দুর্গাপুরে সরকারী পাথর চুরির দায়ে এক ব্যক্তির কারাদন্ড

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ১নং বালু মহাল থেকে সরকারী পাথর চুরির দায়ে আবু সিদ্দিক(৩৫)নামে এক ব্যক্তিকে কারাদ- প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার দুপুরে এই কারাদ- প্রদান করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুয়েল সাংমা।
এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলায় ৫টি বালু মহাল রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যন্যা বালু মহাল চালু থাকলেও ১ বৈশাখ থেকে ১নং বালু মহাল বন্ধ রয়েছে। ঐ বালু মহালে বিপুল পরিমান বালু ও পাথর সরকারের হাওলায় থাকায়, সুযোগ বুঝে এই সরকারি সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধায় থাকে এক শ্রেনীর চোর প্রকৃতির লোক। ঐদিন দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত ঘটনাস্থলে পৌছে হাতে নাতে ধরে ফেলেন আবু সিদ্দিক নামে ঐ ব্যক্তিকে। পরে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এ দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালত।




তালেবান-যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে কী ছিল?

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

শুক্রবার তারা দেশটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার ও হেরাতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে খবর এসেছে। এ অবস্থায় কাবুল থেকে দূতাবাস খালি করার তোড়জোড় শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

গত মে মাসে নতুন করে সংঘাত শুরুর পর তালেবান বাহিনী এত দ্রুত এত বেশি সাফল্য পেয়ে যাবে, তা ছিল বাইডেন প্রশাসনের ধারণার বাইরে। এখন মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের মূল্যায়ন বলছে, শিগগিরই কাবুলেরও পতন ঘটতে পারে তালেবানের হাতে ।

পরিস্থিতির এমন অবনতির পরও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন না বাইডেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, দূতাবাসের কর্মী প্রত্যাহারের কাজটি তারা সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা ৩১ আগস্টের মধ্যেই শেষ করতে চান।

তালেবান বাহিনীর এই অগ্রযাত্রার মধ্যে সেই শান্তি চুক্তির বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসছে। কাতারের রাজধানী দোহায় ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটানো।

সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবানের দোহা মুখপাত্র সোহাইল শাহীন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷

চুক্তির মূল ধারা চারটি, যেখানে শুরুতেই বলা হয়েছে ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান’ নামটিকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয় না এবং এরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তালেবান হিসেবে পরিচিত। এই চুক্তিটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের, যদিও তালেবান নিজেদেরকে চুক্তির নথিতে ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

চুক্তির শিরোনাম ছিল – ‘আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি’। এটি দারি, পশতু এবং ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হবে বলেও নথিতে উল্লেখ করা হয়। তারিখ হিসেবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাশাপাশি হিজরি চান্দ্র ও সৌর বর্ষও উল্লেখ করা ছিল।

সমন্বিত ওই শান্তি চুক্তির চারটি ধারা একটি আরেকটির ওপর নির্ভরশীল।

প্রথম ধারায় বলা হয়, আল-কায়েদাসহ কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে তালেবান নিশ্চয়তা দিচ্ছে। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ব্যবস্থাপনাও তারা করবে।

দ্বিতীয় ধারায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা হবে, এটা বাস্তবায়নের ব্যাবস্থাপনা তারা করবে এবং সেনা প্রত্যাহারের একটি সময়সূচিও ঘোষণা করা হবে।

তৃতীয় ধারায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক সাক্ষীর উপস্থিতিতে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা এবং এর সময়সূচি ঘোষণার পর, এবং তালেবানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে না দেওয়ার নিশ্চয়তা ঘোষণা করার পর তালেবান পক্ষ আফগানিস্তানের সরকারের সঙ্গে আন্তঃআফগান আলোচনা ও সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করবে। ২০২০ সালের ১০ মার্চ এই আলোচনা শুরুর তারিখ ঠিক করা হয়।

চতুর্থ ধারায় বলা হয়, আন্তঃআফগান দরকষাকষি ও আলোচনায় আলোচ্যসূচির একটি অংশে থাকবে অস্ত্রবিরতির বিষয়টি। আন্তঃআফগান আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা স্থায়ী ও সমন্বিত একটি অস্ত্রবিরতির তারিখ ও সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করবেন এবং এর বাস্তবায়নে যৌথ ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যত রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণার সময়ই অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হবে।

চুক্তিটির পরের তিনটি অংশের প্রথম অংশে যুক্তরাষ্ট্রের কী কী করণীয় তার বিবরণ রয়েছে। বলা হয়েছে, চুক্তি স্বক্ষরের ঘোষণার দিন থেকে পরের ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। প্রথম অংশে সেখানে ছয়টি বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।

এর প্রথমটিই সেনা প্রত্যাহার নিয়ে। যেখানে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এই চুক্তি ঘোষণার প্রথম ১৩৫ দিনের মধ্যে আট হাজার ৬০০ সেনা সরিয়ে নেবে। এবং একই সময়ের মধ্যে তারা সেদেশের পাঁচটি সেনাঘাঁটি থেকেও সেনা প্রত্যাহার করবে।

দ্বিতীয়টিতে বলা হয়, পরের সাড়ে নয় মাসের মধ্যে বাকি বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এবং বাকি সেনাঘাঁটিগুলো থেকেও সৈন্য সরিয়ে নিতে হবে।

তৃতীয়টি মূলত বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধের সময় বন্দি ৫ হাজার তালেবানকে মুক্তি দেবে এবং এর বিনিময়ে তালেবান গোষ্ঠী তাদের হাতে বন্দি ১ হাজার জনকে মুক্তি দেবে বলে ঐকমত্য হয়।

চতুর্থ বিষয়টি হল, আন্তঃআফগান আলোচনা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং তালেবানের যেসব সদস্যকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই তালিকাও পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া শুরু করবে। ২০২০ সালের ২৭ অগাস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নেবে।

পঞ্চমটি হল, আন্তঃআফগান আলোচনা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে তালেবানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালুর জন্য সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে এবং ২০২০ সালের ২৯ মের মধ্যে তারা এ কাজটি করবে।

ষষ্ঠ বিষয়টি হল, যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্ররা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং আফগানিস্তানকে বিভক্ত করতে হুমকি দেওয়া বা বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকবে।

চুক্তির দ্বিতীয় অংশে তালেবানের করণীয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, পাঁচটি দফা বাস্তবায়ন করবে তালেবান।

প্রথমটি হল, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে নিজেদের কোনো সদস্য বা আল-কায়েদাসহ অন্য কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি যাতে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করবে তালেবান।

দ্বিতীয় দফাটিও প্রায় একই ধরনের, যেখানে বলা হয়েছে, তালেবান পক্ষ যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রদের বিরুদ্ধে সক্রিয় কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে পারবে না, যারা যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রদের জন্য হুমকি স্বরূপ।

তৃতীয় দফাটি হল, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টিকারী কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি যাতে সদস্য ও তহবিল সংগ্রহ এবং তাদের প্রশিক্ষণের জন্য আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করবে তালেবান।

চতুর্থ ও পঞ্চম দফায় যথাক্রমে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ও ব্যক্তিকে ভিসা না দেওয়া, অন্য কোনো ভ্রমণ অনুমতি না দেওয়া বা অন্য কোনো আইনি নথি না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।

চুক্তিটির তৃতীয় অংশে আরও তিনটি দফা রয়েছে, যার প্রথমটিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই চুক্তিটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদনের জন্য চেষ্টা করার কথা বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে, তালেবান পক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবে এবং নতুন পরিস্থিতিতে আন্তঃআফগান আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে একটি আফগান ইসলামিক সরকার গঠনের চেষ্টা করবে যা থেকে প্রতীয়মান হবে আন্তঃআফগান আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে।

তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, আন্তঃআফগান আলোচনার মাধ্যমে গঠিত আফগান ইসলামিক সরকারকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তারা ওই সরকারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।

চার পৃষ্ঠার ওই চুক্তির নথি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে আছে।




আসামে পাস হয়ে গেল বিতর্কিত গো-সংরক্ষণ বিল

ডিএনবি নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের আসাম রাজ্যের বিধান সভায় শুক্রবার পাস হয়ে গেল বিতর্কিত গো সংরক্ষণ বিল। এই বিল অনুসারে গরু নিয়ে যাওয়া, গো হত্যা, গরুর গোশত বিক্রির ক্ষেত্রে নানা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে বলে সূত্রের খবর। গরুর গোশতের ব্যবসাকে নিষিদ্ধ করা হয়নি এই বিলে। তবে অনেকের মতে এটি খাতায় কলমে না করলেও গরুর গোশত বিক্রিতে ব্যাপক কড়াকড়ি করা হবে আসামে। এদিন প্রায় দু ঘণ্টা আলোচনার পর বাজেট সেশনের শেষ দিনে দি আসাম ক্যাটল প্রিজারভেশন বিল ২০২১ পাস করা হয়।

এদিকে এই বিলটিতে সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর আবেদন করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই এদিন বিরোধীরা ওয়াক আউট করেন।

বিরোধীরা এই বিলে ৭৬টি সংশোধনী আনতে চেয়েছিলেন। আন্তঃজেলা গরু নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া, মন্দিরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গরুর গোশত বিক্রি নিষিদ্ধ করার নির্দেশে শিথিলতা আনা, আইন না মানলে ৮ বছর পর্যন্ত কারাবাসের সিদ্ধান্ত তুলে নেয়ার আবেদন করেছিলেন বিরোধীরা। তাদের দাবি ছিল প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, ‘মহিষকে ছাড় দেয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তথ্য বলছে লোয়ার আসামে বিফকে ঘিরে প্রচুর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়েছে বার বার। আমাদের লক্ষ্য সম্প্রীতি। কিছু নিয়ম মেনে গরুর গোশত খেতে পারবেন। তবে যারা গরুর গোশত খান না তাদের আবেগকে সম্মান জানানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকৃত মুসলিমরা এর বিরোধিতা করবেন না।’

কংগ্রেস দলনেতা দেবব্রত সইকিয়া বলেন, ‘গরুর ব্যবসার সাথে যুক্তদের প্রচণ্ড সমস্যা হবে। এটা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো দরকার ছিল।’

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস