প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি

ডিএনবি নিউজ আন্তঃ ডেস্ক:

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছেন। শনিবার তেহরানে আশুরা উপলক্ষে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার এই উপস্থিতি দেখা যায়, যা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে উঠে আসে। ৮৫ বছর বয়সী খামেনিকে ইমাম খোমেইনি মসজিদে প্রবেশের সময় উপস্থিত লোকজনকে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ভিডিওতে তাকে উপস্থিত জনতার প্রতি হাত নাড়াতে ও সম্মতিসূচক মাথা নাড়তে দেখা যায়।

১৩ জুন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে খামেনি জনসমক্ষে আসেননি। তার সকল ভাষণই এ পর্যন্ত রেকর্ড করা ছিল। শনিবারের ভিডিওটি তার প্রথম সরাসরি উপস্থিতির প্রমাণ। ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে জানান যে, আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন, তবে তাকে হত্যা করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। ২৬ জুন খামেনির পূর্বে রেকর্ডকৃত ভাষণে তিনি ট্রাম্পের আত্মসমর্পণের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, আমরা আমেরিকার মুখে চড় মেরেছি কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানোর মাধ্যমে। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, আপনি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ, নিজ দেশের মধ্যে খুব সম্মানিত। কিন্তু সত্যটা বলুন— আপনি তো একেবারে মার খেয়ে গেছেন।

ইরান স্বীকার করেছে যে, যুদ্ধের সময় তাদের ৯ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে। পাল্টা হামলায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলে কমপক্ষে ২৮ জনকে হত্যা করে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ২৪ জুন। তবে এরপর থেকেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। ইরান জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এর পাশাপাশি তারা জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ’কে এসব স্থাপনায় প্রবেশের অনুমতি বাতিল করেছে। যুদ্ধ চলাকালে আইএইএ’র পরিদর্শকরা তেহরানে অবস্থান করছিলেন।

কিন্তু ইসরাইলি হামলায় ইরানের উচ্চপর্যায়ের বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হওয়ার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান একটি আইন স্বাক্ষর করে আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেন। এরপর পরিদর্শকরা তেহরান ত্যাগ করেন। আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি শুক্রবার বলেছেন, ইরানের সঙ্গে সংলাপ আবার শুরু হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে পারমাণবিক তৎপরতা পর্যবেক্ষণ আবার চালু করা যায়।

যুদ্ধ শুরুর আগে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছিল। ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বৃহস্পতিবার বলেন, ইরান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশটি এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে না।




কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় ৩ মাদরাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

মাদরাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার তিন মাদরাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ছাত্রী এবং দুজন ছাত্র।

বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার ভাটির দিকে দুইজনের লাশ ভেসে ওঠে। এর আগে গতকাল এ ঘটনার দুই ঘণ্টার পর নবম শ্রেণির আরও এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছিল কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল।

নিহতরা হলো কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চর আলগী গ্রামের মাইনুদ্দিনের মেয়ে শাপলা (১৫)। একই গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৭) এবং মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ (৬)। তারা সবাই ময়মনসিংহের পাগলা থানা এলাকার বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বিল্লাল হোসেন জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রতিদিনের মত ৯ জন শিক্ষার্থী একটি ছোট নৌকায় করে পাকুন্দিয়ার চর আলগী থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদরাসায় যাচ্ছিল। ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার দত্তের বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে নৌকাটি ডুবে যায়। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তিনজন নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল বেলা ১১টার দিকে শাপলা নামে একজনের রাশ উদ্ধার করে। আজ বুধবার সকাল ৬টায় ঘটনাস্থল থেকে ৩ কিলোমিটার ভাটির দিকে বামনখালী গ্রামের মহর খাঁ ঘাট এলাকায় দুইজনের লাশ ভেসে ওঠে।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। ঘটনার দিন শাপলা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বাকি দুজনের লাশ উদ্ধার করা হলো।




ইসলামে দৃষ্টিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সৌন্দর্য ও সাজসজ্জার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। এই ধর্ম তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয় যে, তারা যেন সর্বদা নিজেদের জীবন থেকে কদর্যতা ও কুৎসিততার চিহ্নগুলো দূর করে এবং অন্যদের সাথে দেখা করার সময় সুসজ্জিত ও সুন্দরভাবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করে।

এই নিবন্ধে আমরা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব।

সাজসজ্জার সংজ্ঞা

‘সাজসজ্জা’ অর্থ সুসজ্জিত হওয়া। আভিধানিকভাবে এর অর্থ ‘সাজানো বা অলংকৃত করা’। তবে এর আরও কিছু অর্থ রয়েছে, যেমন সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি হওয়া, সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া এবং প্রস্তুত থাকা।

কুরআনের দৃষ্টিতে সাজসজ্জা

পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে সৌন্দর্য উপলব্ধির সক্ষমতা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের আত্মায় প্রদত্ত একটি স্বভাবজাত গুণ। সৃষ্টিজগতে সুন্দর বস্তুর উপস্থিতি এই স্বভাবজাত চাহিদারই প্রতিক্রিয়া এবং এটি মহান স্রষ্টার অমূল্য নিদর্শন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন: “নিশ্চয়ই আমরা নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সৌন্দর্য দ্বারা সজ্জিত করেছি।” (সূরা সাফফাত: ৬)

এই আয়াত অনুসারে, আল্লাহ নক্ষত্রগুলোকে আকাশের সৌন্দর্য হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং এটিকে তাঁর নিয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইমামদের দৃষ্টিকোণ থেকে সাজসজ্জার গুরুত্ব

আমাদের পবিত্র ইমামরা সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং নিজেরাই এই নীতি মেনে চলেছেন। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেন: “আল্লাহ পবিত্র, পবিত্রতাকে ভালোবাসেন; পরিচ্ছন্ন, পরিচ্ছন্নতাকে ভালোবাসেন।”

হজরত আলী (আ.) যিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও সরল জীবনযাপন করতেন, তবুও সাজসজ্জা ও পরিচ্ছন্নতায় অবহেলা করতেন না। তিনি বলেন:
“তোমাদের প্রত্যেকে যেন তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য সাজে, ঠিক যেমন সে অপরিচিত ব্যক্তির জন্য সাজে যে তাকে সর্বোত্তম অবস্থায় দেখতে চায়।”

সাজসজ্জার ধরন

সাজসজ্জা দুই ধরনের হয়:

১. আত্মিক সাজসজ্জা ২. বাহ্যিক সাজসজ্জা

আত্মিক সাজসজ্জাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:

১. চিন্তাভাবনার সাজসজ্জা– এর মধ্যে জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও শিষ্টাচার অন্তর্ভুক্ত।

২. বাক্যের সাজসজ্জা

৩. আচরণের সাজসজ্জা

বাহ্যিক সাজসজ্জা

বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও সাজসজ্জা ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং এটি মানুষের প্রাকৃতিক চাহিদা ও প্রকৃতির সাথে যুক্ত।

মহানবী (সা.) বলেন: ‘পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ’।




মানিকগঞ্জের ব্যবসায়ী আলী আজম মানিককে মারধর : আসামি নাসিম গ্রেপ্তার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় মানিক কম্পিউটার দোকানের মালিক আলী আজম মানিককে দাড়ি ধরে টানা-হেঁচড়া ও মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি নাসিম ভূঁইয়াকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে জেলার গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ।

আজ ( ২৭ জুন শুক্রবার ) সকাল ৭টার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানার নিশ্চিন্তপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ মাহবুব তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাসিম ভূঁইয়া ঘিওর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকার মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে বাচ্চু ভূঁইয়ার ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ঘিওর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভুক্তভোগী মানিকের কম্পিউটার দোকানে ডুকে আসামি নাসিম তার দাড়ি ধরে টানা হেচড়া ও মারধর করে। এরপর থেকে অভিযুক্ত নাসিম পলাতক ছিলেন।

মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ মাহবুব বলেন, ঘিওরের দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়ার ও মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সেই মামলার একমাত্র আসামি নাসিম ভূঁইয়াকে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।




অধিক লাভের আশায় সমিতিতে টাকা জমা দিয়ে ফেরত না পেয়ে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে

এইচ.এম সাইদুল ইসলাম :

বেশি মুনাফার আশায়, জীবনের সঞ্চয়কৃত সব টাকা তুলে দিয়েছিলেন সমিতিতে। কেউবা গার্মেন্টসে কাজ করে ঘাম ঝরানো আয়, কেউবা ব্যবসার আবার কারো পেনশনের টাকা তুলে জমা দিয়েছেন সমিতিতে। কিন্তু মুনাফা তো দুরের কথা আসল টাকার জন্যই হন্যে হয়ে ঘুরছেন অনেকেই। টাকার শোকে কেউবা প্রাণ হারিয়েছেন আবার কেউবা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। আবার কেউ বা আশ্রয় নিয়েছেন আদালতের।

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার ৭ং গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাগিরপাড়া এলাকায় এক সময়ের আলোচিত ‘‘প্যাসিফিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’’ কে ঘিরেই ঘটেছে এই চাঞ্চল্যকর প্রতারণার কাহিনী। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সমিতি নানা কৌশলে মানুষের আস্থা অর্জন করে। প্রতি লাখ টাকায় মাসে চার হাজার টাকা লাভ দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে গ্রাম-গঞ্জের বহু মানুষের সঞ্চিত অর্থ সমিতির কথা বলে জমা নিয়েছেন তারা। টাকা জমা নেয়ার পর তিন চার মাস লাভ দিলেও পরবর্তিতে নানা অজুহাতে বন্ধ করে দেন গ্রাহকদের মুনাফার অর্থ।

এমনই এক গার্মেন্টস কর্মী কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ১৫ বছর গার্মেন্টসে কাজ করে উপার্জিত প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা এই সমিতিতে জমা রেখেছি। প্রতি লাখ টাকায় মাসে ৪ হাজার টাকা দিবে বলে চুক্তি হয়। পরবর্তিতে দু’মাস লাভের টাকা পেলেও এরপর বন্ধ করে দেয় টাকা দেয়া। এখন আমি গুরুতর অসুস্থ্য, টাকা উদ্ধার করতে প্রায় চার বছর ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন সুরাহা পাচ্ছিনা।

স্থানীয় গাঁওকান্দিয়া বাজারের এক ব্যবসায়ী তাইজুল ইসলামও পড়েছেন একই ফাঁদে। তিনি জমা দিয়েছিলেন ২০ লাখ টাকা। এখন টাকা ফেরত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন । ঋণ করে সমিতিতে টাকা জমা দিয়েছিলাম। এখন সেই ঋণ মেটাতে ধানের জমি বিক্রি করে এখন দিশেহারা। টাকা উদ্ধারে আদালতে মামলা করে মহান আল্লাহ’র উপর ভরসা করে বসে আছেন তিনি।

এই প্রতারণা কেবল আর্থিক ক্ষতিই আনেনি, কেড়ে নিয়েছে মানুষের জীবনও। গাঁওকান্দিয়া গ্রামের অধিবেষ সরকার নামে এক ব্যক্তি এই সমিতিতে জমা রেখেছিলেন ১৯ লাখ টাকা। প্রতারণার শিকারে মানসিক কষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার অভাবে আগে মারা যান তার স্ত্রী। পরে চলতি মাসের ৬ তারিখে মারা যান তিনিও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্যাসিফিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতিটি জাগিরপাড়ায় একটি ঘরে ২০১৯ সালে চালু করে। কিন্তু এখন সেখানে সেই অফিস নেই, নেই কোনো কার্যক্রম। আছে কেবল প্রতারণার শিকার মানুষের হাহাকার। এই সমিতি পরিচালনায় ছিলেন ওই এলাকার আব্দুল জলিল (সভাপতি), আব্দুল জলিল আকাশ (সহ-সভাপতি), আব্দুর রশিদ (সাধারণ সম্পাদক), আবুল কাশেম (যুগ্ম সম্পাদক), ইদ্রিস আলী (কোষাধ্যক্ষ), মাহফুজুল ইসলাম (বোর্ড সদস্য)।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও খোঁজ পাওয়া যায়নি ওই সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিলের সাথে। তার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনেও একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা বিজন কান্তি ধর বলেন, সমিতিটি আমাদের কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে ঠিকই, তবে পরবর্তীতে আমাদের সাথে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখবো।”

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, ঘটনাটি জানা ছিলো না আজকেই শুনলাম। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

লোভে পড়ে মানুষ জীবনের সঞ্চয় তুলে দিয়েছিল একটি ‘‘প্যাসিফিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ এ। আজ সেই লোভই তাদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। এখন প্রয়োজন দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও আইনি সহায়তা । যাতে প্রতারিত মানুষরা অন্তত কিছুটা স্বস্তি ফিরে পান, আর ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন ফাঁদে পা না দেন।




ইরানি হামলার পর ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৩৯ হাজার ইসরাইলির আবেদন

ঘরবাড়ি ক্ষতির আবেদন ৩০,৮০৯টি,  যানবাহন ক্ষতির সংখ্যা ৩৭১৩

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩ চলাকালে ইরানের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় পর্যুদস্ত ইসরাইলিরা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রায় ৩৯ হাজার আবেদন জমা দিয়েছেন।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ইরানি হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠন করেছে ইসরাইলের কর কর্তৃপক্ষ। ১৩ জুন ইরান-ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে এ তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মোট ৩৮ হাজার ৭০০টি আবেদন জমা পড়েছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ঘরবাড়ি-ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৩০ হাজার ৮০৯টি। এ ছাড়া, ৩ হাজার ৭১৩টি আবেদন জমা পড়েছে যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে। যন্ত্রপাতি আর অন্যান্য জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৪ হাজার ৮৫টি।

ইসরাইলি ওয়েবসাইট বেহাদ্রেই হারেদিমের তথ্যমতে, শুধু তেল আবিবেই ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২৪ হাজার ৯৩২টির বেশি আবেদন জমা পড়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের আশকেলন শহরে আবেদন জমা পড়েছে ১০ হাজার ৭৯৩টি।

ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ইসরাইলিদের কী পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, সেটা এখনো জানানো হয়নি।

# পার্সটুডে




দুর্গাপুর সীমান্তে ভারতীয় ৭০ বোতল মদ জব্দ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুরে ৭০ বোতল অফিসার্স চয়েজ ব্র্যান্ডের ভারতীয় মদ জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মালিকবিহীন জব্দকৃত এসব মদক নেত্রকোনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করা হবে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানান নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ এস এম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ বিজয়পুর বিওপি’র (বর্ডার অবজারবেশন পোষ্ট) চার সদস্যের একটি বিশেষ টহল দল মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন।

এ অভিযানে ওই বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১১৫০/২-এস হতে আনুমানিক তিনশত গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিজয়পুর এলাকায় মালিকবিহীন অবস্থায় ৭০ বোতল অফিসার্স চয়েজ ব্র্যান্ডের মদ জব্দ করতে সক্ষম হয় বিজিবি সদস্যরা।




সাইপ্রাসে জমি কিনছে ইসরাইলিরা; দ্বীপটি কি ফিলিস্তিনের ভাগ্যবরণ করতে যাচ্ছে?

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

 ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে দখলদার ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইহুদীবাদীরা সাইপ্রাস দ্বীপে জমি কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

দখলদার ইসরাইলের নাগরিকত্ব ধরে রাখার পাশাপাশি সেখানে তারা বাসস্থান গড়ে তুলতে চাইছে।

পার্সটুডে জানাচ্ছে- সাইপ্রাসের প্রভাবশালী পত্রিকা পলিটিক এসব তথ্য জানিয়েছে।

পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে ১৫ হাজারেরও বেশি ইহুদিবাদী ইসরাইলি সাইপ্রাসে জমি কিনেছেন। তারা সেখানে তাদের জন্য একটি স্বাধীন শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন। ইসরাইলিরা এখন সাইপ্রাসকে তাদের জীবনযাপনের জন্য অনেক নিরাপদ স্থান হিসেবে মনে করছে।

ইরানের সাথে যুদ্ধ চলাকালে দখলদারর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কিছু সময় সাইপ্রাসে কাটিয়েছেন সেখানে তিনি অবকাশ যাপন করেছেন।

এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে, সাইপ্রাস কি ফিলিস্তিনের ভাগ্যবরণ করতে যাচ্ছে?#

-পার্সটুডে




গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতার অভিযোগে ইরানে ৭০০ ইসরায়েলি ভাড়াটে সৈনিক গ্রেপ্তার

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতার অভিযোগে ইরানে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। গত ১২ দিনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী। বুধবার (২৪ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ বলছে, আটককৃতদের ‘ইসরায়েলি ভাড়াটে সৈনিক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক ইরানে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল এবং দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।

নূরনিউজ-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, শুধু গত ১২ দিনেই প্রায় ১০ হাজার ড্রোন জব্দ করেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। এসব ড্রোন বিস্ফোরক বহনে সক্ষম বলে জানানো হয়েছে।

তবে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি ইরানি কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে এবং দেশবিরোধী সকল নাশকতা চক্রান্তকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পারমাণবিক স্থাপনায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে কঠোরতা
এদিকে ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সঙ্গে সহযোগিতা সীমিত করতে একটি বিল পাস করেছে। নতুন আইন অনুযায়ী, এখন থেকে আইএইএ’র পরিদর্শকরা কেবলমাত্র ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রবেশাধিকার পাবেন।

নূরনিউজ জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে বা প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না হলে পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হবে না। ফলে আগের মতো স্বচ্ছভাবে পরমাণু কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করা আর সম্ভব হবে না।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা চরমে পৌঁছানোর প্রেক্ষাপটে ইরানের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন কূটনৈতিক চাপের জন্ম দিতে পারে।




ইসরায়েলের বড় অপরাধ, শাস্তি অবধারিত: আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ফের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, জায়নবাদী শত্রু বড় ভুল করেছে, বড় অপরাধ করেছে—এর জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। শাস্তি অবধারিত, এবং সেই শাস্তি তারা এখন ভোগ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এই প্রথমবারের মতো সরাসরি এমন কঠোর অবস্থান তুলে ধরলেন খামেনি। তার বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার)

খামেনি বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ করেছে। এ অপরাধের জবাব দিতেই হবে। তারা শাস্তি পাচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া চলবে।’

প্রসঙ্গত, ১৩ জুন ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের ভেতরে সরাসরি হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে ইরানও হামলা শুরু করে। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তার কারণে খামেনি তার বাসভবন ছেড়ে বাংকারে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি তিনি সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিকল্প প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, যদি তার ওপর হামলার ঝুঁকি বাস্তবে রূপ নেয়।

ইরানে রাজনৈতিক, বিচারিক, প্রশাসনিক এবং সামরিক ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ খামেনির হাতেই। তাই তার কোনো অনুপস্থিতি বা ক্ষয়ক্ষতি ইরানের জন্য বড় সংকট ডেকে আনতে পারে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্রান্স, পাকিস্তান, গ্রিস এবং ফিলিপিন্সসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এই হামলার নিন্দা জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, এই ঘটনা শুধু ইরান-ইসরায়েল নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন সংকটের মুখে ফেলতে পারে।

সূত্র: আলজাজিরা