নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে এটা সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত নয়-আইন উপদেষ্টা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সম্প্রতি যে সুপারিশ পেশ করেছে এর বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামি দলগুলো আন্দোলন করে আসছে। এই অবস্থায় নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা জানান, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে এটা সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত নয়। বড় ধরনের কোনো সংস্কার করতে হলে জাতীয়ভাবে ঐকমত্য হতে হবে।

নারী কমিশনের সুপারিশ নিয়ে কারও কোনো ভিন্নমত থাকলে সেটা সহনশীলতা এবং শালীনতার মাধ্যমে পেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্ব কমিশনের সদস্যরা গত ১৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান পারিবারিক আইনের সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব আইনের পরিবর্তে অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীর জন্য বিয়ে, তালাক ও সন্তানের ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করার সুপারিশের পাশাপাশি সব সম্প্রদায়ের জন্য আইনটিকে ঐচ্ছিক রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে সম্পদে নারীর ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। এর অংশ হিসেবে সিডও সনদের ওপর অবশিষ্ট দুটি সংরক্ষণ প্রত্যাহার এবং আইএলও সনদ সি১৮৯ ও সি১৯০ অনুস্বাক্ষর ও পূর্ণ বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।

তবে কমিশনের এসব সুপারিশ নিয়ে তুমুল আপত্তি দেখা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামি দলগুলো এর কড়া সমালোচনা করেছে। এই সুপারিশের বিভিন্ন ধারাকে সরাসরি কোরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী আখ্যায়িত করে পুরো কমিশন বাতিরের দাবি জানিয়েছে। হেফাজতে ইসলাম গত ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে চার দাবিতে মহাসমাবেশ করে এর প্রধানতম দাবি ছিল এই কমিশন বাতিল করা।

তবে নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হলেও এ ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীল কেউ এত দিন মুখে খোলেননি। এবারই প্রথম আইন উপদেষ্টা এই কমিশন নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করলেন।




চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া: বিমানবন্দরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যে উন্নত চিকিৎসা শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন।

আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী কাতারের আমিরের বিশেষ বিমানটি (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। একই ফ্লাইটে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান।

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। দলীয় চেয়ারপারসনকে একনজর দেখতে এবং তাকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন বিমানবন্দর সড়কে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বেগম খালেদা জিয়া

বিমানবন্দর থেকে গুলশানের ফিরোজা পর্যন্ত বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দলীয় নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন ফুটপাতে। অনেকেই হাতে ফুল, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড ও খালেদা জিয়ার ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিমানবন্দর সড়ক ও আশপাশের এলাকা। বেগম জিয়া কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন তারা।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি তাঁর গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের বাসভবন ফিরোজায় যান। বিমানবন্দর থেকে ফিরোজায় যাওয়ার সময় পথে পথে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে তিনি ‘ফিরোজা’য় পৌঁছান।

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষ্যে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সেখানে অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি কাজ করে সেনাবাহিনীও।

প্রসঙ্গত, গতকাল (সোমবার) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়।

খালেদা জিয়া গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি তার যুক্তরাজ্য গমনের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছিলেন। সেটিতেই লন্ডন যান এবং একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরলেন।#

সূত্র: পার্সটুডে