রাফাহ ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা নেতানিয়াহুর, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি চুক্তি

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও জারি রয়েছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। গেল ১০ অক্টোবর চুক্তি কার্যকরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে তেল আবিব।

গোলাবর্ষণ, টার্গেট হামলা ও বেসামরিকদের ওপরগুলি চালানোর অভিযোগ এনেছে স্থানীয় প্রশাসন। মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এসব হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ট্যাংক, ড্রোন ও সেনা যান।

শেজাইয়া, আল-তুফাহ ও যায়তুনেসেনা মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। খান ইউনিস থেকেও সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়নি। এমনকি বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুনে এখনও ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।

এই অবস্থার মধ্যে গাজার একমাত্র আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার রাফাহ সীমান্ত খুলে দেয়ার কথা থাকলেও তা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, হামাস এখনো সব মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয়নি, তাই সীমান্ত খোলা সম্ভব নয়।

ফিলিস্তিনি দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, গেল সোমবার থেকে রাফাহ খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তে তা স্থগিত হয়ে যায়। স্বাধীনতাকামী সংগঠনের দাবি করেছে যে রাফাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন।

রাফাহ সীমান্ত পুনরায় খোলা ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল। ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল যুদ্ধ বন্ধ করে গাজার মানবিক সংকট কিছুটা লাঘব করা।

হামাস শনিবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরাইল রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখলে বন্দিদের মরদেহ হস্তান্তর বিলম্বিত হবে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার রাতে গাজায় আরও দুই ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস।  ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ও নিরাপত্তা সংস্থা (আইএসএ) এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।




আফগান সীমান্তে আত্মঘাতী হামলা, ৭ পাক সেনা নিহত

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

প্রতিবেশী আফগানিস্তনের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অস্থায়ী যুদ্ধবরতির শেষ দিনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর ওয়াজিরিস্তানে একটি সামরিক ক্যাম্পে সশস্ত্র গ্রুপের হামলায় পাঁচ সেনা নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন জঙ্গি বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি একটি সামরিক শিবির হিসেবে ব্যবহার করা একটি দুর্গের প্রাচীরে আঘাত করে। এ সময় অন্য দুজন ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তারা নিহত হয়।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিককোনো মন্তব্য করেনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের নির্দেশে  তালেবান সরকার পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে। আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি যখন ভারত সফরে ছিলেন, তখনই এই হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে আছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় দুপুর ১টায় এই যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) পাক-আফগান সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে ফেডারেল মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য বল এখন তালেবান সরকারের কোর্টে।




দুই বছর যুদ্ধ করেও আমরা জিততে পারিনি গাজা এখন হামাসের হাতে: ইসরায়েলি সাংসদ

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

ভঙ্গুর যুদ্ধ-বিরতি পরিস্থিতি! ইসরায়েলের নতুন ব্যাপক হামলা কি আসন্ন?

যদিও ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এখনও গাজা যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে চলছে এবং ইহুদিবাদী বন্দীদের ফিরিয়ে দিয়েছে তা সত্ত্বেও, ইসরায়েলি যুদ্ধমন্ত্রী বলেছেন: “যদি হামাস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে আবারও যুদ্ধে ফিরে যাব।”

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইস্রায়েল কাট‌্জ‌্ ঘোষণা করেছেন: “যুদ্ধ পুনরায় শুরু হলে হামাসকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার জন্য আমি সেনাবাহিনীকে একটি বিস্তৃত সামরিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছি।”

কাটজ আরও দাবি করেছেন যে গাজা অস্ত্রমুক্ত না হওয়া এবং ইসরায়েলের জন্য কোনও হুমকি না হওয়া পর্যন্ত আমরা গাজার সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীর সাথে কাজ করব।

ইসরায়েলি যুদ্ধমন্ত্রী বলেন যে হামাস গাজা যুদ্ধবিরতির সমস্ত বিধান মেনে চলে এবং ইহুদি বন্দীদের ফিরিয়ে দিয়েছে, তবে হামাসকে অবশ্যই নিহত সকল বন্দীর মৃতদেহ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং তাদের অস্ত্র ধ্বংস করতে হবে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ইসরায়েলি বাহিনী আবার আক্রমণ শুরু করতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় সিএনএন-এর সাথে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন: “হামাসের সাথে যা ঘটছে, তা দ্রুত সমাধান করা হবে।”

গাজা যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে হামাসকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি ও আমেরিকান কর্মকর্তাদের বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর, অনেক বিশেষজ্ঞ এবং ইসরায়েলি বিশ্লেষক স্বীকার করেছেন যে ইসরায়েল প্রতিরোধ আন্দোলনকে ধ্বংস এবং গাজাকে নিরস্ত্র করার লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে, অনেক ইহুদিবাদী বিশ্লেষক, দুই বছরের গাজা যুদ্ধে লক্ষ্যগুলো অর্জনে ইসরায়েলের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে, গাজায় হামাস আন্দোলনের টিকে থাকা, এর অবিসংবাদিত শক্তি হওয়া এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ইহুদিবাদী বিশেষজ্ঞ ওরিট পার্লফ বলেন: “হামাসের কোন বিকল্প নেই এবং গাজার জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন করে।”

তিনি আরও বলেন: “এখন, হামাস তার শক্তির শীর্ষে রয়েছে, ইসরায়েল যে সমস্ত বিকল্প তৈরি করার চেষ্টা করছিল তা ধ্বংস করার জন্য ময়দানে প্রবেশ করেছে হামাস।”

এই ইহুদিবাদী বিশেষজ্ঞ আবারও জোর দিয়ে বলেছেন যে হামাসের কোন বিকল্প থাকবে না, তিনি বলেন: “হামাস উত্তর গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে, এবং এই উপত্যকার জনগণ হামাসের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে।”

সম্প্রতি, ইসরায়েলি পার্লামেন্টের (নেসেট) সদস্য অমিত হালাভিও বলেছেন: “হামাসের কাছে আমরা পরাজিত হয়েছি; এই আন্দোলন তার সর্বশক্তি দিয়ে গাজায় তার শক্তি প্রদর্শন করছে; আমরা দুই বছর ধরে নিজেদেরকে প্রতারিত করেছি, কিন্তু আমরা জিততে পারিনি, এবং এখন গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাতে।” #

সূত্র: পার্স টুডে




যুদ্ধবিরতির পর কেমন হতে যাচ্ছে গাজার শাসনব্যবস্থা

ডিএনবি নিউজ আন্তঃ ডেস্ক:

অবশেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মাধ্য দিয়ে টানা দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাচ্ছে গাজাবাসী। এখন আলোচনা হচ্ছে ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে দ্বি-স্তরভিত্তিক শাসনব্যবস্থা নিয়ে। যেখানে বলা হয়েছে- নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ফিলিস্তিনি কমিটি দেখভাল করলেও, অর্থনীতি আর প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ‘বোর্ড অব পিস’। যার নেতৃত্বে থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।

তবে, এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় বিদেশি শাসন মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাসসহ ফিলিস্তিনের কয়েকটি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো।

এমতাবয়স্থায় প্রশ্ন উঠছে, কেমন হতে যাচ্ছে গাজার শাসনব্যবস্থা?

এদিকে, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পর গাজা উপত্যকা থেকে আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল। নিজ ভূমিতে ফিরছে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী। চলছে হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলিদের মুক্তির প্রক্রিয়াও।

এতোসব অগ্রগতি সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি চুক্তির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই রয়েছে অস্পষ্টতা। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচনা হচ্ছে যুদ্ধপরবর্তী গাজার শাসনব্যবস্থা নিয়ে। হামাসকে বাদ দিয়ে সেখানে একটি দুই-স্তরের শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. সানাম ওয়াকিল বলেন, ‘শুনেছি গাজায় একটি দ্বি-স্তরীয় শাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, উপত্যকার দৈনন্দিন সেবা পরিচালনা করবে ফিলিস্তিনিদের একটি কমিটি। ওপরে থাকবে ‘বোর্ড অব পিস’। যার নেতৃত্বে থাকবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। ফিলিস্তিনি কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। কার্যত এটিই হবে গাজার অঘোষিত সরকার।’

ট্রাম্পের ২০ দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে দৃশ্যমান অগ্রগতির চেয়ে প্রশ্নই বেশি। ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন করার কথা বলা হয়েছে। হামাসের নিরাস্ত্রীকরণ, ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার ও একটি ফিলিস্তিনি নাগরিক পুলিশ বাহিনী গঠনসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে তারা। তবে, এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।’

ড. সানাম ওয়াকিল আরও বলেন, ‘এই পরিকল্পনা এখনই স্থায়ী শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারবে এমনটা মনে হচ্ছে না। সম্ভাবনা থাকলেও পরিকল্পনায় এখনো ফাঁক রয়ে গেছে। এখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোযোগ প্রয়োজন। পাশাপাশি দরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক নীতিনির্ধারকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।’

তবে বিশ্লেষকদের মতে, শুধু শাসনব্যবস্থাই নয়, হামাসের নিরস্ত্রীকরণসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশকিছু বিষয়েও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি প্রস্তাবে।

এদিকে, এক যৌথ বিবৃতিতে গাজার শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ফিলিস্তিনিদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস, ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং দ্য পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি)। এ ব্যাপারে বিদেশি হস্তক্ষেপ মানতে নারাজ তারা।

এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গাজায় স্থায়ী শান্তি ফিরবে কি না তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় দফার আলোচনায় অংশ নিতে মিসরে যেতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।




ইসরায়েল থেকে মুক্ত শহিদুল আলম, আজই ফিরছেন দেশে

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তুরস্কে চলে এসেছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি আজ শুক্রবার দুপুরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান।

স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিট) শহিদুল আলমকে বহনকারী ফ্লাইটটি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক জানিয়েছেন। ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বিমানবন্দরে শহিদুল আলমকে স্বাগত জানান।

রাষ্ট্রদূত আমানুল হক জানিয়েছেন, আজই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করছেন শহিদুল আলম। ইস্তাম্বুলের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা উদ্দেশে উড্ডয়ন করবে। ওই ফ্লাইটে দেশের পথে যাত্রা করবেন শহিদুল আলম। ফ্লাইটটি আগামীকাল শনিবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাবে।

আলোকচিত্রী শহিদুল আলম স্বাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নাগরিক অধিকার নিয়েও সোচ্চার তিনি। গাজা অভিমুখী একটি নৌবহরে অংশ নিয়ে গত বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হন শহিদুল আলম।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম গাজা অভিমুখে ওই নৌযাত্রা শুরু করেছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এ বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা।

পরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর থেকেই শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।

কারামুক্ত হয়ে শহিদুল আলম আজই ইসরায়েল থেকে তুরস্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন। শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তাঁর প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।#




ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা; গাজায় যুদ্ধে পরাজয় থেকে ইসরায়েলকে রক্ষার চেষ্টা

আঞ্চলিক প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা পরিকল্পনাকে 'ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে পরাজয় থেকে বাঁচানোর চেষ্টা' হিসেবে অভিহিত করেছে।

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলন, হামাস এবং ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ ঘোষণা করেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা বিষয়ক নতুন পরিকল্পনা মূলত ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীকে গাজার যুদ্ধে পরাজয় থেকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

দখলদারিত্বের নতুন নির্দেশিকা: ইসলামি জিহাদ

ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আল-নাখালা বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়োমিন নেতানিয়াহু’র যৌথ সংবাদ সম্মেলনের বিবৃতি দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখার নির্দেশিকা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে যেসব লক্ষ্য যুদ্ধে অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা রাজনৈতিকভাবে হাসিল করতে চাইছে। তাই এই তথাকথিত মার্কিন-ইসরায়েলি পরিকল্পনা আসলে গোটা অঞ্চলকে বিস্ফোরণের দিকে ঠেলে দেওয়ার নির্দেশনা।

হামাসের অবস্থান: অস্ত্র, বন্দি মুক্তি ও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি

একই বিষয়ে হামাস নেতা তাহের আল-নোনো আল-আরাবি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রতিরোধের অস্ত্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। ‘ইসরায়েলি’ বন্দিদের মুক্তি- যুদ্ধের অবসান ও গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহারের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ বিষয়ে তারা আন্তরিক। তবে বন্দি মুক্তি অবশ্যই এমন এক চুক্তির অংশ হতে হবে যা যুদ্ধ শেষ করবে এবং দখলদার সেনাদের প্রত্যাহার নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও জানান, হামাস দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতিতে প্রস্তুত এবং গাজা উপত্যকার জন্য স্বাধীন প্রশাসন গঠনে মিশরের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তারা মার্কিন পরিকল্পনাটি এমনভাবে বিবেচনা করবেন যাতে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা হয়। হামাস যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চায় না এবং ফিলিস্তিনি স্বার্থবিরোধী নয় এমন যেকোনো প্রস্তাব তারা গুরুত্বের সঙ্গে অধ্যয়ন করবে। আল-নোনো স্পষ্ট করে বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণ অপ্রাপ্তবয়স্ক নয় এবং তারা বাইরে থেকে কোনো অভিভাবকত্ব মেনে নেবে না।

হামাসের আরেক নেতা মাহমুদ মারদাউই বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা মূলত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতির অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা। ঘোষিত পরিকল্পনা অস্পষ্ট এবং এতে কোনো নিশ্চয়তা নেই।

তিনি জানান, হামাস এমন কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করবে না যাতে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও গণহত্যা থেকে সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত নেই। মারদাউই আরও বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা এখনো হামাসের কাছে পৌঁছেনি, এমনকি কোনো ফিলিস্তিনি পক্ষও তা পায়নি। যদিও তারা পরিকল্পনাটি সরাসরি দেখেননি, তবু এর বিধানসমূহ স্পষ্টতই ‘ইসরায়েলি’ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

আনসারুল্লাহর প্রতিক্রিয়া: হামাসকে বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সদস্য মোহাম্মদ আল-ফারাহ এ সম্পর্কে বলেন, ট্রাম্পের গাজার নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অবিবেচক এবং অকার্যকর। এর মূল উদ্দেশ্য হলো হামাসকে বিচ্ছিন্ন করা এবং বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলবিরোধী ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করা। তার মতে, এই পরিকল্পনার কোনো বাস্তবায়নযোগ্য কাঠামো নেই।

অনেক বিশ্লেষক ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা হলো গাজায় সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা থেকে ইসরায়েলি শাসনকে রক্ষার প্রচেষ্টা। ইসরায়েল গাজা যুদ্ধে তার সামরিক লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে; যেমন প্রতিরোধের অবকাঠামো ধ্বংস করা, বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্ত করা, কিংবা গাজার আশেপাশের ইসরায়েলি বসতিগুলোতে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা। এখন ট্রাম্পের পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু হলো হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজাকে আন্তর্জাতিক সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া—যা মূলত সেই লক্ষ্যগুলো রাজনৈতিক পথে অর্জনের চেষ্টা।

ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনা তুলে ধরেন ট্রাম্প। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পাশে ছিলেন ইসরায়েলের উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র করার এবং গাজার প্রশাসন থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধের প্রধান শক্তিগুলোকে সরাতে চাইছে।

টনি ব্লেয়ার ও GITA: পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণের নতুন রূপ

পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার গাজার অস্থায়ী প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন এবং তিনি ‘গাজা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিশন অথরিটি’ বা GITA-র নেতৃত্ব দেবেন। ব্লেয়ার, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ, তাকে সামনে আনার মানে হলো পশ্চিমা-নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক কাঠামোর মাধ্যমে গাজাকে নিয়ন্ত্রণ করা। এটি ফিলিস্তিনি জনগণ ও প্রতিরোধ শক্তির ইচ্ছাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু নয়।

গাজার বাসিন্দাদের মিশর বা জর্ডানে স্থানান্তরের প্রস্তাবকেও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘জোরপূর্বক উচ্ছেদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনাদের দখলকৃত গাজা অঞ্চল থেকে প্রত্যাহারের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মতে, এটি কেবল আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর জন্য ইসরায়েলের এক রাজনৈতিক কৌশল।

প্রতিরোধ গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা সংকট সমাধানের পথ নয়, বরং ইসরায়েলি শাসনকে পরাজয় থেকে বাঁচানোর চেষ্টা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের উপর মার্কিন-ইসরায়েলি ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। এটি ইসরায়েলি দখলদারিত্ব শেষ করার বদলে সেটিকে দীর্ঘায়িত করবে।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ ও বহু বিশ্লেষকের মতে, ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করে না। পরিকল্পনার কাঠামো, বিষয়বস্তু ও লক্ষ্য সবই ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক, মানবিক ও বৈধ চাহিদাকে উপেক্ষা করে, এবং কেবল ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়।

এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের অংশগ্রহণ ছাড়াই তৈরি হয়েছে, যেখানে গাজা বা পশ্চিম তীরের জনগণের মতামত নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এটি আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি “জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার”-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পরিকল্পনায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে পুরোপুরি নিরস্ত্র করার কথা বলা হলেও, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান, বসতি নির্মাণ বন্ধ করা বা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। ফলে এই পরিকল্পনা প্রতিরোধকে প্রতিরক্ষা থেকে বঞ্চিত করবে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপত্তা বা স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে না।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা মূলত গাজায় ইসরায়েলের পরাজয় রোধে একটি হাতিয়ার, যা মার্কিন-ইসরায়েলি স্বার্থের ভিত্তিতে নতুন শৃঙ্খলা চাপিয়ে দিতে চায় এবং ফিলিস্তিন সংকটের কোনো ন্যায্য সমাধান দেয় না।#

 সূত্র: পার্সটুডে




এবার ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল ইউরোপের আরেক দেশ- সান মারিনো

এবার স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল ইউরোপের দেশ সান মারিনো। শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেন সান মারিনোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুকা বেক্কারি। খবর আরব নিউজের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “গত ১৫ মে আমাদের সংসদ সর্বসম্মত সমর্থনসহ সরকারকে এ বছরের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আজ এই পরিষদের সামনে আমরা সেই নির্দেশ পূরণের ঘোষণা দিচ্ছি। সান মারিনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।’

বেক্কারি জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী নিরাপদ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার ভেতরে ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

তিনি আরো বলেন, “একটি রাষ্ট্র পাওয়া ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার। এটি হামাসের জন্য কোনো পুরস্কার নয় এবং কখনো হতে পারে না।”

তিনি গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এটিকে ‘অসহনীয়’ এবং ‘আমাদের সময়ের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ও দীর্ঘস্থায়ী ট্র্যাজেডিগুলোর মধ্যে একটি’ হিসেবে অভিহিত করেন।

বেক্কারি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার নিন্দা জানান এবং সব জিম্মিকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো একবার তার দেশের দাবি পুনরুল্লেখ করেন, গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, পূর্ণ ও বাধাহীন মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান, যা যে কোনো ‘বাস্তবসম্মত শান্তির সম্ভাবনাকে’ নস্যাৎ করছে।

বেক্কারি আরো বলেন, “গাজায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, অনাহার ও বাস্তুচ্যুতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের সম্মিলিত শাস্তিকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। আমরা যদি ঐক্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে পদক্ষেপ না নিই, তাহলে মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে দুটি জাতির পাশাপাশি বসবাসের দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতিসংঘের বৈশ্বিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজিত ওই সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, আন্দোর্রা ও মোনাকো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে । এর আগে চলতি বছরের ২০ মার্চ মেক্সিকো সরকার জানায়, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।




পাকিস্তানের জ্বালানি পরিবহনকারী ট্যাঙ্কারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইসরায়েলের চালানো ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে একটি জ্বালানি পরিবহনকারী ট্যাঙ্কার, যাতে ২৪ জন পাকিস্তানি ছাড়াও মোট ২৭ জন ক্রো ছিলেন। ইয়েমেনের একটি বন্দরে অবস্থানকালে এ হামলা চালানো হয়। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

মন্ত্রী জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর ওই জাহাজটি ইয়েমেনের রাস ইসা বন্দরে নোঙর করেছিল, যা বর্তমানে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ট্যাঙ্কারে কর্মরত ক্রুদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি নাগরিক, দুজন শ্রীলঙ্কান ও একজন নেপালি ছিলেন। জাহাজটির ক্যাপ্টেনও পাকিস্তানের নাগরিক।

ড্রোন হামলার পরপরই ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন জাহাজের ক্রুরা। মোহসিন নকভি বলেন, ‘এরপর হুথি নৌযান ট্যাঙ্কার থামায় এবং ক্রুদের জাহাজে বন্দি করে রাখে।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে জাহাজ ও এর আরোহীরা হুতিদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে ইয়েমেনের জলসীমার বাইরে চলে গেছে।

ঘটনার পর যেসব পক্ষ সহযোগিতা করেছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নকভি। তিনি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের নিরাপদ মুক্তি নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দিন-রাত অতুলনীয় পরিশ্রম করেছে।’ একইসঙ্গে তিনি ওমান ও সৌদি আরবে অবস্থানরত পাকিস্তানি কূটনৈতিকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এর আগে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, জাহাজের ২৪ জন পাকিস্তানি ক্রু নিরাপদে আছেন এবং তারা ইয়েমেনি জলসীমা ত্যাগ করছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই ইয়েমেনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইসলামাবাদ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, জাহাজে অবস্থানরত প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে ট্যাঙ্কারটি যাত্রা শুরু করেছে এবং সব ক্রু নিরাপদে রয়েছে।




বোমা মেরে মসজিদ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাকারী সাবেক মার্কিন সেনা রিচার্ড ম্যাক আজ ধর্মপ্রাণ মুসলিম!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মেরিন সেনা রিচার্ড ম্যাক ম্যাককিনি এক সময় ইসলাম ও মুসলমানদের চরম ঘৃণা করতেন। ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেন ঘটনার পর তার মনে ইসলাম বিদ্বেষ জন্ম নেয়। ঘৃণা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, তিনি নিজ শহরের একটি মসজিদে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেই মসজিদেই যখন তিনি প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য যান, তখন মুসলমানদের আচরণ ও ভালোবাসা তাকে বদলে দেয়। আজ সেই মানুষটিই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম, এমনকি এখন সেই মসজিদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন।

সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের মান্সি শহরে ফিরে আসেন ম্যাককিনি। তখন তার মনে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আরও গভীর হয়। তিনি ঠিক করেন, নিজের শহরের মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এ একটি বোমা রেখে সেটিকে উড়িয়ে দেবেন।

তবে হামলার আগে পরিকল্পনা ও তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি মসজিদে যান “গোয়েন্দা সেজে”। তার ধারণা ছিল, মুসলমানরা তাকে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করবে, যা তার হামলার পরিকল্পনাকে নৈতিক বৈধতা দেবে।

কিন্তু ঘটনাটি ঘটে সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে। মসজিদে গিয়ে তিনি পান উষ্ণ অভ্যর্থনা, ভালোবাসা এবং খোলামেলা আলাপের পরিবেশ। মুসলিম সদস্যরা তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন, তাকে সাদর আমন্ত্রণ জানান এবং কোনোভাবেই তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখেন না।

এরপর টানা আট সপ্তাহ ধরে তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানতে থাকেন, কোরআন-এর অনুবাদ পড়েন এবং মুসলমানদের সঙ্গে সময় কাটান।

অবশেষে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নাম রাখেন মুহাম্মদ ম্যাককিনি। বর্তমানে তিনি মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এর বোর্ড প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ মসজিদের প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন।

তার জীবনের এই পরিবর্তন নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি ফিল্ম) — “স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট” (Stranger at the Gate) — যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং অস্কার মনোনয়নও পেয়েছে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন: “আমি যাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিলাম, তারাই আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছে।”
“ইসলাম আমাকে শান্তি দিয়েছে, আর মুসলমানরা আমাকে নতুন জীবন।”

এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় ঘৃণার জবাব ঘৃণা নয়, বরং ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে মন পরিবর্তন করতে। আর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন।




ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাজ্য-কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া, স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫০

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে একযোগে স্বীকৃতি দিলো তিন প্রভাবশালী দেশ — যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) তিনটি দেশ পর্যায়ক্রমে এ ঘোষণা দেয়।

এক ভিডিওবার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। তিনি জানান, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে পুনরুজ্জীবিত করতেই লন্ডনের এই সিদ্ধান্ত।

এদিকে, যৌথ বিবৃতিতে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ঘোষণা করে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানায় অস্ট্রেলিয়া। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি অং স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে, জি-সেভেন জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয় কানাডা। এ নিয়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫০।