২৬ নভেম্বর, বুধবার চরমোনাই শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক মাহফিল

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতার দেশব্যাপী বিস্তৃত, সংগঠিত ও জনপ্রিয় ধারা চরমোনাই তরিকার তিন দিনব্যাপী বার্ষিক মাহফিল আগামীকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর (বুধবার) শুরু হচ্ছে। গত শতকের ২০ এর দশকে শুরু হওয়া এই ঐতিহ্যবাহী মাহফিল প্রতি বছর অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

আগামীকাল জোহরের নামাজের পরে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির প্রধান আমীরুল মুজাহিদিন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই-র উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। তিন দিনব্যাপী মাহফিলে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় মোট সাতটি প্রধান বয়ান অনুষ্ঠিত হয়।

উদ্বোধনী ও সমাপনী বয়ান পেশ করেন পীর সাহেব চরমোনাই আর মাঝের তিনটি বয়ান পেশ করেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই। এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন সময়ে বয়ান করেন।

চরমোনাই জামেয়া রশিদিয়া আহসানাবাদ কর্তৃক আয়োজিত মাহফিলের ব্যবস্থাপনায় থাকে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি। মাহফিলের ২য় দিন ২৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে দশটা থেকে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ৩য় দিন একই সময়ে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র জমায়েত অনুষ্ঠিত হবে।

১৯২৪ সালে মাহফিলের সূচনা হয়। কালক্রমে এই মাহফিল ও এই আধ্যাত্মিকধারা দেশের প্রধানতম আধ্যাত্মিকধারায় পরিণত হয়। এই ধারারই প্রধান মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম রাহিমাহুল্লাহ ১৯৮৭ সালে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন যা এখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের আধ্যাত্মিকতা ও রাজনীতিতে এই মাহফিল ও ধারার শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।

মাহফিলে আগত মুসল্লিদের সেবা ও শৃঙ্খলার জন্য সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। চিকিৎসার জন্য একশত শয্যার হাসপাতাল রয়েছে যেখানে দেশের শীর্ষ চিকিৎসকগণ সার্বক্ষণিক জরুরী সেবা প্রদান করবেন। দুইটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্সসহ পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে রোগীদের জরুরি স্থানান্তরের জন্য। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-আনসার বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সদাপ্রস্তত অবস্থায় থাকবে।




হিজবুল্লাহ’র প্রভাবশালী কমান্ডার তাবাতাবায়ি হত্যার প্রতিশোধ কীভাবে নেবে হিজবুল্লাহ?

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ’র প্রভাবশালী কমান্ডার হাইথাম আলী তাবাতাবায়ি হত্যাকাণ্ড লেবাননের সঙ্গে দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধের সমীকরণকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য জবাবের আশঙ্কায় তেলআবিব উচ্চমাত্রার সতর্কতা জারি করেছে।

ইসরায়েলি সেনা রেডিওর সামরিক প্রতিবেদক দোরোন কাদোশের মতে, হিজবুল্লাহ চারটি সম্ভাব্য উপায়ে এই হত্যাকাণ্ডের জবাব দিতে পারে।

এক- ইসরায়েলের গভীরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।

দুই- ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে অভিযান পরিচালনা বা ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা।

তিন- ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় উদ্বুদ্ধ করা।

চার- সরাসরি প্রতিক্রিয়া না দিয়ে সামরিক শক্তি পুনর্গঠনে মনোযোগ দেওয়া।

দোরোন কাদোশ আরও বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহকে আরও দুর্বল করার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল লেবাননে তাদের হামলা অব্যাহত রাখবে যাতে হিজবুল্লাহ পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করতে না পারে।

ইসরায়েলের সমস্যা: হামলা সত্ত্বেও হিজবুল্লাহ শক্তিশালী হচ্ছে

একের পর এক ইসরায়েলি হামলা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হিজবুল্লাহ তার সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠন করতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলের ইয়েদিয়োত আহরণোত পত্রিকার সামরিক বিশ্লেষক ইউআভ জেইতুন লিখেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত বছর লেবাননে বিমান হামলার পাশাপাশি ২১টি গ্রামজুড়ে প্রায় একহাজার ২০০টি স্থল অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এরপরও তারা হিজবুল্লাহকে দুর্বল করতে ব্যর্থ হয়েছে। এসব অভিযানের মধ্যে ছিল প্রকাশ্য ও গোপন টহল, ঘাঁটিতে হামলা, অবকাঠামো ধ্বংস এবং প্রতিদিন লেবাননের তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার গভীরে তিন থেকে পাঁচটি করে আক্রমণ।

ইউআভ জেইতুন সতর্ক করে বলেন, হিজবুল্লাহ নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হাইফা ও তেলআবিবে হামলা করতে পারে এবং তারা গ্যালিলি এলাকায় ও ইসরায়েলের অন্যান্য কৌশলগত স্থাপনায় বিস্ফোরক ড্রোন পাঠাতে পারে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে হারানোর পরেও হিজবুল্লাহর হাতে এখনো পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে।

হিজবুল্লাহর তরুণ নেতৃত্ব প্রতিশোধের পক্ষে

হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম এশিয়া-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আমাৎজিয়া বারাম মাআরিভ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মূল প্রশ্নটা হলো—হিজবুল্লাহ কীভাবে জবাব দেবে? দলটির মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম কি সংযম বজায় রাখার নীতি অব্যাহত রাখতে পারবেন, যখন তরুণ কমান্ডাররা তীব্র প্রতিশোধের দাবি জানাচ্ছেন?

বারামের মতে, হিজবুল্লাহর সামনে তিনটি বিকল্প রয়েছে:

এক- কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করা

দুই- দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা করা

তিন-ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী ইহুদি বসতিগুলোতে আক্রমণ চালানো।#

সূত্র: পার্সটুডে