বাংলাদেশি পর্বতারোহীরা হিমালয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের একটি দল হিমালয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছে। ট্যুর গ্রুপ বিডি নামে ওই দলের সদস্যরা নেপালের থুরং-লা গিরিপথে ওঠার পর ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগান দেন।

সুউচ্চ থুরং-লা গিরিপথের উচ্চতা পাঁচ হাজার ৪১৬ মিটার। সেখানে পৌঁছাতে ১০ দিনের কঠিন পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়।গিরিপথে প্রথম প্রথম ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ান মো. সোলাইমান ও তামিম মুনতাসির। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন দলনেতা রাহি রাফসান।  মুনতাসির বলেন, তারা ফিলিস্তিনের পতাকা সঙ্গে নিয়ে যান। তারা গিরিপথটির সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে ‘অন্নপূর্ণা’ সার্কিট ট্র্যাকের শেষ দিনে পতাকাটি ওড়ানোর পরিকল্পনা করেন।

তিনি বলেন, সৌভাগ্যবশত আমরা ইসরায়েলের বড় একটি পর্বতারোহী দলের সামনেই পতাকাটি ওড়াতে পেরেছিলাম। এতে আমাদের পতাকা ওড়ানো এবং স্লোগান আরও অর্থবহ হয়ে ওঠে।

সোলাইমান উল্লেখ করেন, পতাকা ওড়ানোর সঙ্গে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে দেখে ইসরায়েলি দলটিকে খুব রাগান্বিত এবং হতাশ মনে হচ্ছিল। তিনি বলেন, এমনকি ইসরায়েলি পর্বতারোহী দলের একজন রেগে আমাদের দিকে আসেন। তবে তাদের দলের আরেকজন তাকে থামিয়ে দেন।

গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে ইসরায়েলি ভ্রমণকারী ও পর্যটকরা ক্রমবর্ধমানভাবে বাজে পরিস্থিতি এবং কখনো কখনো বিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে।

স্টিভেন সোচোচেটের নামে ইসরায়েলের এক পর্বতারোহী নেপালের কিছু স্থানে বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। থুরং-লা ওঠার পথে তাকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে আরেক ইসরায়েলি সঙ্গীর সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যাচ্ছিল।

সোচোচেট দৃঢ়ভাবে বলছিলেন যে এটিকে আর যুদ্ধ বলা যাবে না, কারণ ইসরায়েল মূলত পুরো বিশ্বের সামনে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে। তার দলের অন্য সঙ্গী বলছিলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষা এবং হামাসের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার আছে।

ট্যুর গ্রুপ বিডির দলনেতা রাফসান ইসরায়েলি সোচোচেটের সঙ্গেই পর্বতারোহণে ছিলেন। তিনি ইসরায়েলি এ পর্বতারোহীর অবস্থান দেখে বিস্মিত হন।

রাফসান বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারিনি যে, ইসরায়েলি এক নাগরিক এমনটি বলছেন। তখন আমি বুঝতে পারি, যেকোনো বিবেকবান ব্যক্তি গাজায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার নিন্দা জানাবেন। অবশ্যই ইসরায়েলে বিবেকবান মানুষ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি জানি না, আমি জানি না, সংহতি প্রকাশ কিংবা ইসরায়েলি জনগণকে লজ্জা দেওয়া এ গণহত্যা বন্ধ করবে কি না। কিন্তু এটি অন্তত আমরা করতে পারি।

সূত্র: আনাদোলুর




দুর্গাপুরে বেকারির বিষ খাচ্ছে মানুষ! আইনের তোয়াক্কাই করছে না মালিক পক্ষ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি-

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী কিংবা কোমলমতি শিশুদের সুস্বাদু খাবার হিসেবে প্রধান পছন্দ বেকারির খাদ্য পণ্য। ক্ষুধা মেটাতে বয়স্ক মানুষদেরও খাবারের তালিকায় থাকে বেকারিতে তৈরি হওয়া মুখরোচক বিভিন্ন পণ্য। তবে এসব কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই কারোরই। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। সরেজমিনে গেলে ভৈরব বেকারি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য তৈরির চিত্র দেখা যায়।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৭টি বেকারি কারখানা রয়েছে। কনফেকশনারির দোকানও রয়েছে অসংখ্য। দীর্ঘ দিন ধরে এসব বেকারি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করে আসছে। কোনো প্রকার ভেজালবিরোধী অভিযান না থাকায় ব্যবসা পরিচালনা করতে মালিকদের কোনও অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বিভিন্ন স্থানের বাজারগুলোতে নামে-বেনামে গড়ে ওঠা বেকারি কারখানা গুলোতে আইন না মেনে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন খাদ্য পণ্য। এই গুলো বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ছাড়াই পরিচালনা হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নি¤œমানের ভেজাল পণ্য তৈরি করে এরা দেদারসে বাজারজাত করছে তাদের বিভিন্ন পণ্য। বেশিরভাগ খাদ্যের প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ স্টিকার নেই। এতে হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য।
অভিযোগ রয়েছে,শহরসহ গ্রামের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যায় কেক,বিস্কুট,পাউরুটি,বাটারবন,মিষ্টিসহ হরেকরকমের পণ্য। এসবের বেশিরভাগ প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ না থাকায় দোকানগুলোতে বেশিদিন রেখে বিক্রি হচ্ছে তা। আর এসব খেয়ে অনেক মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ যেন বেকারির বিষ খাচ্ছে মানুষ।
গতকাল দুর্গাপুর পৌর শহরের ঠাকুরবাড়িকান্দা এলাকার ভৈরব বেকারীতে গেলে এই বেহাল চিত্র উঠে এসেছে। ভেতরে নোংরা পরিবেশের দুর্গন্ধের ছড়াছড়ি। স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্ন মানের উপকরণ এবং বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে বেকারিতে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। বেকারি পণ্য উৎপাদনের কাজের লোকজন কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছে না। কারিগরদের গাঁয়ের ঘাম ঝরে পরছে খাদ্যতে,নেই কারো হাতে গø্যাভস, মেঝে সহ খাদ্য পণ্যের সাথে পড়ে রয়েছে বিড়ি সিগারেটের খোলস। বিভিন্ন খাদ্যে তৈরির সরঞ্জামে কীটপতঙ্গ থাকতে দেখা গেছে। তবুও এভাবেই পরিবেশে উৎপাদিত হচ্ছে বেকারি পণ্য। তাছাড়া কারখানায় পাওয়া গেছে মানব দেহের চরম ক্ষতিকর বিষাক্ত ক্যামিকেল,ক্ষতি কারক রং,পচা ডিমসহ নানান ক্ষতিকর পন্যের পাশাপাশি উৎপাদন ও মেয়াদ বিহীন পণ্য।
হান্নান মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন,‘বেকারির তৈরি এসব খাবার মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ দেখার বাও নাই। আর ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না। পরে বাড়িতে নেওয়ার পর মাঝেমধ্যে খাবার থেকে দুর্গন্ধ বের হয়।’
জানতে চাইলে ভৈরব বেকারি মালিক স্বপন মিয়া বলেন, আজকের পর থেকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে খাবার বানাবো। ‘আমাদের বিএসটিআই এর কাগজপত্র নাই। নিউজ করার দরকার নাই।’
উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মো. আলী আকবর জানান  বেকারি মালিকদের একাধিকবার বলা হয়েছে,কিছুদিন আগেও পরিদর্শন করে রিপোর্ট পাঠিয়েছি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে ভেজাল মুক্ত খাদ্যদ্রব্য প্রস্তত করতে বলেছি। কিন্তু তারা কিছুই মানছেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তানজিরুল ইসলাম রায়হান বলেন,ভেজাল কেমিক্যাল ও নি¤œমানের উপকরণ দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা খাবার খেলে যে কেউ আমাশয়,ডায়রিয়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রকিবুল হাসান জানান,এসিল্যান্ড এর মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন,মনিটরিং করতে গিয়ে দেখেছি খুবই বাজে অবস্থা। ভেজাল পণ্য তৈরি না করা নির্দেশনা দিয়ে এসেছি এরপরও তারা নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আল নোমান শান্ত




ইসরাইলি হামলায় আহত এক পণবন্দির মৃত্যুর খবর দিয়েছে হামাস

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, তাদের হাতে আটক একজন ইহুদিবাদী পণবন্দি ইসরাইলি বিমান হামলায় আহত হয়ে পরে মারা গেছে। হামাসের সামরিক বাহিনী ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড শনিবার এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে।

ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছেন, ৫১ বছর বয়সি পণবন্দি নাদাভ পপেলওয়েল প্রায় এক মাস আগে গাজায় ইসরাইলি বোমাবর্ষণে আহত হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, দখলদার সেনারা গাজার হাসপাতালগুলোতে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে সেগুলো অকেজো করে দেয়ার কারণে আহত নাদাভকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়নি; যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আল-আকসা তুফান অভিযান চালায় এবং প্রায় ২৫০ ইহুদিবাদীকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে।

এরপর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ইসরাইলের সঙ্গে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভিত্তিতে ১০৫ পণবন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস।  গত সপ্তাহে হামাস আরেকটি চুক্তিতে সম্মত হয় যার ভিত্তিতে গাজা যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে অবশিষ্ট পণবন্দিদের মুক্তি দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রস্তাবিত ওই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে।

নাদাভের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার পর হামাসের আটক পণবন্দিদের পরিবারবর্গের সদস্যরা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে অবিলম্বে হামাসের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  তারা বলেছেন, “আমাদের নষ্ট করার মতো একটি মুহূর্তও হাতে নেই! তাদের মুক্ত করে আনার জন্য অবিলম্বে আপনাকে চুক্তি করতে হবে।” এছাড়া, শনিবার রাতে তেল আবিব ও অধিকৃত আল-কুদস জেরুজালেম শহরে পণবন্দিদের শত শত আত্মীয় বিক্ষোভ করেছেন। #

পার্সটুডে




নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। শনিবার (১১ মে) ভোরে ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মাইক্রোবাস চালক সালাম (৪৩) ও যাত্রী পিয়াল (২৬)। আহতরা হলেন, আকিব(২৬), সাকিব (২৬) ও অমিত (২৭)। তারা প্রত্যেকেই মাইক্রোবাসের যাত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন মারা যান।

ইটাখোলা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইলিয়াছ আহমেদ বলেন, ঘাতক বাসটি পালিয়ে যাওয়ার সময় ভুলতা এলাকা থেকে আটক করেছে হাইওয়ে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।




ফিলিস্তিনের পক্ষে জাতিসংঘে ভোট দিল বাংলাদেশ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সমর্থন করেছে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টি অনুকূলভাবে পুনর্বিবেচনা করার সুপারিশ করেছে।

শুক্রবার (১০ মে) ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে ভোট হয়।

ফিলিস্তিনের সদস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবে ১৪৩টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশও ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ নয়টি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। ২৫টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। সাধারণ পরিষদের এ ভোট অবশ্য জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেয় না, তবে দেশটি যোগদানের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে স্বীকৃতি দেয়।
ভোটের আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত সাধারণ পরিষদের সদস্য দেশগুলোর উদ্দেশে বলেন, প্রস্তাবে হ্যাঁ বলা-ই হবে সঠিক কাজ। আমি আশ্বস্ত করছি, এ অন্ধকার সময়ে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও শান্তির পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আগামীতে আপনি ও আপনার দেশ গর্ব বোধ করবেন।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, প্রস্তাব পাস হওয়ায় এটি দেখা গেছে যে, বিশ্ব ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে, ইসরায়েলের দখলদারত্বের বিপক্ষে।

আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেন, আমি মনে করি, কৌশলগতভাবে বলতে গেলে এটি (ভোট) গাজায় কোনো পরিবর্তন ঘটাতে যাচ্ছে না। এটি অনেকটাই প্রতীকী। বিশ্ব পরিমণ্ডলে মর্যাদা অর্জনের জন্য এটি ফিলিস্তিনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান ভোটের নিন্দা জানান এবং বলেন, জাতিসংঘ এখন একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে স্বাগত জানাচ্ছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের আবেদনে প্রথমে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন পেতে হবে। এরপর সেই আবেদন আবার সাধারণ পরিষদে পাস হতে হবে।




যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি মেনে নেয়ার দাবিতে ইসরাইলে ব্যাপক বিক্ষোভ

ডিএনবি নিউজডেস্ক :

যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি মেনে নেয়ার দাবিতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব, জেরুজালেম এবং অন্য কয়েকটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে সেখানকার ক্ষুব্ধ জনগণ। হামাসের দেয়া শর্ত মেনে নিয়ে গাজা থেকে বন্দী আত্মীয়স্বজনকে ফিরিয়ে আনার দাবিও জানান তারা।

ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। তারা বলেছে, বন্দীদেরকে নেতানিয়াহু সরকার ত্যাগ করেছে এবং এজন্য তারা কাতার ও মিশরের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেয়নি। অথচ হামাস ওই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।

এদিকে, বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরুদ্ধ করার পর অন্তত দুই দফায় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ড্রাম বাজিয়ে, সিংগা ফুকিয়ে এবং মশাল জেলে পুলিশকে উপেক্ষা করে। এ সময় তাদের হাতে নেতানিয়াহুর রক্তমাখা মুখমণ্ডল সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন দেখা যায়। তারা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নেয়ার সময় হয়েছে, এখন যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতেই হবে। গাজায় হামাসের হাতে প্রায় ১৬০ জন বন্দী রয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রবেশপথও অবরুদ্ধ করে। তারা রাফাহ শহরে ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানায়। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো লোকজন আটকের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি তবে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

গতকাল হামাস জানিয়েছে, মিশর ও কাতার প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নিয়েছে কিন্তু ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অনেকটা একগুঁয়েমির বশে সে চুক্তি গ্রহণ করতে রাজি হননি।#

পার্সটুডে




রাতভর রাফায় বিমান হামলা, নিহত ১২

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

গাজায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে হামাস ও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করছেন মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা। ইতিমধ্যে চুক্তিতে সাই দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর মধ্যেই অবরুদ্ধ গাজার রাফা শহরে ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে তেল আবিব।

ফিলিস্তিনের তথ্য কেন্দ্রের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, পূর্ব রাফার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে রাফা। শহরের আল-জাইনা এলাকায় আল-হামসের বাড়িতে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে ১২ জন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি তথ্য কেন্দ্র বলছে— এর আগেও দুটি বোমা হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছিলেন।

এদিকে গতকাল সোমবার (৬ মে) রাফা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল। সেই নির্দেশের কয়েক ঘণ্টা পরই রাফায় বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মিশরে মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যে ইসরায়েলের এমন হামলায় তা ভেস্তে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, প্রায় মাস ধরে গাজার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচারে বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি মুসলিম মিশরের সীমান্তবর্তী রাফা শহরে আশ্রয় নেয়। শুরুর দিকে রাফায় ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সোমবার সেখানে বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এতে প্রাণ বাঁচাতে রাফা থেকে অন্য আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন সাধারণ মুসলিম ফিলিস্তিনি।

সূত্র: আল-জাজিরা




২ দিন পর ফ্লাইট শুরু, এখনো অনিশ্চয়তায় ৭০ হাজার হজযাত্রী!

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

২ দিন পর (বৃহস্পতিবার ৯ মে) শুরু হচ্ছে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট। আগামী বুধবার হজ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ ভিসা সমস্যায় এখনো সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি বেশিরভাগ হজ এজেন্সি।

সর্বশেষ তথ্য বলছে, ভিসা আবেদনের বর্ধিত সময়ও শেষ হচ্ছে কাল মঙ্গলবার। এখন পর্যন্ত আবেদন করতে পারেনি প্রায় ৮০ শতাংশ হজ এজেন্সি।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চলতি বছর হজ ভিসার জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৯ এপ্রিল। ধর্মমন্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিসা আবেদনের সময় ৭ মে পর্যন্ত করা হয়। ৮ দিন বাড়ানো হলেও এখনও ৭৫ শতাংশের বেশি হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করেনি এজেন্সিগুলো। বাকি একদিনের মধ্যে ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করা কতটুকু সম্ভব তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যায় এই সংকটে করণীয় ঠিক করতে হজ এজেন্সিদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেখানেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। ভিসা আবেদনের সময় আরও বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারকে চিঠি দিতে এজেন্সিগুলো মন্ত্রণালয়কে চাপ দেয়। শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৮৩ হাজার ২০৯ জন নারী-পুরুষ পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাবেন। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। বাকি ৪ হাজার ৩১৪ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়। সাত শতাধিক হজ এজেন্সি হজযাত্রীদের নিবন্ধন করেছে। ২৫৯টি লিড এজেন্সি হজযাত্রীদের মূল ব্যবস্থাপনায় থাকবে। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৫৫টি এজেন্সির আংশিক ভিসা আবেদন হয়েছে। বাকি ২০৪টি এজেন্সি ভিসা প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি। এই এজেন্সিগুলোর অধীনে মোট ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রী রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিনে বিশাল সংখ্যক হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করা সম্ভব নয়। ফলে ফের ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছে এজেন্সিগুলো। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় সেটাতে রাজি হয়নি।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, হজ ভিসার জন্য আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। ধর্মমন্ত্রীর অনুরোধে সেই সময় ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কর্মকর্তাদের ধারণা ছিল, বাড়তি ৮ দিনে বেশিরভাগ হজযাত্রীদের ভিসার আবেদন করা সম্ভব হবে। কিন্তু মোনাজ্জেমের (পবিত্র হজের সময় নিবন্ধিত হজ এজেন্সির মালিকের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী) ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় এবং সৌদিতে কাঙ্ক্ষিত ভাড়া বাড়ি ভাড়া করতে না পারায় সেই প্রক্রিয়া হোঁচট খায়। ফলে শেষ সময়ে এসেও এখনো অধিকাংশ হজযাত্রীর ভিসার জন্য আবেদন করা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও হজ এজেন্সিগুলো বাড়ি ভাড়া করতে গাফিলতি করেছে। কম রেটে বাড়ি ভাড়া করার জন্য প্রতিবার শেষ সময়ে এসে বাড়ি ভাড়া করেন তারা। এবারও তাই করেছেন। এবার এটা করতে গিয়ে নতুন আইনের ফাঁকে পড়ে যায় হজ এজেন্সিগুলো। বাড়ি ভাড়ার জন্য নির্ধারিত এজেন্সি প্রতিনিধি মোনাজ্জেমদের ভিসা আটকে দেয় সৌদি সরকার। ফলে হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়া করতে সৌদি আরবে যেতে পারেননি তারা। এ জায়গায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েও পায়নি বলে অভিযোগ করছে এজেন্সিগুলো।

এপ্রিলের শেষের দিকে বিকল্প পদ্ধতিতে মোনাজ্জেমদের ভিসা করার জন্য জিও (সরকারি পত্র) দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এজেন্সির প্রতিনিধিরা এখন সৌদি আরবে গিয়ে বাড়ি ভাড়া করতে হিমশিম খাচ্ছে। হেরেম শরিফের কাছে বাড়ি না পেয়ে অনেক দূরে বাড়ি খুঁজছেন তারা। সেখানেও ভাড়া বেড়ে গেছে। ফলে বাড়ি ভাড়া নিয়ে রীতিমতো সংকট তৈরি হয়েছে।

বেসরকারি হজ এজেন্সি এম জি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন বলেন, মোনাজ্জেমরা সঠিক সময়ে ভিসা না পাওয়ায় সৌদিতে বাড়ি ভাড়া করা যায়নি। ফলে হজযাত্রীদের এখন সদুত্তর দিতে পারছি না। ভিসা না পাওয়ায় বিমানের টিকিটও বুকিং দিতে পারছি না। আরও বেশ কিছু কাজ আটকে আছে ভিসা জটিলতায়।

তবে এ সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, সংকট সমাধানে আমরা কাজ করছি।

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, এখনো বেশিরভাগ এজেন্সির মোনাজ্জেমদের ভিসা নিশ্চিত করতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে সংকট উত্তরণ সম্ভব, আমরা চেষ্টা করছি।




ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা পক্ষে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ রাজ্যে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫টি রাজ্যের প্রায় ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান ও মার্কিন সমর্থন প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের জেরে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে ছোট পরিসরে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৫ মে থেকে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের শুরু হয়। এরপর থেকে এই বিক্ষোভ ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫টি রাজ্যের প্রায় ১৪০টি কলেজে ছড়িয়ে পড়েছে।

নিউইয়র্ক সিটি বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে শিক্ষার্থী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। গত কয়েক সপ্তাহের ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ সমাবেশের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা ব্যাহত হয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ‘‘আমাদের শিক্ষার্থীরা জোর দিয়ে বলেছেন যে, এসব ছোট্ট পরিসরে, স্কুল-ভিত্তিক স্নাতক সমাপনী উদযাপন অনুষ্ঠান তাদের ও তাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত অর্থবহ।’’

‘‘শিক্ষার্থীরা করতালি আর পরিবারের গর্বের মুহূর্তের মধ্য দিয়ে মঞ্চ পেরিয়ে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। একই সঙ্গে স্কুলে আমন্ত্রিত অতিথি বক্তাদের কাছ থেকে বক্তৃতা শোনার অপেক্ষায় রয়েছে তারা। ফলে আমরা আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী স্কুলের অনুষ্ঠানগুলোতে ও সেগুলো নিরাপদ, সম্মানজনক এবং সুচারুভাবে পরিচালনার ওপর মনোযোগ দেবো।’’

মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আপার ম্যানহাটনে অবস্থিত কলাম্বিয়ার একটি ক্যাম্পাস থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সেখান থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিল্টন হলের দখল নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি কন্যাশিশু হিন্দের নামে হলটির নামকরণ করেছে। ১৮ এপ্রিল কলেজ কর্তৃপক্ষ মর্নিংসাইড এলাকায় কলাম্বিয়ার আরেকটি ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠিয়ে আরও শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করায়।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিউইয়র্ক পুলিশকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় (ইউএসসি) অবস্থান কর্মসূচি পালন করা ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দিকে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশকে ডাকে।

সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেওয়ার পরদিন কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ ইউএসসির স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা দেয়। তবে ওই ক্যাম্পাস থেকে কোনও বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

রোববার এক বিবৃতিতে ইউএসসির প্রেসিডেন্ট ক্যারোল ফল্ট বলেছেন, শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে ক্যাম্পাসে পরীক্ষা এবং স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ব্যাহত হওয়ায় ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই দিন পুলিশের উপস্থিতিতে বোস্টনের ফেনওয়ে পার্ক এলাকায় নর্দার্নইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি




স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে ও এর পক্ষে থাকায় নিপীড়নের শিকার যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশজুড়ে সর্ববৃহৎ সংহতি সমাবেশ পালিত হয়েছে।

ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আহ্বানে সারা দিয়ে সোমবার (৬ মে) বেলা ১১টা থেকে দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সংহতি সমাবেশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিন থেকে এ সংহতি সমাবেশের শুরু হয়। এ সময় ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা; যা সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় , ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছাত্রলীগের সংহতি সমাবেশ হয়েছে।

এ সমাবেশের ছাত্রলীগের পাশাপাশি যোগ দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি জানান। সেইসঙ্গে ইসরায়েলের গণহত্যার নিন্দা জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের ওপর দেশটির পুলিশ দ্বারা চলমান দমন ও নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানান। অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এ ধরণের হামলা বন্ধের আহ্বান জানান তারা।

এর আগে রোববার (৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ ডাক দেয় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

গত অক্টোবরে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা ও বেসামরিক বহু মানুষকে জিম্মি করার কথা বলে গাজায় সামরিক অভিযান চলছে। এই অভিযানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে বিক্ষোভে নামেন।

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন শিক্ষকরাও। নজিরবিহীন এ আন্দোলন ঠেকাতে মারমুখী দেশটির পুলিশ প্রশাসনও। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, ধরপাকড়ের পাশাপাশি করা হচ্ছে বহিষ্কারও। এত কিছুর পরও দমানো যাচ্ছে না আন্দোলনকারীদের। ধীরে ধীরে আরও তীব্র হচ্ছে আন্দোলন। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ।

সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত বড় ছাত্র আন্দোলন দেখেনি যুক্তরাষ্ট্র। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বোস্টন, নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন; হার্ভার্ড থেকে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ওহাইও থেকে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি একের পর বিশ্ববিদ্যালয় শামিল হচ্ছে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে।

পাশাপাশি ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধকে সমর্থন করে, এমন কোম্পানির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিও তোলা হচ্ছে। এ ধরনের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এরপর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও সফল হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ নির্মম দমন ও পীড়নের চেষ্টা চালায়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার হরণ, বাকস্বাধীনতায় সীমাবদ্ধতা এবং ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ তুলে গেল ১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলো থেকে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ এবং মুখোশধারীদের হামলার কারণে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ওপর দমনপীড়ন এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়েও। দেশটির মন্ট্রিলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁবু টাঙিয়ে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা।

অস্ট্রেলিয়ায় শত শত মানুষ সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা তাঁবু স্থাপন করে অবস্থান নেন। তাদের হাতে বড় বড় শব্দে লেখা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ প্ল্যাকার্ড। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্তত সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থীরা গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এরমধ্যে ব্রিসবেনে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকিউ) বিক্ষোভের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থিদের ১০০ মিটার দূরত্বে ইসরায়েল সমর্থক বিক্ষোভকারীরাও অবস্থান নিয়েছেন। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রায় ৫০টি তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। সেখানে ১০০ জনের মতো বিক্ষোভকারী রাতেও অবস্থান করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়া ছাত্র বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে ভারতেও। দেশটির খ্যাতনামা নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও (জেএনইউ) কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা গাজায় হামলা ও হত্যাযজ্ঞ থামানোর দাবিতে জড়ো হন। ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটির। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে তার ওই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

এক বিবৃতিতে জেএনইউ স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বলেছে, ইসরায়েলের সন্ত্রাস ও গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন ও দেশের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিকে জেএনইউর আঙিনা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। বিক্ষোভ থামাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এরপর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।