যুদ্ধবিরতির সংলাপে যোগ দিতে মিশর যাচ্ছেন হামাস প্রধান

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের গাজায় দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় প্রসঙ্গে আলোচনা করতে মিশর যাচ্ছেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ।

স্থানীয় সময় আজ বুধবার তার কায়রোতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কায়রোতে হামাসের একটি উচ্চপর্যায়ে প্রতিনিধিদল এ সংলাপে অংশ নেবে এবং সেই দলটির নেতৃত্ব দেবেন ইসমাইল হানিয়া। এছাড়া মিশরের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান আব্বাস কামেলের সঙ্গেও দেখা করবেন হানিয়া।
এবারের বৈঠকে অবরুদ্ধ গাজাবাসীকে মুক্ত করা, ইসরায়েলে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, গাজায় ইসরায়েলি হামলার অবসান এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করবেন নেতারা। এছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হবে ওই বৈঠকে।

এর আগে কাতারের মধ্যস্থতায় এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। সেই চুক্তির মাধ্যমে ৮০ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ২৪০ কারাবন্দি ফিলিস্তিনির মুক্তি নিশ্চিত করেছিল ওই স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলিদের মুক্ত করতে সোমবার ইউরোপে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান নির্বাহী ডেভিড বার্নিয়া এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক বিল বার্নর্সের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুলরহমান আল থানি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৯ হাজার ৬৬৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। আর আহতের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি। সূত্র: বিবিসি




যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে, ইসরায়েলকে যে শর্ত দিলো হামাস

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য নিয়ে দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র।

মিসরের দুটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ই নতুন যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তি চায়। তবে কিভাবে এটি কার্যকর হবে সে বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।

সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে, হামাস ইসরায়েলকে দুটি শর্ত দিয়েছে। প্রথমটি হলো— তারা বলছে কোন জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে সেই তালিকা তারাই তৈরি করবে। দ্বিতীয়টি হলো— ইসরায়েলি সেনাদের পূর্ব নির্ধারিত অবস্থানে পিছিয়ে যেতে হবে।

ইসরায়েল হামাসের তালিকা তৈরির বিষয়টিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। তবে তারা এজন্য একটি সময়সীমা ও তালিকা দেখানোর দাবি জানিয়েছে। মূলত যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করার জন্য ইসরায়েল এমন দাবি করেছে।

তবে সেনাদের পূর্ব নির্ধারিত অবস্থানে প্রত্যাহার করে নেওয়ার যে শর্ত হামাস দিয়েছে, সেটি ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।

গত শুক্রবার গাজা সিটিতে ভুলক্রমে তিন জিম্মিকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। ওই জিম্মিদের মৃত্যুর পর হামাসের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় চুক্তি করার জন্য বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার ওপর চাপ তৈরি হয়। এরপরই হামাসের সঙ্গে নতুন চুক্তির আলোচনা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স আরও জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার দাবি জানিয়েছে, গাজায় সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে ইসরায়েলকে। এজন্য একটি বর্ডার ক্রসিং খুলে দিতে বলেছে দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স




হামাসের সঙ্গে আলোচনার দাবিতে ইসরায়েলে বিক্ষোভ অব্যাহত

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

গাজা উপত্যকার সিজায়া এলাকায় তিন জিম্মিকে ভুলক্রমে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলি সেনারা। ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হাত থেকে পালাতে সমর্থ হয়েছিলেন এই তিনজন। কিন্তু দখলদার সেনাদের ভুলে করুণ মৃত্যু হয়েছে তাদের।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় দেশটিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় জিম্মি মুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে ইসরাইল। শনিবার (১৬ ডিসেম্বাবর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাকে ‘অবর্ণনীয় দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, ‘এটা দুঃখজনক ভুল।’

জিম্মি হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাতেই তেলআবিবে বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় অনেকে নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে বক্তব্য দেন। জিম্মিদের মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগে থেকেই ইসরাইলের ভেতর থেকে চাপ ছিল দেশটির সরকারের ওপর। তিন জিম্মি হত্যার ঘটনার পর এ চাপ আরও বেড়েছে।

একসঙ্গে তিন জিম্মিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর বিষয়টি তদন্ত করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি দল। তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনের বরাতে জিম্মিদের হত্যার বিষয়টি বর্ণনা দিয়েছেন সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

তিনি বলেছেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন এক সেনা কয়েক মিটার দূরের একটি ভবন থেকে তিন ব্যক্তি বের হয়ে আসতে দেখে তখন থেকে। তাদের তিনজনের কারো শরীরেই কাপড় ছিল না। তিনজনের একজনের হাতে একটি সাদা পতাকা ছিল। তাদের তিনজনকে ওই সেনা হামাসের সদস্য মনে করেন। তিনি সন্দেহ করেন, তাদের ফাঁদে ফেলতে হামাসের সদস্যরা এভাবে বাইরে বের হয়ে আসছে। এমন চিন্তা করে কোনো দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ওই তিনজনকে লক্ষ্য করে গুলিবিদ্ধ করেন তিনি এবং ‘সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী’ বলে চিৎকার শুরু করেন।

ওই সেনার গুলিতে তিন জিম্মির দুইজন সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন। অপরজন তখন হিব্রু ভাষায় ‘সহায়তা’ চায়। কিন্তু কোনো কথা না শুনেই ওই জিম্মিকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনা। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের নাগরিকদের।




‘ভুল করে’ তিন জিম্মিকে হত্যা করলো ইসরায়েল

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

গাজায় অভিযান চালানোর সময় ভুল করে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর হাতে জিম্মি থাকা ওই তিনজনকে দূর থেকে হুমকি ভেবে গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলেছে, এই ঘটনা ‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে’ তদন্ত করা হবে।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, শুজাইয়া এলাকায় যুদ্ধের সময় সেনারা ভুল করে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ফলস্বরূপ, সেনারা তাদের দিকে গুলি চালায় এবং তারা নিহত হন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘটনাটি অবিলম্বে পর্যালোচনা শুরু করে… এই ঘটনা থেকে তাৎক্ষণিক শিক্ষা নেওয়া হয়েছে, যা যুদ্ধক্ষেত্রের সব সেনার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জন্য গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করছে সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে, ওই তিনজন হয় তাদের অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল অথবা তাদের ফেলে যাওয়া হয়েছিল।

সূত্র: আল-জাজিরা, এএফপি




ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘ওয়েবসাইট হ্যাক’

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে। এর হোমপেজে ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জর্ডানের নাগরিক পরিচয় দিয়ে হ্যাকাররা বুধবার সন্ধ্যায় ওয়েবসাইটে হামলা চালায় এবং তাদের বার্তা ‘অ্যানোনিমাস জো’ দিয়ে রেখে যায়।

ইসরায়েলি সংবাদপত্র দ্য জেরুজালেম পোস্টের বরাত দিয়ে বার্তায় বলা হয়, ‘এটি আপনাদের নোংরা কর্মকাণ্ড, বর্বরতা এবং গাজায় আমাদের দুর্বল জনগণকে হত্যার প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘এটি কেবল শুরু এবং এখান থেকে আমরা আপনাদের বলছি আমরা আমাদের ভূমি ফিলিস্তিনের নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত মুক্তি করব।’ ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের স্বার্থের প্রতি পুনরায় সমর্থনের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটবে।

এতে আরও লেখা হয়, জর্ডান শুরু করে গাজা ও ফিলিস্তিনের জনগণের সাথে আছে। আমরা আন্তরিকভাবে এবং বাস্তবিকভাবে আপনার সাথে আছি এবং আপনার আদর্শই আমাদের আদর্শ।




পাকিস্তানে থানায় আত্মঘাতী হামলা, নিহত ২৩

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান শহরের একটি থানায় বিস্ফোরকভর্তি ট্রাক ঢুকে পড়ে। তারপর বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর অন্য বন্দুকধারীরা গুলি চালাতে থাকে। পুলিশের সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই হয়।

উদ্ধারকারী দলের সদস্য আয়াজ মেহমুদ বলেছেন, প্রচুর সেনা ও পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। অনেকের অবস্থা সংকটজনক।

ডন জানিয়েছে, ২৩জন সেনা জওয়ান মারা গেচেন। ৩০ জন আহত হয়েছেন। কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আলোয়ারউল হক কাকার বলেছেন, এই কাপুরুষোচিত আক্রমণ করে নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া যাবে না।

এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-জিহাদ। পাকিস্তানের এই অঞ্চলে পাকিস্তানি তালেবানদের প্রভাব রয়েছে। তাদের গোষ্ঠীর নাম তেহরিক-ই-তালেবান বা টিটিপি। এই নতুন গোষ্ঠী টিটিপি-রই শাখা বলে মনে করা হচ্ছে।

সেনা-সহ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী এই অ়ঞ্চলে নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তারা ওই থানাতেই ছিলেন।

জানুয়ারিতে পেশোয়ারের একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমারুর হামলায় ১০১ জন মারা গেছিলেন।

সুত্র: ডয়চে ভেলেে




গাজায় হতাহত ৬৬ হাজার, ৪৫ শতাংশই শিশু

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নিহত ও আহতের সংখ্যা ৬৬ হাজারের বেশি। এদের মধ্যে ৪৫ শতাংশই শিশু। এছাড়া গাজায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে হামলায় ৩৬ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। সেখানকার পরিস্থিতি মারাত্মক বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করেও যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে অন্তত ৪৮ হাজার ৭৮০ জন। খবর আল জাজিরার

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, ‘গাজার জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যা সব বর্ণনার বাইরে। আমেরিকান ও ইউরোপীয় সমর্থনে ফিলিস্তিনের অস্তিত্বের অবসান ঘটানো অমানবিক।’

আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে প্রতিদিন শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে এবং হাজার হাজার আহত হচ্ছে। নিহতদের প্রায় অর্ধেক শিশু।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলিরা যেসব এলাকাকে নিরাপদ বলে দাবি করছে সেগুলোকেই বারবার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এটি এখনও গাজা উপত্যকা জুড়ে ঘটছে – কোনও নিরাপদ জায়গা নেই।

গাজার কর্মকর্তা জানান, ‘ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকারদের ৭০ শতাংশ শিশু ও নারী। তারা যেসব বাড়িতে বাচ্চারা থাকে সেগুলোকে টার্গেট করছে। হতাহতদের প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু। এটা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না।’

মধ্য ও দক্ষিণ গাজার দুটি হাসপাতাল গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত ১৩৩ জনের মৃতদেহ পেয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর দেইর এল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতালে ৭১টি মৃতদেহ আনা হয়েছে। হাসপাতালটিতে ১৬০ জন আহত ব্যক্তিকেও আনা হয়।

এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ৬২ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই হাসপাতালএখনও দক্ষিণ গাজায় পরিচালিত প্রধান চিকিৎসা সুবিধাগুলোর একটি। এছাড়াও ৯৯ জন আহত ব্যক্তিকে সেখানে আনা হয়।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলছে, মাঝারি ক্ষুধায় পতিত হয়েছে গাজার ৫২ শতাংশ এলাকার মানুষ। সেখানকার ৯১ শতাংশ পরিবার ক্ষুধার্ত অবস্থায় বিছানায় যায় এবং ৬৩ শতাংশ মানুষ সারাদিনই কোনো খাবার না খেয়ে থাকার কথা জানিয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে এই অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ।

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহের চেইন ভেঙে পড়েছে। এছাড়া গাজায় কাজ করা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর মুখপাত্র আদনা আবু হাসনা জানিয়েছেন, গাজায় অনাহারে থাকা মানুষের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি আজ চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম- এর মধ্যে একটি খান ইউনিসের সবচেয়ে বড় আশ্রয়কেন্দ্রে, সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি। আমি আপনাকে বলতে পারি যে রাফাহ এবং খান ইউনিস এবং উত্তরাঞ্চলে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ রয়েছে।’

এদিকে ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলার মধ্যে তাদেরকে আরও ১০৬ মিলিয়ন ডলারের ট্যাঙ্ক কার্তুজ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা সহায়তা এবং অস্ত্র বিক্রি উভয় ক্ষেত্রেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে।

বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে যুদ্ধে প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রেখেছে। তবে মার্কিন আইনপ্রণেতারা এই বিষয়টি আবারও বিবেচনা করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে যে, গত সপ্তাহে তারা উত্তর গাজা এবং গাজা শহরের স্কুলগুলোতে বা তার আশেপাশে কমপক্ষে ১৩টি হামলা রেকর্ড করেছে। এছাড়াও হাসপাতালে বা কাছাকাছি অন্তত ১৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, এই স্কুলগুলো হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত বেসামরিক মানুষকে আশ্রয় দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেইট লাহিয়ার বেশ কয়েকটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে এবং বয়স্ক পুরুষ, ছেলে এবং একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকসহ কয়েকশ পুরুষ ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি বন্দীদের চোখ বেঁধে এবং উলঙ্গ করে রাখে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে বস্ত্রহীন অবস্থায় তাদেরকে ট্রাকে করে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে গাজায় স্থল অভিযানে ইসরায়েলি সৈন্যের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯৯ জন হয়েছে। শনিবার দক্ষিণ গাজায় যুদ্ধের সময় আরও চার সেনা নিহত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে, ৩১ অক্টোবর গাজায় বড় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৯ সেনা নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি শেষের পর থেকে অন্তত ২৭ জন সেনা নিহত হয়েছে।




গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাবসান ও শান্তি সম্মেলনের ডাক ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্টের

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধাবসান চেয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। একই সঙ্গে তিনি স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন।

শুক্রবার পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আহ্বান জানিয়েছেন ৮৭ বছর বয়সী মাহমুদ আব্বাস।

মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘আমি সবসময়ই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে। আমার প্রস্তাব-একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আহ্বান করে বৈশ্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের সমন্বয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক।’
‘তবে সবার আগে প্রয়োজন গাজায় যুদ্ধপরিস্থিতির অবসান ঘটানো। কারণ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় গত দু’মাসে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত খুবই বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং গাজার যুদ্ধের আঁচ ব্যাপকভাবে টের পাচ্ছেন পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরাও। পশ্চিম তীরের শহরে শহরে ইহুদি বসতকারীদের সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের।’

‘আমি মনে করি, একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন কেবল গাজার যুদ্ধাবসান কিংবা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই নয়, বরং ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের পরস্পরের প্রতি বৈরী মনোভাব দূর করতেও সহায়ক হবে।’

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজায় ২০০৬ সালের নির্বাচনে পরাজিত ও পরে হামাসের বৈরীতার শিকার হয়েছে পিএ। কিন্তু উপত্যকার সরকারি প্রশাসনিক ও পরিষেবা কর্মকর্তা-কর্মীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য খাতে ব্যয়ের জন্য এখনও প্রতি মাসে ১৪ কোটি ডলার গাজায় পাঠাচ্ছে পিএ। এমনকি গাজার মন্ত্রিসভায় পিএর তিনজন সদস্যও রয়েছেন।

‘গাজা আর এখন আগের মতো নেই। সেখানাকার স্কুল, হাসপাতাল, অবকাঠামো, ভবন, পথঘাট, মসজিদ-সব ধ্বংস হয়ে গেছে। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। এই যুদ্ধ শেষে গাজাকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং সে সময় আমাদের বিপুল পরিমাণ সহায়তার প্রয়োজন হবে।’

প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার জেরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

সূত্র : রয়টার্স।




গাজা ইস্যুতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা জারি করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এই ধারা যে-কোনো বৈশ্বিক সংকট সমাধানে জাতিসংঘ মহাসচিবের সবচেয়ে শক্তিশালী কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত।

গতকাল (বুধবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান প্রধান জ্যাভিয়ার লোপেজ ডোমিঙ্গুয়েজের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে জাতিসংঘ সনদের ৯৯ অনুচ্ছেদ জারির আহ্বান জানিয়েছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এই ধারায় বলা আছে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয়ে যে-কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, একটি মানবিক বিপর্যয় এড়াতে নিরাপত্তা পরিষদকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। সেই সঙ্গে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ৫ বছরের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এরপর সদস্য দেশগুলোর সম্মতিতে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে একই দায়িত্ব পান তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ৯৯ ধারা প্রয়োগের আহ্বান জানালেন গুতেরেস।

ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার অপকর্মের সহযোগী বিশ্বমোড়ল আমেরিকা যখন গাজা উপত্যকার ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর তখন জাতিসংঘ মহাসচিবের এ পদক্ষেপ মার্কিন সরকারের কাছে ‘চরম বিব্রতকর’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গুতেরেস এই প্রথম গাজা যুদ্ধের ব্যাপারে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিপক্ষে অবস্থান নেন নি।

এর আগে গত ২৩ অক্টোবর তিনি এক বক্তব্যে বলেছিলেন, হামাস শুধু শুধু ৭ অক্টোবরের অভিযান চালায় নি। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে গুতেরেস বলেন, “ফিলিস্তিনি জনগণ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে। তারা দেখেছে যে, তাদের ভূমি প্রতিনিয়ত বসতি দ্বারা দখল হয়ে যাচ্ছে ও সহিংসতায় জর্জরিত, তাদের অর্থনীতি স্তিমিত, তাদের মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং তাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত। তাদের এমন দুর্দশায় রাজনৈতিক সমাধানের আশা লোপ পাওয়ার পরই তারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়েছে।”#

পার্সটুডে




ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে তানজানিয়ায় অন্তত ৪৭ মৃত্যু

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

তানজানিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যায় ও ভূমিধসে অন্তত ৪৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া সংস্থার কর্মকর্তারা। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮০ জন মানুষ। দেশটির হানাং পর্বতের ঢালের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তার জন্য জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসান। প্রতিকূল আবহাওয়ায় ওই অঞ্চলের ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিবিসি আরও জানায়, বন্যাকে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপদ বলা হয়ে থাকে। বন্যায় প্রতি বছর দেশটিতে কয়েক হাজার মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে থাকেন। মূলত পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো ২০২৩ সালে বন্যা এবং ভূমিধসে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর সেটি আবার আংশিকভাবে আবহাওয়ার এল নিনোর কারণে।

উল্লেখ্য, গত মাসে দেশটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের ফলে রাজধানী দারুস সালাম এবং কিগোমা, কাগেরা, গেইতা ও উনগুজা এলাকায় প্রাণহানি এবং বহু সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশের কিছু অংশের ফসলও ভেসে গেছে এবং মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর প্রভাব পড়েছে। এদিকে চলতি মাসেও এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে তানজানিয়ার আবহাওয়া সংস্থা থেকে সতর্ক করা হয়েছে ।