হিউম্যান রাইটস ওয়াচ: তেল আবিব জীবন ধ্বংস করতে চাইছে; সানচেজ: ইসরাইল একটি গণহত্যাকারী রাষ্ট্র

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

ইউরো-ভূমধ্যসাগরীয় মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে যে গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরাইলি সরকারের লক্ষ্য হল এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ধ্বংস করা।

গাজার বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকারের অপরাধ এক বিপদজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে সরাসরি আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এই অপরাধের সর্বশেষ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে খান ইউনিসের পূর্বে ইউরোপীয় হাসপাতাল কম্পাউন্ডে ইসরাইল ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে যার ফলে ২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং আরও কয়েক ডজন আহত ও নিখোঁজ হন। পার্সটুডে অনুসারে ইউরো-ভূমধ্যসাগরীয় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বুধবার এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে ইসরাইল গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কারণে জীবন ধ্বংস হচ্ছে এবং এই এলাকার বাসিন্দাদের শেষ আশ্রয়স্থলও ধ্বংস হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে হামলার পরপরই ইউরোপীয় হাসপাতালে বোমা হামলা এবং এটি বন্ধ করে দেয়ার অর্থ হচ্ছে একটি নীরব মৃত্যুর পথ তৈরি করা এবং এর মাধ্যমে মূলত গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার লক্ষ্যে অশুভ পরিকল্পনা চলছে । বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে দখলদার শাসকগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী উদ্ধার কর্মীদের লক্ষ্য করে রাস্তায় হামলা চালানোর কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের যেকোনো প্রচেষ্টা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইউরো-ভূমধ্যসাগরীয় মানবাধিকার সংস্থা (ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) গাজা উপত্যকায় গণহত্যা বন্ধে সকল দেশকে তাদের আইনি দায়িত্ব পালন এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কানাডা: গাজার ক্ষুধাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল

এই প্রসঙ্গে, কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ বুধবার বলেছেন যে ইসরাইলি সরকার গাজার ক্ষুধাকে “রাজনৈতিক হাতিয়ার” হিসেবে ব্যবহার করছে এবং যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য আরও বেশি প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

স্পেন: ইসরাইল একটি গণহত্যাকারী রাষ্ট্র

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও বুধবার বলেছেন যে ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা একটি গণহত্যাকারী শাসনব্যবস্থা এবং আমাদের এই ধরনের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক না রাখার অধিকার রয়েছে। সানচেজের বক্তব্যের পর, শাসকগোষ্ঠীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অধিকৃত অঞ্চলে নিযুক্ত স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূত আনা সালোমনকে তলব করেছে।

আমস্টারডামের মেয়র: ইউরোপকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করতে হবে

আমস্টারডামের মেয়র ফেমকে হালসেমা গাজায় ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস, অনাহার এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্য ডাচ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জোর দিয়ে বলেছেন: “ইউরোপকে অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করতে হবে।” মানবাধিকার সংকট মোকাবেলায় দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে সতর্ক করে হালসেমা বলেন,  “গাজার জনগণের ভাগ্য ডাচ রাজধানীর অনেক বাসিন্দাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।” তিনি আরো বলেন,  “গাজায় গণহত্যামূলক সহিংসতা নিয়ে কথা বলা অযৌক্তিক নয় এবং এখন রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে জীবন বাঁচানোর দিকে মনোনিবেশ করার সময়।”

ইতালি: গাজায় ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে

অন্যদিকে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বুধবার বলেছেন যে ইসরাইলি সরকারকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং একই সাথে গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে ‘দুঃখজনক এবং অযৌক্তিক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

জার্মানি: গাজায় দুর্ভিক্ষ রোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে

নতুন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্টজ বুধবার গাজার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, জোর দিয়ে বলেছেন যে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান করা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের জন্য একটি মানবিক কর্তব্য।

পার্সটুডে




‘অপারেশন সিঁদুর’ শেষ হয়নি, স্থগিত রাখা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

‘অপারেশন সিঁদুর’ শেষ হয়নি, এটি কেবল স্থগিত রাখা হয়েছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার (১২ মে) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুক হামলার পর পাকিস্তানে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন মোদি।

মোদি বলেন, ‘পাকিস্তানের জানা উচিত, হামলা এখনও শেষ হয়নি। সন্ত্রাসবাদী স্থাপনার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই এগুলো কেবল স্থগিত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপ এই মানদণ্ডে পরিমাপ করব যে পাকিস্তান ভবিষ্যতে কী ধরনের মনোভাব গ্রহণ করবে। যদি পাকিস্তান পিছু হটে বা বিভ্রান্ত করে, আমি আবারও বলছি, আমরা কেবল আমাদের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ স্থগিত করেছি।’

২২ মিনিটের ভাষণে নরেন্দ্র  মোদি ভারতের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যে পাকিস্তানের কল্পনার বাইরে ছিল তার একটি সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত তার নির্ভুল হামলার মাধ্যমে কেবল পাকিস্তানের সন্ত্রাসী অবকাঠামোই ভেঙে দেয়নি, বরং তাদের মনোবলও ভেঙে দিয়েছে।’

ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিকে (সেনা সদর দফতর) আরেকটি সতর্কবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি অভিযান নয়, বরং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভারতের নীতিতে একটি মতবাদগত পরিবর্তন।’

মোদি আরও বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর নতুন স্বাভাবিক (নিউ নরমাল) ঘটনা। যেখানেই সন্ত্রাসী ঘাঁটি রয়েছে সেখানেই ভারত আক্রমণ করবে এবং আমাদের দেশে আক্রমণ করা হলে তার জবাব জোরালোভাবে দেবে।’

পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল’-এর বিরুদ্ধে তিনি বলেন, এটি ভারতকে দমাতে পারবে না। ভারত কোনো পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না। ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের আড়ালে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী আস্তানাগুলোতে সুনির্দিষ্ট এবং চূড়ান্তভাবে আঘাত করবে।

তিনি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন যে ‘ভারত সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক সরকার এবং সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে পার্থক্য করবে না।’

পাকিস্তানে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনার পর চারদিনের পালটাপালটি সংঘর্ষ হয় ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে।  এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শনিবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর দু’দিন পর সোমবার (১২ মে) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন মোদি।




যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশ ভারত-পাকিস্তান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

অবশেষে দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির সাময়িক ইতি ঘটল। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশই। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানান।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ভারত ঘোষণা করেছে যে, স্থানীয় সময় আজ শনিবার (১০ মে) বিকেল পাঁচটা থেকে স্থল, বিমান ও নৌবাহিনী পাকিস্তানের দিকে সব ধরনের গুলি চালানো বন্ধ রাখছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন্স ভারতীয় সময় তিনটা ৩৫ মিনিটে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন্সকে ফোন করেছিলেন। তাদের দুজনের মধ্যে স্থির হয়েছে আজ ভারতীয় সময় বিকেল পাঁচটা থেকে দুই পক্ষই সব ধরনের গুলি-গোলা চালানো এবং স্থল, আকাশ ও জলপথে সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করবে।
দুই দেশের পক্ষ থেকে দুই দিকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই ডিজিএমও আবার ১২ তারিখ সোমবার দুপুর ১২টার সময়ে কথা বলবেন বলে বিক্রম মিশ্রি।

এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাক দার একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, পাকিস্তান ও ভারত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

তিনি লিখেছেন, এই অঞ্চলে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পাকিস্তান সবসময়েই চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং কখনোই নিজের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রশ্নে আপস করেনি।

এর কিছুক্ষণ আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্স প্ল্যাটফর্মে দেয়া একটি বার্তায় জানান যে, ভারত ও পাকিস্তান- দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

পাকিস্তানের বেসরকারি টিভি চ্যানেল জিও নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ইসাক দার বলেন, যুদ্ধ কোনো কিছুর জন্যই সমাধান নয়। আজ বিকাল সাড়ে চারটা থেকে (পাকিস্তানের সময়) যু্দ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।




ভারতের এস-৪০০ ধ্বংসের দাবি পাকিস্তানের; দ্য হিন্দু বলছে দাবিটি অসত্য

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

ভারতের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ধ্বংসের দাবি করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় তাদের পাল্টা হামলায় যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিবরণে ভারতের এস-৪০০ ধ্বংসের কথা বলা হচ্ছে। পাকিস্তানের তিন বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় হামলার পাল্টা জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ সরকার।

পাকিস্তান এই পাল্টা হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন বুনইয়ান–উন–মারসুস’। আরবি শব্দ বুনইয়ান–উন–মারসুস –এর অর্থ হলো ‘সুদৃঢ়, সুসংগঠিত ও অভেদ‍্য প্রাচীর’।

ভারত অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ রাশিয়ার কাছ থেকে কিনেছে।

পাকিস্তানের দাবি, অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুসের অংশ হিসেবে তারা ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলার আদমপুরে অবস্থিত এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তু করে ধ্বংস করেছে।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্রের মতে, দেশটির বিমান বাহিনী তাদের প্রতিশোধমূলক হামলায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে একটি জেএফ-১৭ থান্ডার বিমান গুরুতর আঘাত হেনেছে বলে জানা গেছে। এস-৪০০ সিস্টেমটি অত্যাধুনিক। এটির মূল্য প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার। যা ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান কৌশলগত সম্পদের মধ্যে একটি।

অবশ্য ভারতের একজন সেনা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে দেশটির দৈনিক দ্য হিন্দু লিখেছে, পাকিস্তানের এই দাবি মিথ্যা।

গত মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর থেকেই পাকিস্তান নানা সাফল্যের দাবি করছে। তারা সে রাতে পাকিস্তানের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে। পরে ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করেছে। যদিও এসব খবরকে সত্যতা স্বীকার করেনি ভারত। তবে কয়েকটি সূত্র ফ্রান্সের কাছে থেকে কেনা রাফাল বিমান ভূপাতিত করার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।#

সূত্র: পার্সটুডে




বেড়েই চলছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: তিন দিনে ভারতীয় ১৬ ড্রোন ভূপাতিত

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানানো হয়েছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী গত তিন দিনে অন্তত ১৬টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসব ড্রোন পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে নজরদারি ও হামলার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

সূত্রগুলো জানায়, ভারত ১২টি ভিন্ন ভিন্ন শহরে নজরদারি ড্রোন পাঠিয়েছিল। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই ইসরায়েলে তৈরি IAI Harop নামক ড্রোন, যা মূলত ‘কামিকাজে ড্রোন’ হিসেবে পরিচিত এবং আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

লাহোরের ওয়ালটন এলাকায় পাকিস্তানের চতুর্থ বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে একটি ড্রোন হামলায় চারজন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি সামরিক যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি এলাকায় ড্রোন হামলায় একজন কৃষক নিহত হয়েছেন।

সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে করাচি, লাহোর, ইসলামাবাদ ও সিয়ালকোটের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। লাহোরের ওয়ালটন ও বারকি রোড এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যা ভারতীয় ড্রোনের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা ১২টির বেশি ড্রোন ভূপাতিত করেছি এবং তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করেছি। একটি ড্রোন লাহোরে আমাদের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।”

সামরিক উত্তেজনার এই আবহে কূটনৈতিক অঙ্গনেও তৎপরতা দেখা গেছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘আইন আল-নিসর’-এর বরাতে জানা গেছে, সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর হঠাৎ করে নয়াদিল্লি সফর করেছেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে এবং দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই মুখোমুখি অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।




হামলায় মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

পাকিস্তানের আলোচিত আলেম মাওলানা মাসুদ আজহার জানিয়েছেন, আজাদ কাশ্মিরে বাহাওয়ালপুরে সুবাহান আল্লাহ মসজিদে হামলায় তার পরিবারের ১০ সদস্য এবং চার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছেন।

বিবিসি উর্দু জানাচ্ছে, তার নেতৃত্বাধীন জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ছিলেন মাসুদ আজহারের বড় বোন ও তার স্বামী, তার ভাতিজা ও তার স্ত্রী, একজন ভাগ্নি এবং পরিবারের আরও পাঁচজন শিশু।

হামলায় স্বজন হারানোর প্রতিক্রিয়ায় মাওলানা মাসুদ আজহার বলেন, ‘আমার মনে কোনো অনুশোচনা নেই, হতাশাও নেই। বরং, বারবার মনে হচ্ছে আমিও যেন এই ১৪ জনের সুখী কাফেলায় শামিল হতাম।’ মাসুদ আজহার বলেন, ‘তাদের বিদায়ের সময় এসে গিয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ তাদের শহীদ করেছেন।’

জেইএম ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী হামলা চালায়, যেখানে ৪০ জন সৈন্য নিহত হয়। এই হামলা দুই প্রতিবেশী দেশকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।

সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, ওই হামলায় আজহারের তিনজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তাদের একজনের মাও নিহত হয়েছেন।

মাওলানা মাসুদ আজহার হামলায় নিহতদের জানাজায় অংশ নিতে জনগণকে আহ্বান জানান। মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ২৪টি নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এই হামলায় ৭০ জনের বেশি নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।

মাওরানা মাসউদ আজহার জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি পাকিস্তানিদের কাছে মুজাহিদ হিসেবে পরিচিত হলেও ভারত তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে মনে করে। ২০১৮ সালের ১ মে, জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিল কর্তৃক মাসউদ আজহারকে আন্তর্জাতিক মুজাহিদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।




শাপলার গণহত্যায় হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত: আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

২০১৩ সালের ৫ মে রাতের আঁধারে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন এর জন্য তার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার দায়ের করা উচিত বলে মনে করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ এখানে এসেছি। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো গণহত্যার জন্য এখনো কোনো মামলা হয়নি শেখ হাসিনার নামে। কেন আপনারা মামলা করেননি তা আমি জানি না। যারা শাপলায় গণহত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের মামলা করা  উচিত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমরা মুসলমান। উম্মতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকতে হবে। গাজার শহীদ এবং কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর যুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন করতে হবে।

নারী কমিশন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ইউনূস সরকারের কাছে আমার একটি প্রশ্ন, আপনারা অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করছেন। এই অপ্রয়োজনীয় ইস্যুর জন্য জুলাই আন্দোলন হয়নি। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে কি নারী সংস্কার কমিশন গঠন করার জন্য? না, ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আপনাদেরকে বলতে চাই, অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করবেন না ।অপ্রয়োজনীয় যত কমিশন গঠন করেছেন সব বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্রের সম্পদ অযথা কাজে নষ্ট করবেন না।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমাদের বৃহত্তর লড়াই ভারতের বিরুদ্ধে। আপনারা নারীনীতি নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের বৃহত্তর লড়াই নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না ।




পহেলগাঁও মামলা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক
বাহিনীর মনোবলে আঘাত করবেন না-বাদীকে আদালত

ভারতের কাশ্মিরের পহেলগাঁও কাণ্ডে বিচারবিভাগীয় তদন্তের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বাদীর উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, “প্রত্যেক ভারতীয় হাতে হাত ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই সময়ে বাহিনীর মনোবলে আঘাত করবেন না।”

মামলার বাদীকে সতর্ক করে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে যেন সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল ভাঙা না-হয়। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি এনকে সিংহের বেঞ্চ জানিয়েছে, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যখন প্রত্যেক ভারতীয় হাতে হাত ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বাহিনীর মনোবলে আঘাত করবেন না। বিষয়টির সংবেদনশীলতাকে দেখুন।”

মামলার বাদীর আবেদনে বলা হয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বিচারবিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে যাতে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তদন্ত করা হয়। এই আর্জি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

আবেদনকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে দুই বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, দয়া করে দায়িত্বশীল হোন। আপনি কি এই সময়ে বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে চাইছেন? সুপ্রিম কোর্ট বা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা কবে থেকে তদন্তে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন? আমরা কবে থেকে এই ক্ষমতা পেয়েছি? আমরা শুধুমাত্র বিরোধের নিষ্পত্তি করি।” সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত মামলাকারীর আইনজীবী জানান, তিনি তদন্তের আর্জি জানিয়ে ওই মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ ভারতের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পাকিস্তানও। এরই মধ্যে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক সেনার বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্ত করছে এনআইএ।#

সূত্র: পার্সটুডে




যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে ইসলাম বিরোধী বিদ্বেষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত টাস্কফোর্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকে আছেন ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ভয়ে। টাস্কফোর্স তাদের প্রতিবেদনে আরো জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইহুদিবিদ্বেষও বেড়েছে।

‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই বিক্ষোভ হচ্ছে। অনেক দেশে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরাও। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত দু’টি টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চিত্র।

গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস যখন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখনই ওই টাস্কফোর্স দু’টি গঠন করা হয়। হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষের চিত্র তুলে ধরে মঙ্গলবার আলাদা দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় সম্প্রদায়ের ছাত্র-শিক্ষকরা কী ধরনের বৈষম্য ও বৈরিতার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই আশঙ্কা করছেন, গাজা ইস্যুতে নিজেদের রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে অ্যাকাডেমিক এবং পেশার ক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হতে পারে। এমনকি অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজেদের ওপর হামলার আশঙ্কাও করছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্য মুসলিম শিক্ষার্থীরাও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। হিজাব পরেন এমন শিক্ষার্থীদেরও মৌখিক হেনস্তার শিকার হতে হয়। অনেককে ডাকা হয় ‘সন্ত্রাসী’ বলে।

প্রতিবেদনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ‘ডক্সিং’ বা ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার বিষয়টি। শুধু শারীরিক নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্যও এটিকে হুমকি হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।

গাজাযুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইহুদি ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।




ইসরায়েলের বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, বেসামরিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে ঘিরে ফেলেছে, জরুরি অবস্থা ঘোষণা

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক

আজ ইসরায়েলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে এবং তা বেসামরিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে ঘিরে ফেলেছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং বিদেশ থেকে সহায়তা চেয়েছে। জেরুজালেমের পাহাড়ে আগুন লাগানোর সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

সকাল থেকেই জেরুজালেমের পশ্চিম পাহাড়ে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যা পরে বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রধান সড়কগুলোতে পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়।

জেরুজালেম ও তেল আবিবগামী মহাসড়কের কাছে আগুন প্রবলভাবে জ্বলছে, যাতে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি দমকল বাহিনীর জেরুজালেম অঞ্চলের প্রধান বলেন, “আমরা এখনো এই বিশাল অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক দূরে রয়েছি।”

ইসরায়েলি অগ্নি নির্বাপণ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, “ভালো অবস্থায় থাকলে আমরা আগামীকাল সকাল নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি।”

দমকল বাহিনীকে সহায়তা করতে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা একটি জাতীয় জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি, জীবন বাঁচাতে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের সমস্ত শক্তি নিয়োজিত করতে হবে।”

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, পশ্চিম জেরুজালেমে তীব্র বাতাসের কারণে দমকল বাহিনীর অনেক দল আগুনে আটকে পড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিম জেরুজালেমের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সেনারা আগুনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

চ্যানেল ১২ জানায়, অভ্যন্তরীণ ফ্রন্টের জেরুজালেম ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ব্রিগেড কমান্ডার বলেন, “এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কীভাবে শুরু হয়েছে তা এখনো আমাদের অজানা।”

এছাড়া, পশ্চিম জেরুজালেমের আটটি জনপদের বাসিন্দাদের আগুনের কারণে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেরুজালেমের হাদাসা আইন কারেম হাসপাতাল থেকেও রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি অগ্নি নির্বাপন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পশ্চিম জেরুজালেমের আগুনের কারণে জেরুজালেম ও বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শত শত বেসামরিক নাগরিক আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

তারা আরও জানায়, তারা ২২ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিচ্ছে, যাদের মধ্যে ১২ জনকে ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ “এক্স” প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে জানিয়েছে, “জেরুজালেম পাহাড় ও ১ নম্বর মহাসড়ক এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে যেন তারা ওই এলাকায় যাতায়াত না করে।”

দাউদাউ আগুন
লাত্রুন ও বেইত শেমেশ এলাকার মধ্যবর্তী সড়ক বরাবর বন-জঙ্গল পুড়ে যাওয়ার সময় দাউদাউ আগুন দেখা গেছে। এতে বহু চালক তাদের গাড়ি রাস্তায় ফেলে আগুন থেকে পালিয়ে যান।
ঘন ধোঁয়ায় এলাকা ঢেকে গেছে, যা দৃষ্টিশক্তিকে মারাত্মকভাবে সীমিত করছে এবং অনেকেই সেখানে আটকে পড়ে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, জেরুজালেমের পশ্চিমে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বসতি এলাকা খালি করে ফেলা হয়েছে। তারা দমকল কর্মীদের আগুন নেভানোর লড়াইয়ের ছবি সম্প্রচার করেছে।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, তীব্র গরম ও প্রবল বাতাসের কারণেই আগুন লেগেছে।

তবে পরে ইসরায়েলের সরকারি বেতার সংস্থা জানায়, জেরুজালেমের পাহাড়ে আগুন লাগানোর সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১৪ জানিয়েছে, এই আগুন স্বাভাবিকভাবে লাগেনি, বরং কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে লাগিয়েছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাফির বলেন, “এই আগুনের পেছনে ফিলিস্তিনিরা রয়েছে” এবং তিনি তাদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া থেকে অগ্নি নির্বাপক বিমান আসবে।

উৎসব বাতিল

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ৭৭তম বার্ষিকীর উৎসব শুরুর সাথে সাথে ঘটে, যা ১৯৪৮ সালে দখলকৃত আরব ভূমিতে গঠিত হয়েছিল।

জরুরি সেবা ও উদ্ধার সংস্থা ঘোষণা করেছে, তারা “ইসরায়েলি স্বাধীনতা দিবস” নামে পরিচিত দিবসে — যা আসলে ফিলিস্তিনিদের ‘নাকবা’ (বিপর্যয়)-এর স্মরণদিবস — নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অংশ নিতে পারবে না।

আগুনের ভয়াবহতার কারণে কর্তৃপক্ষ এ উপলক্ষে আয়োজিত অনেক উৎসব ও অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।