সীমান্তে বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ভারত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

বিজিবি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রোববার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কোনোভাবেই কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে পারবে না। তবে ১৫০ গজের বাইরে হলে আপত্তি থাকবে না।

তিনি বলেন, ভারতকে এসব নির্মাণ কাজ করতে দেওয়া হবে না। ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় হাই কমিশনারকে ডেকে দুই একদিনের মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য জানাবে এবং নির্মাণ কাজের প্রতিবাদ জানাবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারত সীমান্তে কিছু অসম কাজ করেছে, যেগুলো তাদের করা উচিত হয়নি। আমাদের আগের সরকার তাদের সেই সুযোগ দিয়েছিল। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। বাকি ৮৮৫ কিলোমিটার সীমান্তে ভারত কাঁটাতারের নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি বলেন, দুদেশের চুক্তি অনুসারে যেকোনো স্থানে এ ধরনের উন্নয়ন কাজ করতে হলে দুদেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে। কিন্তু ভারত সেটি করেনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ শুরু করে ভারত। কিন্তু, বিজিবির এবং স্থানীয়দের শক্ত অবস্থানের কারণে ওই সব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।




পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ঢাকা মেইলের হারুন জামিল

ডিএনবি নিউ ডেস্ক :

জাতীয় সংসদ বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজেএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা মেইলের হেড অব নিউজ হারুন জামিল। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শওকত আলী খান লিথো।

নতুন সভাপতি হারুন জামিল পেয়েছেন ৬২ ভোট। একই পদের অন্য প্রার্থী দৈনিক কালের কণ্ঠের নিখিল ভদ্র পেয়েছেন ৫০ ভোট।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজেএ) বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১২টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ।

এতে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন হারুন জামিল। সাধারণ সম্পাদকসহ বাকি পদগুলোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। তবে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ক্রমধারা নির্ধারণে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।

সহসভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ফয়েজ উল্লাহ ভুঁইয়া। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মিজানুর রহমান, অর্থ সম্পাদক পদে শাহজাহান মোল্লা, দফতর সম্পাদক পদে নাজমুল ইসলাম তানিম আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন মশিউর রহমান (৭১ ভোট), মনিরুল ইসলাম (৫১ ভোট), রফিকুল ইসলাম সবুজ (৫১ ভোট), জাহাঙ্গীর কিরণ (৫০ ভোট) ও হাবিবুর রহমান পঞ্চায়েত (৪৮ ভোট)।

এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ-২) মো. এমদাদুল হক। আর নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন ও মো. শোয়াইব।




“২৪ ঘন্টার ভিতরে আমি দেখতে চাইছিলাম আমার স্বামীর খুনিরা রে,পুলিশ প্রশাসনের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায় কি করবো”

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

২৪ ঘন্টার ভিতরে আমি দেখতে চাইছিলাম আমার স্বামীর খুনিরা রে, কিন্তু এখন পর্যন্ত হেরা (পুলিশ) ওদের ধরতে পারছে না, আমার স্বামী পুলিশ প্রশাসনের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায়, কি করবো আমার কিছু বলার নাই!

এভাবে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া পুলিশ সদস্য শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন।
তিনি বলেন,আমার স্বামী এমন কোনো খারাপ কাজই করে নাই এমন কোন অপরাধই করে নাই যে একজন দাঁড় করাইয়া কইবো যে ভাই আপনি এই অপরাধটা কের লাইগা করলাইন। কেন এমন হলো, কারা আমার স্বামীকে হত্যা করল কিছুই বুঝতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, ২৪ ঘন্টার ভিতরে আমি দেখতে চাইছিলাম আমার স্বামীর খুনিরা রে, কিন্তু এখন পর্যন্ত হেরা (পুলিশ) ওদের ধরতে পারছে না, এহন আইসা উল্টা জিগায় আপনি কাউরে সন্দেহ করেন, আমি সন্দেহ করতাম কি সিসিটিভি ফুটেজে সরাসরি দেখা যাইতেছে লোকটা দৌড় মারছে,দৌড় মারা লোকটারেও তো ধইরা জিগান যা! তারা এটাও পারছে না। আমার স্বামী পুলিশ প্রশাসনের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায়,কি করবো আমার কিছু বলার নাই।

কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বাড়িতে এসে দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন পুলিশের এসআই শফিকুল ইসলাম (৪৫)। পুলিশের এই সদস্য জামালপুরে কর্মরত ছিলেন। শফিকুল ইসলামের দুর্গাপুরে এই সফরই হয়ে উঠল তার জীবনের শেষ সফর। পরিবার ও এলাকাবাসী শোকাহত এবং এই নির্মম হত্যার বিচার চান।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা (এসআই) পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের নোয়াগাঁও এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র।

জানা গেছে,শফিকুল ইসলাম জামালপুরে বেতারে এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। গত ৮ জানুয়ারি ছুটিতে তিনি নিজ বাসায় এসেছিলেন। ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারী) সন্ধ্যার দিকে বাগিচা পাড়ার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে বাজারে গিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম। বাজার থেকে ফেরার পথে ৬টা ২০ মিনিটের দিকে দুর্গাপুর পৌর শহরের উকিলপাড়া এলাকার পান মহল সংলগ্ন একটি গলি সড়কে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শফিকুল ইসলামকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাত,পা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা জখম করে। দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শফিকুল ইসলামের ডান পায়ের গুড়ালীর অংশ প্রায় আলাদা হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয় জনকে আসামি করে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম।
এদিকে গতকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল কালাম আযাদ ও জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান। পরে বিকেলে নিহত পুলিশ সদস্যের গ্রামের বাড়িতে জানাজায় অংশ নেন ও নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল কালাম আযাদ। তিনি জানান,ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং যাথাযতভাবে তদন্ত করা হবে এবং আমাদের বিশ্বাস অতিবিলম্বে এটার রহস্য উন্মোচন হবে।
আজ শনিবার সকাল ১১ টার দিকে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান।




জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনকে কর্মসংস্থানের প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আহতদের স্বচ্ছলতায় ফেরাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, সবাইকে তো সব জায়গায় দেওয়া সম্ভব না। আমাদের প্রস্তাবে যাকে যেখানে সম্ভব, সেখানে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।’

অর্থপাচার

অর্থ পাচারকে বিগত সরকারের সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে আখ্যায়িত করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি মানি লন্ডারিং করেছে।

মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবেন, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিগত সরকারের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল মানি লন্ডারিং। এটা নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কাজ করার কথা আমি বলেছি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের পাঁচ মাস হয়েছে। এখন পর্যন্ত কী ধরনের উন্নতি করেছেন, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা মিলিয়ে দেখেন, আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে কি না। পুলিশ তাদের কাজ শুরু করেছে। পুলিশ এখন একটু সময় নিয়ে কাজ করছে। রাস্তাঘাট চিনতে সময় লাগছে তাদের। গাড়ি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর অনেকে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘৫ থেকে ৬ আগস্ট কোনো সরকার ছিল না। তখন অনেকে পালিয়ে গেছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে গেছেন অনেকে। তখন তো আমরা ছিলাম না। তবে আমরা সরকারে আসার পর কেউ পালিয়ে গেছে কি না, সেটা বলেন। এরপরও যদি কেউ গিয়ে থাকেন, আমরা বিষয়টি দেখব।’#

পার্সটুডে




শিক্ষা সিলেবাসে ইসলামপন্থিদের নিয়ে বৈষম্যমূলক ইতিহাস বাতিলের দাবি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

সাধারণ শিক্ষায় সবক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা ও কওমি শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়াসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী কওমি ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার ( ৭ জানুয়ারি ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী কওমি ছাত্র আন্দোলনের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— জাতীয় শিক্ষা সিলেবাসে ইসলামপন্থিদের নিয়ে বৈষম্যমূলক ইতিহাস বাতিল করে সঠিক ইতিহাস ও অবদান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; যারা কৌশলে ইসলামপন্থিদের ইতিহাস ও অবদান এড়িয়ে গেছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে; কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে কওমি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহি:বিশ্বে কওমি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মানববন্ধনে আন্দোলনের সমন্বয়ক তোফায়েল আহমেদ বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শ্রেণির অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কিন্তু ৭০-এর অধিক শাহাদাত বরণকারী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাহসিকতার কথা তুলে ধরা হয়নি। আমরা মনে করি এটি এক ধরনের বৈষম্য ও ইতিহাস গোপনের অপচেষ্টা। যা কওমি শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, এমন পদক্ষেপের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, আপনারা সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরবেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন— বৈষম্যবিরোধী কওমি ছাত্র আন্দোলনের সহকারী সমন্বয়ক মাকসুদুর রহমান, মোস্তফা হোসাইন, জসিম উদ্দীন প্রমুখ।




কিশোরগঞ্জে মাহফিল চলাকালে দুর্বৃত্তের গুলি, আহত ২

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের চরশোলাকিয়া এলাকায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল চলাকালে দুর্বৃত্তের ইয়ার গানের গুলিতে দুইজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, ওই মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি আল আমিন সাদী (৩৮) এবং আগত বক্তার সফরসঙ্গী মো. জুলহাস মিয়া (১৯)।

রবিবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে জেলা শহরের চরশোলাকিয়া এলাকায় মাদরাসাতুল উলুমিল ইসলামিয়া দারুল জান্নাত কওমি মহিলা মাদরাসার উদ্যোগে কুমুদিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহফিলের মঞ্চে উঠার সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত ইয়ার গান থেকে গুলি ছোড়ে। এ সময় মাদরাসার পরিচালক মুফতি আল আমিন সাদী (৩৮) এবং আগত বক্তার সফরসঙ্গী মো. জুলহাস মিয়া (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত না হওয়ায় চিকিৎসক তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেন। এ ঘটনার পর মাহফিলটি বাতিল হয়ে যায়।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনাটি তদন্ত করছে। ঘটনাস্থল থেকে এয়ার গানের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।

হাআমা/




গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় মসজিদের ইমামের মৃত্যু

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় জাহিদ হাসান (৩০) নামে এক মসজিদের ইমাম নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম চৌমাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহিদ হাসান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহ কালুগাড়ী গ্রামের ছোলায়মান আলীর ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হাফেজ জাহিদ হাসান সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে বগুড়ায় নিজের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম চৌমাথা এলাকায় পৌঁছালে তিনি মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খান। এতে তার মাথা ও মুখ থেঁতলে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও আলেমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেন বলেন, “নিহত জাহিদ হাসান বগুড়ার একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।




ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু আজ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আজ বুধবার শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সময় আরো উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।

এ বছর ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর হংকংসহ সাতটি দেশের অংশগ্রহণে ৩৬২টি স্টল এবং প্যাভিলিয়ন অংশ নিচ্ছে।

কুড়িল, ভুলতা, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মেলা চলাকালে ৩০০টি বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা এবং শিশুদের জন্য ২৫ টাকা।

২০২২ সালে শেরেবাংলানগর থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পর এটি পূর্বাচল নতুন ভেন্যুতে তৃতীয় সংস্করণ।




ইজতেমা ময়দান দখলের পর লাঠি হাতে ফিরেছে সাদপন্থীরা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

হামলা চালিয়ে দখলের পর টঙ্গী ইজতেমা ময়দান ছেড়ে লাঠি হাতে ফিরে গেছে তাবলীগ জামাতের সাদপন্থীরা।

টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে সভা-সমাবেশের ওপর পুলিশের নিষেধাজ্ঞা জারির পর ময়দান ছাড়ে তারা।

টঙ্গীতে সরেজমিনে থেকে আবদুল্লাহ বিন মুস্তফার ধারণ করা ভিডিওতে এমন তথ্য জানা গেছে।

ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, লাঠি হাতে ফিরে যাচ্ছে হামলা করে নিরীহদের খুন করা সাদপন্থীরা।

এর আগে বুধবার গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার কথা বলা হয়েছে।

এরপর থেকেই হামলা করে দখলকারী সাদপন্থীদের মাঠ ছেড়ে চলে যেতে দেখেন স্থানীয়রা।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। ময়দান ও আশপাশে কোনো জমায়েত করা যাবে না। কোনো ধরনের মাইক ব্যবহারও করা যাবে না।”

মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সাদের অনুসারী সন্ত্রাসীদের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত তাবলীগ জামাতের মূলধারা আলেমওলামাদের পরিচালিত শূরায়ি নেজামের তিনজন মুসল্লি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে আজ বাদ মাগরিব টঙ্গী ময়দানে সাদপন্থীদের হামলায় নিহত কাকরাইল মারকাযে শূরায়ি নেজামের একজন শহীদের জানাযা সম্পন্ন হয়েছে।




‘বদলে যাওয়া’ নতুন বাংলাদেশ, এক অন্য রকম বিজয় দিবস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ছত্রিশে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে এক নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। নতুন এই দেশে তাই এবারের বিজয় দিবসের আনন্দে নব নব মাত্রা যুক্ত হচ্ছে।

বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্য ও বীরত্বের অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন ১৬ ডিসেম্বর। আজ আমাদের বিজয় দিবস। এই দিনটি বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। আজ আমাদের বলার দিন, “বল বীর বল উন্নত মম শির।”

পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম সগৌরবে উচ্চারণের দিন আজ ১৬ ডিসেম্বর। আজ আমাদের বলার দিন-“পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল।”

বিজয় দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিজয়ের দিনে তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রাকে সমুন্নত রাখতে জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর বিজয় দিবসটা ঠিক কীভাবে উদ্‌যাপন করা হবে-তা নিয়ে বেশ কৌতূহল ছিল জনমনে। অবশ্য এবারের বিজয় দিবস সগৌরবে যথাযথ মর্যাদায় দেশে ও বিদেশে উদযাপন করছে বাংলাদেশিরা।

তবে পাল্টে গেছে বাস্তবতা। সরকার পাল্টেছে, শীর্ষ ব্যক্তিসহ সরকারি লোকগুলো বদলে গেছে। আর বদলে গেছে দেশের রাজনীতির হাওয়া; নতুন হাওয়ায় গণমানুষের প্রকৃত স্বাধীনতার বিজয় অর্জনের আকাঙ্ক্ষাকেই লক্ষ্য ধরা হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফ্যাসিজমের অভিযোগ। তারা এখন বিচারের কাঠগড়ায়। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। সেদিন শেখ হাসিনা আশ্রয় নেন ভারতে। এরপর ৩ দিন সরকারবিহীন থাকে দেশ। ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশের ভার যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ৪ মাস পর এলো মহান বিজয় দিবস। সব রাজনৈতিক দল, আপামর জনতা মিলে উদযাপন করছে এবারের বিজয় দিবস। শুধু নেই আওয়ামী লীগ। এবার আর বিজয় দিবসে বাজবে না আওয়ামী লীগের জয়গান। উল্টো মানবতাবিরোধী অপরাধে তাদের বিচারের দাবি দেশজুড়ে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

যেভাবেই আর যে রূপান্তরের মধ্য দিয়েই সামনে যাক দেশ, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ; এ-ই চাওয়া লাল-সবুজের পাতাকার জমিনে সর্বজনে।

বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের মাহেন্দ্রক্ষণ; চিরগৌরবে সমুজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে বাংলাদেশ নাম প্রতিষ্ঠার মাইলফলকের দিন। আজ বিজয়ের দিন, আজ বাঙালি জাতির গর্বের দিন।

১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাম সংযোজিত করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে।

পাকিস্তানের নৃশংস হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে যখন এ দেশের ঘুমন্ত নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর ট্যাংক-কামানের মতো ভয়ংকর মারণাস্ত্র নিয়ে গণহত্যার পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল, তখন থেকেই শুরু হয়েছিল প্রতিরোধ সংগ্রাম। দীর্ঘ ৯ মাস হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো এক শক্তিমান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধ করেছিলেন দেশের সব ধর্ম, বর্ণ, ভাষার বীর সন্তানেরা।

৩০ লাখ মানুষের প্রাণ, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম আর বিপুল সম্পদহানির ভেতর দিয়ে মুক্তির সংগ্রামে সফল হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। ছিনিয়ে এনেছিলেন চূড়ান্ত বিজয়। জাতিকে মুক্ত করেছিলেন পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। ৫৩ বছর আগে ডিসেম্বরের এই দিনে কুয়াশাঢাকা বাংলার আকাশে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার সূর্য, উড্ডীন হয়েছিল লাল-সবুজ পতাকা।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেছেন, ‘‘১৬ ডিসেম্বর, আমাদের মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করেছি কাঙ্ক্ষিত বিজয়। আমরা পেয়েছি একটি সার্বভৌম দেশ, পবিত্ৰ সংবিধান, নিজস্ব মানচিত্র ও লাল-সবুজ পতাকা। পেয়েছি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে নিজেদের অস্তিত্ব আর মর্যাদা। বিজয়ের আনন্দঘন এ দিনে আমি দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বিজয়ের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন।’’

তিনি বলেন, ‘‘বিজয়ের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি সব জাতীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা দুই লক্ষ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে, যারা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন। আমি আরো স্মরণ করি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে। জাতি তাদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।’’

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘‘এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছে তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আমি মনে করি। বীরের দেশ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে-ইনশাআল্লাহ।’’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, ‘‘বিজয় দিবস কেবল আমাদের গর্বের উৎস নয়, এটি আমাদের শপথের দিনও। শপথ আমাদের একতাবদ্ধ থাকার, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করার।’’

তিনি বলেন, ‘‘আজকের এই দিনে, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি এবং তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাই। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সবাই মিলে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করছে।’’

‘‘দেশকে আরো উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর,’’ বলেও তিনি অঙ্গীকার করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এবার প্রথমবারের মতো ঢাকাসহ সব জেলা-উপজেলায় বসছে ‘বিজয় মেলা’। রাজধানীতে ‘বিজয় মেলা’ হবে পুরান ঢাকার জনসন রোডের ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে। সেখানে এখন চলছে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে ২২টি স্টল বসানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চারপাশের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে।

কর্মসূচি

যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয়ভাবে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠনিক সূচনা হবে।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

বিদেশি কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।

মাসব্যাপী ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা আয়োজন করা হয়েছে। শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

বঙ্গভবনে অপরাহ্নে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারগুলোকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দিবসটি উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করছে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হয়েছে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করার কথা।

চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা (নারায়ণগঞ্জ) ও বরিশালসহ বিআইডব্লিউটিসির ঘাটে এবং চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখ হয়েছে।

দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ররাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।