মনির খানের হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকা অঞ্জনা এখন কোথায়?

‘অঞ্জনা’ মনির খানের শ্রোতাপ্রিয় একটি গান। ‘একটি গান’ না-বলে একে গায়কের ট্রেডমার্কও বলা যায়। কেননা, মনির খানের অধিকাংশ অ্যালবামে অঞ্জনার কথা ঘুরেফিরে এসেছে। এই শিরোনামে তিনি একাধিক গান গেয়েছেন। ফলে অঞ্জনাকে নিয়ে ভক্তদের রয়েছে বাড়তি কৌতূহল। ভক্তদের অনেকে মনে করেন- অঞ্জনা মনির খানের হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকা!

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে মনির খানের কাছে জানতে চাওয়া হয় অঞ্জনা সর্ম্পকে। তিনি অকপটে জানান তার হারিয়ে যাওয়া সেই প্রেমের গল্প।

অঞ্জনাকে ভালোবেসেই জীবন কাটালাম। সে আমার কৈশোরের ঘটনা। না-হলে এত বছর তাঁকে মনের ঘরে পুষে রাখতে পারতাম না’- বলেন মনির খান। বর্তমানে অঞ্জনা সৌদি আরব প্রবাসী। জীবনের এতটা বছর পেরিয়ে এসেও তাঁকে ভুলে যাননি শ্রোতাপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী।

স্কুলজীবনে অঞ্জনার প্রেমে পড়েন মনির খান। তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি স্কুলে অঞ্জনা পড়তো ক্লাস সেভেন-এ। আমি নাইন-এ। আমাদের প্রেম আসলে সেভাবে প্রপোজ করে হয়নি। একসঙ্গে চলাফেরা; এর মধ্যে দিয়ে দারুণ একটা বোঝাপড়া তৈরি হয় দুজনের মধ্যে। এখন প্রেম-ভালোবাসা কমার্শিয়াল লাইনে চলে গেছে। কে কতটুকু পাচ্ছে- এ নিয়ে হিসাব হয়। তখন এমন ছিল না। রিয়েল লাভ তখন ছিল। যদিও আমাদের দুজনের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ঈশ্বর হয়তো চাননি, তাই আমাদের প্রেম পূর্ণতা পায়নি।’

প্রেমের ক্ষেত্রে বাধা কোথায় ছিল? এ প্রশ্নের জবাবে মনির খান বলেন, ‘আমাদের রিলেশন সাত বছর পর্যন্ত ছিল। বুঝতে পেরে ওর বাবা অঞ্জনাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়। তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। বিত্তের মাঝে চিত্তের সুখ খুঁজছিলেন তারা। আমরা বিত্তশালী ছিলাম না বলেই হেরে গিয়েছিলাম।’

অঞ্জনার সঙ্গে মনির খানের সর্বশেষ ৩৩ বছর আগে দেখা হয়েছে। এরপর আর হয়নি। এখন দুজনেই যে যার মতো ঘর-সংসার করছেন। দুজনেই সুখী। অঞ্জনাকে নিয়ে গান গাওয়াতে মনির খানের স্ত্রীর কোনো আপত্তিও নেই। বরং অঞ্জনার গান ভালো না-হলে তিনি আরো সুন্দর করে গাওয়ার অনুপ্রেরণা দেন। এ প্রসঙ্গে মনির খান বলেন, ‘কারণ সে জানে এটা শ্রোতাদের ডিমান্ড। এই ডিমান্ড ফুলফিল করতে উল্টো সে আমাকে তাগিদ দেয়।’

অঞ্জনাকে নিয়ে ২৬টি গান গেয়েছেন মনির খান। সর্বশেষ গত বছর বাজারে আসে ‘অঞ্জনা-২০২০’ শিরোনামে গান। এই গানে অঞ্জনাকে মীরজাফর, রাজাকার, বেঈমানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

ঢাকা/আলো




অপূর্বকে টপকে গেলেন নিশো

বাংলা নাটকের ইতিহাসে ইউটিউবে দ্রুততম ভিউয়ের তালিকায় এক নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে আফরান নিশো-মেহজাবিন চৌধুরী অভিনীত একক নাটক ‘শিল্পী’। এর মধ্য দিয়ে জিয়াউল ফারুক অপূর্বকে টপকে গেলেন নিশো। এমনটাই দাবি করেছেন নাটকটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি।

এর আগে টানা ৪ বছর এই অবস্থান ধরে রেখেছিল অপূর্ব-মেহজাবিন অভিনীত মিজানুর রহমান আরিয়ানের নাটক ‘বড় ছেলে’। এটি কোটি ভিউ অতিক্রম করতে সময় নিয়েছে ৩৪ দিন। কিন্তু ২৬ দিন ৯ ঘণ্টায় এই রেকর্ড অতিক্রম করেছেন ‘শিল্পী’ নাটকটি। অর্থাৎ ৮ দিন আগেই এই মাইলফলক স্পর্শ করেছে নাটকটি।

গত ১৮ জানুয়ারি নাটকটি সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায়। এটি কোটি ভিউয়ের ঘর অতিক্রম করেছে ১৩ ফেব্রুয়ারি। শুধু তাই নয়, নাটকটিতে ব্যবহার করা ‘বুক চিন চিন’ ও ‘বিধি তুমি বলে দাও’ শিরোনামের দুটো পুরোনো সিনেমার গানের রিমেক ভার্সনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল।

নির্মাতা মহিদুল মহিম বলেন, পুরো বাঙালির বুক চিন চিন ধরিয়ে আমাদের ‘শিল্পী’ দেখিয়ে দিলো তার প্রভাব। এটাকে আমি অবিশ্বাস্য অর্জন বলব। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এই নাটকের প্রধান দুই শিল্পী নিশো ভাই ও মেহজাবিন আপুকে। তাদের অভিনয়গুণেই এটা সম্ভব হয়েছে। কৃতজ্ঞতা জানাই আমার প্রযোজক পাপ্পু ভাইকে, তার সাহস ছাড়া এই কাজ সম্ভব হতো না। সবচেয়ে বেশি ধন্যবাদ জানাই দর্শকদের। তারাই আমাদের মূল কারিগর।

এদিকে এমন অর্জনে খুবই উচ্ছ্বসিত প্রযোজক এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু। তিনি বলেন, আরও ভালো ভালো কাজ উপহার দেওয়ার জন্য এই অর্জনটি আমাদের উৎসাহ যোগাবে। অভিনন্দন জানাই নির্মাতা মহিদুল মহিম, শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবিন চৌধুরীকে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি গণমাধ্যমের সকল বন্ধুদের, যারা সবসময় আমাদের সাপোর্ট দিয়ে আসছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই দর্শকদের প্রতি, যাদের ভালোবাসা না থাকলে এই সফলতা সম্ভব ছিল না।

সিএমভির হেড অব ডিজিটাল কমিউনিকেশনস সালেহ খান শাওন জানান, ইউটিউবের ভিউ বিচারে দ্রুততম সময়ে ১০ মিলিয়ন বা এক কোটির ঘর অতিক্রম করা ১০টি বাংলা নাটকের মধ্যে এখন এক নম্বরে আছে ‘শিল্পী’। এটি সময় নিয়েছে মাত্র ২৬ দিন। দ্বিতীয় স্থানে এখন ‘বড় ছেলে’ (৩৪ দিন)। এরপরই আছে সিএমভি প্রযোজিত পর পর দুটি নাটক—‘এক্সচেঞ্জ’ (৫৩ দিন) ও ‘মিস্টার অ্যান্ড মিস চাপাবাজ’ (৭৩ দিন)।

দুজন স্ট্রিট সিঙ্গারের জীবন, প্রেম ও প্রতিযোগিতা নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘শিল্পী’ নাটকের কাহিনি।

 




বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। পুরুষরা লাল পাঞ্জাবি আর নারীরা লাল-সাদা শাড়ি বা অন্য পোশাক পরে বেরিয়ে পড়েন দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপনের জন্য।

বছরজুড়ে ভালোবাসা চললেও দিনটি যেন একটু বেশি করেই ভালোবাসার। এদিনে নিজের ভ্যালেন্টাইনকে প্রপোজ করা, বিভিন্ন উপহারের পাশাপাশি লাল গোলাপ দেওয়া, তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়াসহ নানা কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা।

বিশ্বজুড়ে কেনো এই ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করা হয়-এর পুরো ইতিহাস সম্পর্কে হয়তো অনেকের জানা নেই। আবার অনেকেরই হয়তো মনে প্রশ্ন জাগে, ভ্যালেন্টাইন ডের জন্ম বা উৎপত্তি কখন, কবে আর কোথায় হয়েছিল? বাংলাদেশেই বা এ দিবসটি কবে থেকে উদযাপিত হয়ে আসছে। পাঠক, চলুন ভালোবাসা দিবসের অদ্যোপান্ত জেনে নিই।

বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস প্রবর্তন করেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। ১৯৯৩ সালে শফিক রেহমান তার সম্পাদিত মাসিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ১৪ ফেব্রুয়ারিকে উপলক্ষ করে ‘ভালোবাসা সংখ্যা’ নামে একটা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেন। সে সংখ্যার পুরোটাজুড়ে ছিল দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাঠানো লেখকের ভালোবাসার গল্প। তখনও বা কে জানতো, একদিন বাংলাদেশে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ভালোবাসা দিবস রীতিমত উৎসবে রূপ নেবে!

রোমানরা খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার আগে প্যাগান (পৌত্তলিক) ধর্মের অনুসারী ছিলেন।প্যাগান ধর্মের লোকজন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে পূর্বপুরুষদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ফেব্রুয়ালিয়া পূজা পালন করতেন। এই ফেব্রুয়ালিয়া অনুষ্ঠানের নামানুসারে পরবর্তীতে ইংরেজি মাসের নামকরণ করা হয় ফেব্রুয়ারি।তখন ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই পূজা হতো।পূজার উদ্দেশ্য ছিল দেবতার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে পুণ্যতা, উর্বরতা ও সমৃদ্ধি লাভ করা। অনুষ্ঠানের মাঝের দিনটি ছিল খুবই আকর্ষণীয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি দেবীরাণী জুনোর সম্মানে পবিত্রতার জন্য কুকুর আর উর্বরতার জন্য ছাগল উৎসর্গ করা হতো।উৎসর্গীকৃত কুকুর ও ছাগলের রক্তে রঞ্জিত হয়ে যুবকেরা চামড়ার তৈরি সামান্য পোশাক পরতো।তারপর চামড়ার বেত দিয়ে দেবীর নামে তরুণীদের শরীরে আঘাত করতো।

সে সময়ের মানুষ বিশ্বাস করতো, এই আঘাতের কারণে দেবী ওই তরুণীদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবেন।দিনটির আরও একটি বিশেষত্ব হলো, এ দিনেই পরবর্তী এক বছর আনন্দ দেওয়ার জন্য দেবীর ইচ্ছায় লটারির মাধ্যমে তরুণরা তাদের তরুণী সঙ্গীকে বেছে নিতেন। প্রথানুযায়ী বড় একটি বাক্সে তরুণীদের নাম লিখে রাখা হতো। সেখান থেকে তরুণরা একেকটি নাম তুলে পরবর্তী বছর লটারি হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত যুগল একসঙ্গে থাকার সুযোগ পেতেন।

এরই মাঝে ২৬৯ সালে ঘটে যায় একটি বিরল ঘটনা।সে সময় রোমান সম্রাট ছিলেন ক্লাডিউয়াস।খ্রিস্টান ধর্মযাজক, সমাজসেবক ও চিকিৎসক স্টিভ ভ্যালেন্টাইন নামের এক যুবক ধর্ম প্রচারকালে রোমান সম্রাট ক্লাডিউয়াস এর নানা আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার  হন। এই আদেশের অন্যতম একটি ছিল, রোমান সম্রাট ক্লাডিউয়াস কর্তৃক যুবক সেনাদের বিয়ে করা নিষেধ করে দেওয়া।

স্টিভ ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের এই আদেশের বিপরীতে গিয়ে যুবক সেনাদের বিয়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন ও গোপনে বিয়ে দিয়ে দিতেন। এছাড়া জনগণকে ধর্মদ্রোহী করা, সম্রাটের বিপক্ষের যুদ্ধাহত খ্রিস্টান সৈন্যদের চিকিৎসা করা এবং রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডের জন্য সম্রাটের রোষানলে পড়ে গ্রেপ্তার হন বিদ্রোহী যুবক স্টিভ ভ্যালেন্টাইন।

ভ্যালেন্টাইনকে কারাগারে পাঠানোর পর জনগণের কাছে তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।এই সাহসী এবং জনপ্রিয় যুবককে দেখার জন্য প্রতিদিন অগণিত মানুষ কারাগারে যেতেন। এর মধ্যে এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ে ‘জুলিয়া’ ও ছিলেন। ভ্যালেন্টাইনের সঙ্গে তিনি প্রায়ই কারাগারে দেখা করতেন এবং দীর্ঘসময় তারা এক সঙ্গে কাটাতেন।

এর মধ্যে ঘটে যায় আশ্চর্যজনক এক ঘটনা।স্টিভ ভ্যালেন্টাইন তার আধ্যাত্মিক চিকিৎসার মাধ্যমে অন্ধ জুলিয়াকে সুস্থ করে তোলেন এবং তাকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করেন। এক সময় ভ্যালেন্টাইন ও জুলিয়া একে অন্যের প্রতি গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়েন। এই সংবাদ শোনার পর সম্রাট ক্লাডিউয়াস আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ২৭০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, দিনের কোনো এক সময়ে, হাজারো মানুষের সামনে স্টিভ ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। নির্বিকার, সাহসী যুবক স্টিভ ভ্যালেন্টাইন ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়ার আগে, তার ভালোবাসার মানুষ জুলিয়াকে একটি চিঠি লিখে যান। যে চিঠির শেষে লেখা ছিল ‘তোমার ভ্যালেন্টাইনের পক্ষ থেকে’।

এরপর কেটে যায় ২২৬ বছর। এক সময় লিওপারসালিয়া বা ফেব্রুয়ালিয়া পুজার নাম ও পদ্ধতি পরিবর্তন করে নিজ ধর্মের যাজক স্টিভ ভ্যালেন্টাইনের নামে অনুষ্ঠানের নামকরণ করেন তারা। সেই সময় মানে ৪৯৬ সাল থেকেই ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ বা ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ এর সূচনা। কিন্তু মধ্যযুগে এসে সমস্ত ইউরোপে ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন দীর্ঘকাল নিষিদ্ধ ছিল। পরবর্তী সময়ে ইংরেজি সাহিত্যের জনক জিওফ্রে চসার’ ১৩৮২ সালে তার ‘পার্লামেন্ট অব ফাউলস’ এর মধ্যে ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে লেখেন। এরপর উইলিয়াম শেকসপিয়রসহ অনেক খ্যাতিমান সাহিত্যিকরা তাদের সাহিত্যে এ বিষয়টিকে তুলে আনেন।অবশেষে ১৬৬০ সালে রাজা চার্লস-টু পুনরায় দিবসটি পালনের প্রথা চালু করেন।

স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১৪ সালে সৌদি আরবের পুলিশ ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের দায়ে সে দেশে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। আর ইরান, পাকিস্তান, মালয়েশিয়ায় ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কেবল মুসলিম দেশ নয়, ভারত সরকারও তাদের নিজস্ব সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক মনে করায় দিবসটি পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেয়।

এই হচ্ছে মোটামুটি ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবসের পেছনের ইতিহাস। আজকের এই বিশেষ দিনের প্রত্যাশা, কেবল নর-নারীর মধ্যে নয়, বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক। যুদ্ধ কিংবা হানাহানি নয়, ভালোবাসা দিয়েই মানুষ জয় করুক সবার হৃদয়।

আলো/সাগর 




আজ বসন্তের প্রথম দিন

শীতের রিক্ততা মুছে প্রকৃতিজুড়ে সাজ সাজ রব। বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠেছে নতুন প্রাণ। আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।

বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। বসন্তে গাছে গাছে নতুন পাতা আসে। ডালে ডালে কোকিল। রঙিন ফুলে প্রকৃতি সুশোভিত হয়ে ওঠে। এই সময়ে বাতাসে ফুলের রেণু ছড়ায়। প্রকৃতি হয়ে উঠে অপরুপ।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙ্গেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও।

এবারের বসন্ত এসেছে এমন সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে বিরাজ করছে করোনার ভয়াল প্রভাব। এরপরও বাংলাদেশে বসন্ত বরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে অনেক। বসন্তে তারুণ্য মেতে ওঠবে বসন্ত উৎসবে।

এবারের পহেলা ফাল্গুন আরেকটা কারণে ব্যতিক্রম। তা হলো- এবার ভ্যালেন্টাইন দিবস এবং পহেলা ফাল্গুণ একই দিনে উদযাপন হতে যাচ্ছে। এদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে সেই তারুণ্যের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে শাহবাগ, রমনা বটমূল, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে রাজধানীর পুরো শরীরে; শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে নিভৃত পল্লীর ধুলোমাখা পথেও। দিনটিকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন গ্রহণ করেছে নানা কর্মসূচি।

সব কুসংস্কার পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে এবং বসন্তের উপস্থিতিতে বরণ করে নিতে ‘বসন্ত বরণ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম রাইজিংবিডি ডটকমের নিজস্ব কার্যালয়েও। মাজার রোডের গণমাধ্যমটির কার্যালয়ে দুপুর আড়াইটায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বসন্ত যেমন আমাদের খুশির ঋতু; তেমনি বেদনারও বটে। ফাগুনে শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ মনে করিয়ে দেয় বায়ান্নর ফাগুনের শহীদদের কথা। ফাল্গুন মনে করিয়ে দেয় ভাষা শহীদের রক্তের ইতিহাস। এই মাসেই উদযাপন করা হবে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাল্গুনের সাথে মিশে আছে আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসও।




কিশোরগঞ্জে মাদক কারবারি আটক

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মাদক বিরোধী অভিযানে ৪শ পিস ইয়াবা ও ৩০ বোতল ফেনসিডিলসহ মো. বিপুল মিয়া (৩৫) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে র‌্যাব।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টায় র‌্যাব-১৪ এর সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার এম শোভন খান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আটক মো. বিপুল মিয়া হোসেনপুর উপজেলার রানাগাঁও গ্রামের মো. আবুবক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

কমান্ডার এম শোভন খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, একটি মাদক কারবারি চক্র মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে কিশোরগঞ্জসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করছে।

এই সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে হোসেনপুর উপজেলার নিমখালী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ এই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে  বিপুল দীর্ঘদিন ধরে মাদক ক্রয়-বিক্রয় করার কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানায় মামলা দায়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




৩ লাখ মিটার কারেন্ট জালসহ ১০ মণ জাটকা জব্দ

পটুয়াখালীর রাবনাবাদ নদীর মোহনায় অভিযান চালিয়ে তিন লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট ও বেড় জালসহ ১০ মণ জাটকা জব্দ করেছে কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা থেকে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত রাবনাবাদ ও আন্ধারমানিক নদী থেকে এসব মাছ ও জাল জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার দুপরে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জগৎবন্ধু মন্ডলের নির্দেশক্রমে এসব অবৈধ জাল কলাপাড়া হেলিপ্যাড মাঠে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এসব জালের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। জব্দকৃত জাটকা ইলিশ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জ‌্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুন্নবী, কুয়াকাটা নৌ-পুলিশের ইনচার্জ এস আই মাহমুদ হোসেন মোল্লা ও এএস আই কামরুল ইসলাম।

কুয়াকাটা নৌ-পুলিশের ইনচার্জ এসআই মাহমুদ হোসেন মোল্লা জানান, রাতভর অভিযান চালিয়ে এসব মাছ ও জাল জব্দ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।




অমানবিক নির্যাতন: ভিডিও ভাইরালের পর অপহৃত যুবক উদ্ধার

পটুয়াখালীর মহিপুরে হাত পা বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো। অপহৃত যুবক রায়হানকে (২২) ৬ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় উপজেলার লতাচাপলী স্লুইজগেট এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি মনিরুজ্জামান জানান, সকালে একটি ডিঙ্গি নৌকা ফাতরার বনে বালু আনতে যায়। এসময় বালুবাহী নৌকা দেখে রায়হান তাদের কাছে সাহায্য চাইলে তারা রায়হানকে উদ্ধার করে মহিপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। উদ্ধারের সময় রায়হানের হাত বাঁধা ছিল বলে জানিয়েছেন নৌকার শ্রমিকরা।

ওসি আরও জানান, এ সংক্রান্ত এক মামলা করার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রায়হান উদ্ধার হলেন। মামলার ৯ আসামির মধ্যে দুইজনকে মদ তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন‌্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উল্লেখ‌্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন যুবক রায়হান। পরে শুক্রবার সকালে রায়হানকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপরই দোষীদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ।




সুগন্ধা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

ঝালকাঠির নলছিটি থেকে রাসেদুল হক (৩২) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) রাত সারে ৯টায় উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের বারইকরন নামক এলাকায় সুগন্ধা নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি,তদন্ত) আবদুল হালিম তালুকদার।

রাসেদুল হক নরসিংদী জেলার রায়াপুরা উপজেলার মৃত. শাহজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির বরিশাল ডিপোতে স্টোর কিপার পদে চাকরি করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি আবদুল হালিম তালুকদার জানায়, বিকেলে নদীর চরে অচেনা এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে  রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।  রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি (তদন্ত) আরও জানান, মোবাইল ফোনের সিম চালু করে নিহত রাশেদুল হকের পরিচয় পাওয়া যায়। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গত  ২৪ জানুয়ারি নিখোঁজ হন রাশেদুল। বরিশাল কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এব্যাপারে নলছিটি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

 




জাতিসংঘের কার্যক্রমে অধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান

বিশ্বে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল প্রতিশ্রুতি ও অব্যাহত সমর্থনের কথা পূনর্ব্যক্ত করে এই আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি এই কার্যক্রম ও জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের পদায়নের জন্যও অনুরোধ জানান। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রিক্স ও অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারের সঙ্গে বৈঠককালে সেনাবাহিনী প্রধান এ আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীগণের পেশাগত জ্ঞান, নিয়মানুবর্তিতা, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রিক্স। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়াও ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন ল্যাক্রিক্স। উল্লেখ্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সৈন্য ও পুলিশ প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে।

এদিকে অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারের সাথে সেনাবাহিনী প্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সোমবার বিকেলে। বৈঠককালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহনে বাংলাদেশ বিমানকে তালিকাভূক্ত করার জন্য অতুল খারেকে ধন্যবাদ জানান সেনা প্রধান। শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়নসহ মানবাধিকার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বশীল ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান অতুল খারে। এছাড়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ বিমান সফলতার সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহণে ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ নৌ, বাংলাদেশ বিমান ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিবিধ বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

এছাড়া মঙ্গলবার সকালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাডভাইজর লেফটেন্যান্ট জেনারেল কার্লোস হামবার্টো লয়টের সঙ্গেও বৈঠক করেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান।

একই দিনে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার সঙ্গেও সেনাবাহিনী প্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে স্থায়ী প্রতিনিধি সেনাপ্রধানকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ সার্বিকভাবে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে ধন্যবাদ জানান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এ সকল বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল জুবায়ের সালেহীন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ছাদেকুজ্জামান।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান গত ২৯ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।