ডেওটুকোন ফেরিঘাটে নৌকায় পারাপারে ইচ্ছেমতো টাকা আদায়, ক্ষুব্ধ সাধারন যাত্রীরা

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার শেষ সীমানাস্থল ঘেঁষে কংস নদ। আর এই নদের ডেওটুকোন ফেরিঘাটে নৌকায় পারি দিয়ে প্রতিদিনই জেলাশহরে বিভিন্ন কাজে যেতে হয় এ উপজেলার বাসিন্দাদের। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ ও সমালোচনা।
যাত্রীদের অভিযোগ, একবার নৌকায় উঠলেই আগের চেয়ে দুইগুণ বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। পারাপারে নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের চার্ট টানানো নেই ফেরিঘাটে। বাড়তি টাকার বিষয়টি প্রতিবাদ করলে মাঝির বাগবিতন্ডার রোষানলে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। অপরদিকে ঘাটের ইজারাদার বলেছেন, বেশি টাকায় ফেরিঘাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। তাই নেওয়া হচ্ছে বেশি টাকা।
সূত্র জানায়, কংস নদের ডেওটুকোন ফেরিঘাট পারাপারের ইজারা পরিচালনা করছেন নেত্রকোনা জেলা পরিষদ। প্রতিবছর বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষ দিকে নতুন করে ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কার্যকর করা হয় পহেলা বৈশাখ থেকে। পূর্বের সময়ে নৌকায় পারাপারে সঠিকভাবে ভাড়া আদায় করলেও এ বছর পারাপারে ইজারাদার বাড়তি টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

জানা গেছে, প্রতিনিয়ত জেলায় দাপ্তরিক কাজ, কোর্ট-কাচারি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কলেজসহ বিভিন্ন কাজে এই ডেওটুকোন ফেরিঘাট পার হয়ে সার্বক্ষণিক যাওয়া-আসা করতে হয় দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দাদের। প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত হয়ে থাকে। তবে নৌকায় পারাপারে জনপ্রতি আগের থেকে ৫ টাকা বাড়িয়ে এখন ১০ টাকা,চালকসহ মোটরসাইকেল আগের থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে এখন ২০ টাকা এবং মোটরসাইকেলসহ দুইজনের এখন ৩০ টাকা, সিএনজি ও অটোরিক্সা থেকে নেয়া হয় ইচ্ছে মতো ভাড়া।
অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে মোবারক হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, আগে নৌকা ভাড়া দিতে হতো ৫ টাকা, বর্তমানে দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। আমাদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে তারা। আগের ৫ টাকা ভাড়া সঠিক ছিল।
শামছুল আলম খান নামের  আরেক যাত্রী বলেন, আমরা দুর্গাপুরের মানুষ জেলা শহরে যোগাযোগ করতে হলে একমাত্র ডেওটুকোন ফেরিঘাট পার হয়ে যেতে হয়। আমরা বাড়তি টাকা দিয়েই যাচ্ছি কিন্তু সবার পক্ষে তো সম্ভব না। এটা জুলুম।
শিক্ষক জুয়েল মিয়া বলেন, ইঞ্চিনচালিত নৌকায় এটুকু নদী পার হতে দুই মিনিটের বেশি সময় লাগে না কিন্তু জনপ্রতি ১০ টাকা আর মোটরসাইকেল ১০ টাকা মোট ২০ টাকা নিচ্ছে। এমন ঘটনা কোথাও দেখিনি।

মাসুদ মিয়া নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, মোটরসাইকেলসহ ৩০ টাকায় এই নদী পার হয়েছি। আগে ১০ টাকায় পার হতাম। কিন্তু এখন আগের চেয়ে ২০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। দুইজন লোক নিয়ে গেলে যে টাকা ভাড়া পায় তার মধ্যে থেকে ৬০ টাকা নৌকা পারাপারের দিতে হয়। খুবই খারাপ লাগে কিন্তু বলার মতো জায়গা দেখিনা।
এদিকে নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের চার্ট গণমাধ্যমকর্মীদের দেখাতে বললে নৌকার মাঝি জানায় বাড়িতে আছে চার্ট। এ সময় তার নাম জানতে চাইলে নাম বলতে অস্বীকৃতিও জানায় নৌকার চালক।

বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে ইজারাদার বাবুল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রায় ৪০ লাখ টাকায় ফেরিঘাট ইজারা নিয়েছেন। নৌকা পারাপারের যে ভাড়া নিচ্ছেন  এটি জেলা পরিষদের নির্ধারন করা। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা পরিষদে কেউ অভিযোগ দিলে পরিষদ ডিসিশন নেবে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খন্দকার জানান, গত বছর এবং এ বছর (চলমান) লিজ নেওয়া দুইজন আলাদা ব্যক্তি। গত বছর কোনো অভিযোগ বা আপত্তি না আসলেও এ বছর একাধিকবার অভিযোগ পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ফেরিঘাট লিজ নেওয়া ব্যক্তিকে আমরা ইনফর্ম (জানালে) করি যে ওনি বেশি টাকা নিচ্ছেন এরপর প্রায় দুই মাসের মতো বন্ধ ছিল। ওনাদের ফোন করা হলে কিছুদিন বন্ধ রেখে আবারও বেশি টাকা নেওয়া শুরু করে। এখন আবারও গত সপ্তাহে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমাদের ইন্জিনিয়ার সাহেব দ্রুতই সরেজমিনে তদন্ত করবেন।




তেহরান-দামেস্ক সহযোগিতার ফলে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের পরাজয় ঘটবে

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ বলেছেন, সিরিয়ার সাথে সহযোগিতা বজায় রাখা অপরিহার্য এবং এই অংশীদারিত্ব গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে পরাজয় ঘটাবে।

নাসিরজাদেহ গতকাল (রোববার) সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মেজর জেনারেল আলী মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময় এ মন্তব্য করেন।

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাজায় দখলদার ইসরাইলের আক্রমণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার কঠোর সমালোচনা করেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল গাজায় বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যা চালিয়ে আসছে যাতে অন্তত ৪০ হাজার ৭৩৮ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন যার বেশিরভাগ নারী ও শিশু।

জেনারেল নাসিরজাদেহ বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত আমরা ইসরাইলি অপরাধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি না।” ফলে, ইরান ও সিরিয়ার মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে এবং এই সহযোগিতা অবশ্যই ইসরাইলের পরাজয় ডেকে আনবে।”#

পার্সটুডে




একাত্তরের প্রশ্নের সমাধান করতে চাই: নাহিদকে পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সাথে রোববার সচিবালয়ে তার দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা ১৯৭১-এর প্রশ্নটিকে সমাধান করতে চাই। কিন্তু বিগত সরকার আমাদেরকে আলোচনার কোনো সুযোগ দেয়নি এবং ইচ্ছে করেই ৭১ ইস্যুটাকে জিইয়ে রাখত। চাইলে বহু আগেই এটির সমাধান করা যেত। আমরা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী।’

এ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৭১ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আওয়ামী লীগের আদর্শে ১৯৭১ ছিল ‘ইতিহাসের শেষ অধ্যায়’। কিন্তু আমরা মনে করি এটি ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। ১৯৪৭ বা পাকিস্তান আন্দোলন ছাড়া বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতো না। আমরা পাকিস্তানের সাথে ৭১-এর প্রশ্নটিকে সমাধান করতে চাই। একটি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আমাদের পরস্পরের সাথে সম্পর্ক মজবুত করা প্রয়োজন। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে যেকোনো দেশের সাথে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী।’

তিনি বলেন, উপনিবেশবাদবিরোধী লড়াই থেকে শুরু করে পাকিস্তান আন্দোলন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের জনগণের দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।

ইন্দো-মুসলিম সভ্যতার অংশ হিসেবে উপমহাদেশে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ও সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক ও ভারসাম্যপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া গড়তে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবেও পাকিস্তানের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের গভীর বন্ধন রয়েছে। যদিও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বাংলাদেশকে বিশেষত্ব দিয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানি চ্যানেল দেখা যায় না সে বিষয়ে হাইকমিশনার উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পাকিস্তান হাইকমিশনার বলেন, পাকিস্তান সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং অন্তর্র্বতী সরকারকে সমর্থন করে।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান দু’দেশই খুব ভালো করছে। তাই এক্ষেত্রে উভয় দেশ যৌথভাবে কাজ করতে পারে।

পাকিস্তান হাইকমিশনার বন্যা দুর্গতদের জন্য সহযোগিতার প্রস্তাব দিলে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আপাতত সাহায্যের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন হলে তখন জানানো হবে।

হাইকমিশনার বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে গত ১৫ বছর তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে বিশেষ করে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে এবং এয়ারপোর্টে। এ সমস্যা সমাধানে তিনি উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় স্বার্থে আমরা একাত্তরের বিষয়গুলো সমাধান করে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।

বৈঠকে মিডিয়া, ক্রীড়া, যুব ও সংস্কৃতি এবং তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

হাইকমিশনার পাকস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট বিজয়ে অভিনন্দন জানান এবং সিরিজ হেরে যাবেন বলেও আশঙ্কা করেন।

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগে এবং পাকিস্তান হাইকমিশনের উদ্যোগে কাওয়ালী গানের আয়োজন করা হচ্ছে সেখানে উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান হাইকমিশনার।

পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আলোচনা শেষ হয়।

সাক্ষাৎকালে কাউন্সিলর কামরান দাঙ্গাল, বাণিজ্যিক কর্মকর্তা জায়িন আজিজ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : বাসস