ফিলিস্তিনিরা স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, ইসরাইল তাদের গোলাম বানাতে চায়: মাওলানা আরশাদ মাদানি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের একদিনের সম্মেলনে জমিয়তের জাতীয় সভাপতি মাওলানা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানি ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ, ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন।

গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত জমিয়তের ওই সম্মেলনে এর পাশাপাশি মাওলানা মাদানি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মুসলিম মেয়েদের টার্গেট করার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং মেয়েদের জন্য আলাদা স্কুল ও কলেজ খোলার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার দেওবন্দের মাদানি মেমোরিয়াল পাবলিক স্কুলে আয়োজিত একদিনের সম্মেলনে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের ১৭টি জেলার দেড় হাজারেরও বেশি জমিয়ত কর্মকর্তা শামিল হয়েছিলেন। এতে মাওলানা আরশাদ মাদানি বলেন, ‘যেভাবে ভারতের স্বাধীনতার জন্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, ঠিক একইভাবে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ফিলিস্তনিরা তাদের দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে আত্মত্যাগ করছে। ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ আরব দেশগুলোতে পৌঁছালে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।’

মাওলানা মাদানি বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধের কারণে দেশে সাম্প্রদায়িকতা বেড়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে, অন্যদিকে ইসরাইল তাদের ক্রীতদাস বানাতে চায়। তিনি বলেন, কোনো দেশের স্বাধীনতা দুধ পান করে নয়, আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়। ইসরাইলের বর্বর কর্মকাণ্ডে নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এমনকী নিষ্পাপ শিশুদেরও রক্ত ঝরানো হচ্ছে, কিন্তু কেউ সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারবে না এবং সত্য হল ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই।

এর আগে মাওলানা মাদানি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘গোটা বিশ্ব জানে ইসরাইল একটি দখলদার এবং তারা ফিলিস্তিনি ভূমি অবৈধভাবে জোর করে দখল করেছে, যার মুক্তির জন্য ফিলিস্তিনি জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসছে। যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা বলা হয়, তারা সন্ত্রাসী নয়।’

জমিয়তের সম্মেলনে সোমবার মাওলানা আরশাদ মাদানি দেশে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টিকারীদের টার্গেট করে বলেন, যারা সাম্প্রদায়িকতার স্লোগান দিচ্ছেন তাদের ভাবতে হবে এতে দেশ সমৃদ্ধ হবে না বরং ধ্বংস হবে। তাই সকলের উচিত দেশকে এ পথে চলা থেকে বিরত রাখা। তিনি বলেন, দেশের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ছোট গাড়ির সামান্য ধাক্কা লাগলে এমনকি হত্যাও করা হয়।

মাওলানা মাদানির অভিযোগ- দেশে মুসলিম মেয়েদের ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে হিন্দু ধর্মে এক বর্ণের বিয়ে অন্য বর্ণের সঙ্গে হতে পারে না। তাহলে মুসলিম মেয়েদের টার্গেট করা হচ্ছে কেন? তাই মুসলমানদের উচিত তাদের মেয়েদের জন্য আলাদা স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করা।

এ প্রসঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘জমিয়তের সর্বভারতীয় সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানি সাহেব যে কথা বলেছেন, সেটা বরাবরই জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অবস্থান। যখন থেকে ফিলিস্তিন-ইসরাইলের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তখন থেকেই জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এই মর্মে যে প্রস্তাব পাস করেছে যে ফিলিস্তিন হল ফিলিস্তিনবাসীদের। সেখান থেকে তাদেরকে উৎখাত করা, তাদেরকে শরণার্থী বানিয়ে দেওয়া, এটা চরম অন্যায়। ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনবাসীদেরই, তাদের সেখানে নিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকবে। এবং সেই লড়াই তারা করছে। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ওই বিষয়ে সমর্থন আছে এবং থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা নতুন কিছু নয়, মাওলানা আরশাদ মাদানি সাহেব যেটা বলেছেন, এটা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অবস্থান। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই এই একই কথা বলছে। কেবলমাত্র ইসরাইল এবং তার সমর্থক দেশগুলো এই মর্মে ভেটো দিচ্ছে। যার ফলে এত রক্ত ঝরছে। এত অন্যায় হচ্ছে, এত অবিচার হচ্ছে। জননিধন, মানবতার নিধন সারা পৃথিবী দেখছে। সারা পৃথিবীর সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে সোচ্চারও হচ্ছে। সরব প্রতিবাদ সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সরব প্রতিবাদ করেছে। আমরা রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে দু’দফায় প্রতিবাদ মিছিল করেছি। এর সমাধান দ্রুত হওয়া দরকার, যদি এর সমাধান না হয় তাহলে জটিলতা আরও বাড়বে, সারা পৃথিবী তাতে অস্থির ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ বলেও মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম।#

সূত্র: পার্সটুডে




হামাসের ‘বিপজ্জনক’ সুড়ঙ্গের মুখে ইসরায়েলি সেনারা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালানোর পর গাজায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। উত্তর গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীর আরো বড় উদ্দেশ্য রয়েছে। তাদের লক্ষ্য হামাসের সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্ক চিহ্নিত ও ধ্বংস করা। বছরের পর বছর ধরে নিজেদের মূল প্রতিরক্ষা কৌশল হিসেবে সতর্কতার সঙ্গে সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হামাসের মূল ঘাঁটি উত্তর গাজায় হামলা চালানোর সময় এরই মধ্যে গেরিলা হানাসহ কিছু বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। হামাসের সঙ্গে তাদের সামনাসামনি লড়াইও হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ নির্মূল করা হবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সামনে আরো বড় চ্যালেঞ্জ।

তুরস্কের আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো ও প্রতিরক্ষা নীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো রিচার্ড আউটজেন বলেন, ‘সুড়ঙ্গগুলো পুরোপুরি নির্মূল করা হবে ধীরগতির, নিরলস ও দীর্ঘমেয়াদি কাজ।তবে ইসরায়েলি বাহিনী সম্ভবত চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’

গাজার সুড়ঙ্গ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন ইসরায়েলের বার-ইলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ জোয়েল রসকিন। তিনি বলেন, আশির দশক থেকে শুরু করে দুই দশকের বেশি সময়ের কাজের ফল হামাসের আজকের এই সুড়ঙ্গ। শুরুতে মিসর থেকে পণ্য পাচারের জন্য সুড়ঙ্গগুলো ব্যবহার করা হতো।

তবে এগুলো যে হামাসও ব্যবহার করছে তার প্রথম প্রমাণ মেলে ২০০১ সালে। ওই সময় সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করে চালানো বিস্ফোরণে একটি ইসরায়েলি সামরিক পোস্ট উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে সুড়ঙ্গ নিয়ে ইসরায়েলিদের টনক নড়ে আরো পাঁচ বছর পর। তখন ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা একটি সুড়ঙ্গ থেকে ওপরে উঠে এসে ইসরায়েলি সৈনিক গিলাদ শালিতকে অপহরণ করেছিল।

ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত গোষ্ঠী হামাস ২০০৭ সালে নির্বাচনে জিতে গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।

ইসরায়েল এর প্রতিক্রিয়ায় উপত্যকাটির ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে। তখন সুড়ঙ্গগুলো অবরোধ এড়িয়ে গাজায় খাদ্য, পণ্য ও অস্ত্র আনার একমাত্র উপায়ে পরিণত হয়।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলা থেকে ছাড় পাচ্ছে না হাসপাতালগুলোও। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, হাসপাতালগুলোর নিচেই রয়েছে হামাসের সুড়ঙ্গ। সেখানে আছে তাদের ঘাঁটি ও অস্ত্রশস্ত্র। হামাস এ দাবি অস্বীকার করে আসছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান থেকে চালানো হামলা সুড়ঙ্গের কেন্দ্রস্থল ধ্বংসের মতো যথেষ্ট গভীরে পৌঁছাতে পারবে না। এ জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সুড়ঙ্গের সব প্রবেশ ও বের হওয়ার পথের নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। এটি হবে অত্যন্ত দীর্ঘ ও বিপজ্জনক অভিযান।

কিংস কলেজ লন্ডনের প্রতিরক্ষা অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রেয়াস ক্রিগ বলেন, ‘এই পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক সময় প্রয়োজন এবং এটা ভীষণ বিপজ্জনক।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ইসরায়েল সুড়ঙ্গে প্রবেশের চেষ্টা করবে না।

জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো রিচার্ড আউটজেনের ধারণা, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি সম্মিলিত পদ্ধতি প্রয়োগ করবে। এর মধ্যে থাকবে জিম্মি উদ্ধার ও হামাস নেতা আটকে কিছু সুড়ঙ্গে সীমিত অভিযান, নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে কিছু টানেল বিস্ফোরক দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু এসব কাজ সময়সাপেক্ষ এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর হাতের সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
সূত্র : আলজাজিরা




৭ অক্টোবর ইসরাইলের পতন ঘটেছে, এখন বেঁচে আছে আমেরিকার লাইফ সাপোর্টে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের ভেতরে যে সফল অভিযান চালিয়েছে তার মধ্যদিয়েই ইসরাইলের পতন ঘটেছে, এখন তারা বেঁচে আছে আমেরিকার লাইফ সাপোর্টে।

রোববার শেষ বেলায় আমির আব্দুল্লাহিয়ান তার এক্স পেইজে দেয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববাসী গাজার বিরুদ্ধে আমেরিকার সর্বাত্মক যুদ্ধ দেখছে।

সম্প্রতি মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শাকুরির সঙ্গে নিজের ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, “আমি তাকে বলেছি এখন আমাদের পরীক্ষার দিন।”

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, আশা করা হচ্ছে মিশর কয়েক দিনের মধ্যে গাজার রাফা ক্রসিং খুলে দেবে যাতে অবরুদ্ধ উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ এবং ওষুধ পৌঁছানো যায়।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার হামাস এবং ইসলামী জিহাদ আন্দোলনের যোদ্ধারা ইসরাইলের ভেতরে নজিরবিহীন সফল অভিযান চালায়। এরপর ইসরাইল প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নির্মূলের নামে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। এই গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিষয়ে ইসরাইলের প্রতি আমেরিকা অকুন্ঠ সমর্থন দিয়েছে।#

পার্সটুডে




ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে আমেরিকা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন, দখলদার ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখার জন্য মার্কিন সরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দখলদার ইসরাইলকে যেসব দেশ অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আমেরিকা তার প্রধান।

সৌদি আরবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসির বিশেষ জরুরি বৈঠকে যোগদান শেষে আজ (রোববার) সকালে দেশে ফিরে বিমানবন্দরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ওআইসির এ বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল বর্বর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালানোর মধ্যে সৌদি আরবে ওআইসি’র এই বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

সম্মেলনে দেয়া বক্তৃতায় ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বর্বর আগ্রাসন ও অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে তার পেছনে মূল অপরাধী হচ্ছে আমেরিকা।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট রায়িসি বলেন, “সৌদি সফরে আমি ইরানি জাতি এবং যারা রাস্তায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে তাদের কণ্ঠস্বর হওয়ার চেষ্টা করেছি।”

প্রেসিডেন্ট রায়িসি বলেন, “ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের পর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সম্পর্কে ইরানের সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, একইসাথে ইসরাইল সরকারকে একটি ভুয়া এবং দখলদার সরকার বলে বিবেচনা করে তেহরান।”#

সূত্র: পার্সটুডে




ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের সরিয়ে ১ লাখ ভারতীয় শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনা ইসরাইলের

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইহুদিবাদী ইসরাইলি নির্মাণ সংস্থাগুলো তাদের সরকারকে বলেছে যে তারা ৯০ হাজার ফিলিস্তিনির পরিবর্তে ১ লাখ ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ করতে চায়। তাদের এ জন্য অনুমতি দেওয়া হোক।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইলে কর্মরত ৯০ হাজার ফিলিস্তিনি শ্রমিকের পারমিট বাতিল করা হয়েছে। এ কারণে ইসরাইলে নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় শ্রমিকরা উপসাগরীয় দেশগুলোতে আধুনিক শহর গড়ে তুলেছেন, এজন্য ইসরাইলি সংস্থাগুলো তাদের পরিশ্রমে আস্থা রেখেছে। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পাঠানো হবে কী না তা স্পষ্ট হয়নি।

গণমাধ্যমে প্রকাশ- ইসরাইলি বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাইম ফিগলিন বলেছেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা শ্রমিকদের অনুমোদনের জন্য ইসরাইল সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। ভারত থেকে আমাদের ৫০ হাজার/এক লাখ শ্রমিক দরকার। ভারতীয় শ্রমিকরা ইসরাইলে গেলে সেখানে বড় পরিসরে কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া তাদের পাঠানো অর্থ অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ভারত শ্রমিকদের ইসরাইলে যেতে দেবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি, তাও আবার এমন সময়ে যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ার অপারেশন অজয় এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ফিগলিন বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের নির্মাণ শিল্পের প্রায় ২৫ শতাংশ। এর মধ্যে ১০ শতাংশই গাজা থেকে এসেছেন। বাকিরা পশ্চিম তীরের।

এদিকে, চলমান যুদ্ধের মধ্যে আচমকা শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও, ইসরাইল আগে থেকেই ভারতীয় শ্রমিকদের এনে ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের সরাতে চেয়েছিল। জানা গেছে, চলতি বছরের মে মাসে ভারত ইসরাইলের সাথে একটি সমঝোতা করেছিল, যাতে ৪২ হাজার ভারতীয় শ্রমিককে ইসরাইলে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। নার্সিংয়ের পাশাপাশি নির্মাণ ক্ষেত্রেও কাজ করবেন এসব মানুষ। মে মাসে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের ভারত সফরের সময় এই সমঝোতা হয়েছিল। তারপর প্রথমবারের মতো ইসরাইলের নির্মাণ খাত ভারতীয়দের জন্য উন্মুক্ত হয়। এই চুক্তি সইয়ের আগে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি চলছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারভারত ও ইসরাইলের মধ্যে শ্রমিকদের বা পরিসেবা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পাঠানোর চুক্তি শান্তিকালীন সময়ে করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ইসরাইলের পক্ষ থেকে শ্রমিকের যে দাবি তা কর্মসংস্থানের চেয়ে ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের শিক্ষা দেওয়ার জন্যই বেশি। বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি শ্রমিক কাজে ফিরতে চাইলেও ইসরাইল তাদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করায় তারা কাজ হারিয়েছেন।#

সুত্র: পার্সটুডে




সন্ত্রাসী ইসরায়েলের ১৩৬ ট্যাংক ধ্বংস, ১০০০ সেনা নিহত

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

গত ২৭ অক্টোবর রবিবার সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় বিভিন্ন অঞ্চলে দখলদার ইসরায়েল সেনারা স্থল অভিযান শুরু করে৷
হামাস সেনারা ও তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তুলে৷ আকাশ পথে বিমান হামলা করে ঘর বাড়ি ধ্বসিয়ে দিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করে হামাসকে নির্মূল করতে তারা যতটা সহজ ভেবেছিল, আসলে অতটা সহজ নয়৷ হামাস যোদ্ধাদের শক্ত প্রতিরোধ এবং ফাঁদে পড়ে দখলদার সেনারা এখন বিপর্যস্ত৷

প্রতিদিনই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির শিকার হচ্ছে৷ যদিও তারা হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ ইসরায়েলের অফিসিয়াল হিসেবে স্থলঅভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নিহত সেনার সংশ্যা ৩৪, ৭ ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহত সেনার সংখ্যা ৩৫০, সাজোয়া যান ও ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে ৩৬টি৷ কিন্ত গতকাল (৮/১১/২৩ বুধবার) আলজাজিরা ও স্টেপ নিউজ এজেন্সীর প্রতিবেদন উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷

প্রতিবেদনটির তথ্যানুযায়ী স্থলঅভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ৮/১১/২৩ পর্যন্ত ১৩৬ টি সামরিক যান ধ্বংস করেছে হামাস সেনারা৷ ৭অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার দখলদার ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে৷ সামরিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের থ্যানুযায়ী প্রতিটি ট্যাংকে ৩/৪ করে সেনা থাকে, সাজোয়া যানে থাকে অন্তত ১০/১৫ জন করে৷ সে হিসেবে হতাহতের সংখ্যা হিসেব করলে আরো বেশি হয়৷

মারকাভা ব্যাটেল ট্যাংক ইসরাইলের স্টান্ডার্ড ব্যাটেল ট্যাংক।এবং এটাকে ইসরাইলের সমর সক্ষমতার বা দম্ভের প্রতীক হিসাবে গন্য করা হয় ।১৯৮০ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে প্রায় ২২ বছর এই ট্যাংক ছিলো অজেয়। কিন্ত হামাস যোদ্ধাদের রকেট ও মর্টার শেলের আঘাতে তা এমনভাবে ধ্বংস হচ্ছে যা রিতীমত দখলদারদের অবাক করে দিয়েছে৷ সামরিক বিশ্লেষকরা ও ভেবে পাচ্ছেনা যে এটা কী করে সম্ভব? তবে কি আল্লাহ হামাস মুজাহীদদেরকে সাহায্য করছেন? এমনই তথ্য ওঠে এসেছে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ এবং সাংবাদিক ও খোদ ইহুদী কমাণ্ডারদের বক্তব্য থেকে৷ তাদের দাবী, যখনি ইসরায়েল সেনারা গাযায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে তখনি কোথা থেকে হঠাৎ যোদ্ধারা বের হয়ে ট্যাংক গুড়িয়ে দিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে৷ তারা শুধু তাদের ছায়া ই দেখতে পাচ্ছে৷

গতকাল আলজাজিরা তার ইউটিউব চ্যানেলে ইজ্জুদ্দী আল-কাসাম ব্রিগেডের সামরিক মুখপাত্র, “আবু উবাইদা”র একটি ১০মিঃ ভিডিও বার্তা শেয়ার করে৷ তিনি বলেন,
আলহামমদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমত এবং তাঁর সাহায্য আমাদের মুজাহিদরা দখলদারদের ১৩৬ টি যুদ্ধযান পুরোপুরি বা অনেকাংশে ধ্বংসে করেছে৷ প্রচুর সংখ্যক দখলদার সেনাকে হত্যা করেছে৷

আমাদের মুজাহিদরা বিরত্বের সাথে গাজার উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণে সমস্ত স্থল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মোকাবিলা করতে থাকবে। ফাঁদে ফেলে তারা জিরো পয়েন্ট দুরত্ব থেকে ট্যাংক ধ্বংস করছে৷ মর্টার শেল ও রকেটের আঘাতে বিল্ডিং ও দেয়ালের পাশে লুকিয়ে থাকা সৈন্যদেরকে হত্যা করছে৷ আমাদের মুজাহিদরা শত্রুদের সম্মুখ ও পিছন দিক থেকে আক্রমণ করে বিপর্যস্ত করে তুলছে৷

তিনি আরো বলেন, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ৩৩ দিন পরেও আল-কাসাম মুজাহিদরা এখনও মোকাবিলা করতে সক্ষম৷ আমাদের মুজাহীদরা দখলদারদের আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য ময়দানে প্রদর্শন বীরত্ব প্রদর্শন করেছে তা প্রত্যেক আরব মুসলিম এবং পৃথিবীর সকল স্বাধীন মুসলিমদের জন্য গর্ব৷

তিনি প্রতিরোধের জন্য বিশ্বমুসলিমদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা পশ্চিম তীর, গাজা এবং জেরুজালেমে এবং সমস্ত ফ্রন্ট এবং অঙ্গনে দখলদারদের প্রতি আমাদের ক্রোধ প্রতিরোধের আসন্ন নতুন কিছু ঘটার ঘোষণা করছি।”

সরকারী হিসাব মতে ৭ অক্টোবর থেকে নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫৩৮ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে এবং ৫৪৩১জন আহত হয়েছে। বন্দি হয়েছে ২৪২ জনেরও বেশি৷ এই বন্দিদের বিনিময়ে হামাস যোদ্ধারা দখলদারদের কাছে বন্দী থাকা শিশু ও মহিলা সহ ৬০০০ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময় করতে চায়।

যুদ্ধের ৩৩তম দিনেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় গণহত্যা এবং ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ চালাচ্ছে, যাতে যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪২৩৭ জন শিশু এবং ২৭১৯ জন মহিলা সহ ১০৩২৮ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং প্রায় ২৬০০০আহত হয়েছে।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১৬৩ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ২২১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা




গাজায় প্রতিদিন প্রায় ১৬০ শিশু নিহত হচ্ছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন গড়ে ১৬০ জন শিশু নিহত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই তথ্য সামনে এনেছে। এছাড়া গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচারে চালানো ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজারে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় ৭ হাজার। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৬০ শিশু নিহত হচ্ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মঙ্গলবার জানিয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘের এক ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেন, ‘(ফিলিস্তিনি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, গাজায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৬০ শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে।’এই পরিস্থিতিতে গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ কমাতে চলমান সংঘাতে মানবিক বিরতি কার্যকর করা ‘জরুরি প্রয়োজন’ বলে জানান লিন্ডমেয়ার। তিনি বলেন, ‘গাজার হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, এবং যারা বেঁচে আছেন তারাও ট্রমা, নানা রোগ এবং খাবার ও পানির অভাবে ভুগছেন। বেঁচে থাকার জন্য এসব মানুষের পানি, জ্বালানি, খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার নিরাপদ সরবরাহ প্রয়োজন।’লিন্ডমেয়ার বলেন, রসদ, কনভয় এবং মানবিক সহায়তা সরবরাহ প্রস্তুত রয়েছে। সবকিছু সেট আপ করা হয়েছে। কিন্তু যা নেই তা হলো- এগুলো নিয়ে গাজায় প্রবেশাধিকার এবং এটিই আমাদের প্রয়োজন। রোগীদের সুরক্ষা এবং হাসপাতালগুলো যেকোনও উপায়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে নিরাপদ রাখা প্রয়োজন। গাজা উপত্যকার উত্তরের হাসপাতালগুলোর বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডব্লিউএইচও কেবলমাত্র ‘একবারই’ হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে।

গাজার হাসপাতালগুলোর নিচে হামাসের টানেলের কারণে সেগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলে ইসরায়েল যে দাবি করেছে সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন: ‘ হাসপাতালের নিচে কী আছে তা আমরা যাচাই করতে পারি না। আমরা যা যাচাই করতে পারি তা হাসপাতালে এবং মাটির ওপরে যা আছে সেগুলো। হাসপাতালগুলোতে জরুরিভাবে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১০ হাজার ৩২৮ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ৪ হাজার ২৩৭ শিশু এবং ২ হাজার ৭১৯ জন নারী রয়েছেন। ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।

জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজা ফিলিস্তিনি শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। এছাড়া গাজায় ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির (ইউএনডব্লিউআরএ)-এর মতে, গত এক মাস ধরে চলা বর্বর আগ্রাসনে গাজার মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমনকি ইউএনআরডব্লিউএ-এর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে ৪ গুণ বেশি মানুষ অবস্থান করছেন। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি করা হচ্ছে বলেও সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে।




ইসরাইলকে থামাতে ব্যর্থ হলে আমেরিকাকে কঠোর আঘাত করা হবে: ইরান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আশতিয়ানির হুঁশিয়ারি

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমেরিকাকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, মার্কিন সরকার যদি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলের বর্বর যুদ্ধ মেশিন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ওয়াশিংটনকে চড়া মূল্য দিতে হবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ রেজা আশতিয়ানি গতকাল (রোববার) তেহরানে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “মার্কিনীদের প্রতি আমাদের উপদেশ হচ্ছে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে একটি অস্ত্রবিরতি প্রতিষ্ঠা করা হোক। তা না হলে আমেরিকার বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানা হবে।” তিনি বলেন, “আমরা সব সময় ইহুদিবাদী সরকারের প্রতি সমর্থন করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমেরিকাকে পরামর্শ দিয়ে এসেছি।”

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু কৌশলগত ভুল করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন ইরানকে যে বার্তা পাঠিয়েছে তা মার্কিন সরকারের ভয় ও হতাশা থেকে উৎসারিত। জেনারেল আশতিয়ানি বলেন, মার্কিনীরা এখন ইসরাইলিদের সঙ্গে [গাজা উপত্যকার] জলাভূমিতে হাবুডুবু খাচ্ছে এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তড়পাচ্ছে।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করার পর ইহুদিবাদী ইসরাইল তার বর্বর যুদ্ধ মেশিন চালু করে। সেদিন থেকে এ পর্যন্ত দখলদার সেনাদের পাশবিক হামলায় ৪,৮০০ শিশু ও ২,৫৫০ নারীসহ ৯,৭৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার ২৩ লাখ অধিবাসীর জ্বালানী, বিদ্যুৎ, খাদ্য ও খাবার পানির সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিয়েছে তেল আবিব। ইসরাইল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সেনা ঘাঁটিগুলোর ওপর প্রতিরোধ যোদ্ধারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছেন।

এদিকে, গত ১ নভেম্বর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গাজা উপত্যকার ওপর বর্বরতা বন্ধ করতে ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য তেল আবিবের কাছে তেল ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।#

সূত্র: পার্সটুডে




হামাস প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পর যা বললেন আয়াতুল্লাহ খামেনি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইরানে ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল খামেনি গাজার জনগণের জন্য ইসলামি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ইসলামি সরকারগুলোর ব্যাপক ও বাস্তব সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তেহরানে আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে এক বৈঠকে ফিলিস্তিনি হামাস প্রতিরোধ আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়া গাজার সর্বশেষ ঘটনাবলী, ইহুদিবাদী সরকারের অপরাধ এবং পশ্চিম তীরের সর্বশেষ ঘটনাবলী নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

সর্বোচ্চ নেতা তার পক্ষ থেকে গাজার অবিচল জনগণকে তাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের জন্য ধন্যবাদ জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু পশ্চিমা দেশের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ইহুদিবাদী সরকারের সংঘটিত অপরাধের তীব্র নিন্দা জানান। আয়াতুল্লাহ খামেনি ইহুদিবাদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনীকে সমর্থন করার ইরানের স্থায়ী নীতির ওপর জোর দেন।

সুত্র: পার্স টুডে




পবিত্র ভূমিতে ইসরায়েলের কোনো স্থান নেই: হামাস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

গত ৭ অক্টোবর ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা যে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছেন তাকে ‘সবেমাত্র শুরু’ বলে ঘোষণা করেছেন ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সিনিয়র নেতা গাজি হামাদ। তিনি বলেন, ইসরাইল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত একই ধরনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ হামলা একের পর আসতেই থাকবে।

গাজি হামাদ এলবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, “আমাদের ভূমিতে ইসরাইলের কোনো স্থান নেই। আমরা এই অবৈধ রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করে দেব, কারণ এটি নিরাপত্তাগত, সামরিক ও রাজনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।”

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের যোদ্ধারা ‘আল-আকসা তুফান’ অভিযান শুরু করেন। ওই অভিযানে সাড়ে তিনশ’র বেশি সেনাসহ ১,৪০০ ইসরাইলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা শত শত ইসরাইলিকে বন্দি করে নিয়ে গাজ্জায় ফিরে যান। গাজি হামাদ ওই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “আমরা ইসরাইলকে একটি শিক্ষা দিয়েছি এবং এই শিক্ষার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে।”

অভিযানে ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছা হামাসের ছিল না বলে তিনি উল্লেখ করেন। গাজি হামাদ বলেন, “হামাস বেসামরিক নাগরিকদের কোনো ক্ষতি করতে চায়নি কিন্তু বাস্তবে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে যা হয়েছে তার পুরোটাই ছিল ন্যায়সঙ্গত।”

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনিদের অভিযানে পরাজিত ও অপমানিত ইসরাইল হামাসের সঙ্গে পেরে না উঠে নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার কাজ শুরু করে। সেদিন থেকে গাজ্জা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি পাশবিক বোমাবর্ষণে ৩,৬০০ জনের বেশি শিশুসহ অন্তত ৮,৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইহুদিবাদী সেনারা বর্তমানে গাজ্জায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে। ওই অভিযানে তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের প্রচণ্ড প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। মঙ্গলবার একদিনেই অন্তত ১৬ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে তেল আবিব। গতকাল (বুধবার) ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বহু ইসরাইলি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করার কথা ঘোষণা করেছে। তবে ইসরাইল এখনও বুধবারের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ প্রকাশ করেনি। ইসরাইল নিজের নিহত সেনাদের সংখ্যা কমিয়ে প্রচার করছে বলেও ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ঘোষণা করেছেন।

সূত্র : পার্সটুডে