সংবিধানের দোহাই দিয়ে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগ নেই: চরমোনাই পীর

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সংবিধান মানুষের জন্যে। সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। যে সংবিধান মানুষের জন্য কল্যাণকর নয়, এমন সংবিধান হতে পারে না। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার নিজেদের স্বার্থে সংবিধানকে বার বার সংশোধন করেছে। এখন সংবিধান সংশোধন করলে অসুবিধা কোথায়? কাজেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগ নেই।

ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে চিটাগাংরোডস্থ গ্রীণ গার্ডেন মিলনায়তনে শায়েখ (রহ.) এর রাজনৈতিক দর্শন শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।

সংগঠনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ জোবায়ের আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রশীদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর শরীয়াহ উপদেষ্টা মুফতি ওমর ফারুক সন্দীপী, মুফতী বদরুল আলম সিলেটী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমদ সাকী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, সহ সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারী মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম,নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সেক্রেটারী সুলতান মাহমুদ। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশকে সবদিক থেকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে পঙ্গু করে দিয়েছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তিনি পাচারকৃত টাকা ফেরত এনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমার করার দাবি জানান। সেইসাথে পাচারকারীদেরকেও গ্রেফতার এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজ এবং পেশীশক্তিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি জানিয়ে এ প্রসঙ্গে আইন পাশ করার আহ্বান জানান।

ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, ফজলুল করীম রহ. রাজনীতিতে আদর্শিক ও গুণগত পরিবর্তনে কাজ করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তিনি ইবাদতের রাজনীতির দর্শন প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তাঁর চিন্তা চেতনা জগৎবাসীর জন্যে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকবে। জাতি তাকে আজীবন স্মরণ রাখবে।

তিনি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনেই কেবল জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এছাড়া ফলপ্রসূ জাতীয় সরকার সম্ভব নয়। আর জাতীয় সরকার ছাড়া দেশকে ছাত্র-জনতার আগামীর বাংলা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। দুর্নীতিবা ও চাঁদাবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দূর্নীতি করার সাহস না পায়। গণহত্যার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির বিধান পাশ করতে হবে।




ইসরাইলি আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ইরানের সুন্নি আলেম সমাজের তীব্র নিন্দা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এদেশের সুন্নি আলেম সমাজ। তারা বলেছেন, পশ্চিম এশিয়ায় ইসরাইলি ঔদ্ধত্বের পেছনে আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতা মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।

যেকোনো হঠকারিতার ব্যাপারে অবৈধ ও অপরাধী ইসরাইল সরকারের বিরুদ্ধে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ইহুদিবাদী সরকার ২৬ অক্টোবর শনিবার ভোররাতে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়ে ইরানের তেহরান, খুজিস্তান ও ইলাম প্রদেশের কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরাইলের বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে দেয়।

পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের এই আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ইরানের নানা অঙ্গনের বিশিষ্টজনরা বিশেষ করে সুন্নি আলেম সমাজ নিন্দা জানিয়েছেন:

ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত সানান্দাজ শহরের জুমার নামাজের ইমাম ওস্তাদ ফায়েক রুস্তামি এ সম্পর্কে বলেন: ইরান পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ শক্তি এবং বিশ্ববাসী ইরানের সামরিক শক্তিমত্তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল রয়েছে। ইরানে আগ্রাসন চালিয়ে ইসরাইল বাঘের লেজে পা দিয়েছে এবং নিঃসন্দেহে তাকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।

ওস্তাদ রুস্তামি আরো বলেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ইতিহাস প্রমাণ করে যে, যেখানেই ইরানের ভূমিতে আগ্রাসন চালানো হয়েছে সেখানেই আগ্রাসী শক্তিকে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হয়েছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলকে এখন ইরানের দাঁতভাঙা জবাবের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

ইরানের অপর প্রখ্যাত সুন্নি আলেম ও দেহগালান শহরের জুমার নামাজের ইমাম ওস্তাদ আব্দুস সালাম মোহাম্মাদি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন: ফিলিস্তিন, গাজা ও লেবানন বর্তমান সময়ে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। গাজা ও লেবাননে বর্তমানে গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চলছে যা ইহুদিবাদী সরকারের বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা ও কুকর্মের বাস্তব উদাহরণ।

দেহগালান শহরের জুমার নামাজের ইমাম বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল নিজের সম্ভাব্য পতনের খবর জানে এবং অচিরেই তার অনিবার্য ধ্বংস সম্পর্কে অবগত রয়েছে। তিনি বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের জেনে রাখা উচিত যে, ইরানের জনগণ, প্রতিরোধ অক্ষ, আলেম সমাজ ও মুসলিম চিন্তাবিদরা ইসলাম, বিপ্লব ও ফিলিস্তিনি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা রক্ষায় বদ্ধপরিকর এবং তারা কোনো অবস্থায় ইরানের ভূমিতে কাউকে আগ্রাসন চালাতে দেবেন না।

এদিকে ইরানের কেরমানশাহ শহরের সুন্নি আলেম ও জুমার নামাজের ইমাম ওস্তাদ আব্দুর রহমান মোরাদি পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ইসরাইলি ঔদ্ধত্বের কারণ হিসেবে আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতাকে দায়ী করে বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলকে এই আগ্রাসী হামলার জন্য মূল্য দিতে হবে।

ইরানের আরেক সুন্নি আলেম ও রাওয়ানসার শহরের জুমার নামাজের ইমাম মোহাম্মাদ মাহমুদিও ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন: অপরাধী ইসরাইল সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে অনেক আগেই নিজের পাশবিক সত্ত্বাকে বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচনা করে দিয়েছে। এবার সে ইরানের কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে প্রমাণ করেছে, ইসরাইল অপরাধযজ্ঞ ছাড়া আর কিছু চেনে না এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি তার বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই।#

– পার্সটুডে