‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় যা রয়েছে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করা হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মালেক। তাঁর মোনাজাতের মাধ্যমে অল্প সময়ে সম্পন্ন হয় গণজমায়েত।

মাহমুদুর রহমানের পাঠ করা ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামাটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম। আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরাক্রমশালী, যিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী, যিনি মজলুমের পাশে থাকেন, আর জালেমের পরিণতি নির্ধারণ করেন।

আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা-যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি-সমবেত হয়েছি গাজার মৃত্যুভয়হীন জনগণের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এই সমাবেশ কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসের সামনে দেওয়া আমাদের জবাব, একটি অঙ্গীকার, একটি শপথ।

এই পদযাত্রা ও গণজমায়েত থেকে আজ আমরা চারটি স্তরে আমাদের দাবিসমূহ উপস্থাপন করব-

আমাদের প্রথম দাবিগুলো জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি।

যেহেতু-জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সকল জাতির অধিকার রক্ষার, দখলদারিত্ব ও গণহত্যা রোধের সংকল্প প্রকাশ করে;

এবং আমরা দেখেছি, গাযায় প্রতিদিন যে রক্তপাত, যে ধ্বংস চলছে, তা কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়-বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার ফল; এবং এই ব্যর্থতা শুধু নীরবতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-বরং পশ্চিমা শক্তিবলয়ের অনেক রাষ্ট্র সরাসরি দখলদার ইজরায়েলকে অস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে এই গণহত্যাকে দীর্ঘস্থায়ী করেছে; এবং এই বিশ্বব্যবস্থা দখলদার ইজরায়েলকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে বরং রক্ষা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে; সেহেতু আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

এবং-গাযা আমাদের জন্য এক আয়না যেখানে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে বিশ্বাসী হওয়া মানে কেবল বেঁচে থাকা নয়, সংগ্রামে দৃঢ় থাকা; সেহেতু আমরা এই মাটির মানুষ, এই মুসলিম ভূখণ্ডের নাগরিক, এই কওমের সন্তান এবং সর্বোপরি মুসলিম উম্মাহর সদস্য-একটি অঙ্গীকার করছি:

১। আমরা সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বয়কট করবো-প্রত্যেক সেই পণ্য, কোম্পানি ও শক্তিকে যারা ইজরায়েলের দখলদারিত্বকে টিকিয়ে রাখে;

২। আমরা আমাদের সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করবো-যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সকল প্রতীক ও নিদর্শনকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করবে, ইনশাআল্লাহ;

৩। আমরা আমাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলবো-যারা নিজেদের আদর্শ ও ভূখণ্ড রক্ষায় জান ও মালের সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত থাকবে;

৪। আমরা বিভাজিত হবো না-কারণ আমরা জানি, বিভক্ত জনগণকে দখল করতে দেরি হয় না।

আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো, যাতে এই বাংলাদেশ কখনো কোনো হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের পরবর্তী গাজায় পরিণত না হয়।

আমরা শুরু করবো নিজেদের ঘর থেকে-ভাষা, ইতিহাস, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সমাজ-সবখানে এই অঙ্গীকারের ছাপ রেখে।

আমরা মনে রাখবো:

গাযার শহীদরা কেবল আমাদের দো’আ চান না-তাঁরা আমাদের প্রস্তুতি চান।

শেষকথা: 

শান্তি বর্ষিত হোক গাযার সম্মানিত অধিবাসীদের উপর-তাঁদের উপর, যাঁরা নজিরবিহীন সবর করেছেন, যাঁরা অবিচল ঈমানের প্রমাণ দিয়েছেন। যাঁরা ধ্বংসস্তূপের মাঝেও প্রতিরোধের আগুন জ্বেলেছেন।

বিশ্বের নীরবতা ও উদাসীনতার যন্ত্রণা হাসিমুখে বুকের মাঝে ধারণ করেছেন। শান্তি বর্ষিত হোক তাদের উপর, যাঁরা নাম রেখে গেছেন ইজ্জতের খতিয়ানে-

শান্তি বর্ষিত হোক হিন্দ রজব, রীম এবং ফাদি আবু সালেহ সহ সকল শহীদেরর উপর, যাঁদের রক্ত দ্বারা গাজার পবিত্রভূমি আরো পবিত্র হয়েছে, যাঁদের চোখে ছিল প্রতিরোধের অগ্নিশিখা।

শান্তি বর্ষিত হোক বাইতুল মাকদিসের গর্বিত অধিবাসীদের উপর, যাঁদের হৃদয়ে এখনো ধ্বনিত হয় ‘আল-কুদস লানা’, আল কুদস আমাদের!

গাজার জনগণকে অভিনন্দন-

আপনারা ঈমান, সবর আর কুরবানীর মহাকাব্য রচনা করেছেন। দুনিয়াকে দেখিয়েছেন-ঈমান আর তাওয়াক্কুলের শক্তি আমরা, বাংলাদেশের মানুষ-শাহ জালাল আর শরীয়াতুল্লাহর ভূমি থেকে দাঁড়িয়ে, আপনাদের সালাম জানাই, আপনাদের শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই, আর আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় এই দো’আ-হে আল্লাহ, গাজার এই সাহসী জনপদকে তুমি সেই পাথর বানিয়ে দাও, যার উপর গিয়ে ভেঙে পড়বে জায়োনিস্টদের সব ষড়যন্ত্র।

বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে, প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ।




আমেরিকার সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিতে ওমান গেছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএবি নিউজ আন্তঃ ডেস্ক:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিতে ওমানে গেছেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচির নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল।

এই সফর প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি তার এক্স পেজে দেওয়া বার্তার প্রথমেই পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াতের একাংশ উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, আপনি কোন সংকল্প করলে আল্লাহর উপর নির্ভর করবেন।

এরপর বাকায়ি আরও লিখেছেন, “আমাদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সহকর্মীদের নিয়ে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মাস্কাট যাচ্ছি। ইরানের সম্মান-দৃঢ়তা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য আমরা সব ধরণের সক্ষমতা কাজে লাগাতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

আজই আমেরিকার একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদল ওমানের রাজধানী মাস্কাটে পৌঁছাবে বলে কথা রয়েছে। সেখানে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হবে।

ইরান আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে না বলে এর আগেই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।#

সূত্র: পার্সটুডে




 ‘মার্চ ফর গাজা’ ফিলিস্তিনের পতাকায় ছেয়ে গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো ঢাকা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের আগ্রাসন ও নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই যোগ দিচ্ছেন এ মুক্তির মিছিলে। প্যালেস্টাইনবাসীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনের পতাকায় ছেয়ে গেছে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশেপাশে এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর চারপাশ থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করছে মুসলমানরা। হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা আর কপালে কালিমার পতাকা নিয়ে ফিলিস্তিন বাসীদের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন তারা।

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে যখন বিক্ষোভ- প্রতিবাদের ঢেউ উঠছে, তখন বাংলাদেশেও ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে আয়োজিত হচ্ছে  ‘মার্চ ফর গাজা’। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী গণসমাবেশ।

এই কর্মসূচির লক্ষ্য গাজার নিরস্ত্র জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ, বিশ্বজনমত গঠন, এবং মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে সোচ্চার হওয়া।

আজ বিকেল ৩টা থেকে মাগরিবের পূর্ব পর্যন্ত রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এতে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক লাখ লোকের সমাগম হতে পারে আজকের এই আয়োজনে।

এই আয়োজনে বিশিষ্টজনদের মধ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট দাঈ শায়খ আহমাদুল্লাহ, প্রখ্যাত বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল করীম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদির, এনসিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনূস আহমদ, গাজী আতাউর রহমান, জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম বুলবুল, শিবির সভাপতি জাহিদুর রহমান, সাদিক কায়্যিম, কবি মুহিব খান, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা রেজাউল কারীম আবরার, মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ অনেক বিশিষ্টজন উপস্থিত থাকবেন।