জামালপুরে মাদ্রাসা ছাত্রের মাথাহীন লাশ উদ্ধার

জামালপুরের সদর উপজেলায় অপহরণের ২৮ দিন পর এক মাদ্রাসাছাত্রের মাথাহীন দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দিগপাইতের গান্দাইল গ্রামের বামুনঝি বিল থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত হাবিবুর রহমান হবদেশ দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
তার চাচা দুলাল মিয়া জানান, বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিবেশী ময়নালের হকের স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলত হাবিবুর। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সালিশ-দরবার হয়। ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে ময়নাল হককে তালাক দেন মোর্শেদা বেগম।
তিনি অভিযোগ করে জানান, এই রাগে ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করা হয় হাবিুবরকে। ময়নাল হকসহ চার-পাঁচজন মুখে গামছা পেঁচিয়ে হাবিবুরকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপহরণের পরপরই নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রে জিডি করেছিল হাবিবুরের বাবা।
নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মাথাহীন দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পরিবারের লোকজন প্যান্ট-শার্ট ও হাত-পায়ের আঙুল দেখে তাকে শনাক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, অনেক দিন আগে তাকে হত্যা করে বিলে ফেলে দেয়া হয়। তার মাথা পাওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
ওসি আব্দুল লতিফ জানান, হাবিবুরের পরিবার যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তারা সবাই পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।




ভুয়া টিভি চ্যানেলে সাংবাদিক নিয়োগকারী ১০ প্রতারক আটক

অনলাইনভিত্তিক ভুয়া টিভি চ্যানেলে সাংবাদিক নিয়োগকারী প্রতারক চক্রের দুই মূল হোতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪। ফাঁদে ফেলতে চক্রটি ব্যবহার করত নামিদামি ব্রান্ডের গাড়ি। প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের লোগো ফটোশপ করে নিউজ করার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

রোববার রাজধানীর হাতিরঝিল ও মতিঝিল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট টিভি (বিএসটিভি নিউজ ২৪)’ নামক একটি ভুয়া স্যাটেলাইট অনলাইন টিভির নামে প্রতারণা করছিল তারা।

সোমবার (২২ মার্চ) র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ চ্যানেলের কোনো অনুমোদন নেই, শুধুমাত্র একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তারা এ ব্যবসায় জড়িত।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, ঢাকার শাহীন খান (৫০), শরীয়তপুরের নূর হোসেন ওরফে নুরুল ইসলাম নাহিদ (৩৭) ও মো. রিয়াদ মাহমুদ (২৪), গাজীপুরের মো. রিমন পারভেজ (২৬), নেত্রকোনার মো. জয়নুল আবেদীন (৫৫), নারায়ণগঞ্জের মো. আকবর হোসেন (৩৯), ঢাকার মো. রাজিব হোসেন (৩৯) ও রায়হান পারভেজ (২১), পটুয়াখালীর ইমরুল কাইয়েচ ওরফে ফয়েজ (২৫) ও নেত্রকোনার আইয়ুব খান (৩০)। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা, কম্পিউটার, ভিজিটিং কার্ড ও ব্যানার উদ্ধার করা হয়।




মক্তব থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু

মক্তব থেকে বাসায় ফেরার পথে তাকিয়া নামে এক শিশু মাহিন্দ্রের নিচে পড়ে নিহত হয়। রোববার সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভার ইন্দিরাপাড় বাঁশবাড়ি জামে মসজিদ সংলগ্ন স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, প্রথমে তাকে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের সময় সে মারা যায়।

তাকিয়া পৌরসভার কাজিয়াকান্দা বাঁশবাড়ি গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তোলা মিয়ার শিশু কন্যা। ৪ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট।

তাকিয়ার উস্তাদ বাঁশবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম ও মক্তবের শিক্ষক মাওলানা শফিকুল ইসলাম জানান, তাকিয়া মক্তব শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় মাহিন্দ্রের নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের সময় সে মারা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে। আইনি প্রক্রিয়ায় লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সিএনজিটি জব্দ করা হয়েছে তবে চালক পালিয়ে গেছে। চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।




রমজানে মাছ-মাংসের দাম বাড়ানো যাবে না

আসন্ন পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের মূল্য কোনোভাবেই অস্বাভাবিক করা যাবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। রোববার (২১ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং সরবরাহ চেইন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত এক সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী । তিনি বলেন, ‘মূল্য বৃদ্ধি করা তো যাবেই না বরং যতটা সম্ভব সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে। বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে সরবরাহ চেইনকে অবশ্যই স্বাভাবিক রাখতে হবে। এক্ষেত্রে মৎস্য অধিদফতর

ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেবে। অধিদফতরের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রমজান মাসে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের জন্য জেলা পর্যায়ে ১০টি করে ভ্যান দেয়া হবে। মৎস্য অধিদফতর ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহায়তায় এসব ভ্যানের মাধ্যমে খামারিরা উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। যাতে জনগণের কাছে এই বার্তাটি পৌঁছে যায়, বাজারে মূল্য বেড়ে গেলেও এর বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় বড় ধর্মীয় উৎসবে পণ্যের দাম কমে যায় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার পথ চাইলেই খোঁজা সম্ভব। প্রয়োজনে এসময় ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ কম করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় দ্রব্যমূল্যে ছাড় দিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানকে ক্রেতাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করাও সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনাসহ বুলবুল, আম্ফানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিতে হচ্ছে। করোনার টিকার ব্যবস্থা করতে

হচ্ছে। এজন্য সরকার কোথাও অতিরিক্ত কর ধার্য করেনি। এক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে যাতে, কোনোভাবেই দেশের মানুষ কষ্ট না পায়।’এ সময় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কম মূল্য নির্ধারণের জন্য সুপারশপের প্রতিনিধিদের অনুরোধ জানান মন্ত্রী।

সভায় অংশগ্রহণ করেন-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মো. ইমদাদুল হক ও শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদফতর ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশের ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সুপারশপ ‘স্বপ্ন’, বেঙ্গল মিট, যাত্রাবাড়ী মাছ ব্যবসায়ী সমিতিসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা।




কোয়ারেন্টাইন থেকে পালানো ৯ প্রবাসী ছয় ঘণ্টা পর ফিরে এলেন

সিলেটে কোয়ারেন্টাইন থেকে পালিয়ে যাওয়ার ৬ ঘণ্টা পর ফের হোটেলে এসেছেন যুক্তরাজ্য ফেরত একই পরিবারের ৯ সদস্য। রোববার বেলা ২টার দিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নজরে আসার পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ চেষ্টার পর রাত আটটায় ফিরে আসেন তারা।হোটেল অবস্থানরত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এর আগে গত ১৮ মার্চ যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসে ৭ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল ওঠেন তারা। আগামী ২৬ মার্চ কোয়ারেন্টাইন শেষে তাদের হোটেল ছাড়ার কথা। তাদের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায়। এদিন ওই হোটেলে ৩৫ জন প্রবাসী কোয়ারেন্টাইনে যান।

কোয়ারেন্টাইন ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার পর ফেরত আসা প্রবাসীরা হলেন আবদুল মালিক, রুনা আক্তার, তামিমা আক্তার, তায়্যিবা আক্তার, রুবাবা আক্তার , রাহিমা বোগম, রাদিয়া আক্তার, সায়মা বেগম ও এম তাহমিদ চৌধুরী। তারা সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

হোটেল ব্রিটানিয়ার মার্কেটিং ম্যানেজার কাওসার খান বলেন, ১৮ মার্চ একই পরিবারের ওই নয় সদস্য হোটেলের ২০৩ ও ২০৪ নম্বর কক্ষে ওঠেন। প্রতিদিন দুইবার কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীদের চেক করা হয়। রোববার সকালে চেক করার সময় তারা হোটেলে ছিলেন। দুপুরে ফের তাদের চেক করতে গেলে ওই পরিবারের ৯ সদস্যের কাউকেই পাওয়া যায়নি। পরে তাদের দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা জানান একজন মুমূর্ষু রোগীকে দেখতে তারা বাড়িতে চলে গেছেন। পরে ফোন দেয়া হলে তারা এক ঘণ্টার মধ্যে আসছেন বলে জানান। পরে অসংখ্যবার যোগাযোগ করে রাত আটটার দিকে তারা হোটেলে আসেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমশিনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের জানান, রাত আটর দিকে কোয়ারেন্টাইন ভেঙে পালিয়ে যাওয়া একই পরিবারের ৯ সদস্য হোটেলে ফিরে এসেছেন। কি কারণে তারা পালিয়ে গেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।তিনি বলেন, ওই হোটেলে আমাদের একজন এএসআইসহ চারজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু কিভাবে তারা পালিয়ে গেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।




দুর্গাপুরে শিশুর আত্মহত্যা

রান্না ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে খাইরুল (১০) নামে এক শিশু আত্মহ্ত্যা করেছে। রবিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে সোলায়মানের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট ছেলে । পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবারের অজান্তে বিকেলে কোন এক সময় রান্না ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। সন্ধ্যায় খাইরুলের বোন রাজিয়া গোয়াল ঘরে গরু বেঁধে রান্না ঘরে এসে দেখে গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় তার ভাই ঘুংড়াতে থাকে। বোনের ডাক-চিৎকারে পরিবারের অন্যান্য লোকজন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে খাইরুলকে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপেক্সে নিয়ে আসার পথে খাইরুলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে মৃতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহনুর-এ আলম জানান, মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে এবং এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।




দুর্গাপুরে পুলিশের মাক্স বিতরণ

বাংলাদেশ পুলিশ দুর্গাপুর থানার উদ্যোগে বর্তমান করোনা কালীন সময়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতাবৃদ্ধির লক্ষে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ শুরু করেছে। রোববার পৌরশহরের ব্যস্ত এলাকা প্রেসক্লাব মোড় থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়।

এ সময় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(সার্কেল) মাহমুদা শারমীন নেলী, ওসি শাহ নুর-এ আলম, প্রেসক্লাব সভাপতি এস.এম রফিকুল ইসলাম-রফিক, সাবেক সভাপতি মো. মোহন মিয়া, নির্মলেন্দুর সরকার বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল তালুকদার, এইচ. এম সাইদুল ইসলাম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগন সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন।

বিতরণ পুর্ব আলোচনায় পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমীন নেলী বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রানঘাতি করোনা পুনরায় আমাদের মাঝে হানা দেয়া শুরু করেছে, গ্রামের সাধারণ মানুষ অনেকেই এ খবর রাখেন না। সে বিষয়টি মাথায় রেখে গ্রামে কৃষক, শ্রমিক, অসচেতন হতদরিদ্র মানুষদের করোনা কালীন সময়ে আমাদের কি করনীয় সে বিষয়ে ধারণা দেয়া সহ বিনা মুল্যে মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম চলবে। এ কাজে সহযোগিতা করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।




বসতবাড়ি লিখে না দেওয়ায় মায়ের পা ভাঙল ছেলেরা

বসতবাড়ি লিখে না দেওয়ায় নেত্রকোনা দুর্গাপুর উপজেলায় মজিদা খাতুন (৬৫) নামে এক নারীর পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে।

শনিবার রাত ১০টার দিকে এমন অভিযোগ করেন পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের দশাল গ্রামের মা মজিদা খাতুন। তিনি ওই এলাকার দিনমজুর সাহেব আলীর স্ত্রী।

এ বিষয়ে মজিদা খাতুন বলেন, প্রতিদিনের মতো সাংসারিক কাজ শেষে মাগরিবের নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এমন সময় তার ছেলে মঞ্জুল মিয়া (৪৩) ও হালিম মিয়া (২৫) তার মায়ের বসতবাড়ি তাদের দুজনের নামে লিখে দেওয়ার জন্য বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করে। এর একপর্যায়ে বাবার গায়ে আঘাত করে।

মা মজিদা এরই প্রতিবাদ করতে গেলে ঘরের বারান্দার সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করে বাম পা ভেঙে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে দড়ি দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে মেরে ফেলবে বলে জানায় ছেলেরা।

এ সময় বাবা-মায়ের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে গুরুতর আহতাবস্থায় মজিদাকে দুর্গাপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ নিয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. মনির হোসেন মানিক বলেন, ছেলেরা এক টুকরো জমির জন্য বাবা-মায়ের গায়ে হাত তুলতে পারে— এটি সত্যিই দুঃখজনক; আমি এর শাস্তি দাবি করছি।

মারধরের বিষয় নিয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি শাহনুর-এ-আলম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি সত্যিই অমানবিক, এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতিও চলছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।




ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ল বেইলি সেতু

উপজেলার জুঙ্গুরদি বাসস্ট্যান্ড ও নগরকান্দা সদরের মধ্যবর্তী কুমার নদে শনিবার সকাল ৭টার দিকে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে বলে নগরকান্দা থানার ওসি সেলিম রেজা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ধাওয়াপাড়া থেকে জুঙ্গুরদিমুখী বালিবোঝাই দশ চাকার ট্রাকটি বেইলি ব্রিজে উঠে। এরপর বিজ্রের অপর প্রান্তে যাওয়ার আগেই ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজটি ভেঙে যায়।ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ফরিদপুর-নগরকান্দা-মুকসুদপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরি প্রয়োজনে ছোট যান কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যাচ্ছে।

নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহানউদ্দিন আনিস জানান, ৫ টন ওজন বহনের সক্ষমতা নিয়ে ৮০’র দশকের শেষের দিকে নির্মিত বেইলি ব্রিজটি অনেক আগেই জরাজীর্ণ ও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। এলাকাবাসী সেখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি ফরিদপুরের সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগ বেইলি ব্রিজের কিছু স্লিপার মেরামত করে। পরে ৫ টন ওজনের স্থলে সাত টন ওজন বহনের অনুমতি সম্বলিত একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেয়।”

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেতি প্রো বলেন, বর্তমানে স্থানীয় পথচারীরা বিভিন্ন প্রয়োজনে নগরকান্দা যাতায়াতে নৌকায় নদী পাড়ি দিচ্ছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনগুলো কয়েক কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ব্যবহার করছে। বিষয়টি ফরিদপুরের সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে।

দুর্ঘটনা কবলিত ১০ চাকার বালিবাহী ট্রাকটি প্রায় ৩০ হতে ৩৫ টন ওজনের ছিল।ফলে অতিরিক্ত ভার বহন করতে না পেরে বেইলি ব্রিজটি ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল হোসেন।

ওসি বলেন, “দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি ১০ চাকার। ধাওয়াপাড়া হতে বালি নিয়ে আসা ট্রাকটি নির্ধারিত ওজনেরও কয়েকগুন বেশি ওজনের ছিল। ট্রাকের চালককে আটক করা যায়নি। এছাড়া মালিকের সন্ধানও মেলেনি।”




শাল্লায় হিন্দুদের গ্রামে হামলা: ‘মূল আসামি’ স্বাধীন মেম্বার গ্রেপ্তার

শনিবার ভোর রাতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিলেটে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান জানান।

তিনি বলেন, “শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলায় মূল আসামি শহীদুল ইসলাম স্বাধীন। গ্রেপ্তার করার পর তাকে কুলাউড়া থেকে পিবিআইয়ের সিলেট কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।”

শহীদুল ইসলাম স্বাধীনের বাড়ি শাল্লার পাশের দিরাই উপজেলার নাচনি গ্রামে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। গত ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর হামলাকারীদের ‘মদদদাতা’ হিসেবে স্বাধীন মেম্বারের নাম আসে।

হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়ের করা মামলাতেও স্বাধীনকে আসামি করা হয়।

ফেইসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে বুধবার সকালে হামলা চালিয়ে ৬০-৭০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ সে সময় বলেছিল, ‘হেফাজতে ইসলামীর অনুসারীরা’ ওই হামলা চালায়।

শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক বলেছিলেন, গত সোমবার দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সম্মেলনে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। সম্মেলনে মামুনুল হকের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে স্থানীয় এক হিন্দু যুবক ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন।

“ওই ঘটনাকে ধর্মীয় উসকানি আখ্যায়িত করে ওই এলাকার মামুনুল হকের অনুসারীরা মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর বুধবার সকালে কাশিপুর, নাচনী, চণ্ডিপুরসহ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কয়েক হাজার অনুসারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালায়। হাজারো মানুষের আক্রমণে গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এই সুযোগে হেফাজত নেতার অনুসারীরা গ্রামে প্রবেশ করে তছনছ করে। লুটপাট করে বিভিন্ন বাড়িতে।”

পরদিন শাল্লা থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে পুলিশের করা মামলায় ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়। আর হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুলের করা মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের বেশিরভাগই আসে স্বাধীনের গ্রাম দিরাইয়ের নাচনি থেকে। স্বাধীনের ‘উপস্থিতিতেই’ সেদিন হামলা হয়।

তদন্তকারীরা বলছেন, স্বাধীন মেম্বারের সাথে জলমহাল নিয়ে নোয়াগাঁওবাসীর পুরনো বিরোধ রয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক ব্যক্তির কথায় স্বাধীন মেম্বারের নাম এসেছে।

শহীদুল ইসলাম স্বাধীনসহ মোট ২৩ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।