গাজা যুদ্ধবিরতির আওতায় ৩ ইসরাইলি বন্দির বিনিময়ে মুক্তি পাচ্ছেন ১১০ ফিলিস্তিনি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বন্দি বিনিময়ের তৃতীয় ধাপ হিসেবে তিনজন ইসরাইলি বন্দির বিনিময়ে ৩০ জন নাবালকসহ ১১০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত ইসরাইল।

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স ক্লাব এ্যাডভোকেসি গ্রুপ জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার ১১০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। এতে আরো বলা হয়েছে, বন্দিরা দুপুরের দিকে রামাল্লার রাদানা এলাকায় পৌছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বন্দিদের তালিকা প্রকাশ করে গ্রুপটি জানিয়েছে যে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৩০ জন নাবালক,৩২ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ৪৮ জন বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করছেন। ক্লাবের মতে, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে ২০ জনকে নির্বাসনে পাঠানো হবে। এছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে বন্দি বিনিময়ের তৃতীয় ধাপে পাঁচ থাই নাগরিকসহ তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। শেষ দুটি বিনিময়ে হামাস ২৯০ জন বন্দির বিনিময়ে সাতজন ইসরাইলি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে যে শনিবার চতুর্থ ধাপে তিনজন ইসরাইলিকে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে। তিনজন ইসরাইলি বন্দির বিনিময়ে ৯০ জন ফিলিস্তিনির মুক্তির মাধ্যমে গত ১৯ জানুয়ারী গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল।

এদিকে, ইসরাইল চুক্তির আওতায় মুক্তি পেতে যাওয়া ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে ২৩০ জনের বেশি বন্দি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করেছেন এবং মুক্তির পর তাদেরকে স্থায়ীভাবে নির্বাসনে পাঠানো হবে।




ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর সবচেয়ে বড় চুক্তিটি হলো বাংলাদেশের সঙ্গে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে নন-বাইন্ডিং চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরল গ্যাস সরবরাহ করবে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) আর্জেন্ট এলএনজি এ তথ্য জানায় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এটি প্রথম বড় মার্কিন এলএনজি সরবরাহ চুক্তি। তাদের মতে, এটি নতুন প্রশাসনের জ্বালানি-বান্ধব নীতির প্রতি শিল্পের আস্থা প্রতিফলিত করে। বাংলাদেশের সঙ্গে আর্জেন্ট এলএনজির চুক্তি প্রমাণ করছে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর এই খাত সংশ্লিষ্টদের আস্থা রয়েছে।

আর্জেন্ট এলএনজি লুজিয়ানাতে ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন পার এনুম (এমটিপিএ) অবকাঠামো তৈরি করছে। যা তাদের সরবরাহ ব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করবে।

যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, সেসব দেশে গ্যাস পাঠানোর ক্ষেত্রে মার্কিন জ্বালানি বিভাগ লাইসেন্স প্রদান স্থগিত করে রেখেছিল। তবে গত সোমবার ক্ষমতা গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এটি রহিত করেন ট্রাম্প। কারণ তিনি বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে চান। বর্তমানে বিশ্বের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তারা ২০২৮ সালের মধ্যে সরবরাহের পরিমাণ দ্বিগুণ করতে চায়।

লুজিয়ানার পোর্ট ফোরচনে আর্জেন্ট এলএনজির অবকাঠামো তৈরি সম্পন্ন হলে তারা বাংলাদেশের পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাসের কার্গো বিক্রি করা শুরু করতে পারবে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, এই চুক্তি শুধুমাত্র আমাদের বর্ধমান শিল্পের গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই জ্বালানি চাহিদার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজছে। এক্ষেত্রে তরলীকৃত গ্যাসের দিকে ঝুঁকছে সরকার। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বিশ্বব্যাপী যখন গ্যাসের দাম বেড়ে যায় তখন কম দামি কয়লার দিকে আবারও ঝোঁকা শুরু করে ঢাকা।




সীমান্তের ঘটনা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশিদের আম গাছের ডাল কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে বিএসএফ ও ভারতীয়রা। এ সময় বিজিবি স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তাদের এই কার্যক্রমকে রুখে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে দুইজনের নাম নিশ্চিত করেছে এলাকাবাসী।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের ঝাইটন আলীর ছেলে আসমাউল (১৮) এবং একই এলাকার বাবু (২৬)।

বিজিবি জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ।

বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয়রা পিছু হটে এবং বিকেল ৪টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে গাছ কাটার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে বিএসএফ ও শতাধিক ভারতীয় মিলে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ করে এবং বাংলাদেশ প্রান্তের ১২ থেকে ১৫টি আম গাছ কেটে ফেলে। পরে বিজিবির টহল দল মাইকিং করে স্থানীয়দের সহযোগিতার আহ্বান জানান। এ সময় স্থানীয়রা বিজিবিকে সহযোগিতা করতে সীমান্ত এলাকায় ছুটে আসেন। দুই পাশে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিএসএফ সদস্যরা ৪টি সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। স্থানীয় ভারতীয়রা পাথর ছুঁড়ে মারে। এতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। পরে ভারতীয়রা কাটা গাছ ও ডালপালা ফেলে পালিয়ে যায়।

বিনোদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির সহযোগিতার মাইকিং শুনে বিজিবিকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসি। এ সময় বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকরা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, ককটেল ও পাথর নিক্ষেপ করে। এছাড়া ভারতীয়রা জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দেয়। পরে আমাদের পাল্টা ধাওয়ায় তারা কাটা গাছ ফেলে পালিয়ে যায়।

৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সৃষ্টি হয়। পরে বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয়রা পিছু হটে এবং বিকেল ৪টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে গাছ কাটার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ। বর্তমানে পরিস্থিতির স্বাভাবিক আছে।




গাজার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ : আব্বাস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

গাজা উপত্যকার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনের সরকারি জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)। শুক্রবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এবং পিএ জোটের বৃহত্তম শরিক ফাতাহের শীর্ষ নেতা মাহমুদ আব্বাসের দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট আব্বাসের নির্দেশনা অনুযায়ী গাজা উপত্যকার পূর্ন দায়দায়িত্ব নিতে যাবতীয় প্রস্তুতির শেষ করেছে ফিলিস্তিনের সরকার। এই দায়িত্ব পালনের জন্য যেসব প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা টিম প্রয়োজন, সেসব গঠনের কাজও শেষ হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে আনা, পানি ও বিদ্যুতসহ জরুরি সব পরিষেবা ফের চালু করা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং উপত্যকার ভবন, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজে নেতৃত্ব দেবে পিএ।

গাজা উপত্যকায় এক সময় ফাতাহ ক্ষমতাসীন ছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে সেখানে হামাস জয়ী হয়। তারপর ২০০৭ সাল শেষ হওয়ার আগেই ফাতাহকে উপত্যকা থেকে বিদায় করে হামাস। বস্তুত ২০০৬ সালের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি গাজায়।

ফলে, গত প্রায় ১৯ বছর ধরে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে যে অতর্কিত হামলা ঘটেছিল, তার মূল পরিকল্পনাকারী এবং নেতৃত্বের ভূমিকায়ও ছিল হামাস। নজিরবিহীন সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস ও প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা।

হামলার জবাব দিতে এবং আটক জিম্মিদের উদ্ধার করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী, যা পুরোপুরি শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। ১৫ মাসের ভয়াবহ এই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৭ শতাধিক এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। এছাড়া উপত্যকার প্রায় ২২ লাখ জনসমষ্টির অধিকাংশই বাড়িঘর ছেড়ে উদ্বাস্তু হতে বাধ্য হয়েছেন।




গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি ট্রাম্পের: হুঁশিয়ারি দিল জার্মানি ও ফ্রান্স

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখল করতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের যে হুমকি দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ন্যাটো জোটের সদস্য জার্মানি ও ফ্রান্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখল করতে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে পারেন। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “গ্রিনল্যান্ড বা পানামা খাল দখলের জন্য সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগ থেকে আমি বিরত থাকব, এমন নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। আমাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য এগুলো প্রয়োজন।” এর আগে ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প।

তবে ডেনমার্ক পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং দ্বীপটি তার বাসিন্দাদের সম্পত্তি।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎ
এদিকে, গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, “সীমানার অখণ্ডতার নীতি প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তা খুব ছোট বা খুব শক্তিশালী দেশ যাই হোক না কেন।”

তিনি আরও বলেন, “ন্যাটো আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এবং আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলীয় দেশগুলোর সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু।”

অন্যদিকে, ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল ব্যারো বলেছেন, “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, কখনোই বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সার্বভৌম সীমান্তে আক্রমণ করতে দেবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন।”

বুধবার ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে দেওয়া সক্ষাৎকারে তিনি বলেন: “আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন আমেরিকা, গ্রিনল্যান্ড আক্রমণ করবে কি না। আমার উত্তর হবে- না। আমরা কি এমন এক যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে আবারও শক্তিশালীদের টিকে থাকার নিয়ম দেখা দিচ্ছে? তাহলে এর উত্তর হবে- হ্যাঁ। তাহলে কি আমাদের নিজেদেরকে ভয় ও উদ্বেগে কাবু হতে দেওয়া উচিত, অবশ্যই না। আমাদের জেগে উঠতে হবে এবং নিজেদের শক্তি গড়ে তুলতে হবে।”

গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৭ হাজার। দ্বীপটি ব্যাপক স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও অর্থনীতির ক্ষেত্রে কোপেনহেগেনের ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল এবং এটি এখনো ডেনমার্কের রাজ্যের অংশ। গ্রিনল্যান্ডে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিরল খনিজের মজুদ রয়েছে, যা ব্যাটারি এবং উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যের নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ।
# পার্সটুডে




গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে ইসরাইল: জাতিসংঘ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইহুদিবাদী ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর।

ইহুদিবাদী বাহিনী উত্তর গাজার সবগুলো হাসপাতালকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় শিফা হাসাপাতালসহ বহু হাসপাতাল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। যেগুলোর ভবন এখনও দাঁড়িয়ে আছে সেগুলোরও স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার মতো অবস্থা নেই। দখলদার ইহুদিবাদীরা উত্তর গাজাকে সম্পূর্ণ জনমানবশূন্য করে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর গতকাল (মঙ্গলবার) প্রকাশিত ২৮ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে আরো বলেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি সেনারা গাজার ২৭টি হাসপাতাল ও ১২টি ক্লিনিকে অন্তত ১৩৬ বার হামলা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনে এসব হামলার প্রতিটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এসব হামলায় চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল স্টাফ, রোগী ও আশ্রয়প্রার্থীরা ব্যাপক মাত্রায় হতাহত হয়েছেন এবং এসব বেসামরিক অবকাঠামোর ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর আরো বলেছে, ইসরাইলের এসব হামলায় গাজা উপত্যকার চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুবিধা থেকে সেখানকার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিক বঞ্চিত হচ্ছেন। উত্তর গাজার কোনো হাসপাতালের আর চিকিৎসা সেবা দেয়ার অবস্থা নেই। এ অবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। #

# পার্সটুডে




‘ইসলাম-আতঙ্ক ছড়ানোর’ বিরুদ্ধে কথিত সংগ্রামের মার্কিন সরকারের সনদ কেন মুসলমানদের কাছে ঘৃণ্য?

ডিএনবি নিউজ আন্তঃ ডেস্ক :

বাইডেন সরকার সম্প্রতি ইসলাম-বিদ্বেষ ও ‘ইসলাম-আতঙ্ক ছড়ানোর’ বিরুদ্ধে কথিত ‘সংগ্রামের কৌশল বা নীতির গাইড’ নামের এক অদ্ভুত ইশতেহার বা সনদ প্রকাশ করেছে।

বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকার যখন গাজায় ইসরাইলি গণহত্যাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে সমর্থন করে যাচ্ছে তখন নিজের চেহারাকে পবিত্র দেখাতে বা ফেরেশতাসুলভ সৎভাবের ইমেজ দেখাতে মার্কিন মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরকারি সহিংসতার শেকড়গুলোর বিষয় উল্লেখ করে ‘ইসলাম-আতঙ্কের বিরুদ্ধে সংগ্রাম’ নামক একটি প্রতীকি অনুমোদন করে। এ ছাড়াও গত ১২ ডিসেম্বর ইসলাম-আতঙ্ক ও আরব-বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে কথিত ‘সংগ্রামের কৌশল বা নীতির গাইড’ নামের এক অদ্ভুত ইশতেহার বা সনদ প্রকাশ করেছে। এই সনদ ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

প্রতীকি এই পদক্ষেপ সম্পর্কে ‘মিডল-ইস্ট আই’ নামক ওয়েবসাইট এক প্রতিবেদনে লিখেছে, কথিত এই গাইড মুসলিম সমাজের সঙ্গে বাইডেন সরকারের অগভীর যোগাযোগ ও মূলত প্রতীকি যোগাযোগের সর্বশেষ প্রদর্শনী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের জন্য হোয়াইট হাউজে একজন সম্পর্ককারীর প্রয়োজন নেই। তারা যা চান তা হল তাদের বিরুদ্ধে সরকারি সহিংসতার অবসান। এই প্রতিবেদনের অন্য অংশে বাইডেনের একটি শ্লোগান উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবার জন্য স্বাধীনতা ও সুযোগ! অথচ এই শ্লোগান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বা সব সময় গণহত্যায় জড়িত থাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য, অন্য জাতিগুলোকে কোণঠাসা করে রাখা, অন্য জাতিগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা ও নানা হিংস্রতার আলোকে উপনিবেশবাদী এই সরকারের মিথ্যাচারকেই স্পষ্ট করছে। কিন্তু এই কল্পকাহিনীর বেশি তিক্ত দিকটি হল এইসব প্রকাশ্য মিথ্যাচার সত্ত্বেও মার্কিন সরকার তার ওইসব কাজ এখনও অব্যাহত রেখেছে।

গত ১৫ মাস ধরে গাজায় চলছে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যা বা জাতিগত নির্মূল অভিযান যার প্রতি রয়েছে সর্বাত্মক মার্কিন মদদ। আর ওই কথিত সনদ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও মুসলমানদের ব্যাপার হোয়াইট হাউজের সর্বশেষ পদক্ষেপ।

বাইডেনের কথিত এই কৌশল বা নীতির গাইড শুরু হয়েছে ছয় বছর বয়সের মার্কিন ফিলিস্তিনি মুসলিম শিশুর শিরচ্ছেদের ঘটনার পর থেকে। ওই শিশুকে ছুরি মেরে হত্যা করে তার বাড়ির মালিক। এই সনদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিবেশকে ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতির সাথে তুলনা করা হয়েছে যখন দেশটির মুসলিম, আরব ও এশিয় নাগরিকরা সহিংসতার শিকার হত। এইসব সমাজের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতি বাইডেনের নিন্দা এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের অবহেলাকে ম্লান করারই চেষ্টা।

যা-ই হোক, বাইডেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারি সহিংসতার এক বিশেষ দৃষ্টান্তকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন। আর এই বিশেষ বিষয়টি হল মুসলমানদের ওপর ট্রাম্প সরকারের নিষেধাজ্ঞা। এরপর নিজের আত্মপ্রশংসা করে বাইডেন বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি দেশের মুসলমানদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ভুল নীতি তিনি তার প্রেসিডেন্সি শুরু হওয়ার প্রথমেই বাতিল করেছিলেন।

ইসলাম-আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে বাইডেন সরকারের সংগ্রামের শ্লোগান বাস্তবে পরিহাসপূর্ণ হয়েছে যখন এই সরকার গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যাকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে মার্কিন মুসলিম ও আরবদের অধিকার লঙ্ঘন এবং তাদের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপকে গুরুত্ব না দেয়ার পাশাপাশি নিজেই এ জাতীয় অপরাধের এক বড় সংঘটকে পরিণত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফিলিস্তিন বিষয়ক দপ্তরের সাবেক সচিব মাইকেল কিসি বলেছেন, ওয়াশিংটন ফিলিস্তিনিদের ব্যথা ও বেদনায় উদ্বিগ্ন নয়, বরং ইসরাইলের স্বার্থই রক্ষা করে যাচ্ছে। গাজায় ইসরাইলি পদক্ষেপ যে ভুল তা জানা সত্ত্বেও ইসরাইলি গণহত্যার প্রতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন যা পুরোপুরি লজ্জাজনক। এ বিষয়টি এতটাই প্রতিবাদ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে যে মার্কিন ডেমোক্রেট দলীয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘জেনোসাইড জো’ তথা ‘গণহত্যাকারী জো’ উপাধি পেয়েছেন।

অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ও আরব-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে কথিত মুক্ত ও ন্যায়-ভিত্তিক মার্কিন সমাজে প্রতিরোধের গুরুত্ব সম্পর্কে বাইডেনের গালভরা বুলি উচ্চারণ বিরাজমান বাস্তবতার বিপরীত। এ ধরনের দাবি বা শ্লোগানের ফলে মুসলমান ও আরবদের ওপর সহিংসতা বা ঘৃণার মাত্রা মোটেই কমছে না বা এই সংকটকে ধামাচাপা বা ম্লান করে দেখানোও সম্ভব হবে না। বরং এর উদ্দেশ্য হল মার্কিন সরকার আরব ও মুসলমানদের নিরাপত্তা ও কল্যাণে আগ্রহী এমন বিভ্রান্তিকর ভাব তুলে ধরে তাদেরকে শান্ত রাখারই চেষ্টা মাত্র।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম-আতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়টি খুবই পরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ ঘটনা যা দিনকে দিন নানা নতুন মাত্রা লাভ করছে। ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের ঘটনা সেখানে রাজনৈতিক, সামাজিক, মিডিয়া-কেন্দ্রীক ও শারীরিক মাত্রা পেয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম-বিদ্বেষ ও ইসলাম-আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার তৎপরতা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে। ইসলাম ও মুসলমানদের বিকৃত চেহারা উপস্থাপন এবং মুসলমানদের ওপর নানা সীমাবদ্ধতা আরোপ, বৈষম্য এবং আইনি ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ক্রমবর্ধমান গতিতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো কর্মকর্তা ইসলাম-বিদ্বেষের আগুনে ঘি ঢালছেন। এক্ষেত্রে রিপাবলিকান দলীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা বিশেষভাবে স্মরণীয় । মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার এ প্রচেষ্টাকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গোটা পাশ্চাত্যেও জোরদার করেছেন।

ট্রাম্পের শাসনামলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উগ্র ডানপন্থী গ্রুপগুলোর সংখ্যা বেড়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়। মুসলমান মনে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যে শিখদেরকেও গালাগালি করা হচ্ছে অনেক সময়। শিক্ষা ও বিভিন্ন পেশার চাকরি বা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও মুসলমানরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে পাশ্চাত্যে। #

পার্সটুডে




ইরান না থাকলে ইসরাইলের প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র থেকে বিশ্বকে বাঁচাবে কে?

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ায় “পোড়া মাটি” নীতি অনুসরণ করে আসছে। গাজা উপত্যকায় লাগাতার বোমা হামলা এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা থেকে শুরু করে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা এবং সিরিয়ায় বিমান হামলা পর্যন্ত সবকিছুই এ অঞ্চলে ইসরাইলের অস্থিতিশীলতা নীতিরই অংশ।

‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিশ্বকে নাজাত দিতে পারে ইসরাইল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে একটি ইহুদি সংস্থার গবেষক ইয়াকুব কাতজ অসাধারণ আত্মবিশ্বাসের সাথে এবং ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দাবি করেছেন যে, ইসরাইল এককভাবে বিশ্বকে “হুমকি” থেকে বাঁচাতে প্রস্তুত। ইরানের”। কিন্তু মূল প্রশ্ন হল: ইরান যদি না থাকে তাহলে কে পৃথিবীকে সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি অর্থাৎ ইসরাইলের হাত থেকে বাঁচাবে? ইসরাইলের প্রকাশ্য ও গোপন ষড়যন্ত্র ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কে দাঁড়াবে? যে ইসরাইলের কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বের স্বাভাবিক রাজনীতিকে ব্যবহত করছে এবং পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের একটি অংশকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করেছে?

ইসরাইল, এমন একটি অশুভ শক্তি যার প্রভাবে বিশ্ব রাজনীতি ব্যাহত হচ্ছে

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্বব্যাপাী বহু সংঘাতে ইসরাইলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এমনকি জাতিসংঘে ইহুদিবাদীদের প্রভাব বিশ্ব রাজনীতিকে ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। AIPAC-এর মতো শক্তিশালী ইহুদিবাদী লবি যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে ইসরাইলের সেবায় পরিণত করেছে যার ফলে শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে যা কিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরইলের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ।

উদাহরণস্বরূপ, বিগত দশকগুলোতে ইসরাইল পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর জন্য কল্যাণকর হবে এমন কোনও জোট বা চুক্তিতে পৌঁছার পথে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। কিছু আরব দেশে প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ইসরাইল এ ষঢ়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। ব্যাপক “গণবিধ্বংসী অস্ত্র” আছে এমন ভিত্তিহীন দাবি তুলে ২০০৩ সালে ইরাকে যে হামলা চালানো হয়েছিল তার পেছেন ইহুদিবাদীদের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আর এর ফলে ইরাকের ধ্বংস এবং এইএস’র মতো জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আবির্ভাব ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

গণহত্যা এবং পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের বিস্তার

ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ায় “পোড়া মাটি” নীতি অনুসরণ করে আসছে। গাজা উপত্যকায় লাগাতার বোমা হামলা এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা থেকে শুরু করে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা এবং সিরিয়ায় বিমান হামলা পর্যন্ত সবকিছুই এ অঞ্চলে ইসরাইলের অস্থিতিশীলতা নীতিরই অংশ।

গাজা উপত্যকার বর্তমান অবস্থা এবং এই এলাকাটি ২০ লাখ মানুষের উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করা ইসরাইলের নৃশংসতার প্রতীক। এই অঞ্চলে ক্রমাগত আগ্রাসন এবং এর বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য পশ্চিমের ওপর ইসরাইলের অব্যাহত চাপ তেলআবিবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ। তবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসরাইলের ব্যাপক প্রভাবের কারণে বিশ্ব গাজা ইস্যুতে নীরব রয়েছে।

পার্সটুডে/




ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সহযোগিতা না করায় ভারতকে অসহযোগী দেশের তালিকাভুক্ত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা আইসিই অভিযোগ করেছে, ভারত সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সময়মতো ভ্রমণ নথি ইস্যু এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগী দেশের তালিকায় আরো আছে- ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ভেনিজুয়েলা।

এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হলো ভারত।

আইসিই জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ১৪ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার অভিবাসীই ভারতের নাগরিক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই পাঞ্জাব, গুজরাট ও অন্ধ্র প্রদেশের বাসিন্দা।




সিরিয়ার ঘটনাবলীর যৌথ কমান্ড রুম আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলে: সর্বোচ্চ নেতা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন: সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর মূল ষড়যন্ত্রকারী এবং চক্রান্তকারী, মূল হোতা হলো আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল। চক্রান্তের প্রধান কমান্ড রুম আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলে রয়েছে।

এইসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি যে তাদের হাতে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। এসব প্রমাণ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।

তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আজ (১১ ডিসেম্বর বুধবার) ইমাম খোমেনি হোসাইনিয়ায় ইসলামি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার মানুষ সাক্ষাৎ করেছেন।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা আমেরিকা ও ইসরাইলের যৌথ পরিকল্পনার ফসল। হ্যাঁ, সিরিয়ার একটি প্রতিবেশী সরকার এ ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট ভূমিকা পালন করেছে এবং করে যাচ্ছে-সবাই তা দেখছে। কিন্তু নি:সন্দেহে মূল ষড়যন্ত্রকারী এবং চক্রান্তকারী আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল। তিনি সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সাথে ইহুদিবাদী ও আমেরিকার আচরণকে এর অন্যতম প্রমাণ হিসেবে অভিহিত করে বলেন: তারা যদি সিরিয়ার ঘটনার মূল হোতা না হয়ে থাকে, তাহলে অন্যান্য দেশের মত তারা কেন নীরব থাকল না? কেন তারা শত শত স্থাপনা, বিভিন্ন কেন্দ্রের অবকাঠামো, বিমানবন্দর, গবেষণা কেন্দ্র, বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বোমাবর্ষণ করার মতো অযাচিত হস্তক্ষেপ করলো?

ঘটনার প্রথম দু’য়েক দিনেই সিরিয়ার ৭৫টি পয়েন্টে হামলার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে আমেরিকা। বিপ্লবের নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন: তাদের পাশাপাশি ইহুদিবাদীরাও সিরিয়ার ভূমি দখল করে তাদের ট্যাংক নিয়ে দামেস্কের কাছাকাছি চলে এসেছে। যেই আমেরিকা অন্যান্য দেশের ছোটখাটো সীমান্ত লঙ্ঘনের ঘটনায় অনেক বেশি সংবেদনশীলতা দেখায়, তারা একটু প্রতিবাদও তো করলো না, উল্টো বরং তারা সাহায্য করেছে। তো, সিরিয়ার এই ঘটনায় কি প্রমাণ হয় না যে এইসব দুর্ঘটনার পেছনে তাদের হাত রয়েছে?

হজরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সিরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদীদের জড়িত থাকার আরেকটি প্রমাণ ব্যাখ্যা করে বলেন: শেষের দিনগুলোতে সিরিয়ার একটি অঞ্চলের জনগণের জন্য-বিশেষ করে জয়নাবিয়াহ-এলাকার জন্য কিছু সাহায্য ও ত্রাণ পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ইহুদিবাদীরা সমস্ত স্থলপথ এবং বিমানপথ বন্ধ করে দেয়। আমেরিকা এবং ইহুদিবাদীরা ওই সাহায্যগুলোকে ফ্লাইটের মাধ্যমেও আকাশপথে স্থানান্তর করতে দেয় নি। যদি তারা সিরিয়ার ঘটনার নেপথ্যে না থাকবে এবং কোন সন্ত্রাসী বা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করবে, তাহলে তারা সিরিয়ার জনগণকে সাহায্য করা বন্ধ করল কেন?

সর্বোচ্চ নেতা বলেন: প্রতিরোধ ফ্রন্টের বৈশিষ্ট্য হলো: যত বেশি ধাক্কা দেবেন, তত তারা শক্তিশালী হবে। যত বেশি অপরাধযজ্ঞ চালাবেন, তত বেশি উদ্যমী হবে। আপনি তাদের সাথে যত বেশি লড়াই করবেন, তত বেশি তারা বিস্তৃত হবে। আমি আপনাদের বলতে চাই, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় প্রতিরোধ ফ্রন্টের পরিধি গোটা পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলকে আগের চেয়ে বেশি আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলবে। এই পুরো অঞ্চলে প্রতিরোধ ফ্রন্ট আগের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।

প্রতিরোধের অর্থ সম্পর্কে যার বিন্দুমাত্র ধারনা নেই, তারা মনে মনে ভাবে, যখন প্রতিরোধ ফ্রন্ট দুর্বল হয়ে পড়েছে, তখন ইসলামি ইরানও দুর্বল হয়ে পড়বে। আমি আপনাদের দৃঢ়তার সঙ্গে জানাতে চাই, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছায়, ইরান অনেক শক্তিশালী এবং সামনের দিকে আরো বেশি শক্তিশালী হবে ইনশাআল্লাহ।

অবশ্য যেসব আগ্রাসীর কথা উল্লেখ করলাম তাদের প্রত্যেকেরই একটি উদ্দেশ্য আছে। তাদের লক্ষ্য ভিন্ন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ সিরিয়ার উত্তর বা সিরিয়ার দক্ষিণ থেকে ভূমি দখল করতে চাচ্ছে, আমেরিকা এ অঞ্চলে তাদের অবস্থান মজবুত করতে চাচ্ছে,এগুলোই তাদের লক্ষ্য। সময়মতো দেখা যাবে তাদের এইসব লক্ষ্যের কোনোটাই অর্জিত হবে না ইনশাআল্লাহ। সিরিয়ার দখলকৃত এলাকা মুক্ত হবে উদ্যমী সিরিয়ান যুবকদের মাধ্যমে; এটা যে ঘটবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমেরিকার অবস্থানও মজবুত হবে না, আল্লাহর রহমতে, আমেরিকাকেও প্রতিরোধ ফ্রন্টের মাধ্যমে এ অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করা হবে।

তিনি গত ১৪ মাসের চাপে হিজবুল্লাহ, হামাস, ইসলামি জিহাদ এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি বাহিনী শক্তিশালী হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই শক্তিশালী হবার ঘটনাকে সত্যের চিহ্ন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন: বিপর্যয়ের চাপ এবং সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহকে হারানোর ক্ষতি খুব ভারী ছিল, কিন্তু হিজবুল্লাহর শক্তি এবং মুষ্টি আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছে এবং এই সত্য উপলব্ধি করে তারা যুদ্ধবিরতি চাইতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি ইহুদিবাদীদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধাকে জাতিগুলোর জন্য লাল রেখা বলে উল্লেখ করে বলেন: ইহুদিবাদী এবং তাদের সহযোগীদের জানা উচিত; ঐশি নিয়ম অনুসারে অপরাধ কখনও বিজয় নিয়ে আসে না। আজ সেই ঐশি নীতি এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটছে গাজা, জর্দান নদীর পশ্চিম তীর এবং লেবাননে।

বহু বছর ধরে সিরিয়ায় ইরানের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন: একটি বিষয় যা অধিকাংশ তরুণ-তরুণীই জানে না তা হলো, সিরিয়া সরকারকে আমাদের সাহায্যের আগে, অর্থাৎ পবিত্র প্রতিরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে যখন সবাই সাদ্দামের পক্ষে এবং আমাদের বিপক্ষে কাজ করছিল, সিরিয়া সরকার তখন ইরানকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়েছিল। সিরিয়া সরকার ওই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়ে ইরাক থেকে ভূমধ্যসাগরে তেলের পাইপলাইন বন্ধ করে দেয় এবং সাদ্দামকে তার আয় থেকে বঞ্চিত করে।

তিনি সিরিয়া ও ইরাকে ইরানি যুবকদের উপস্থিতি এবং কিছু ইরানি কমান্ডারের উপস্থিতির কারণ হিসেবে আইএসআইএস মোকাবেলার কথা উল্লেখ করে বলেন: আইএসআইএস ছিল নিরাপত্তাহীনতার একটি বোমা। তারা সিরিয়া ও ইরাককে নিরাপত্তাহীন করার পর আমাদের দেশকেও নিরাপত্তাহীন করার চূড়ান্ত লক্ষ্যে কাজ করছিল।

আমাদের কর্মকর্তারা খুব দ্রুত বুঝতে পেরেছিলেন যে আইএসআইএসের সন্ত্রাসীযাত্রা বন্ধ করা না হলে নিরাপত্তাহীনতা পুরো ইরানকে ছেয়ে ফেলবে। তাদের সন্ত্রাসী বিপর্যয়ের উদাহরণ আপনারা আমাদের সংসদ, শাহচেরাগ এবং কেরমানের ঘটনাগুলোতে দেখেছেন।

সিরিয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষণীয় বিষয়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন: প্রথম শিক্ষা হল শত্রুকে অবহেলা না করা। সিরিয়ায় শত্রুরা খুব দ্রুত কাজ করেছে কিন্তু তাদেরকে গোয়েন্দা রিপোর্ট আগেই দেওয়া উচিত ছিল এবং তা প্রতিরোধ করা উচিত ছিল। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কয়েক মাস আগে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেন: ইসলামি বিপ্লবের ৪৬ বছরে আমরা ছোট-বড়ো অনেক কঠিন ঘটনা ও পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি, যেমন সাদ্দামের বিমান তেহরান বিমানবন্দরে বোমাবর্ষণ করেছিল এবং জনগণের হৃদয়ে ভীতি সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু সমস্ত তিক্ত ঘটনার মুখোমুখি হবার পরও ইসলামী প্রজাতন্ত্র এক মুহূর্তের জন্যও নিষ্ক্রিয় হয় নি।

সর্বোচ্চ নেতা তাঁর বক্তৃতার শেষে ইরানের জনগণকে সক্রিয় ও সদাপ্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন: আল্লাহর রহমতে এ অঞ্চলে ইহুদিবাদ এবং তাদের পশ্চিমা খবিসদের মূল উৎপাটন করা হবে।

# সূত্র: পার্সটুডে