং নিজেরাই এই নীতি মেনে চলেছেন। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেন: “আল্লাহ পবিত্র, পবিত্রতাকে ভালোবাসেন; পরিচ্ছন্ন, পরিচ্ছন্নতাকে ভালোবাসেন।”

হজরত আলী (আ.) যিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও সরল জীবনযাপন করতেন, তবুও সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতায় অবহেলা করতেন না। তিনি বলেন:
“তোমাদের প্রত্যেকে যেন তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য সাজে, ঠিক যেমন সে অপরিচিত ব্যক্তির জন্য সাজে যে তাকে সর্বোত্তম অবস্থায় দেখতে চায়।”

সাজসজ্জার ধরন

সাজসজ্জা দুই ধরনের হয়:

১. আত্মিক সাজসজ্জা ২. বাহ্যিক সাজসজ্জা

আত্মিক সাজসজ্জাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:

১. চিন্তাভাবনার সাজসজ্জা– এর মধ্যে জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও শিষ্টাচার অন্তর্ভুক্ত।

২. বাক্যের সাজসজ্জা

৩. আচরণের সাজসজ্জা

বাহ্যিক সাজসজ্জা

বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও সাজসজ্জা ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং এটি মানুষের প্রাকৃতিক চাহিদা ও প্রকৃতির সাথে যুক্ত।

মহানবী (সা.) বলেন: ‘পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ’।




এবার পবিত্র ঈদুল আযহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ঈদুল আজহা মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারের ঈদুল আজহায় সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি করা হয়েছে। এরই ধারাবহিকতায় এ বছর বাংলাদেশে ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি করা হয়। এর মধ্যে গরু ও ছাগলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

১০ জুন মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. মামুন হাসান।

সরকারি সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ২০২৫ সালে দেশে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে গরু/ মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি; ছাগল / ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ টি; অন্যান্য ৯৬০ টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মূলত পশু কোরবানির হিসাব করে থাকে। অধিদপ্তর বলছে স্তরায়িত দৈব নমুনায়নের (স্ট্র্যাটিফায়েড র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং) ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এবারের হিসাব করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার ৩টি গ্রাম (ছোট, মাঝারি এবং বড়) থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে হিসাবটি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির পশু অবিক্রীত ছিল ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩ টি। কারণ হিসেবে অধিদপ্তর বলছে, এবার কোরবানির পশুর উৎপাদন বেশি ছিল। তাই পশু অবিক্রীত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩ টি। এরপর কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এই সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ গাজার ১৬২ টি। আর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এই সংখ্যা ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১ টি গবাদি পশু। এর পর বেশি কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই সংখ্যা ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০ টি। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২ টি গবাদিপশু। খুলনা বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪ টি গবাদিপশু।

বরিশাল বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৪ লাখ ৭৮৩ টি গবাদিপশু। রংপুর বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টি গবাদিপশু।




আজ পবিত্র হজের দিন: লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফা ময়দান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক  :

আজ পবিত্র হজের দিন, ইওয়ামুল আরাফাহ। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে পবিত্র আরাফার পাহাড় ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত ।

স্থানীয় সময় সূর্যোদয় পর্যন্ত মিনায় অবস্থান শেষে ফজরের পর পরই আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হন মুসল্লিরা। সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে হজের খুতবা শুনবেন লাখো মুসল্লিরা।

আরফাতের ময়দানে অবস্থানকেই মূল হজ বিবেচনা করা হয়। এবার পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ। যা ৩৪টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

আজ প্রভাত থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীর আরাফার আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময় শুভ্রতায় ভরে উঠেছে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিদের অবস্থানের কারণে সাদা আর সাদায় একাকার। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন।

আজ ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত ২৫ লক্ষাধিক মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে উপস্থিত হচ্ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৭ হাজারের বেশি। আজ ৯ জিলহজ মূল হজের দিন তারা এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন।

আরাফার ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মসজিদে হারামের প্রখ্যাত খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ।

সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তা’আলার জিকির আসকার ইবাদতে মশগুল থাকবেন। অতঃপর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন। সেই সঙ্গে জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে পুনরায় মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।

১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত।

জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত।

১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ।

স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাত বার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের মতো পবিত্র হজের খুতবা এবারও বাংলাসহ বহু ভাষায় অনুবাদ করা হবে। বাংলায় অনুবাদ করবেন চার জন বাংলাদেশি। তারা হলেন ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান ও নাজমুস সাকিব। তারা সবাই মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন।




শাপলার গণহত্যায় হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত: আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

২০১৩ সালের ৫ মে রাতের আঁধারে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন এর জন্য তার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার দায়ের করা উচিত বলে মনে করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ এখানে এসেছি। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো গণহত্যার জন্য এখনো কোনো মামলা হয়নি শেখ হাসিনার নামে। কেন আপনারা মামলা করেননি তা আমি জানি না। যারা শাপলায় গণহত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের মামলা করা  উচিত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমরা মুসলমান। উম্মতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকতে হবে। গাজার শহীদ এবং কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর যুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন করতে হবে।

নারী কমিশন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ইউনূস সরকারের কাছে আমার একটি প্রশ্ন, আপনারা অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করছেন। এই অপ্রয়োজনীয় ইস্যুর জন্য জুলাই আন্দোলন হয়নি। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে কি নারী সংস্কার কমিশন গঠন করার জন্য? না, ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আপনাদেরকে বলতে চাই, অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করবেন না ।অপ্রয়োজনীয় যত কমিশন গঠন করেছেন সব বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্রের সম্পদ অযথা কাজে নষ্ট করবেন না।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমাদের বৃহত্তর লড়াই ভারতের বিরুদ্ধে। আপনারা নারীনীতি নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের বৃহত্তর লড়াই নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না ।




হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদিতে পৌঁছলেন প্রথম ফ্লাইটের হজযাত্রীরা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

৩৯৮ জন হজযাত্রী নিয়ে প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দায় পৌঁছেছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৩ ফ্লাইটটি। এতে ছিলেন ৩৯৮ জন হজযাত্রী।

বোয়িং ৭৭৭-৩০০ মডেলের এই উড়োজাহাজটি সৌদি সময় সকাল ৬টায় জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হজ ফ্লাইট শুরুর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় মোট ১০টি ফ্লাইটে ৪ হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে আটটি ফ্লাইট জেদ্দায় এবং দুটি মদিনার প্রিন্স মুহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবে।

এ বছর তিনটি এয়ারলাইন্স ২৩২টি প্রাক-হজ ফ্লাইটের মাধ্যমে এদেশের হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাংলাদেশ বিমান ১১৮ টি প্রাক্‌-হজ ফ্লাইটে ৪৪ হাজার ৩০৭ জন, সাউদিয়া ৮০টি ফ্লাইটে ৩২ হাজার ৭৪০ জন ও ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইটে ১৩ হাজার ৬৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে। ৩১ মে প্রাক-হজ ফ্লাইট শেষ হবে। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন সরকারি মাধ্যমে এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে।

হাজীদের জন্য যোগাযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন দরকারি ফিচার সম্বলিত একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এছাড়া তাদেরকে হজ প্রিপেইড কার্ড ও মোবাইল সিম রোমিং সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।




সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, আজ রাতেই শুরু হচ্ছে হজ ফ্লাইট-ধর্ম মন্ত্রণালয়

পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইট আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে। রাত ২টা ১৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি এয়ারলাইন্সের প্রথম ফ্লাইটটি জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এবারও ঢাকা থেকেই হজযাত্রীদের সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮৭ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে ৭৯ শতাংশের ভিসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে। হজ ফ্লাইট আজ থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।

এবছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজে যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন রয়েছেন। আজ সন্ধ্যায় হজ ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে হজযাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে আসা শুরু করেছেন।

বিমানবন্দরের এডিসি আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হজযাত্রীদের বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবং সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন শাহজালাল বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক দুই শতাধিক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও থাকবে।

হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার জানান, বিমান বাংলাদেশসহ মোট তিনটি এয়ারলাইন্সের ২৩২টি ফ্লাইট এ বছর হজযাত্রী পরিবহন করবে। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি যাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে এবং হজ ফ্লাইট পরিচালনায় কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়নি।




কলমাকান্দায় বজ্রপাতে দিদারুল হক (২৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বজ্রপাতে দিদারুল হক (২৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের হাফসা (রা.) মহিলা মাদরাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন।

দিদারুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামে মধ্যপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি খারনৈ এলাকার হাফসা (রা.) মহিলা মাদরাসা ও আন নূর ইসলামী একাডেমির শিক্ষক ছিলেন।

খারনৈ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুল হক জানান, রোববার রাতে সাড়ে  ১০টার দিকে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় শিক্ষক দিদারুল হক বাজার থেকে মাদরাসায় যাচ্ছিলেন। এই সময় বিকট শব্দ একটি বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। পরে মাদরাসার মাঠে গিয়ে দিদারুল হকের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই স্থানীয় প্রশাসন ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়।

কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, বজ্রপাতে দিদারুল হক নামে একজন মাদরাসার শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ রাতেই তার স্বজনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।