কাঁদায় ভাসছে দুর্গাপুর

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

শীতের এই শুষ্ক তাপমাত্রায় চারপাশের পরিবেশে প্রভাব পরলেও পুরোপুরি বিপরীত নেত্রকোনার দুর্গাপুরের চিত্র। কনকনে শীতের মাঝেও কাঁদায় ভাসছে শহরের প্রতিটি সড়ক। দেখে বোঝার উপায় নেই এখন শীত নাকি বর্ষাকাল?
অথচ পর্যটন সম্ভাবনাময় এই নগরীর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভৌগলিক নির্দেশক স্বীকৃতি বা জি-আই সনদ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিজয়পুরের সাদা মাটির পাহাড় সহ অসংখ্য পর্যটন স্পট। প্রতিদিনই এই স্পটগুলো দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। প্রকৃতির টানে পর্যটকরা আসলেও তাদের ভাগ্যে জোটে কাঁদা ভরা সড়ক।
২০১০ সাল থেকে শহরটি প্রাণ ও নানা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সোমেশ্বরী নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বালুখেকোদের তান্ডব। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র বালু উত্তোলন সহ অপরিকল্পিত পরিবহনে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে দুর্গাপুর। এই নিয়ে বেশ কয়েক বার পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সর্তক করলেও সুফল আনতে পারেননি তারা।
পৌর শহরের পথঘাট সহ বহুল কাক্সিক্ষত দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ মহাসড়ক নিয়ে প্রতিনিয়ত ভেজা বালু পরিবহনে কাঁদায় জরাজীর্ণ থাকে সারা বছরই। শহরের প্রেসক্লাব মোড়,তেরি বাজার, কালীবাড়ি মোড়, কলেজ রোড, হাসপাতাল মোড়, উপজেলা মোড়, কাচারি মোড় সহ অলিগলিতেও স্তূপ বেঁধে থাকে কাঁদা। একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে পথচারীদের যাতায়াত তেমনি লোকসানের মুখে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পৌর শহরের ভেতর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে গেল বছর স্থানীয়রা লাগাতার আন্দোলন করেও কোন সুফল আসেনি। স্থানীয়দের দুর্ভোগ কাটাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ বালুবাহী ট্রাকের জন্য বাইপাস সড়কের আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়ন হয়নি গেল এক বছরেও। উল্টো বেড়েছে দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর কোন সমীক্ষা যাচাই ছাড়াই জেলা প্রশাসকএর মাধ্যমে সোমেশ্বরী নদী থেকে পাঁচটি বালুমহাল ইজারা প্রদান করে আসছে। অথচ বালু ট্রাক চলাচলের জন্য অধ্যাবদি পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থাই করতে পারেনি প্রশাসন। নামেমাত্র মাইকিং করে ভেজা বালু পরিবহন নিষেধাজ্ঞা দিলেও এর তোয়াক্কা করে না কেউ। যে যার মত করে যাচ্ছে বালু পরিবহন। আইন থাকলেও নেই এর প্রয়োগ! যার ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
স্থানীয়রা আরো জানান, বালু ব্যবসায়ীরা তাদের আখের গোছাতে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না। তাদের কাছে সবাই অসহায়। কারণ আইন প্রণেতারাই আইন অমান্য করে। তাহলে আইন কিভাবে সঠিক পথে চলবে। প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি দুর্গাপুর পৌর শহরের ভিতর দিয়ে চলাচল করছে। এমন একটা গাড়িও মিলবে না যারা ভেজা বালু পরিবহন করে না। দুর্গাপুরে শীত, গ্রীস্ম, বর্ষা সবসময়ই রাস্তাঘাটে দেখা মিলবে কাঁদা ও ময়লা পানি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ঠিকমতো করতে পারেনা। সড়কের ময়লা পানি, কাঁদা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ভিতরে ছিটে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র সহ মালামাল। এই অভিশাপ থেকে আমরা কবে রক্ষা পাবো। এই দুর্গাপুর কে বাঁচাতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নিরাপদ সড়ক চাই দুর্গাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুল আলম জানান, পৌর শহরের ভেতর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবিতে আমরা কয়েক বার মানববন্ধন কর্মসূচি সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। কিন্তু এর কোন বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পারিনি। সড়ক দিয়ে চলাচল করা যায় না কাঁদার কারণে। এতদিন করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এখন সবগুলো প্রতিষ্ঠান খুলেছে। ফলে শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে যেতে রাস্তার এপার থেকে ওপারে যেতেও নষ্ট হচ্ছে স্কুল ড্রেস সহ পোশাক-আশাক। আসলে এই দুর্ভোগ আমাদের সবার। বাহির থেকে পর্যটকরা অনেক আশা নিয়ে আমাদের দুর্গাপুরে আসেন। অথচ সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ভোগ ছাড়া কোন কিছুই দেখতে পারেন না তারা। আমরা এই দুর্ভোগের পরিত্রাণ চাই। আর কতদিন মানুষ এভাবে কষ্ট করবে?

ভেজা বালু পরিবহন বন্ধে প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব উল আহসান। তিনি বলেন, ভেজা বালু পরিবহন দুর্গাপুর বাসীর জন্য একটি দুর্ভোগের কারণ আমরা চেষ্টা করছি এই দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে। এর জন্য আমরা সবসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ছোট-বড় বিভিন্ন ট্রাককে জরিমানার আওতায় আনছি, ১৩জানুয়ারী বৃহস্পতিবারও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ভেজাবালু পরিবহনকারীকে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে।বালু মহালের ঠিকাদারদের ভেজা বালু পরিবহন বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করি সকলের আন্তরিকতা থাকলে ভেজা বালু পরিবহন বন্ধ করা যাবে। মেয়রের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি কি করতে পারি পরামর্শদেন।




দুর্ঘটনারোধে স্কুল-কলেজে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

দুর্ঘটনারোধে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া রাস্তা পারাপারে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের লোক রাখারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়ার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

এগুলো হলো- ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাস, সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ মহাসড়ক, বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগসড়ক এবং রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে সারাদেশের জাতীয় মহাসড়কে ২০১০ থেকে ২০১২ সালে ২০৯টি ব্ল্যাকস্পট (দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান) চিহ্নিত করা হয়েছে। তাতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আরও ২৫২টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান চিহ্নিত করা হয়। এরমধ্যে ১৭২টির প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৮০টি ব্ল্যাকস্পটেও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর ফলে সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।

এসময় পথচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশে একটা প্রবণতা আছে- দুর্ঘটনা হলেই গাড়ির ড্রাইভারকে পেটানো হয়। অনেক সময় গণপিটুনিতে তাকে মেরেই ফেলে। কেন দুর্ঘটনা ঘটলো, কার দোষে ঘটলো- সেটা খুঁজে বের করা দরকার। আর সবার ট্রাফিক রুল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার এবং সেটা মেনে চলা দরকার। মোবাইল ফোন কানে দিয়ে সড়ক পার, রেললাইনে চলা বন্ধ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ দৌড়ে রাস্তা পার হবেন না। রাস্তা পারাপারেই কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব জায়গায় ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস করা আছে। সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের বলবো, রাস্তায় চলাচলে ট্রাফিক রুল মানতে হবে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাফিক রুলটা শেখাতে হবে।

তিনি বলেন, স্কুলে যাতায়াতে নিরাপদে রাস্তা পারাপারে ট্রাফিক পুলিশ সহায়তা করবে, তবে স্কুল কর্তৃপক্ষেরও লোক রাখতে হবে। অনেক সময় বাচ্চারা অন্যদের মানতে চায় না। স্কুল কর্তৃপক্ষের লোক থাকলে ঠিকই মানবে। প্রত্যেকটা স্কুলকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেবে, যাতে তাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারে উদ্যোগ নেয়।

আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। দোষ কার, সেটা পরে দেখা যাবে। অনেক সময় ধাক্কা লেগে পড়ে যায়, সে হয়তো বেঁচে যেতো। কিন্তু ড্রাইভার গাড়ি থামালে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে এই ভয়ে সে পিষে চলে যায়। একটা মানুষের জীবন চলে যায়। কিছু হলেই ড্রাইভারকে ধরে পেটাবেন, গাড়িতে আগুন দেবেন, এটা ঠিক না। আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, তারাই সেটা দেখবে।

এসময় গাড়ির চালক ও হেলপারদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি তারা অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ঝিমিয়ে পড়ে। সে জন্য মহাসড়কের পাশে চালক ও যাত্রীর জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা নিচ্ছি। সুনির্দিষ্ট দূরেত্ব একটি করে বিশ্রামাগার থাকবে। পাশাপাশি চালকদের ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করছি। গাড়ি বাড়ছে, চালক বাড়ছে না। সে জন্য সমস্ত উপজেলায় চালকদের ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। তাহলে এ সংকট কিছুটা কমবে। ড্রাইভার ক্লান্ত হলে গাড়ি থামাবেন, রেস্ট নেবেন। কিন্তু হেলপার দিয়ে চালানো ঠিক নয়, এটা অন্যায় কাজ।

করোনার সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ব্যাপক কর্মসূচি ছিল আমরা ভার্চুয়ালি করছি। কারণ করোনা নতুনভাবে হানা দিয়েছে। সকলে নিয়ম মেনে চলবেন। মাস্ক পরবেন। সবকিছু স্বাভাবিক চলুক আমরা চাই। উন্নয়নের নানা কাজ করছি। ফলে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাবো। ২২ সালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আছে উদ্বোধন করবো আমরা। দেশের মানুষের জন্য গত ১৩ বছরে আমরা নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।




অর্ধেক যাত্রীতে চলবে বাস ট্রেন লঞ্চ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহণ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া সর্বপ্রকারের যানবাহনের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে টিকা সনদ নিতে হবে।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১১ দফা নির্দেশনা জারি করে সরকার।

সোমবার এ নির্দেশনায় বলা হয়, গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে , করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

এতে বলা হয়, দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেঁস্তোরাসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শান্তির সম্মুখীন হতে হবে।



সামাজিক-ধর্মীয়-রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সোমবার এ নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে , করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।




শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না: দীপু মনি

Dnb News ডেস্ক:

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পক্ষেই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। বরং আমরা চাই আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন টিকা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।‘

আজ শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের আরও অনেক বেশি সজাগ থাকতে হবে। করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। গত দেড় বছরে শিক্ষাখাতে যে ঘাটতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে সশরীরে ক্লাস করাটা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেকই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে যেভাবে চলছে, তাতে শিক্ষাখাতের সমস্যাটাই বেশি হবে। সন্তানদের কথা মাথায় রেখে আমরা প্রত্যেকেই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।

তিনি বলেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।




ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৪ ধারা: সমাবেশের চেষ্টা বিএনপির, ঢুকতে পারেননি রুমিন

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৪ ধারা ভেঙে সমাবেশের চেষ্টা করছে বিএনপি।

এদিকে সমাবেশে যাওয়ার পথে আশুগঞ্জে আটকে দেওয়া হয়েছে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে। বিএনপি ও ছাত্রলীগ একই স্থানে সমাবেশ ডাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টারসংলগ্ন এলাকায় শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।

তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর শহরের উপকণ্ঠে বটতলী বাজার এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।

এদিকে পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দিলেও মাঠে নামেনি ছাত্রলীগ। এর আগে আরও কয়েকটি জেলায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনগুলো পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা দিলে বিএনপির সমাবেশে ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, ১৪৪ ধারা জারিকৃত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে আশুগঞ্জের উজানবাড়ি এলাকায় আটকে দেওয়া হয় ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে।

আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বিএনপির ওই নেত্রীকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে তিনি ঢাকা ফিরে যাবেন।




আগামীকাল পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন: মাঠে নামছে পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

পঞ্চম ধাপের ৭০৮ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার। সোমবার (৩ জানুয়ারি) মধ্যরাতে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে।

ভোটগ্রহণ সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। এছাড়া আচরণবিধি দেখভাল করতে জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ধাপের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছাড়াও দলটির বিপুল সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকায় সহিংসতার শঙ্কাও রয়েছে। যদিও ৪৮ জন চেয়ারম্যানসহ ১৯৩ জন জনপ্রতিনিধি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তাদের মধ্যে সংরক্ষিত পদের সদস্য ৩৩ জন এবং সাধারণ সদস্য ১১২ জন। বাকি পদগুলোতে ভোট হবে।

জানা গেছে, এ ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৪০টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৬ হাজার ৪৫৭ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান ৩ হাজার ২৭৪ জন, সংরক্ষিত সদস্য ৭ হাজার ৯৫০ এবং সাধারণ সদস্য ৩৯ হাজার ৩৯১ জন। এ ধাপে মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার ১৯৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩১ জন ও পুরুষ ৭০ লাখ ৬০ হাজার ১৪০ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২১ জন।

এ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ৫২ জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য ১০৯ জন বিনা ভোটে জয়ী হন।




গজারি বনের ভেতর থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা গজারি বনের ভেতর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারীর আনুমানিক বয়স (৪) বছর।

আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি এলাকার একটি গজারি বনের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ।

ওই নিহত নারীর নাম রাশিদা সে পৌর এলাকার মাধখলা গ্রামের পূর্ব এলাকার শহিদুল্লার স্ত্রী।

শ্রীপুর থানার (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভেতরেই সাংবাদিককে পেটালেন স্বাস্থ্যকর্মী

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে আহসান আলম নামে এক সংবাদকর্মীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মী। আজ রবিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভেতরেই সাংবাদিককে পিটিয়ে জখম করেন। পরে সাংবাদিক আহসান আলমকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর সাংবাদিক আহসান আলম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। আহসান আলম চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পশ্চিমাঞ্চলের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত।

অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় রাসেল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলতদিয়াড় গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সাগরের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ওয়ার্ডবয় হিসেবে কর্মরত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (২ জানুয়ারি) ‘চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় রাসেলের সাথে আস্থা প্রকল্পের আয়া বৃষ্টির অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ’ শিরোনামে ‘পশ্চিমাঞ্চল’ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। রোববার সকাল ১০টার দিকে আহসান আলম চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভেতরে চা পান করে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এ সময় রাসেল তার এবং বৃষ্টির অনৈতিক বিষয় সংবাদপত্রে প্রকাশের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে আহসান আলম সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন। পরে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে।

সাংবাদিক আহসান আলম বলেন, সকালে ওয়ার্ডবয় রাসেল আমাকে প্রথমে হুমকি দেয়। পরে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাঁশ দিয়ে জনসম্মক্ষে বেধড়ক মারধর করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফাতেহ আকরাম বলেন, আয়া বৃষ্টির জন্য ওই ওয়ার্ডবয় ও তার স্ত্রীর মনোমালিন্য হয়েছিল। এ কারণে আয়া বৃষ্টিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ভেতরে ঘটনাটি হওয়ায় আসলেই দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আলামিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। অতিলম্বে আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওয়ায় আনার জোর দাবি করছি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, এ ঘটনায় সকালে সংবাদিক আহসান আলম বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।




বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তিন সন্তানের জননীকে হত্যা

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

২০১০ সালে বিয়ে হয় নরসিংদীর রায়পুরার রুনা আক্তারের। সাড়ে ৩ বছর আগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঋণ করে শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরব যায় স্বামী আবুল কালাম মিয়া। ঋণের টাকা পরিশোধ তো দূরের কথা পরিবারকেও টাকা দেওয়া বন্ধ করেন কালাম। শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা পরিশোধ করতে বলেন স্ত্রীকে। এ নিয়ে মনোমালিন্য ও নির্যাতন শুরু হয় রুনার ওপর। নারী নির্যাতনের মামলা করেন রুনা। ক্ষুব্ধ হয়ে গত চার মাস আগে ডিভোর্স লেটার পাঠায় কালাম।

বাধ্য হয়ে তিন সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরতে হয় রুনাকে। কাজ শুরু করেন সবজি ক্ষেতে। এরই মধ্যে গত ১৩ ডিসেম্বর নরসিংদীর রায়পুরার চর মরজালের একটি ধানক্ষেত থেকে রুনা আক্তারের (২৮) চোখ উপড়ানো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শুরুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর ও সন্দেহ ছিল শ্বশুরবাড়ির ওপর। তবে তদন্তে বেড়িয়ে আসে ভিন্ন তথ্য।

সৌদি প্রবাসী স্বামীর ডিভোর্স লেটারের পর নতুন করে বিয়ের প্রলোভন দেখায় দূর সম্পর্কের মামা আব্দুর রাজ্জাক। তিনি খোরশেদ নামে মিয়া নামে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছিলেন। এজন্য তিনি নিয়েছিলেন ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু রুনা শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় রুনাকে।

ওই ঘটনায় জড়িত আব্দুর রাজ্জাক ও খোরশেদ মিয়াকে গ্রেফতারের পর আজ রবিবার (০২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, নিহত রুনা আক্তার সৌদি প্রবাসী আবুল কালাম মিয়ার স্ত্রী ও একই গ্রামের উত্তর পাড়া এলাকার মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়ার মেয়ে। নিহত রুনা আক্তার ও কালাম মিয়ার সংসারে ৩ সন্তান রয়েছে।

জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রুনা বাবার বাড়ি থেকে মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার নম্বর বন্ধ পায়। ১৩ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় লোকজন গ্রামের ধানক্ষেতে রুনার লাশ পড়ে থাকতে দেখে।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাবা মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, হত্যার ঘটনাটি কেন ও কীভাবে সংগঠিত হয়েছে, ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, কারো সাথে পূর্ব কোনো বিরোধ ছিল কি-না ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ভিকটিমের পরিবার, ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস হতে সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়।

পরবর্তীতে এলআইসির একাধিক চৌকস টিম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় সন্ধিগ্ধ আসামি খোরশেদ মিয়াকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও আব্দুর রাজ্জাক খানকে নরসিংদীর রায়পুরা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মুক্তা ধর বলেন, গ্রামের বিভিন্ন এনজিও সমিতি হতে সাড়ে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সাড়ে ৩ বছর আগে শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরব যায় স্বামী আবুল কালাম মিয়া। কিন্তু ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ আসে স্ত্রী রুনার ওপর। রুনা স্বামীকে জানালে যৌতুক বাবদ বাপের বাড়ি হতে টাকা পরিশোধ করতে বলে। কিন্তু রুনার পরিবারের সচ্ছলতা ছিল না। রুনা টাকা পরিশোধে অপারগতা জানালে সংসারের খরচার টাকাও দেওয়া বন্ধ করে কালাম। এ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে মনোমালিন্য ও নির্যাতনের শিকার হয় রুনা। নারী নির্যাতনের মামলা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে গত চার মাস আগে ডিভোর্স লেটার পাঠায় কালাম।

বাধ্য হয়ে তিন সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরতে হয় রুনাকে। কাজ শুরু করেন সবজি ক্ষেতে। এরই মধ্যে নতুন করে বিবাহের জন্য প্ররোচনা দিতে থাকে দূর সম্পর্কের মামা পল্ট্রি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর চার সন্তানের জনক বৃদ্ধ খোরশেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ ঠিক করেন। এজন্য ৯০ হাজার টাকা খরচাও আদায় করেন আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিয়েতে অমত জানায় রুনা। এ নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও খোরশেদ মিয়া ক্ষিপ্ত হয়। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধানক্ষেতে গিয়ে হাত পা বেঁধে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ও চোখ উপড়ে ফেলে।

মুক্তা ধর বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনায় আরও দুজন জড়িত। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার দুজনকে আজই নরসিংদী আদালতে সোপর্দ করা হবে।