আরো ২ ইহুদিবাদী সেনা নিহত; এ পর্যন্ত মারা গেছে ২৯৪ জন

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বর আগ্রাসন চালাতে গিয়ে ইসরাইলের আরো দুই সেনা নিহত হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় এই দুই সেনা নিহত হয়।

নিহত সেনাদের নাম সার্জেন্ট আদার গ্যাভরিয়েল এবং সার্জেন্ট ইয়েহোনাথান ইলিয়াস। তাদের বয়স ২৪ ও ২০ বছর। এরমধ্যে আদার গ্যাভরিয়েল রিজার্ভ সেনা হিসেবে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল।

বর্বর ইহুদিবাদী বাহিনী জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষের সময় গ্যাভরিয়েল নিহত হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ছোঁড়া ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে পরে মারা গেছে ইলিয়াস। ওই হামলায় একজন সেনা অফিসার মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।

ইসরাইলের এই দুই সেনা নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে গাজায় আগ্রাসন চালাতে গিয়ে মোট নিহত সেনার সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯৪-এ। তবে ইসরাইলের এই হিসাবের বিষয়ে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা আপত্তি জানিয়ে বলছে, ইসরাইলি নিহত সেনার সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে এর চেয়ে অনেক বেশি।#

পার্সটুডে




আর আলোচনা নয়, গাজায় শান্তি স্থাপনে যে শর্ত দিলো হামাস

 

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আর কোনো আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তারা; তবে ইসরায়েল যদি গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে— তাহলে সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত’ রয়েছে গোষ্ঠীটি।

বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে হামাসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেখানে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘গাজায় আমাদের জনগণ, পরিবার-পরিজনদের ওপর গণহত্যা চলছে। যারা বেঁচে আছে, তারা প্রতিদিন আগ্রাসন-দুর্ভিক্ষ-দখলদারিত্বের শিকার হচ্ছে। হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠী মনে করে, এই পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের অংশগ্রহণ সার্বিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবে না।’

‘তবে আজ ( ৩০ মে ) আমরা আমাদের মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়ে দিয়েছি যে যদি দখলদার বাহিনী গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে গাজা ইস্যুতে একটি সম্পূর্ণ ( শান্তি )চুক্তির জন্য আমরা প্রস্তুত। এই চুক্তিতে ( সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত ) একটি বিস্তৃত সমঝোতাও অন্তর্ভুক্ত হবে।’

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি শহরটিতে অবস্থান করছেন। গাজার বিভিন্ন এলাকায় গত প্রায় ৮ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে রাফায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন এই ফিলিস্তিনিরা।

সম্প্রতি জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়ে রায় দিয়েছে; কিন্তু সেই রায় উপেক্ষা করে সেখানে সেনাঅভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। কিছুদিন আগে রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের সবাই সাধারণ বেসামরিক।

ওই ঘটনার পর থেকে বিশ্বজুড়ে যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা চলছে, সে সময়ই এই বিবৃতি দিলো হামাস।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে গাজায় নিয়ে এসেছিল হামাস যোদ্ধারা। অতর্কিত সেই হামলার জবাবে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে। গত প্রায় আটমাস ধরে চলমান এই ভয়াবহ অভিযানে এ পর্যন্ত ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, পুরো উপত্যকা পরিণত হয়েছে ধ্বংস্তূপে।

গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হওয়া এক অস্থায়ী বিরতির সময় নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর আর কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কয়েকজন জিম্মি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র : রয়টার্স