মাহে-রমযান সমাগত: আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু?

লেখক: সিনিয়র শিক্ষক, ঢাকা দক্ষিণ দারুল উলুম হুসাইনিয়া মাদ্রাসা, সিলেট৷

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ঐ মহান সত্তার যিনি আমাদেরকে সর্বশেষ নবীর উম্মত করে এ নশ্বর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর প্রেরিত নবীর অনুকরণে ইবাদত-বন্দেগী ও দিনযাপনের কথা বলে দিয়েছেন৷আখেরি নবীর উম্মত হওয়াতে আমাদের জন্য এরকম কিছু মওসুম বা সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন যাতে নেক আমল করে বন্দা অধিক হারে পূণ্যের অর্জনের সুযোগ পায়৷ফলে কিয়ামতের দিন বিচারকের সামনে জীবন হিসাবের সংক্ষিপ্তকরণ দেখিয়ে কোন অযুহাত দাঁড় করাতে পারবে না৷ ঐ দিনই পুণ্যের বাঁচ-বিচারে সাব্যস্ত হবে আপনার,আমার সকলের স্থায়ী আবাসন কোথায়? হয়তো চিরস্থায়ী শান্তিনিকেতন জান্নাত,নয়তো অত্যান্ত কঠোর শাস্তির জালানিকেতন জাহান্নাম৷

আর এই বর্ণিত মওসুম কিংবা সময়টি হলো পবিত্র মাহে-রমযান,যার প্রত্যেকটি মূহুর্ত কিংবা সময় অন্যান্য সময়ের চেয়ে অধিক মুল্যবান ও পূণ্যার্যনের আধিক্যতায় বেশি কার্যকরী ও উপযুক্ত৷ যে মাসটিকে মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর একাধিক অনুগ্রহ দ্বারা বরকতপূর্ণ করে তুলেছেন এবং চুড়ান্ত সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে যাতে রেখেছেন অবারিত সুযোগ-সুবিধা৷ রমযানে একজন মুমিন বন্দা আরো উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ইবাদত-বন্দেগি করতে,এমনকি কৃতিত্বের মানদণ্ডে আরো অগ্রগামী হওয়ার নিমিত্তে বোনাস স্বরূপ বে-হিসাব সাওয়াব ও ফজিলতের কথা ঘোষনা দিয়েছেন৷ যেমন-এ মাসে সওয়াবের দিক থেকে একটি ফরজ ৭০টি ফরজ আদায়ের সমান এবং একটি নফল একটি ফরজ আদায়ের সমান। তাই এ সুযোগ গ্রহণে আমাদের উৎসাহী হওয়া একান্ত জরুরি।

এই উৎকৃষ্ট মাসের পরিপূর্ণ ফায়দা হাসিল করতে হলে পূর্বপ্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। এই মাসটি পাওয়ার জন্য আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর মন সবসময় উদগ্রীব ছিল৷ বছর ঘুরিয়ে যখন আবার আরবী রজব মাস আসত তখন তিনি অধীর আগ্রহ ও মনোবাসনা নিয়ে মাহে-রমযানের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতেন এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন৷আর বলতেন-

اللهم بارك لنا في رجب وشعبان بلغنا رمضان
অনুবাদ: ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসে আমাদের বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে রমযানে পৌঁছে দিন।’ অর্থাৎ- আমাদের নেক হায়াত দান করুন, যাতে আমরা রমযান মাস পেয়ে রমযানের বরকত লাভ করতে পারি এবং তার যথার্থ কদর্য করতে পারি৷

হযরত আয়েশা রা. বলেন- যখন রমযান সমাগত তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র রমযানের ইবাদত-বন্দেগির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে কোমর বেঁধে লেগে যেতেন।–(আল-হাদীস)
এছাড়া নবী করীম সা. রমযানের প্রস্তুতি গ্রহণে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতেন৷ অন্যদেরকেও এভাবে রমযানের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিতেন। সাহাবায়ে কেরাম,ওলী-আউলিয়া ও পীর-মাশায়েখরা সবাই রমযান আসার পূর্ব থেকেই রোজার প্রস্তুতি নিতেন ৷বিশুদ্ধ রূপে রোজা পালনে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতেন৷

সুতরাং আমাদেরও রমযানের প্রস্তুতি নেয়া একান্ত প্রয়োজন। মুমিন মুসলমানরা এখন সেই প্রস্তুতি নিতে হবে এবং এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে, মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে, নিতে হবে বিশেষ পরিকল্পনা।

পূর্বপ্রস্তুতি: প্রত্যেক মুসলমানেরই ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পরিবারিক, সামাজিক এমনকি রাষ্ট্রিয় পর্যায়েও মাহে-রমযানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার ৷
সে লক্ষ্যে পবিত্র রমযানের আগে নিম্নে বর্ণিত পূর্ব প্রস্তুতিগুলো গ্রহণ করা যায়—

এক.দুনিয়ার যত গর্হিত কাজ যেমন- অন্যায়,অবিচার,পাপাচার ও মিথ্যাচার সহ যাবতীয় খারাবি থেকে প্রথমে নিজেকে সংযত করা অতঃপর পরিবার তথা সমাজকে মুক্ত রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং রহমত-বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে পাপাচার মুক্তের দৃঢ় প্রত্যয়ে নিজের মন ও মননশীলতা প্রস্তুত করা এখনই প্রয়োজন৷ যাহা উম্মতে- মুহাম্মদীর এক অনন্য বৈশিষ্ট্যও বটে৷

দুই.যতটুকু সম্ভব প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্পহারে দূর-দুরান্তের সফরকে সীমাবদ্ধ করতে হবে,চাইলে সবধরনের সফর,বেড়ানোর কাজ এখন থেকেই শেষ করে নিতে হবে৷ বড় ধরনের কোনো কাজ থাকলে রমযানের আগে বাড়তি শ্রম দিয়ে তা সেরে ফেলা উচিত। যাতে করে রমযানে সফর করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে এবাদতে অনিহা প্রকাশ না পায় কিংবা কোন কাজ করতে গিয়ে দৈনন্দিন আমলের রুটিনে ব্যতিক্রম না ঘটে ৷

তিন. রোজার জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্ভব হলে ঈদের বাজারও রমযানের আগেই শেষ করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ৷ কারণ,রমযানের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেনা-কাটা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়ে যে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হবে,এতে দৈনন্দিন রুটিনে বিঘ্ন ঘটবে৷সে জন্য রমযানের পূর্বেই যার যার সাধ্যানুযায়ী কেনা-কাটা ও খাদ্যসামগ্রী ক্রয় সম্পন্ন করে ফেলা উত্তম৷যাতে করে খতমে কুরআনের মাধ্যমে তারাবিহের নামাজ আদায় এবং কোরআন তেলাওয়াত সহ অন্যান্য নফল এবাদত-বন্দেগিতে ত্রুটি-বিচ্যুতির সমূহ সম্ভাবনা কম থাকে৷

চার.অতঃপর যারা ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত রমযান মাসে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করে সবার জন্য সহনশীল হওয়াও জরুরি। প্রকারান্তে তাদের এরূপ আচরণ ধর্মপ্রাণ মুসলমাদের রমজান মাসে পূর্বপ্রস্তুতির অন্তরায় হয়ে যায়৷কেননা অতিরিক্ত মুনাফা লাভে রমযানের দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করা রোজাদারের হক নষ্ট করার শামিল।সুতরাং ব্যবসায়ী ভাইরা!নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি না করে রোজাদারের যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণে আপনারাও সহায় হউন৷ এটাও আপনাদের এক ধরণের রমযানের সহায়ক প্রস্তুতি ও সওয়াবের কাজ ৷

পরিকল্পনা: রমযান মাসে প্রতিটা দিন আপনি কিভাবে কাটাবেন- সেজন্য দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ হয়ে একটি পরিকল্পনা ছক তৈরী করুন। এ পরিকল্পনা আপনাকে দ্বীনের পথে আরো অগ্রসর হতে সহায়তা করবে। রমযানের পরিকল্পনায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো রাখা যেতে পারে—

(ক) কোরআন তেলাওয়াত: মহাগ্রন্থ আল-কোরআন নাজিলের মাস মাহে-রমযান,তাই এ মাসে যত বেশি পারা যায় কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে,নিয়মিত কোরআন পাঠের অভ্যাস গড়ার মুখ্যম সময় মাহে-রমযান৷ এ মাসে আপনি কতটুকু কোরআন তেলাওয়াত করতে চান বা পারবেন তা আপনার শক্তি, সামর্থ্য ও সময় বিবেচনায় টার্গেট করুন।

কোরআন তেলাওয়াতের সহিহ শিক্ষা অর্জনের জন্য যথাসাধ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করুন৷কারণ,সহিহ তেলাওয়াত বিশুদ্ধ ভাবে নামাজ আদায়ের প্রধান শর্ত। তাই সব ধরণের জড়তা ও ব্যস্ততাকে পিছনে ফেলে যে কোন বিশুদ্ধ কোরআন প্রশিক্ষণ কোর্সে শামিল হওয়া অথবা ব্যক্তিগতভাবে একজন ভালো ক্বারী সাহেবের কাছে বিশুদ্ধ তেলাওয়াতের প্রশিক্ষণ নেয়া অত্যান্ত জরুরী৷এতে
নিবিড় ভাবে প্রচেষ্টা চালালে এক মাসেই আপনি বিশুদ্ধ তেলাওয়াত শিক্ষায় একটা ন্যূনতম মানে চলে আসতে পারবেন,ইনশাল্লাহ ৷আর যারা কোরআন তেলাওয়াত জানেন আপনারাও এ মহৎ কর্মে অংশ নিলে আপনাদের তেলাওয়াতের মানকে আরো সুন্দর করবে।

(খ) কোরআন অধ্যয়ন: যেহেতু পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের পথপ্রদর্শক রূপে,তাই অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কোরআন বোঝা এবং তদনুযায়ী আমল করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ তাই এ মাসে অবশ্যই একটা উল্লেখযোগ্য সময় আল্লাহর কালাম বোঝার জন্য বরাদ্দ করুন। তাছাড়া তাফসির, হাদিস, ইসলামি সাহিত্য, আকাবিরদের জীবনী গ্রন্থ ইত্যাদি সহ অন্যান্য ধর্মীয় বই-পুস্তক সময়স্বাপেক্ষ পাঠ করুন৷এ বইগুলো আপনার জ্ঞানকে করবে আরো সমৃদ্ধ,চরিত্রকে করবে মার্জিত।পাশাপাশি পরিবার পরিজনের মধ্যে দ্বীনের সৌরভ ছড়িয়ে দিতে আপনার জন্য সেগুলো হবে সহায়ক সোপান ৷

(গ) ইবাদত-বন্দেগি: তারাবি, নফল নামায ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগির ব্যাপারেও আপনি পরিকল্পনা নিতে পারেন। এ পরিকল্পনা আপনাকে অলসতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। সেহরির কারণে এ মাসে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা খুবই সহজ৷রাসুল সা. এর একটি দায়মী অভ্যাস নিজের মধ্যে বাস্তবায়ন করার দ্বারা আপনি হতে পারেন আখেরি নবীর একজন সৌভাগ্যবান উম্মত,কিয়ামতের দিন যখন নেকীর পাল্লা ভারি দেখবেন তখন এর কদর্য উপলব্ধিতে আসবে৷ এছাড়া নিয়মিত জিকির, মাসনুন দোয়া-দরুদ পাঠ ও আল্লাহর দরবারে গোনাহ মাফ, তওবা ও কান্নাকাটি করে ইত্যাদি মাধ্যমে পরম সৌভাগ্য অর্জন করতে হবে।

(ঘ) এতেকাফ: রমযানে বিশেষ এক এবাদত হলো এ’তেকাফ৷ চাইলে আপনিও এ ব্যাপারে আরো দৃঢ় পরিকল্পনা করতে পারেন৷ কারণ,এ’তেকাফরত অবস্থায় যে কেউ নিবিড়ভাবে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থেকে হাজার মাসের উত্তম রজনী লাইলাতুল কদরের যথাযথ মুল্যায়ন করতে পারেন৷ বিধায় সে নেক ইচ্ছাকে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পারিবারিক কাজগুলো আপনাকে আগেই শেষ করতে হবে৷ অতিরিক্ত আমল দ্বারা সেই ভাগ্যের রজনীকে আরো স্বার্থক করে তুলার জন্য এ’তেকাফই উপযুক্ত সময় ৷

(ঙ) পারিবারিক সংশোধন: রমযানে আপনি পারিবারিক সংশোধনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারেন। এ জন্য আপনি দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় তালিমের জন্য বেছে নিন। কারণ পবিত্র রমযানে মানুষের মধ্যে দ্বীনের কথা শোনার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। কোনো বদ অভ্যাস থাকলে তা ছাড়ার নসিহত করুন প্রয়োজনে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ যাতে রোজাহীন না থাকে তার জন্য রমযানের আগেই তাদের সতর্ক করুন।এ ক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিত্ব, অভিভাবকত্ব ও প্রয়োজনে কঠোরতা অথবা দরদভরা উপদেশ সবাইকে রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করবে।মনে রাখবেন,পরিবার কিংবা সমাজে আপনার দায়িত্বের পরিধি যত বেশি,রমযানের পবিত্রতা রক্ষায় আপনার কর্তব্যও তত বেশি।সুতরাং রমযানের আগেই এসব ব্যাপারে একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন।

(চ) ছদক্বাহ-খয়রাত: এই মাসে বেশি-বেশি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় দান-খায়রাত করবেন ৷ যাকাত-ফিতরা এগুলো আদায় করা আপনার প্রতি যেমন আল্লাহ প্রদত্ত নির্দেশ তেমনি ভাবে এগুলো প্রকৃত গরীব-দুঃখীর হতে তুলে দেওয়া আপনার দায়িত্ব এতে কোনোরূপ বড়ত্ব কিংবা লোকদেখানোর বহিঃপ্রকাশ না রাখা চাই৷এ মাসে দান-ছদক্বাহ করার দ্বারা পরকালে আপনি যেমন অধিক লাভবান হন তেমনি ভাবে গরীবরাও অন্য সময়ের তুলনায় আরো বেশি উপকৃত হয়৷ তাই আপনি জাকাতের দাতা হলে জাকাত হিসাব-নিকাশ ও বিলিবণ্টনের কাজটি এ মাসে সেরে নিতে পারেন।

উপরোল্লিখিত প্রস্তুতিমূলক গৃহীত পরিকল্পনাগুলো নিয়ে যতটুকু সম্ভব পর্যালোচনা করুন।যাচাই-বাছাই করুন,হিসাব কষে দেখুন এ পর্যন্ত আপনার প্রস্তুতি কতটুকু, পরিকল্পনায় কতটুকু এগিয়েছেন৷ কোথাও কমতি অথবা গাফলতি পরিলক্ষিত হলে তা দূরকরার চেষ্টা করুন।এ মহত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির সফল বাস্তবায়নের জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন।
রমজানের মহত্বকে সামনে রেখে, আল্লাহর উপর ভরসা করে, হিম্মতের সহিত এখনই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে ৷ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঐকান্তিকতা ও নিষ্ঠা একান্ত জরুরি।

এবং সাথে সাথে এ বিশ্বাষ রাখতে হবে যে,করোনা নামক গজব চাই সেটি দুনিয়ার সৃষ্টি হউক অথবা খোদা প্রদত্ত হউক,তা মহান আল্লাহর হুকুম ছাড়া কাউকে আক্রান্ত করতে পারবে না আবার কাউকে মৃত্যুও দিতে পারবে না৷ তবে এক্ষেত্রে এবাদত-বন্দেগি ও চাল-চলনে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন৷ আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন৷আমীন!




রমজানে জুমা ও তারাবির বিষয়ে নির্দেশনা দিবে ধর্ম মন্ত্রণালয়

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আসন্ন পবিত্র রমজানে জুমা ও তারাবি নামাজের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে যে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তাতে এ কথা উল্লেখ করা হয়। ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে।

এর আগে, সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এ পরিস্থিতিতে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজসহ আসন্ন রমজানে তারাবি নামাজ আদায়ে বিশেষ সতর্কতা ও নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশের সব মসজিদে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজ এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার আগে ও পরে গণজমায়েতের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, জুমা ও অন্যান্য ওয়াক্তের নামাজ এবং প্রার্থনার আগে ও পরে মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো প্রকার সভা ও সমাবেশ করা যাবে না। মসজিদে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তারাবিসহ অন্যান্য নামাজ আদায় করতে হবে এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা করতে হবে।

পরবর্তীতে বুধবার (৭ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ২৯ মার্চ তারিখের প্রজ্ঞাপন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৪ এপ্রিলের নির্দেশনা মোতাবেক ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৫ এপ্রিল জারি করা সব নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে মেনে চলতে বলা হয়।

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয় ওই নির্দেশনায়।




গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে: আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

হাটহাজারী থেকে গত রাত গুম হওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া ও নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে আটক হওয়া হেফাজতের সহ-অর্থ সম্পাদক মুফতী ইলিয়াস হামিদিসহ সারাদেশে গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন আমীরে হেফাজত, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

আজ ১২ এপ্রিল (সোমবার) সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আমীরে হেফাজত বলেন, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বীগ্ন ও চিন্তিত। গত রাত থেকে এখন পর্যন্ত তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের একজন বড় আলেম ও সচেতন নাগরিক হিসেবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকার, প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিলো। অনতিবিলম্বে আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে সুস্থ শরীরে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে। দক্ষ আলেম মুফতী ও খানকার পীর,মারকাজুল কুরআন মাদরাসার মোহতামীম মুফতি ইলিয়াস হামিদিসহ আটককৃত হেফাজতের সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। নিরপরাধ মানুষকে এভাবে গ্রেফতার ও হামলা মামলা বরদাশত করা হবে না।

আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, কিছুদিন আগে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের শহীদ করেছে। রক্তাক্ত করেছে। এরপরও দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে। হেফাজতে ইসলাম দেশে শান্তি শৃঙ্খলা চায়। তবে জুলুমবাজদের জুলুমের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আমাদের নিকট খবর এসেছে, গভীর রাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। হেফাজতে ইসলাম দেশে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস চায় না। হেফাজত ইসলাম শান্তি চায়। হেফাজতে ইসলাম একটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপ্রিয় সংগঠন। তবে নেতাকর্মীদের উপর এভাবে জুলুম চলতে থাকলে আমরা নিশ্চুপ ঘরে বসে থাকবো না।




হেফাজতের ৪ নেতা গ্রেপ্তার

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে স্ত্রীসহ আটকের জেরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে ভাঙচুর ও মহাসড়কে নাশকতা সৃষ্টির মামলার প্রধান আসামিসহ দলটির ৪ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১।

সোমবার (১২ এপ্রিল) সকালে র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে ভাঙচুর ও মহাসড়কে নাশকতা সৃষ্টির মামলার প্রধান মাওলানা ইকবালসহ চার জনকে রোববার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর জুরাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১১ এর একটি দল। গ্রেপ্তাররা মামলার এজাহারভুক্ত ১, ২, ৪ ও ৬ নম্বর আসামি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল (প্রধান আসামি), মাওলানা মহিউদ্দিন, মাওলানা শাহজাহান শিবলী ও মাওলানা মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মাওলানা ইকবাল ও মাওলানা মহিউদ্দিন হেফাজতের বড় নেতা। গ্রেপ্তার চার জনকে সোনারগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।




মক্কা-মদিনায় ১০ রাকাত তারাবি পড়ার নির্দেশ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারির কারণে মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান।

দুই পবিত্র মসজিদের সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান শাইখ আব্দুর রহমান আল-সুদাইস জানিয়েছেন, এবারের রমজানে দুই পবিত্র মসজিদে তারাবি নামাজের রাকাত সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১০ রাকাত আদায় করা হবে। এছাড়া মসজিদুল হারামে এবার ইতিকাফ ও ইফতারের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে।

তিনি জানান, করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মসজিদের প্রেসিডেন্সি এবং ওমরাহ পালনকারীদের সেবায় নিয়োজিত অন্যান্য সংস্থা যেসব পূর্বসতর্কতা ও সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলা হবে। করোনাকালে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও ১০ রাকাত তারাবিহ দুই মসজিদের শীর্ষ কর্মকর্তা ও জীবাণুমুক্তকরণে নিয়োজিত কর্মীদের উপস্থিতিতে আদায় হবে। সূত্র: সৌদি গেজেট।




ভারতে মুসলিম দিনমজুরের লাইব্রেরিতে দুষ্কৃতকারীর আগুন, ৪ হাজার কুরআন পুড়ে ছাই

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্ণাটক রাজ্যের মাইসুরু শহরে মুসলিম এক দ্নিমজুরের চালানো লাইব্রেরিতে আগুন দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। শুক্রবারের এই অগ্নিকাণ্ডে এই লাইব্রেরিতে থাকা চার হাজার কপি কুরআন, বাইবেল ও গীতাসহ মোট ১১ হাজারের বেশি বই পুড়ে গেছে বলে খবর জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

৬২ বছর বয়সী মুসলিম দিনমজুর সৈয়দ ইসহাক দারিদ্র্যের কারণে শৈশবে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ থেকে নিজের প্রচেষ্টায় এই লাইব্রেরি তৈরি করেন তিনি। স্থানীয় রাজিব নগর ও শান্তিনগর এলাকার মানুষ বিনামূল্যে এই লাইব্রেরিতে এসে বই পড়তে বা ধার করতে পারতো।

সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাতকারে সৈয়দ ইসহাক বলেন, ‘ভোর ৪টায় লাইব্রেরির কাছাকাছি থাকা এক লোক আমাকে ভেতরে আগুন লাগার কথা জানায়। অল্প কিছু দূরে থাকা লাইব্রেরিতে যখন আমি ছুটে যাই, আমি তখন শুধু সব পুড়ে ছাই হতে দেখি।’

লাইব্রেরির ৮৫ ভাগ বই কানাড়া ভাষার হলেও ইংরেজি ও উর্দু ভাষায়ও কিছু বই সেখানে ছিলো। তিনি বলেন, ‘লাইব্রেরিতে তিন হাজারের বেশি ভগবদ গীতার বিচিত্র সংগ্রহ ছিল। এছাড়া এক হাজারের বেশি কুরআন ও বাইবেলের কপি ছিল লাইব্রেরিতে। সাথে সাথে আরো হাজার হাজার বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বইয়ের সংগ্রহ ছিল যা আমি বিভিন্ন দাতার কাছ থেকে সংগ্রহ করি।’

যদিও সৈয়দ ইসহাক নিজের অর্থে লাইব্রেরির বই সংগ্রহ করেননি, তবে লাইব্রেরি রক্ষণাবেক্ষণ এবং কানাড়া, হিন্দি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষার ১৭টির বেশি দৈনিক পত্রিকা সংগ্রহ করতে তিনি তার মজুরির অর্থ থেকেই খরচ করেন।

আগুন লাগানোর ঘটনায় ইসহাক উদয়গিরি পুলিশ স্টেশনে দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৬ ধারার অধীনে এজাহার নেয় এবং দুষ্কৃতকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দমে যাননি সৈয়দ ইসহাক। তিনি আবার লাইব্রেরিটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন।

অনলাইনে তহবিল সংগ্রহের ভারতীয় প্ল্যাটফর্ম কিটোতে লাইব্রেরিটি গড়ার জন্য তার নামে একটি তহবিল সংগ্রহ অভিযান চালু করা হয়েছে।




মাওলানা রফিকুল ইসলামকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণাকে গাজীপুর জেলা করাগার থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে র‍্যাব-পুলিশের কড়া প্রহরায় তাকে স্থানান্তর করা হয়। গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রবিরোধী, উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) র‍্যাব বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গাজীপুরের গাছা থানায় মামলা করে।

পরে ঢাকায় তার নামে আরও একটি মামলা করা হয়। এর আগের দিন বুধবার (৭ এপ্রিল) ভোরে রফিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা থেকে তাকে আটক করে র‍্যাব।




মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণা কারাগারে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণাকে হাজির করা হয়। পরে বিচারক শরিফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠান।

বুধবার সকালে নেত্রকোণার গ্রামের বাড়ি রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করে র‌্যাব। পরে রাতে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাব-১ এর নায়েক সুবেদার আবদুল খালেক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক স্ত্রীসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকার, দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান নিয়ে আপত্তিকর মনগড়া বক্তব্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।




লকডাউনে মাদরাসা খোলা রাখার দায়ে দশ হাজার টাকা জরিমানা আদায়

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নীলফামারীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে মাওলানা মিজানুর রহমান নামে এক অধ্যক্ষের দশ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (২ এপ্রিল) দুপুরে শহরের নিউ ওয়াপদা এলাকার আল ফালাহ নুরানি ইসলামিয়া একাডেমিতে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করা হয়। আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার(ভূমি) মফিজুর রহমান।

এদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, মাস্ক ব্যবহারে নিশ্চিতকরণে ইউএনও এলিনা আকতারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়।




লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার, থাকছে যেসব বিধি-নিষেধ

ডেস্ক রেোপর্ট: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগামী ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকালের দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার।

‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ’ শিরোনামের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক গত ২৯ মার্চ তারিখের ১৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

ওই স্মারকের ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত মেয়াদে প্রতিপালনের জন্য প্রজ্ঞাপনে ১১টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১. সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

২. আইন-শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

৩. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।

৫. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।

৬. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকান, পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা স্বশরীরে যেতে পারবে না।

৭. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

১০. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

১১. এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।