দুই বছর যুদ্ধ করেও আমরা জিততে পারিনি গাজা এখন হামাসের হাতে: ইসরায়েলি সাংসদ

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

ভঙ্গুর যুদ্ধ-বিরতি পরিস্থিতি! ইসরায়েলের নতুন ব্যাপক হামলা কি আসন্ন?

যদিও ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এখনও গাজা যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে চলছে এবং ইহুদিবাদী বন্দীদের ফিরিয়ে দিয়েছে তা সত্ত্বেও, ইসরায়েলি যুদ্ধমন্ত্রী বলেছেন: “যদি হামাস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে আবারও যুদ্ধে ফিরে যাব।”

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইস্রায়েল কাট‌্জ‌্ ঘোষণা করেছেন: “যুদ্ধ পুনরায় শুরু হলে হামাসকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার জন্য আমি সেনাবাহিনীকে একটি বিস্তৃত সামরিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছি।”

কাটজ আরও দাবি করেছেন যে গাজা অস্ত্রমুক্ত না হওয়া এবং ইসরায়েলের জন্য কোনও হুমকি না হওয়া পর্যন্ত আমরা গাজার সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীর সাথে কাজ করব।

ইসরায়েলি যুদ্ধমন্ত্রী বলেন যে হামাস গাজা যুদ্ধবিরতির সমস্ত বিধান মেনে চলে এবং ইহুদি বন্দীদের ফিরিয়ে দিয়েছে, তবে হামাসকে অবশ্যই নিহত সকল বন্দীর মৃতদেহ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং তাদের অস্ত্র ধ্বংস করতে হবে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ইসরায়েলি বাহিনী আবার আক্রমণ শুরু করতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় সিএনএন-এর সাথে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন: “হামাসের সাথে যা ঘটছে, তা দ্রুত সমাধান করা হবে।”

গাজা যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে হামাসকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি ও আমেরিকান কর্মকর্তাদের বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর, অনেক বিশেষজ্ঞ এবং ইসরায়েলি বিশ্লেষক স্বীকার করেছেন যে ইসরায়েল প্রতিরোধ আন্দোলনকে ধ্বংস এবং গাজাকে নিরস্ত্র করার লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে, অনেক ইহুদিবাদী বিশ্লেষক, দুই বছরের গাজা যুদ্ধে লক্ষ্যগুলো অর্জনে ইসরায়েলের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে, গাজায় হামাস আন্দোলনের টিকে থাকা, এর অবিসংবাদিত শক্তি হওয়া এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ইহুদিবাদী বিশেষজ্ঞ ওরিট পার্লফ বলেন: “হামাসের কোন বিকল্প নেই এবং গাজার জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন করে।”

তিনি আরও বলেন: “এখন, হামাস তার শক্তির শীর্ষে রয়েছে, ইসরায়েল যে সমস্ত বিকল্প তৈরি করার চেষ্টা করছিল তা ধ্বংস করার জন্য ময়দানে প্রবেশ করেছে হামাস।”

এই ইহুদিবাদী বিশেষজ্ঞ আবারও জোর দিয়ে বলেছেন যে হামাসের কোন বিকল্প থাকবে না, তিনি বলেন: “হামাস উত্তর গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে, এবং এই উপত্যকার জনগণ হামাসের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে।”

সম্প্রতি, ইসরায়েলি পার্লামেন্টের (নেসেট) সদস্য অমিত হালাভিও বলেছেন: “হামাসের কাছে আমরা পরাজিত হয়েছি; এই আন্দোলন তার সর্বশক্তি দিয়ে গাজায় তার শক্তি প্রদর্শন করছে; আমরা দুই বছর ধরে নিজেদেরকে প্রতারিত করেছি, কিন্তু আমরা জিততে পারিনি, এবং এখন গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাতে।” #

সূত্র: পার্স টুডে




দুর্গাপুরে প্রধান শিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যুর বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বারমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন দাস (রাখাল) (৫৭) ময়মনসিংহের সিবিএমসি হাসপাতালে পাঁচদিন নিবিড় পর্যবেক্ষনে থেকে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ০৭ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করেন। স্যারকে ময়মনসিংহে নেয়ার সময় তার বাম হাতে ও গলায় বিভিন্ন কাটা চিহ্ন থাকায় এই মৃত্যু রহস্যজনক দাবী করে, এলাকাবাসী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে সীমান্তবর্তী বারোমারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মসুচী অনুষ্ঠিত হয়। চন্দন কুমার দাস পৌরশহরের ৪নং ওয়ার্ডের আমলাপাড়া এলাকার মৃত চন্দ্র শেখর দাসের বড় ছেলে।

ওই স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০ ঘটিকার সময় প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী শেলী রানী দাস স্কুলের এক শিক্ষক কে মুঠোফোনে বলেন, তাঁর স্বামী অসুস্থ্য দ্রুত তাঁর বাসায় চলে আসতে। পরবর্তিতে ওই শিক্ষক হেড স্যার অসুস্থ্য বলে তার অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাসায় যান, হেড স্যারের স্ত্রী তাদের স্যার কে দেখতে বারণ করেন এবং তাড়াাতাড়ি ডাক্তার কে খবর দিতে বলেন। পরে এলাকাবাসী এবং ওই সহকারী শিক্ষকগণ স্যারকে হাসপাতালে নিতে চাইলে তার স্ত্রী হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতেই ডাক্তার আনতে বলেন। পরবর্তিতে এ বিষয়টি কারো কারো সন্দেহ হলে, একপ্রকার জোর করেই কয়েকজন ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পান, স্যারের শরীর প্রায় ঠান্ডা হয়ে আসছে। ওনার হাতে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাঁটাচিহ্ন রয়েছে এবং রক্ত ঝড়ছে। পরে দ্রুত অটোরিক্সাযোগে তাকে দুর্গাপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে দ্রুত ময়মনসিংহে নেয়ার পরমর্শ দেন। পরবর্তিতে রোগীর স্বজনরা দুপুর ১২ঘটিকার দিকে এম্বুলেন্সের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহে নিয়ে কমিউনিটি বেসড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রায় ৫দিন নিবিড় পর্যবেক্ষনে থেকেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকগন।

একাধিক এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রচন্ড বাগ-বিতন্ডতা শুনতে পাই এবং কিছু জিনিষপত্র ভাংচুরেরও শব্দ পেয়েছি। তবে মাঝে মধ্যেই তার স্ত্রীর এমন আচরণ আমরা লক্ষ করি। যার কারনে আমরা ওইদিন রাতে ওই বাড়িতে কেউই যাইনি। পরদিন সকালে বিস্তারিত জানতে পারি।

প্রধান শিক্ষকের সহকর্মী মোজাম্মেল মাস্টার বলেন, চন্দন স্যারকে তার বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর দেখতে পাই তার গলায় এবং বাম হাতে কাটা চিহ্ন রয়েছে এবং কাটার ক্ষতস্থান দিয়ে তখনো রক্ত ঝরছিলো, সেইসাথে মুখ দিয়ে গন্ধযুক্ত লালা বেরোচ্ছো। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষককে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন সহ চেতনানাশক কোন কিছু খাওয়ানো হয়ে থাকতে পারে। আমাদের স্যারকে হয়তো অজ্ঞান করার পর, নির্যাতনও করা হয়েছে। স্যারের মৃত্যু রহস্যজনক, আমরা শিক্ষক সমাজ, এলাকাবসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের একটাই দাবী তদন্ত সাপেক্ষে এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি।

ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছিনা। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ সহ ন্যায় বিচারের দাবীতে বারোমারী এলাকায় আমরা মানবন্ধন শুরু করেছি। এই মৃত্যু রহস্যজনক। প্রশাসন অনতিবিলম্বে যদি দোষিদের গ্রেফতার না করে, তাহলে পুরো উপজেলায় হরতাল দিবো। দুর্গাপুরের প্রানপ্রিয় প্রধান শিক্ষকের নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অচিরেই নিতে হবে। 

উপজেলা বিএনপি‘র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন মুকুল বলেন, চন্দন দাস আমার প্রতিবেশি, তার ছোট ভাই টুকন চন্দ্র দাস গত ছয় মাস আগে আকষ্মিক মৃত্যুবরণ করেন। বিবাহিত জীবনে চন্দন দাসের কোন সন্তানাদি না থাকায়, একমাত্র ছোট ভাইয়ের মেয়ে টুম্পা দাস কে নিজের মেয়ের মতো লালন পালন করতেন। এটি দেখেই তার স্ত্রী শেলী দাস, ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রায়ই ওই শিক্ষকের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে সংসারে অশান্তি লাগিয়ে রাখতেন। আমরা এই মৃত্যুর বিচার চাই।

এ সময় অন্যদের মাঝে, ইউনিয়ন বিএনপি‘র সভাপতি ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দীন, স্কুলের শিক্ষক, মোজাম্মেল হক, সুপলার মৃ, সাঈদ হাসান, প্রবীণ আদিবাসী নেতা কম্প ম্রং সহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন। 

উল্লেখ্য : গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাখাল স্যার স্কুলে ক্লাশ নিয়েছেন। স্যারের এই হঠাৎ মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছিনা। প্রাণপ্রিয় প্রধান শিক্ষক রাখাল স্যারের মরদেহ এক নজর দেখার জন্য, পৌরশহরের প্রেসক্লাব মোড়ে গতকাল রাত থেকে আজকে বিকাল পর্যন্ত শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। এছাড়া রাখাল স্যারের মৃত্যুর তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবীতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে মানববন্ধন চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক সাইদ হাসান।



এবার পাসের হারে এগিয়ে মাদরাসা বোর্ড

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ৯টি সাধারণ ও মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সব বোর্ডের মধ্যে মাদরাসা বোর্ড পাসের হারে এগিয়ে। মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৫.৬১। যদিও এই হার গত বছরের তুলনায় কম।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ওয়েবসাইটে একযোগে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবার আলিমে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। যেখানে গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

ফলে এবার শিক্ষার্থীর পাসের হার কমেছে। এছাড়া এ বছর আলিমে মোট জিপিএ পেয়েছেন ৪ হাজার ২৬৮। যেখানে গত বছর ছিল ৯ হাজার ৬১৩ জন।

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৫৯.৪০ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ, যশোর বোর্ডে পাসের হার ৫০.২০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৫২.৫৭ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৬২.৫৭ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১.৮৬ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৫৭.৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ৫১.৫৪ শতাংশ। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬২.৬৭ শতাংশ।