লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার, থাকছে যেসব বিধি-নিষেধ

ডেস্ক রেোপর্ট: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগামী ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকালের দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার।

‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ’ শিরোনামের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক গত ২৯ মার্চ তারিখের ১৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

ওই স্মারকের ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত মেয়াদে প্রতিপালনের জন্য প্রজ্ঞাপনে ১১টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১. সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

২. আইন-শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

৩. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।

৫. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।

৬. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকান, পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা স্বশরীরে যেতে পারবে না।

৭. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

১০. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

১১. এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানাল হেফাজত

ডেস্ক রিপোর্ট:

সারা দেশের মাদ্রাসায় ‘হামলা ও জুলুম’ হচ্ছে দাবি করে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী সরকারের কাছে অবিলম্বে হামলা বন্ধ, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় হেফাজত কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।

আজ রোববার বেলা তিনটায় হাটহাজারী সদরের কাচারি সড়কে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বাবুনগরী অভিযোগ করেন ‘গত শুক্রবার মাদ্রাসাছাত্রদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী গুলি করে হাটহাজারীর চারজনকে শহীদ করেছে। আহত হয়েছেন অনেক। সারা দেশে নিহত হয়েছেন এ পর্যন্ত ১৬ জন। এটা মামুলি কথা নয়। এ জন্য হরতালের ডাক দিয়েছি।’ উল্লেখ্য, মোদিবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীর হামলায় নিহত নেতাকর্মীর হত্যার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামী আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতালের আহ্বান করে। আজকের হরতাল পালনকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, নারায়নগঞ্জ ও রাজধানীতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

আওয়ামী লীগের প্রতিরোধ

এদিকে, বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল প্রতিহত করতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়  আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হরতালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সকাল থেকে মালিবাগ এলাকা, রেলক্রসিং ও রামপুরা সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা। তাদের কারও কারও হাতে লাঠি, হকিস্টিকও দেখা গেছে।

পল্টনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পল্টনে হেফাজতে ইসলাম ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষকেই ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। তবে পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্যে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

মুন্সীগঞ্জে পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ২০

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের বড় শিকারপুর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জালাল উদ্দিন, উপপরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার আলী, হেফাজতের ইসলামের নায়েবে আমির ও মধুপুর পীর আল্লামা আব্দুল হামিদ ও হাফেজ মাওলানা বশির আহম্মেদসহ যুবলীগের নেতাকর্মীরা আহত হন।

উপজেলার বড় বড়শিকারপুর এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ইটপাটকেল ছুড়ে আহত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং ফাকা গুলি ছোড়ে। এছাড়া সংঘর্ষচলাকালীন সময়ে বেশকয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর, তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা

হেফাজতে ইসলামের হরতালের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করা ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ভাঙ্চুর চালিয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও হরতাল সমর্থকরা। আজ সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটে। পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে সাময়িক সময়ের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর দিয়ে সিলেট ও চট্টগ্রামে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আজ রোববার বেলা ১১টার পর থেকে জেলা সদর, আশুগঞ্জ, সরাইলের একাধিক স্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে ব্যাপক। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি সম্পদ। লক্ষ্য বানানো হয়েছে সাংবাদিকদেরও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা মসজিদ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন এবং কোথাও হামলা না করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

কিন্তু বেলা ১১টার পর জেলা পরিষদ ভবনে আগুন দেওয়া হয়। নিচতলার অনেক কক্ষে আগুন দেওয়ার পর এসির বিস্ফোরণ হয়। সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, পৌরসভায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। আগুন দেওয়া হয় সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে। হামলা হয়েছে সদর থানায়, প্রেসক্লাবে।

শহীদ ধীরন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে গতকাল শনিবার থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উন্নয়ন মেলা চলছে। সেই মেলাতেও আগুন দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবেও হামলা হয়েছে, কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজউদ্দিন জামি প্রেসক্লাবে ঢোকার সময় তাঁর ওপর হামলা করা হয়। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। ছয়টি সেলাই লেগেছে। আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজায় থাকা পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে হরতাল–সমর্থনকারীরা। এ সময় পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। টোল আদায়ের বুথ ভাঙচুর করা হয়। সরাইলের বিশ্বরোড এলাকায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলোর একটি সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। ট্রেনটি ঢাকা থেকে কোনো বিরতি ছাড়াই সরাসরি চট্টগ্রামে যায়। সকালে ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের পৌঁছালে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচের ১২৪টি কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে ট্রেনটি ফিরিয়ে ভৈরবে নিয়ে আসা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ এবং হরতালের প্রতিবাদে দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

সিলেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

সিলেটে হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে দুপুরে নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বিজিবি ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা বন্দরবাজার এলাকায় অবস্থান করা হরতাল সমর্থকদের ধাওয়া করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনার পর নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জে সংঘর্ষ  

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে জেলা পুলিশ সুপারসহ আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এছাড়া এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় হেফাজত ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে মাদ্রসাছাত্রদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

র‌্যাব ও পুলিশকে পানি ও হাল্কা খাবার খাওয়ালো হেফাজত

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় হেফাজতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাদানী নগর মাদরাসার সামনে রাস্তায় হরতাল প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পানি ও হাল্কা খাবার সরবরাহ করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা । সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে চিটাগাংরোড পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে হেফাজত কর্মীরা।

রাজশাহীতে বাসে আগুন

রবিবার সকালে রাজশাহী নগরীর ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় দুটি বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৬টায় দিকে টার্মিনালের ভেতর পার্কিংয়ে রাখা দুটি বাসের মধ্যে একটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে একটি বাস পুরোটাই পুড়ে গিয়ে অন্যটিতেও আগুন ধরে আংশিক পুড়ে গেছে। পুলিশের ধারণা হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টি করতেই এই আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শাহ মখদুম থানায় মামলা দায়েরের হয়েছে।

নগরীর শাহমখদুম থানার ওসি সাইফুল ইসলাম খান বলেন, হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টি করতেই এই আগুন দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত নই। কারণ বাস দুটি ট্রাক টার্মিনালের ভেতর ৯ মাস ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল।

এদিকে রাজশাহীতে হরতালের সমর্থনে কোথাও হেফাজতে ইসলামের কোনো মিছিল বা প্রকাশ্যে পিকেটিং লক্ষ্য করা যায়নি। হরতালেও স্বাভাবিক ছিল গাড়ি চলাচল।#




মাদরাসায় ২৫ ও ২৬ মার্চ পালনের নির্দেশনা

দেশের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫ মার্চ গণহত্যা এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) মাদরাসা বোর্ডের রেজিস্ট্রার মুহা. সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ হতে নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করতে হবে। এ দুই বিশেষ দিন পালনে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকল মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-

স্কুল/কলেজ/মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি/বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা করতে হবে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে।

দেশের সকল বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সকালে কুচকাওয়াজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সমাবেশ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজনসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

এদিকে চলতি সপ্তাহে দেশের সকল স্কুল-কলেজে গুরুত্বপূর্ণ এই দিবস দুটি পালনের নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।




দুর্গাপুরে ব্যতিক্রমধর্মী পাঠাগার উদ্বোধন করলেন ইউএনও

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সিনিয়র সিটিজেন ও তরুণ প্রজন্মসহ সব শ্রেণির মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলার লক্ষে দুর্গাপুর পৌরশহরের নাজিরপুর মোড় এলাকায় উদ্বোধন করা হয়েছে পথ পাঠাগার এর ১৫তম শাখা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার  (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান শনিবার দুপুরে এ ব্যতিক্রমধর্মী পাঠাগার উদ্বোধন করেন।

পৌরশহরের নাজিরপুর মোড় এলাকায় অলম্যান জেন্স সেলুনে এ শাখা উদ্বোধনের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাব আহবায়ক সাহাদাত হোসেন কাজল, সাবেক সভাপতি মো. মোহন মিয়া, সহসভাপতি মো. তোবারক হোসেন খোকন, পথ পাঠাগারের সভাপতি কবি নাজমুল হুদা সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা প্রমুখ।

ইউএনও মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, নতুন প্রজন্ম সহ সর্ব শ্রেণির মানুষকে বই পড়া ও সাহিত্য আড্ডায় মনোনিবেশ করতে এই পাঠাগারের সূচনা।

আমরা পথ পাঠাগার স্থাপনের মাধ্যমে মানুষের কাছে বই পৌঁছানোসহ জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই। পর্যায়ক্রমে এই পাঠাগারের কার্যক্রম দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাহিত্যপ্রেমীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান ইউএনও।




শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নতুন সিদ্ধান্ত

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষিত তারিখ পরিবর্তন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সচিবালয়ে আজ সোমবার (১৫ মার্চ) এ বিষয়টি নিয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠক চলছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে জানিয়েছিলেন আগামী ৩০ মার্চ দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। এরপর গত শুক্রবার (১২ মার্চ) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি জানান, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ পেছাতে পারে।

এসময় তিনি আরো বলেন, এ বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের নিরাপত্তা আগে। করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বগতি থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের তারিখ পেছাতে পারে।




অসমাপ্ত পরীক্ষা নিতে শিক্ষামন্ত্রীকে রাবি ছাত্র উপদেষ্টার চিঠি

স্থগিত হওয়া পরীক্ষা পুনরায় চালু করার অনুমতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান।

বুধবার (৩ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর তিনি এ চিঠি পাঠান।

চিঠিতে অধ্যাপক লুৎফর রহমান উল্লেখ করেন, করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে বিভিন্ন বর্ষের চলমান পরীক্ষা আটকে যায়। সম্প্রতি একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে বিভিন্ন বিভাগ। কিন্তু গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চলমান পরীক্ষা পুনরায় স্থগিত হয়। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় মেস ও বাসা ভাড়া করে অবস্থান করছিল। এদের বেশিরভাগই দুই-তিন মাসের অগ্রিম ভাড়া দিয়ে মেসে উঠতে হয়েছিল। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করতে শিক্ষামন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র উপদেষ্টা।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে আটকে যাওয়া বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষাগুলো গত ২ জানুয়ারি থেকে নেওয়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে কয়েকটি বিভাগ। কিন্তু গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয় প্রশাসন।