ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে-ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি, যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। তবে অনেকের মতো আমিও যুদ্ধবিরোধী মানুষ।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক, এটা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকায় বিমানবাহিনীর বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমানবাহিনীর গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদেরই নিকটে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার অবস্থা শুরু হয়েছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী।

প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নেই মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা এমন এক পরিস্থিতি, জয়ই একমাত্র অপশন। পরাজয় এখানে কোনো অপশন হতে পারে না। কাজেই আমরা প্রস্তুতি কত উচ্চ পর্যায়ে নিতে পারি, তার চেষ্টা থাকতেই হবে।

যুদ্ধ একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় আছে। এমনিতেই বাংলাদেশ মজবুত অর্থনীতির দেশ হয়ে গড়ে উঠতে পারেনি। তার মধ্যে বিগত সরকারের যথেচ্ছাচারের কারণে যা ছিল, তা-ও লুটপাট হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সামগ্রিক স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে। শান্তির দিকে হাত বাড়িয়ে রাখতে হবে সবসময়। কিন্তু প্রস্তুতিও থাকতে হবে।

বিমানবাহিনীর মহড়া দেখে খুবই ভালো লেগেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো আমরা সিনেমাতে দেখি। বাস্তবে দেখার খুব একটা সুযোগ হয় না। আজ আপনাদের কারণে সেটা বাস্তবে দেখলাম।

সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে মূল্যায়নে ড. ইউনূস বলেন, এতে আমাদের সাহস বাড়ে। শুধু যুদ্ধের সাহস না, আমাদেরই ছেলেমেয়েরা এমন দুর্দান্তভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে, কঠিন সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে, এটা দেখে বুক ভরে যায়।




পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকে তাক করা আছে: পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাদের ১৩০টির বেশি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র এমনি এমনি সাজিয়ে রাখা হয়নি, এগুলো শুধুই ভারতের জন্য রাখা হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে। গত শনিবার হানিফ আব্বাসি ভারতকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ‘এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই তোমাদের দিকে তাক করা আছে।’

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে বন্দকধারীদের হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় কোনো কোনো গণমাধ্যম খবর দিয়েছে- ভারত হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যেই পরমাণু অস্ত্রের হুমকি দিলেন পাকিস্তানি মন্ত্রী।

এর আগে ভারত ও পাকিস্তান তিনটি যুদ্ধ করেছে। এর মধ্যে দুটি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে। উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। তবে বর্তমানে দুই দেশ এর ভিন্ন ভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। ভারত ও পাকিস্তান আরও কয়েকবার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা দুই দেশকে সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।#

সূত্র: পার্সটুডে




ইরান ও আমেরিকার মধ্যে তৃতীয় দফার পরোক্ষ আলোচনার সমাপ্তি; ‘আলোচনা ছিল খুবই একনিষ্ঠ ও নিবিড়’

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

ওমানের মধ্যস্থতায় দেশটির রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার পরোক্ষ আলোচনা শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। আলোচনা শনিবার সকালে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। পার্সটুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

তৃতীয় দফার আলোচনা শেষ হওয়ার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, এবারের আলোচনা আগের দুই দফা আলোচনার চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি একনিষ্ঠ ও নিবিড় ছিল এবং আমরা কিছু কারিগরি বিষয় নিয়েও কথা বলেছিল। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের আলোচনাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচির মতে, উভয় পক্ষই আলোচনায় আন্তরিকতা দেখিয়েছে, যা অগ্রগতির লক্ষণ। যদিও ইরানি আলোচক দল এখনও সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছে।

নানা জল্পনার জবাবে আরাকচি আরও বলেন, আমাদের আলোচনা কেবল পারমাণবিক ইস্যুতে এবং আমরা অন্য কোনও বিষয় এখানে নিয়ে আসব না। আমরা কেবল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করছে। তিন দফা আলোচনাতেই এই বিষয়টি মেনে চলা হয়েছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় দফার পরোক্ষ আলোচনা শেষ হওয়ার পর এক্স নেটওয়ার্কে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আল-বুসাইদি বলেছেন, আগামী ৩ মে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চতুর্থ দফার পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

ইরানের কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় দফার আলোচনায় বিশেষজ্ঞ এবং কারিগরি টিমের মধ্যেও কথা হয়েছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজনীতি বিষয়ক উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখ্‌ত রাভানচি এবং আইন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি। আর আমেরিকার বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে ছিলেন মাইকেল অ্যান্টন।

সূত্র: পার্সটুডে-




ভারতের গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় রাজ্য গুজরাট থেকে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতভর রাজ্যের আহমেদাবাদ ও সুরাটে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ওই বাংলাদেশিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। শনিবার গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি এই তথ্য জানিয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে কমপক্ষে ৮৯০ বাংলাদেশি ও সুরাটে ১৩৪ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে গুজরাটে এখন পর্যন্ত এটিই বৃহত্তম অভিযান বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি।

গুজরাটে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের পর নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গুজরাটের এই মন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকাল মন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি বলেছেন, ‘‘অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারে রাজ্য পুলিশ ঐতিহাসিক সাফল্য দেখিয়েছে। আহমেদাবাদ পুলিশ ৮৯০ এবং সুরাট পুলিশ ১৩৪ বাংলাদেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে গুজরাট পুলিশের এটিই সবচেয়ে বড় অভিযান।’’

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা গুজরাটে আসার আগে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান করেন। সেখানে তারা জাল নথি ব্যবহার করেছিলেন। গুজরাটের এই মন্ত্রী বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অনেকেই মাদক চোরাচালান ও মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত। আমরা দেখেছি, সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা চার বাংলাদেশির মাঝে দু’জন কীভাবে আল-কায়েদার স্লিপার সেলে কাজ করেছেন। গুজরাটে এই বাংলাদেশিদের কার্যক্রমের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।

হর্ষ সাংঘভি বলেন, শিগগিরই ওই বাংলাদেশিদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘তারা ভারতে ও গুজরাটের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছানোর জন্য যে জাল নথি ব্যবহার করতেন, সেই বিষয়ে তদন্ত করা হবে। একই সঙ্গে যারা তাদের জাল নথি তৈরি করে দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সূত্র: পিটিআই, হিন্দুস্তান টাইমস।




ভারতের কাছে কাশ্মীরে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছে পাকিস্তান

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-
ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে যদি ভারতের হাতে কোনো প্রমাণ থাকে, তবে তা দেখাতে বলেছে পাকিস্তান।

দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান।

ইসহাক বলেন, ‘যদি পেহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ থাকে, তবে দয়া করে তা আমাদের এবং পুরো বিশ্বকে দেখান।’

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দারের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেন, পেহেলগামের ঘটনার জন্য ভারত সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেয়নি। কিন্তু ভারতের গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট অনেকেই এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দুষছে।

গত মঙ্গলবার ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের এক হামলায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হয়েছেন। পেহেলগামে ওই হামলার ঘটনায় প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। হামলায় আরও ১৭ জন আহত হয়েছেন।

পেহেলগামে মঙ্গলবারের সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের মদদ আছে অভিযোগ তুলে পরদিন বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাঁচটি পদক্ষেপ নেয় ভারত। এর জবাবে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান।#

সূত্র: পার্সটুডে




ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ভারত ও পাকিস্তান কেউই যেন কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। তাদের সম্পর্কটা যেন সাপে-নেউলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা যখন দু’দেশের চিরবৈরী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে, ঠিক তখনই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি এমন প্রস্তাব দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী। আমরা এমন সম্পর্ক উপভোগ করছি যা কয়েক শতক পুরনো সাংস্কৃতিক সভ্যতায় নীহিত।

ইরানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো তাদেরও আমরা সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করি। ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে থাকা আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা এই কঠিন সময়ে দুই দেশের মধ্যে বৃহৎ বোঝাপোড়া তৈরি করতে চাই।

পোস্টে পার্সিয়ান কবি সাদির একটি কবিতাও উল্লেখ করেছেন আব্বাস আরাগচি। যেখানে বলা হয়েছে, মানুষ একটি একক পরিবার, যদি পরিবারের কেউ ব্যথিত হয়, অন্য সদস্যদের অস্বস্তিও রয়ে যাবে।

এর আগে, গত ২২ এপ্রিল ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হন।

পাকিস্তান এতে পরোক্ষভাবে জড়িত আছে এমন অভিযোগ তুলে দেশটির সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের সব ধরনের ভিসা সুবিধা বাতিল ও একইসঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা দেয় নয়াদিল্লি।

জবাবে পাকিস্তানও প্রায় একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ভারতের বিমান নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ছাড়া সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের পাশাপাশি ভারতীয়দের ভিসা সুবিধাও বাতিল করেছে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিন্ধু নদের এক ফোঁটাও যেন পাকিস্তানে না যায়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তান জানায়, ভারত যদি পানি প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হিসেবে বিবেচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় জবাব দেবে।

প্রসঙ্গত, এরকম উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইরানের মধ্যস্থতার প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচকভাবে বিবেচিত হলেও এ বিষয়ে এখনও নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে




ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে নিরীহ পর্যটকদের হত্যার প্রতিবাদে মুসলিমদের বিক্ষোভ

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে নিরীহ পর্যটকদের নৃশংসভাবে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) পেহেলগাম জামে মসজিদের মাঠে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সন্ত্রাসের প্রতীকী কুশপুতুল দাহ করেন এবং ভারত সরকারকে এমন হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, ইসলাম কখনোই নিরীহ মানুষ হত্যার অনুমতি দেয় না। যারা স্বার্থের জন্য মানুষের জীবন নিয়ে খেলে, তাদের কঠোর শাস্তি পাওয়া উচিত।

কাশ্মিরের পেহেলগামে মঙ্গলবার নৃশংস হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন।

পাঞ্জাবের শাহি ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ উসমান রেহমানী লুধিয়ানভি কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং একে মানবতার জন্য লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন।

এই উপলক্ষে শাহি ইমাম বলেন, মানুষকে ধর্ম জিজ্ঞেস করে হত্যা করা কাপুরুষতা। তিনি উল্লেখ করেন, কোরআনে বলা হয়েছে, একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা মানে পুরো মানবজাতিকে হত্যা করার সমান।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যারা নিজেদের মুসলমান দাবি করে এ ধরনের সন্ত্রাসী কাজ করছে, তারা কোনো অবস্থাতেই ইসলামের অনুসারী হতে পারে না। শাহি ইমাম বলেন, শুধু এই ঘটনার তদন্ত করাই নয়, দোষীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়াও উচিত। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের ঐক্য ও সংহতি নষ্ট করা—তাই একতা বজায় রাখা খুবই জরুরি।

তিনি ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, এই সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক এবং এই হামলার পেছনে যে চক্রান্ত আছে তা জনসমক্ষে আনা হোক, যাতে কাশ্মিরে যে সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তা আবার ফিরিয়ে আনা যায়।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়ার




যদি আজ ফিলিস্তিনিদের নির্বাসিত করা হয় তাহলে আগামীকাল কার পালা?

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

সোমবার একদল ফরাসি বুদ্ধিজীবী লে মন্ডে পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন যেখানে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকারের চরমপন্থী নীতির নিন্দা জানানো হয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পরিকল্পনার প্রতি প্রতিক্রিয়া জানাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। পার্স টুডে অনুসারে, এই দলটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের নীতির সমালোচনা করে ঘোষণা করেছে যে, ইহুদিবাদী ইসরাইরি সরকার চরমপন্থী গোষ্ঠীর প্রভাবে গাজা এবং সম্ভবত পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের নেতৃত্বে একটি নতুন ‘অভিবাসন সংস্থার’ মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া এই পরিকল্পনাটি জাতিগত নির্মূলের লক্ষ্যে কাজ করছে। লেখকরা এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক নিয়ম, নৈতিক নীতি এবং মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করেন এবং সতর্ক করে দেন যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ফরাসি বুদ্ধিজীবীরা যুক্তি দেখান যে, ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকার আমেরিকার সহায়তায় বোমাবর্ষণ এবং অনাহারের মুখে অমানবিক পরিস্থিতিতে দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে গণ-নির্বাসনের জন্য প্রস্তুত করছে। গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো শব্দ দিয়ে বর্ণনা করা এই কর্মকাণ্ডগুলো ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর একটি নতুন আধিপত্যবাদী মতাদর্শের অংশ যা অন্যান্য জাতির অধিকারকে সম্মান না করে কেবল তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করে।

ফরাসি চিন্তাবিদরা জুন মাসে ইমানুয়েল ম্যকরন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছেন। কিন্তু একইসঙ্গে জোর দিয়ে বলছেন যে ফিলিস্তিনিদের বাঁচানোর জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিলে এই পরিকল্পনাগুলো অকার্যকর হয়ে পড়বে।

লেখকরা সতর্ক করে বলেছেন যে ইসরাইলি সরকারের চরমপন্থী নীতি গ্রহণ অন্যান্য সরকারের জন্য একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে এবং জিজ্ঞাসা করেন: যদি আজ ফিলিস্তিনিদের নির্বাসিত করা হয় তাহলে আগামীকাল কার পালা?

এই গোষ্ঠীটি গাজার ট্র্যাজেডিকে সরকারি নীতির বাইরে এবং বৈশ্বিক মূল্যবোধের পতনের লক্ষণ বলে মনে করে। তারা ইউরোপীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং দলগুলোকে এই মতাদর্শের স্পষ্ট নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ এই জরুরি অবস্থার মুখে নীরব থাকা অপরাধ।

লেখকরা জোর দিয়ে উপসংহারে পৌঁছেছেন যে,পতনের দ্বারপ্রান্তে থাকা বিশ্বে ফিলিস্তিনিদের একটি রাষ্ট্র এবং জীবনের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সমতা ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধ রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই নিবন্ধে যারা সাক্ষর করেছেন:

মিশেল ডুক্লোস, জাতিসংঘে সাবেক ফরাসি প্রতিনিধি এবং সিরিয়ায় সাবেক ফরাসি রাষ্ট্রদূত এবং মন্টেইন ইনস্টিটিউটের বিশেষ উপদেষ্টা

জিন-পল চেনিওলু, বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আইআরএমএমও  (iReMMO-)ইনস্টিটিউটের সভাপতি (ভূমধ্যসাগরীয় ও পশ্চিম এশীয় গবেষণা ও অধ্যয়ন ইনস্টিটিউট)

বার্নার্ড অরকেড, ফরাসি জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র (CNRS)-এর বিশিষ্ট গবেষণা পরিচালক এবং iReMMO-এর সদস্য

জ্যাক হান্টসিঙ্গার, এস্তোনিয়া, ম্যাসেডোনিয়া, ইসরাইলে ফরাসি রাষ্ট্রদূত এবং বার্নার্ডিন কলেজের সদস্য

জামাল আল-শালবি, হাশেমি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জারকা, জর্ডান) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক

ব্রিজিট করমি, লিবিয়া, মাল্টা এবং সিরিয়ায় প্রাক্তন ফরাসি রাষ্ট্রদূত

অ্যান্টোইন আরঝাকোভস্কি, গবেষণা পরিচালক, কলেজ বার্নার্ডিন প্যারিস

অ্যানি ইয়েস লোভালোয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট, আইআরইএমএমও

 

সূত্র: পার্সটুডে




পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের প্রতি মার্কিন সরকারের লোলুপ দৃষ্টি

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

আমেরিকান ম্যাগাজিন “ফরেন পলিসি” পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের প্রতি মার্কিন সরকারের প্রত্যাশা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ইসনার উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের সময় কিয়েভে পাঠানো সাহায্যের টাকা ফেরত নেওয়ার অজুহাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসন যখন ইউক্রেন সরকারের সাথে খনিজ সম্পদ বিষয়ে চুক্তি সম্পাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখনও কোন ফল পায়নি, তখন আমেরিকান ম্যাগাজিন “ফরেন পলিসি” পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের আগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরেছে।

“ফরেন পলিসি”র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এরিক মেয়ার খনি খাতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইসলামাবাদে একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সাথে এক বৈঠকে মেয়ার বলেন যে আমেরিকান কোম্পানিগুলি পাকিস্তানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

ফরেন পলিসির মতে, মার্কিন কংগ্রেসের আইন প্রণেতারা পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ আহরণে আমেরিকার ইচ্ছা সম্পর্কে ইউক্রেনের মতোই একই রকম সংকেত পাঠাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাকিস্তান পার্লামেন্টের যৌথ কমিটির সভাপতি জ্যাক বার্গম্যান সম্প্রতি বলেছেন যে খনিজ এলাকা পাকিস্তানের সাথে অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে।

২০২৩ সালের পর পাকিস্তান সফরকারী মার্কিন কংগ্রেসের কর্মকর্তাদের প্রথম প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে বার্গম্যান গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ সফর করেন।

পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে তামা ও সোনার বিশাল মজুদ, সেইসাথে লিথিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ এবং অনুমান করা হয় যে এর আয়তন প্রায় ৬০০,০০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে যা যুক্তরাজ্যের আয়তনের দ্বিগুণ। যদিও পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের মূল্য বর্তমানে ৮ ট্রিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হচ্ছে এবং ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে তার খনিজ সম্পদ নিয়ে গর্ব করে আসছে, কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ফরেন পলিসি মনে করে যে এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন সরকারের এই ধরনের বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ ইসলামাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন যে খনি খাতে বিনিয়োগ আন্তর্জাতিক অর্থায়নের উপর দেশের নির্ভরতা কমাতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে।#

সূত্র: পার্সটুডে




আল-আকসা মসজিদটি ভেঙে থার্ড টেম্পল নির্মাণের প্রচারণায় ইসরায়েল

ডিএনবি নিউজ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের মুসলিমদের পবিত্রতম স্থানগুলোর একটি আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড গভীর উদ্বেগ ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। মসজিদটি ধ্বংস করে সেখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের আহ্বান এবং পরিকল্পনার অভিযোগে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সরকার।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার বরাতে জানা গেছে, সম্প্রতি হিব্রু ভাষায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে আল-আকসা মসজিদে হামলার উসকানি এবং সেই জায়গায় নতুন ইহুদি উপাসনালয় নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে। বিষয়টিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয় জানায়, এই ধরনের আহ্বান শুধু ধর্মীয় অবমাননা নয়, বরং এটি সরাসরি মুসলিম বিশ্বের অনুভূতিতে আঘাত এবং পবিত্র স্থানের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই প্রচেষ্টা জেরুজালেমে ইসরায়েলি আগ্রাসনের অংশ এবং ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দেওয়ার কৌশল।

সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে, আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে তৃতীয় ইহুদি মন্দির গড়ে তোলার দৃশ্য। আগামী বছর জেরুজালেমে শিরোনামের এই ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

ফিলিস্তিনিদের মতে, আল-আকসা শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি তাদের জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পবিত্র স্থান। যদিও প্রাঙ্গণের প্রশাসনিক দায়িত্ব জর্ডানের হাতে, ইসরায়েলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে প্রবেশ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা।

অন্যদিকে, ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ বিশ্বাস করে, এই স্থানেই প্রাচীনকালে প্রথম ও দ্বিতীয় টেম্পল স্থাপিত ছিল, যা রোমান সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ৭০ সালে ধ্বংস করে। সেই ঐতিহাসিক পটভূমিকে সামনে রেখেই তারা এখানে তৃতীয় মন্দির নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

ডানপন্থি ইসরায়েলি রাজনীতিবিদরা এই দাবি আরও জোরদার করছেন। জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ২০২৪ সালের আগস্টে আল-আকসা প্রাঙ্গণে টেম্পল মাউন্ট স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে বিতর্কে জড়ান। জানা গেছে, তিনি ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তত ছয়বার আল-আকসা সফর করেছেন। প্রতিবারই এই সফর ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সরকার এই ঘটনাগুলোকে একটি পরিকল্পিত উসকানি হিসেবে দেখছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বর্তমানে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ কার্যত ডানপন্থি ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও বসতি স্থাপনকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তারা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই জোরপূর্বক মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করছে এবং সেখানে ধর্মীয় আচার পালন করছে, যা বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক নিষিদ্ধ।

আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যে অনেকেই এই পরিস্থিতিকে হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন, যেখানে মুসলিম ও ইহুদি অংশে জায়গা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকে আশঙ্কা করছেন, আল-আকসার ক্ষেত্রেও হয়তো ইসরায়েল এমনই কিছু পরিকল্পনা করছে।

এই পরিস্থিতিতে আল-আকসা মসজিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন মুসলিম বিশ্ব ও ফিলিস্তিনি জনগণ আন্তর্জাতিক সংহতি ও প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছে। তারা বলছে, এই পবিত্র স্থানকে রক্ষা করা কেবল একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।