দুর্গাপুরে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি, আতঙ্কে নিম্নাঞ্চলের মানুষ

ডিএনবি নিউজ ডেস্ক:

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে টানা দুই দিনে অতিবৃষ্টি ও সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে দুর্গাপুর উপজেলায় সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ভবানীপুর বটতলা সীমান্তে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তের পিলার ধ্বসে যাওয়ার মাত্র দুই ফুট বাকি আছে। যে কোন সময় ধ্বসে যেতে পারে। তা ছাড়া আতঙ্কে রয়েছে কুল্লাগড়া, গাঁওকান্দিয়া ও সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। এ নিয়ে, সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো ও বিপদসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাতে আরো পানি বৃদ্ধি পেলে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ সময় নদীতে থাকা বালু উত্তোলনকারী কিছু ড্রেজার ভেসে গেছে, উজান থেকে পানি নামতে থাকলে অন্যান্য এলাকার নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, মাছের ঘের, ফসলের মাঠ সহ সবজি বাগান গুলো তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে আতঙ্কে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। নদীর পাড় ভাঙ্গা অব্যাহত থাকায়, কুল্লাগড়া, কামারখালী, ইসলামপুর, বিজয়পুর, ভবনীপুর, দাহাপাড়া, বন্ধউষান এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। অপরদিকে টানা বৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের বেড়েছে ভোগান্তি। রিকশা ও ঠেলাগাড়ী চালানো সহ খেটে খাওয়া মানুষদের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে পড়েছে একেবারেই। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চল গুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক কর্মচারী মাইকেল প্রদীপ বাউল বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ধরনটাই এই রকম। তবে নদীতে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে যদি রাতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে তাহলে এলাকা প্লাবিত হয়ে আগাম বন্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, সোমেশ্বরী নদীর পানির বিপদ সীমার স্কেল হচ্ছে ১২.৬৫। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১.৩৩ অব্যাহত রয়েছে। রাতে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী পানি বাড়তে থাকলে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে সকল কে সাবধান করা হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। এলাকায় বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কোন প্রকার খাদ্য সমস্যা দেখা দিলে, তা মোকাবেলার জন্য প্রস্তত রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।




চলন্ত ট্রেনে সেলফি তুলতে গিয়ে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

 চুয়াডাঙ্গায় ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরে হাত বাড়িয়ে ছবি তোলায় সময় সিগন্যালে হাত আটকে রোহান (১৭) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

রোহান চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার রায়হান হোসেনের ছেলে ও উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ভোকেশনাল সেকশন) দশম শ্রেণির ছাত্র।

জানা যায়, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে উথলী রেলস্টেশন থেকে চুয়াডাঙ্গামুখী মহানন্দ লোকাল ট্রেনে চড়ে রোহান। বিকেলে ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা পৌঁছালে সেখানে নেমে পড়ে রোহান। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনাগামী গোয়ালন্দ মেইল ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে গেলে রোহান ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরে হাত বাড়িয়ে সেলফি তোলার সময় একটি সিগন্যালের সাথে ধাক্কা লাগলে তিনি ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে। এ সময় তার মাথা ও বাম পায়ে আঘাত লাগলে গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা রোহানকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা ঢাকা পঙ্গু হাপসাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: নূরজাহান রুমি বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৫টার পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা অজ্ঞাত এক যুবককে জরুরি বিভাগে নেয়। এ সময় জানতে পারি সে ট্রেন থেকে পড়ে যেয়ে রক্তাক্ত জখম হয়। তার বাম পায়ের পাতার বেশিরভাগ অংশ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এছাড়াও মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় দুই কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। জরুরি বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে সার্জারি বিভাগে অবজারভেশনে রাখা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য যতদ্রত সম্ভব রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

এদিকে, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিচ্ছিল পরিবার। পথেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার হাটগোপালপুর নামক স্থানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রোহানের চাচা সবেদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। পরে ওই অ্যাম্বুলেন্সযোগেই পরিবারের সদস্যরা রোহানের লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরেন।