এবার ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল ইউরোপের আরেক দেশ- সান মারিনো

এবার স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল ইউরোপের দেশ সান মারিনো। শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেন সান মারিনোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুকা বেক্কারি। খবর আরব নিউজের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “গত ১৫ মে আমাদের সংসদ সর্বসম্মত সমর্থনসহ সরকারকে এ বছরের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আজ এই পরিষদের সামনে আমরা সেই নির্দেশ পূরণের ঘোষণা দিচ্ছি। সান মারিনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।’

বেক্কারি জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী নিরাপদ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার ভেতরে ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

তিনি আরো বলেন, “একটি রাষ্ট্র পাওয়া ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার। এটি হামাসের জন্য কোনো পুরস্কার নয় এবং কখনো হতে পারে না।”

তিনি গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এটিকে ‘অসহনীয়’ এবং ‘আমাদের সময়ের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ও দীর্ঘস্থায়ী ট্র্যাজেডিগুলোর মধ্যে একটি’ হিসেবে অভিহিত করেন।

বেক্কারি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার নিন্দা জানান এবং সব জিম্মিকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো একবার তার দেশের দাবি পুনরুল্লেখ করেন, গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, পূর্ণ ও বাধাহীন মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান, যা যে কোনো ‘বাস্তবসম্মত শান্তির সম্ভাবনাকে’ নস্যাৎ করছে।

বেক্কারি আরো বলেন, “গাজায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, অনাহার ও বাস্তুচ্যুতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের সম্মিলিত শাস্তিকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। আমরা যদি ঐক্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে পদক্ষেপ না নিই, তাহলে মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে দুটি জাতির পাশাপাশি বসবাসের দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতিসংঘের বৈশ্বিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজিত ওই সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, আন্দোর্রা ও মোনাকো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে । এর আগে চলতি বছরের ২০ মার্চ মেক্সিকো সরকার জানায়, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।




পাকিস্তানের জ্বালানি পরিবহনকারী ট্যাঙ্কারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইসরায়েলের চালানো ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে একটি জ্বালানি পরিবহনকারী ট্যাঙ্কার, যাতে ২৪ জন পাকিস্তানি ছাড়াও মোট ২৭ জন ক্রো ছিলেন। ইয়েমেনের একটি বন্দরে অবস্থানকালে এ হামলা চালানো হয়। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

মন্ত্রী জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর ওই জাহাজটি ইয়েমেনের রাস ইসা বন্দরে নোঙর করেছিল, যা বর্তমানে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ট্যাঙ্কারে কর্মরত ক্রুদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি নাগরিক, দুজন শ্রীলঙ্কান ও একজন নেপালি ছিলেন। জাহাজটির ক্যাপ্টেনও পাকিস্তানের নাগরিক।

ড্রোন হামলার পরপরই ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন জাহাজের ক্রুরা। মোহসিন নকভি বলেন, ‘এরপর হুথি নৌযান ট্যাঙ্কার থামায় এবং ক্রুদের জাহাজে বন্দি করে রাখে।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে জাহাজ ও এর আরোহীরা হুতিদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে ইয়েমেনের জলসীমার বাইরে চলে গেছে।

ঘটনার পর যেসব পক্ষ সহযোগিতা করেছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নকভি। তিনি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের নিরাপদ মুক্তি নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দিন-রাত অতুলনীয় পরিশ্রম করেছে।’ একইসঙ্গে তিনি ওমান ও সৌদি আরবে অবস্থানরত পাকিস্তানি কূটনৈতিকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এর আগে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, জাহাজের ২৪ জন পাকিস্তানি ক্রু নিরাপদে আছেন এবং তারা ইয়েমেনি জলসীমা ত্যাগ করছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই ইয়েমেনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইসলামাবাদ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, জাহাজে অবস্থানরত প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে ট্যাঙ্কারটি যাত্রা শুরু করেছে এবং সব ক্রু নিরাপদে রয়েছে।