হাওরে ধান কাটা উৎসবে মাতোয়ারা কৃষক

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

আগেভাগে ধান কাটার ধুম পড়েছে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে। কড়ারোদ অগ্রাহ্য করে মাঠে ছুটছেন কৃষক। হাতে কাস্তে, মুখে হাসি। ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি ঘেমে-নেয়ে ধান কাটছেন তারা। নতুন ধানের নেশায় মাতোয়ারা সবাই। আবহাওয়া ভালো থাকায় একরে শতমন ধান হয়েছে।

সূর্যের তাপ যেন আগুনের হলকা। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে গায়ে ফোসকা পড়ে অবস্থা। এই আগুনে সূর্যের নিচে মাঠভরা বোরোধান। ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কাটার তাগিদ ছিল কৃষি বিভাগের, এই কড়ারোদ উপেক্ষা করে সেই কাজটিও করে দেখিয়েছে হাওরের কৃষক। গরমে কষ্ট হলেও আর কিছু দিন এমন রোদও চায় তারা, যেন শতভাগ ধান গোলায় উঠাতে পারে।

ইমান আলী (৬১) বাড়ির সামনে খড় শুকাচ্ছিলেন। রোদেপুড়ে গায়ের রং যেন তামাটে বর্ণের। গামছা বাঁধা মাথায় ঝরঝর করে ঘাম ঝরছিল গা থেকে। দীর্ঘক্ষণ কাজ করে হাঁপিয়ে উঠেছেন তিনি। জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের খয়রত গ্রামের এই কৃষকের চাষবাস বাড়ির সামনের বড় হাওরে। এবছর কেমন ধান হলো? প্রশ্ন শুনেই কুঁচকানো মুখের রেখায় রেখায় ফুটে উঠে প্রশান্তির হাসি। ‘এইবার ইচ্ছামতো ধান অইছে বাপ। চিন্তাও করি নাই এমুন ধান অইব। অক্করে ১০০ মণ।’

করিমগঞ্জ-নিকলীর আবদুল হামিদ সড়কের দুপাশে দিগন্তজোড়া হাওর। মাইলের পর মাইল কেবল ফসলি জমি। এ সড়কটি এখন হয়ে উঠেছে ধান শুকানো ও মাড়াইয়ের স্থান।

বাড়ির বউ-ঝি থেকে শুরু করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও দিনরাত এক করে কাজ করছেন। এমনকি বয়স্ক ব্যক্তিরাও ঘরে বসে নেই। মজলিসপুরের ধানের খলায় দেখা গেল, ছেলেদের সঙ্গে ধান মারাইয়ের কাজ করছেন জাহেরা বেগম (৭৫)। ঝাড়ু নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধানগুলো ঠিকঠাক করছেন। হাঁপ ছেড়ে সোজা হয়ে বললেন, ঘরে বইয়া থাকতে ভাল্লাগেনা, পুতাইনরা কষ্ট করতাছে আমি বইয়া থাহি ক্যামনে। রইদে কষ্ট অইলেও যতখানি ফারি করতাছি।

কয়রাকান্দা হাওরে ২০জনের ধানকাটা শ্রমিকের একটি দল ধান কাটছিল। তাদের একজন সোহরাব উদ্দিন (৩৫)। তিনি জানালেন, ১৬ কাঠা জমির ধান কাটলে তারা পাবে ২০ মণ ধান। মৌসুম শেষে এবার প্রত্যেকে ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন। তিনিও জানালেন, এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তরুণ কৃষক আলমগীর (৩০)। তিনি জানালেন, একমাত্র বঙ্গবন্ধু জাতের ধান ছাড়া ব্রি-ধান ৮৯,৯২,৯৮ এবং হাইব্রিডসহ সব ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। রসিকতা করে হাসতে হাসতে তিনি বললেন, ‘এবার ধানের ফলনে আমরা কৃষকরা সেঞ্চুরি করেছি। একরে শত মণ ধান হয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিরাট অর্জন বা সাফল্য বলা যায়।’

কৃষকরা জানান, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় হাওরের বোরো ধান তলিয়ে গিয়েছিল। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে আগভাগে ধান কাটা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ধান কেটে ঘরে তুলতে চান তারা। এ কারণে হাওরে অন্যবারের চেয়ে ব্যস্ততা বেশি।

ধান কাটার পাশাপাশি ধানের কেনাবেচাও শুরু হয়ে গেছে। বাল্কহেড ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায় প্রতিদিন শত শত মণ ধান আসছে করিমগঞ্জের চামড়াঘাটের আড়তগুলোতে। সেখানে কথা হয় ইটনার ছিলনি গ্রামের আব্দুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ধারকর্জ করে এবার চার একর জমিতে বোরো চাষ করেছেন। ভালো ধান হয়েছে। তবে প্রতিদিন দাম একটু করে কমছে। ঋণের টাকা পরিশোধ ও শ্রমিক খরচ মেটাতে শুরুতে কিছু ধান বেচতে হয় আমাদের। কিন্তু আড়ত মালিকরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাম কম দিচ্ছেন। মোটা ধান বেচতে হচ্ছে ৮৫০টাকা মণ দরে। অথচ এক মণ ধান চাষে খরচ হয়েছে এক হাজার টাকারও বেশি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কৃষকরা যদি ন্যায্যমূল্য না পায়, তাহলে কৃষিকাজে আগ্রহ আর থাকবে না। কত দিন আর বঞ্চিত হবে তারা।

তবে সেখানকার আড়তদার জামাল আহমেদ বলেন, চামরাঘাট আড়তে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার ধান কেনাবেচা হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার ধানের দাম বেশি পাচ্ছে কৃষক। মোটা ৮৫০ ও চিকন ধান ৯৫০টাকা মণ দরে কেনা হচ্ছে।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, কিশোরগঞ্জে এ মৌসুমে ১ লাখ ৬৭হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে কেবল হাওরেই আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৬২০ হেক্টর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার বললেন, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। একরে শত মণ ফলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো দ্রুত কাটা হচ্ছে। দিনরাত পরিশ্রম করে কৃষকরা ধান ঘরে তুলছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টারও নামানো হয়েছে। আবহাওয়া এখনো কৃষকের পাশে আছে বলেই তারা রোদে কষ্ট হলেও আনন্দের সঙ্গে ধান কাটতে পারছে। প্রায় ৮০ ভাগ ধান কাটা শেষ, আবহাওয়া আর কয়েকটা দিন ভাল থাকলে শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।




জামিন পেলেন ড. ইউনূস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাকি ১৩ আসামি।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন। এদিন অর্থ আত্মসাতের আলোচিত এ মামলার অভিযোগ গঠনে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এর আগে সকালে ড. ইউনূস পূর্বশর্তে জামিন আবেদন করেন। এরপর এ মামলায় হাজিরা দিতে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এরপর চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নতুন একজন আসামির নাম যুক্ত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার।

আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ২ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ চার্জশিট গ্রহণ করে মামলার বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল।

গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এরকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।

কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামান, মাইনুল ইসলাম ও ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা করে মোট ৯ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।

একইভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ ও অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড টাচার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।

দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত লঙ্ঘন করে জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যা দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাতের মামলায় আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম।




মহান মে দিবসে সব মেহনতি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১ মে ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে রক্তাক্ত আন্দোলনে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেওয়া বীর শ্রমিকদের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি শ্রমিকদের মজুরির হার বৃদ্ধি এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের এডহক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে।

আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল থেকে যে কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা দিতে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এ শিল্পের কর্মহীন এবং দুস্থ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ তিন মাসের নগদ আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সব সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তার সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তর করেছি। শ্রমিক ভাই-বোনদের যে কোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। মে দিবসের চেতনায় দেশের শ্রমিক-মালিক ঐক্য জোরদার করে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, এটাই হোক আমাদের মে দিবসের অঙ্গীকার।




কৃত্রিম বৃষ্টিতে শিশুদের নিয়ে ভিজলেন ডিএনসিসি মেয়র

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বায়ুদূষণ রোধ ও তীব্র তাপপ্রবাহে শহরকে ঠান্ডা রাখতে নগরীতে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’র ব্যবস্থা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের পরামর্শে এ ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’র ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ পথচারী ও শিশুদের  ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’তে ভিজে আনন্দ করতে দেখা যায়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ সরণিতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ তাপপ্রবাহ থেকে নাগরিকদের কিছুটা স্বস্তি দিতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএনসিসিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন। সে অনুযায়ী অনুযায়ী ডিএনসিসির দুটি স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মেয়র আতিক বলেন, ‘দুটি গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন চার লাখ লিটার পানি আমরা ছিটাব। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি দেওয়া হবে। তবে গাড়িগুলো অলিগলিতে যেতে পারবে না, মেইন রোডে থাকবে। আর সড়কে পানি ছিটানোর জন্য ১০টি ব্রাউজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেক ব্রাউজারে ১৫ হাজার লিটার করে পানি ধরে।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি। আমরা আশা করি, আগামী সাত দিনের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা করতে পারব। এ ছাড়া আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে বিশুদ্ধ পানির ভ্যান থাকবে। ছোট ছোট ভ্যানগুলো নিয়ে অলিগলিতে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরের মানুষ ভ্যান থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারবেন। এগুলোও আমাদের চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে করা হয়েছে।’




টঙ্গীতে ডাইং কারখানায় ভয়াবহ আগুন

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

গাজীপুরের টঙ্গীর বিসিকে একটি ডাইং ও ওয়াশিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ২টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দুপুর ২টার দিকে কারখানাটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, ওই কারখানায় বিভিন্ন ফ্যাক্টরির পণ্য ধোয়া ও শুকানোর কাজ করা হতো। কারখানাটি অনেক বড় হওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা করছেন তারা।




গাজায় ১৯৬ ত্রাণকর্মীকে হত্যা : নিরপেক্ষ তদন্ত চায় জাতিসংঘ

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন মোট ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী। এই ত্রাণকর্মীদের নিহতের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

সম্প্রতি গাজার দেইর আল বালাহতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) গাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নিহত হন ৭ জন ত্রাণকর্মী। এই ত্রাণকর্মীদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়া, তিন জন ব্রিটেন, একজন যুক্তরাষ্ট্রের, একজন পোল্যান্ডের এবং একজন ফিলিস্তিনের নাগরিক।

ইসরায়েল প্রথমে এ ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতি স্বীকারে বাধ্য হয়, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় এবং দুই জন সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এ সংক্রান্ত বিবৃতি জারির কয়েক ঘণ্টা পর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘ইসরায়েলের সরকার তাদের ভুল স্বীকার করেছে। এটা ইতিবাচক, তবে কে ভুল করেছে— তা মূল ব্যাপার নয়। মূল ব্যাপারটি হলো (ইসরায়েলি বাহিনীর) রণকৌশল এবং পদ্ধতি— যে কারণে এ ধরনের ঘটনা গাজায় প্রতিদিন বার বার ঘটছে।’

‘গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী। আমরা প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। আমরা জানতে চাই— কেন তাদের হত্যা করা হয়েছে।’

গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় ১ হাজার হামাস যোদ্ধা। তারপর সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে, পাশপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৫ হাজার। সেই সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

সূত্র : রয়টার্স




দুর্গাপুরে ৩৪০ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দ,আটক ১

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা ৩৪০ বস্তুায় ১৬ হাজার ৯৮৫ কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে পুলিশ। জব্দ করা চিনির বর্তমান বাজারমূল্য ২০ লাখ ৩৮ হাজার ২০০ টাকা।

এ সময় বড় একটি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করতে পারলেও অভিযানের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও কয়েকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে রবিবার রাতে দুর্গাপুর পৌর শহরের এম.কে.সি.এম স্কুল মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ-সব জব্দ করা হয়।আটকৃত ব্যক্তির নাম জুবাইদ হোসেন (১৬)। সে ট্রাকের হেল্পার ও নোয়াখালীর কামাল উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা চিনির একটি বড় কাভার্ড ভ্যান পৌর শহরের এম.কে.সি.এম স্কুল মোড় এলাকায় সড়কেই দাড়িয়ে রাখা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব ও পুলিশের একটি দল রবিবার রাতে সেখানে অভিযানে যান। এ সময় বাংলাদেশী ৫০ কেজির বস্তুায় ভরা ভারতীয় ১৬ হাজার ৯৮৫ কেজি চিনি,একটি কাভার্ড ভ্যান জব্দসহ একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে দুর্গাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সলিমউদ্দিন বাদী হয়ে আটককৃত ব্যক্তিসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পুলিশ আরও জানায়,ভারত থেকে চোরাই পথে এনে ওই চিনি দেশিয় কোম্পানির চিনির বস্তায় ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয়।

দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ আক্কাছ আলী জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এ-সব ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। সোমবার আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতে সোর্পদ করা হয়।




অবশেষে শনাক্ত জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের অবস্থান

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের অবস্থান শনাক্ত, কবে মুক্তি পাবে ২৩ নাবিক?
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ৭২ মাইল দূরে অবস্থান করছে।

বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ৭২ মাইল দূরে অবস্থান করছে।

গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এর পর গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে। জাহাজের ২৩ নাবিককে স্পিডবোটে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন একজন।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা নাবিকদের মধ্যে চট্টগ্রামের বাসিন্দা আছেন ১১ জন। বাকিরা ফেনী, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার। আক্রান্ত নাবিকদের সবাই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা।

জাহাজটি ছাড়িয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে এসআর শিপিং। এ জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

এসআর শিপিংয়ের মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সব সংস্থার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ পরিচালনা করছি। তারা আমাদের যেভাবে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি।’

সাবেক মেরিনারদের মতে, মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখলে কোনো নাবিকেরই ক্ষতি করে না জলদস্যুরা। তাই, এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রেও যেহেতু মালিক প্রতিষ্ঠান সব কিছু করতে আগ্রহী, তাই ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।




৮ দিনে প্রবাসী আয় ৫৬২৪ কোটি টাকা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

চলতি মার্চ মাসের প্রথম ৮ দিনে দেশে ৫১ কো‌টি ২৯ লাখ  (৫১২.৯ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১১০ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ৫ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি বা দুই বিলিয়ন ডলার হবে।

রবিবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্যমতে, চলতি মাসের ৮ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৫১ কো‌টি ২৯ লাখ ডলার এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি মার্কিন ডলার। আর ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কো‌টি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে আসা সর্বোচ্চ পরিমাণের রেমিট্যান্স।




২১ বছর সমুদ্রসীমার অধিকার নিয়ে কেউ কথা বলেনি : প্রধানমন্ত্রী

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

২১ বছর সমুদ্রসীমার অধিকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে, সেখানে আমাদের কোনো অধিকার ছিল না। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, ২১টা বছর তারা সমুদ্রসীমার অধিকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি।’

বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট-১৯৭৪’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলার পাশাপাশি নিশ্চিত হয়েছে সমুদ্রসীমা। সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১২ সালে ভারত, মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই সমুদ্রে বিশাল সমুদ্র সীমা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে। ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর শান্তিপূর্ণ বাণিজ্য পথ হিসেবেই যেনো অব্যাহত থাকে। পররাষ্ট্রনীতি মেনেই সমুদ্র সম্পদ আহরণে সচেষ্ট থাকবো।’

তিনি বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তেল, গ্যাস উত্তোলনে বিনিয়োগ করতে পারেন। আমরা চাই তেল, গ্যাসের সঠিক ব্যবহার। বিশাল সমুদ্রসীমার সম্পদ ব্যবহার করে দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি করাই সরকারের লক্ষ্য।’

প্রত্যেকটা বিভাগে মেরিন একাডেমি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার উন্নয়নে নানা ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ব্লু ইকোনমি যাতে ব্যবহার করতে পারি সে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে হবে।’