ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসন ভাগাভাগির আলোচনায় আট দল

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দল একসঙ্গে কয়েকটি দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এবার দলগুলো আগামী নির্বাচনে একবাক্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।

আটটি দল একসঙ্গে হলেও তারা এটাকে কোনো জোট বলতে নারাজ। তারা এটাকে নির্বাচনি সমঝোতা বা মোর্চা বলতে চাচ্ছে। দলগুলো হলো— বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।

দলগুলো সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ দফা দাবির আন্দোলন ও প্রার্থী বাছাইয়ের কার্যক্রম একসঙ্গে চলায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

ঐক্যভুক্ত দলগুলোর নেতাদের মতে, ডিসেম্বরের শুরুতেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এখন চলছে আসন ভাগাভাগির আলোচনা। কোন দল কত আসনে প্রার্থী দেবে—তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে চলছে দরকষাকষি। বিভিন্ন দল সম্ভাব্য আসন চাহিদা তুলে ধরলেও সবকিছু নির্ভর করছে আলোচনার ফলাফলের ওপর।

ইসলামি দলগুলোর একাধিক সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, আসন ভাগাভাগি হবে আলোচনার ভিত্তিতে। স্থানীয় অবস্থান ও শক্তিমত্তা বিবেচনায় করা হবে প্রার্থী নির্ধারণ। যেখানে যে দলের অবস্থান শক্তিশালী, তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ঐক্য টিকিয়ে রাখতে সব দলের ‘ত্যাগের মানসিকতা’ প্রয়োজন বলেও দলগুলো মনে করে।

আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতেই দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্রদের অনুপস্থিতিতে একদিকে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা এবং অপর দিকে জামায়াত ও তাদের সঙ্গীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলে দৃশ্যপট অন্যদিকে মোড় নিতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করেন।




লেবাননে ইসরায়েলের নতুন আগ্রাসন: বৈরুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৫

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি আবাসিক এলাকায় নতুন করে আগ্রাসন চালিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এতে প্রায় দুই ডজন সাধারণ নাগরিক হতাহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আজ (রোববার) বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহর আল-হারা এলাকায় একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে তাদের বাহিনী ‘নির্ভুল হামলা’ চালায়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর বলেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে’ এই হামলা পরিচালনা করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে নেতানিয়াহু এই অভিযানের অনুমোদন দেন।

লেবানন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই আগ্রাসনে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ২১ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

দুইজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা ইসরায়েলের এই হামলা নিয়ে মন্তব্য করেছেন।

প্রথম কর্মকর্তা জানান, হামলার আগে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করেনি; হামলা চালানোর পরপরই বিষয়টি জানানো হয়।

দ্বিতীয় কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন কয়েকদিন ধরে জানত যে ইসরায়েল লেবাননে হামলা বাড়াতে পারে, তবে হামলার সময়, স্থান বা লক্ষ্য সম্পর্কে পূর্বেই কোনো তথ্য ছিল না।

তবে ইয়েদিয়ত আহরোনোত পত্রিকা এক ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে পরিচালিত আক্রমণটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করেই করা হয়েছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র পূর্বে বৈরুতে যেকোনো সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করেছিল।

ইসরায়েলি হামলার স্থল থেকে বক্তব্য দিতে গিয়ে লেবাননের এমপি আলি আম্মার এ ঘটনাকে “ওয়াশিংটন-সমর্থিত যুদ্ধবিরতির পর থেকে লেবাননজুড়ে চলমান আগ্রাসনের অংশ” বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “লেবাননের ওপর যেকোনো হামলাই ‘লাল রেখা’ লঙ্ঘন। এই আগ্রাসন লেবাননের মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব এবং নাগরিকদের নিরাপত্তাকে লক্ষ্যবস্তু করার ধারাবাহিকতার অংশ।”

আম্মার আরও বলেন, প্রতিরোধশক্তি “চরম প্রজ্ঞা ও ধৈর্যের সাথে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে এবং যথাসময়ে শত্রুর মোকাবিলা করবে”।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “লেবাননের ভেতরের কিছু কণ্ঠ নিজেদেরকে শত্রুর আগ্রাসনকে সমর্থনকারী হাতিয়ারে পরিণত করেছে, যা ইসরায়েলকে আরও বেপরোয়া করছে।”

বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে এই হামলাটি ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার নভেম্বর ২০২৪-এর যুদ্ধবিরতি চুক্তির আরেকটি স্পষ্ট লঙ্ঘন, যা তীব্র সংঘাত কমানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ লেবাননের সাইদনের কাছে আইন আল-হিলওয়ে শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে লেবানন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে যে, হামলাটি ‘হামাসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। তবে, হামাস এ অভিযোগকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যা ও গণহত্যা ঢাকার চেষ্টা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, লেবাননের কোনো ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে তাদের কোনো সামরিক স্থাপনা নেই; লক্ষ্যবস্তুটি ছিল কেবল একটি উন্মুক্ত ক্রীড়াঙ্গন।

লেবাননের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।#

সূত্র: পার্সটুডে