দুর্গাপুরে হেফাজতে ইসলামের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদী বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রীয় কর্মসুচী মোতাবেক নেত্রকোনার দুর্গাপুরে জামিউল উলুম কাচারী মাদ্রাসা, মারকাজ মাদ্রাসা, তেরী বাজার বড় মসজিদ মাদরাসা, মউ মাদ্রাসা, লক্ষিপুর মাদ্রাসা, ঝান্জাইল মাদ্রাসা, জাগিরপাড়া মহিলা মাদ্রাসা, মাসকান্দা, নলুয়াপাড়া ও  ভাদুয়া মাদ্রাসা সহ উপজেলা প্রায় প্রতিটি মাদ্রাসা ও মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার বাদ জহুর হেফাজত ইসলাম দুর্গাপুর উপজেলা শাখার আয়োজনে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

হেফাজত ইসলাম দুর্গাপুর উপজেলা শাখার সদস্য ও জামিউল উলুম কাচারী মাদরাসার মোহতামিম হাফেজ মাওঃ ওয়ালীউল্লাহ বলেন, সারাদেশে মোদী বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের নির্বাচার গুলিতে আমাদের নেতাকর্মীগন নিহত হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা সহ দেশ ও জাতীর কল্যানে কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর অংশ হিসেবে এ দোয়ার মাহফিল সম্পন্ন করা হয়।




দেয়া হয়নি লকডাউন, ১৮ দফা নির্দেশনা

ডিএনবি নিউজ: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ এক ভিডিও কনফারেন্সে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনার কথা জানান।

এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-

১. সকল ধরণের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক ধর্মীয়/ অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলকায় সকল ধরণের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে /জন্মদিন সহ যেকোন সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. মসজিদসহগ সকল উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. পর্যটন/ বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সকল ধরণের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৪.গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারনক্ষমতার ৫০ভাগের অধিক যাত্রী বহন করা যাবে না।

৫.সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্ত:জেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬.বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

৭.নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূবর্ক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৮ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এচলা নিশ্চিত করতে হবে।

৯.শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাস্ত পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১১.অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রিত করতে হবে।

১২.প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধনসহ সকল ধরণের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

১৩.করোনায় আক্রান্ত/ করোনার লক্ষযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিক করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের্ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল সরকারি/বেসরকারি অফিস /প্রতিষ্ঠাস/ শিল্প কলকারখানাসমূহ ৫০ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/অসুস্থ/বয়স ৫৫ উর্দ্ধ কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৫.সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা যথা সম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬.স্বশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোন ধরণের গণপরীক্ষার ক্ষেতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৭. হোটেল-রেঁস্তোরাসমূহে ধারণ ক্ষমতার ৫০ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে।

১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

-কেএল




রক্ত ঝরানোর জবাব সরকারকে দিতে হবে: ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্ট: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে সরকার। রক্ত ঝরানোর জন্য ও প্রাণ যাওয়ার জন্য সরকার দায়ী, তার জবাব সরকারকে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (২৯ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে। সরকারের নির্দেশে এমন হত্যাযজ্ঞ হয়েছে। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এসবের খেসারত সরকারকে দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

সরকারের পদত্যাগ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ন্যায্য দাবি সরকার ভারত থেকে আদায় করতে পারছে না। সীমান্তে গুলি করে হত্যার কোনো বিচার হয় না। তাই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় অতীতের স্বৈরাচার সরকারগুলোর মতো পরিণতি হবে বলেও হুঁশিয়ারি করেন মির্জা ফখরুল।

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি নিজেরা নিজেদের আন্দোলন করে, কারো আন্দোলনে ইন্ধন দেয় না।




দুর্গাপুরে স্ত্রী-শাশুরীর মানসিক নির্যাতনে লাশ হলো বিল্লাল

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে বিল্লাল মিয়া (২৮) নামে এক যুবক বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষ পানকরে বিল্লাল। ঘটনার পরদিন শনিবার (২৬ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বিল্লাল মিয়া উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের কাপাসাটিয়া গ্রামের আবুল হাসেমের পুত্র।


নিহতের পিতা-মাতা ও অন্যান্য স্বজনরা জানান, গত শুক্রবার সকালে একই ইউনিয়নের বিরমারালা গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে থাকা স্ত্রী রোজিনা (২১) ও ছয় মাস বয়সী শিশু সিফাতকে আনতে যান বিল্লাল মিয়া। সেখানে স্ত্রী রোজিনা খাতুন স্বামীকে তাঁর সংসার করবে না সাব জানিয়ে দেয়। এসময় বিল্লালকে নানা ধরণের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করেন শ্বাশুড়ী ফাতেমা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর কোন একসময় সবার অগোচরে বিষ পান করে বিল্লাল। টের পেয়ে তাৎক্ষনিক দুর্গাপুর সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বিল্লাল। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বিষ খাওয়ার দুদিন পেরিয়ে গেলেও পাষন্ড স্ত্রী রোজিনা খাতুন, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ী এক নজর দেখতে আসেননি বিল্লালকে। মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বাড়ি থেকে আত্মগোপনে চলে যান স্ত্রী রোজিনা ও তাঁর বাবা-মা। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সরেজমিনে গেলে নিহতের চাচাতো ভাই মোস্তফা, সহোদর ভাই জালাল উদ্দিন প্রতিবেদককে ঘটনার  সত্যতা নিশ্চিত করেন। স্থানীয়রা জানান স্ত্রী রোজিনা ও শ্বাশুড়ীর সাথে ক্ষোভের কারণেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বিল্লাল মিয়া। ঘটনাটি তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীও জানানো হয়।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার কর্মকর্তা ইন-চার্জ (ওসি) শাহ নুর-এ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রীর সাথে রাগ করে বিল্লাল মিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। এ ব্যাপারে পরিবারের কাছ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




মিয়ানমারে বিমান হামলায় প্রাণভয়ে পালাচ্ছে মানুষ

ডিএনবি নিউজ ডেস্কঃ  সশস্ত্র গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়ানমারের কারেন রাজ্যে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির দখলদার জান্তা সরকার।

হামলার পর তিন হাজারের বেশি অধিবাসী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। সশস্ত্রগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন এলাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে।

থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী মুতরাউ জেলার পাঁচটি এলাকায় গত শনিবার গভীর রাতে বিমান হামলা চালায়। গৃহহীনদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রেও হামলা চালানো হয়। কারেন উইম্যান্স অর্গানাইজেশন এক বিবৃতিতে জানায়, এই মুহূর্তে তিন হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে জঙ্গলে লুকিয়ে আছে। রোববার থাই সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের প্রায় তিন হাজার শরণার্থী থাইল্যান্ড পৌঁছেছেন। আরও শরণার্থী আশ্রয় প্রার্থনা করেছে।

স্থানীয় ত্রাণ সংস্থা ‘ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স’ এর প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড ইউবাঙ্ক জানান, বিমান হামলায় আদিবাসী সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) দুই যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে এখানে বিমান হামলার আওয়াজ পাইনি।

ওই হামলা রাতে করা হয়েছে। তাই বলাই যায়, রাশিয়া এবং চীনের সহযোগিতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটা খুবই প্রাণঘাতী। শনিবারের ওই হামলায় কেএনইউ নিয়ন্ত্রণাধীন একটি গ্রামের অন্তত তিনজন সাধারণ নাগরিকও নিহত হয়েছেন।




আজ লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ডিএনবি নিউজ: দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। নতুন করে এই অবস্থা সামাল দিতে বিভিন্ন টাইপের লকডাউনের ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সাধারণ চলাফেরা ও লোক সমাগমের ক্ষেত্রে সরকার নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

গতকাল রোববার রাতে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সেখানে আজ সোমবার দেশের কিছু এলাকার জন্য এ ধরনের ঘোষণা ‘আসতে পারে’ বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) হয়ত বিভিন্ন টাইপের লকডাউনের ঘোষণা আসবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি- এসব এলাকায় যাওয়া-আসা বন্ধ করা, বিয়ে-শাদী অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পিকনিক এগুলোও বন্ধ করা, যেখানে জনসমাগম হয় সেসব অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধ আসতে পারে।’ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব গেছে। এতে অনেকগুলো প্রস্তাব ছিল। সেগুলো দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা জারি করবেন। তার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের লকডাউন থাকবে।’




হেফাজতে ইসলামের দোয়া দিবস আজ

ডিএনবি নিউজ: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আহবানে আজ সোমবার (২৯ মার্চ) বাদ আসর দেশব্যাপী পালিত হবে দোয়া দিবস। গতকাল রোববার (২৮ মার্চ) বিকেলে দেশব্যাপী সফল হরতাল পালন শেষে রাজধানীর পল্টনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

গতকাল দেশব্যাপী পালিত হরতালে নিহতদের মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত হবে এ দোয়া মাহফিল। দোয়া মাহফিলের মুনাজাত পরিচালনা করবেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী। উপস্থিত থাকবেন হেফাজতের ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরী নেতৃবৃন্দ।

হরতালে সাধারণ মানুষ ও মাদরাসা ছাত্রদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে আজ দেশব্যাপী দোয়া দিবস ছাড়াও আগামী শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিক্ষোভ মিছিল করবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

কর্মসূচি প্রদানকালে হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মোদির আগমন প্রত্যাহার করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছিল। মোদির আগমনের দিন হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ওইদিন সাধারণ মানুষের আন্দোলনে প্রশাসন গুলি চালিয়েছে। যার প্রতিবাদে (গতকালের) এ হরতাল আহ্বান করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৬ মার্চ) বায়তুল মোকাররমে মুসুল্লিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হাটহাজারীতে প্রাণহাণির ঘটনায় দেশব্যাপী গতকাল রোববার (২৮ মার্চ) হরতাল ডেকেছিলো হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। প্রায় ১৪ মাস পরে সারাদেশে সাধারণ জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণে পালিত হয়েছিলো এ হরতাল। কিন্তু হরতালেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হোন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রায় ১১ জন সাধারণ মুসুল্লি ও মাদরাসা ছাত্র। শহিদ হওয়া এ সকল ভাইদের রুহের মাগফেরাত ও দারাজাত বুলুন্দির জন্য আজ আয়োজন করা হবে এ দোয়া মাহফিলের।




আজ পবিত্র শবে বরাত; করণীয় ও বর্জনীয়

শবেবরাত শব্দ দুটি হাদিসে নেই। হাদিসের ভাষায় এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ১৫ শাবানের রাত বলা হয়। ‘শবেবরাত’ ফারসি শব্দ। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত, ‘বরাত’ অর্থ নাজাত বা মুক্তি। এই দুই শব্দ মিলে অর্থ হয় মুক্তির রজনী।

যে রাতে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ : মধ্য শাবানের রাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস শরিফে নির্ভরযোগ্য সনদ বা বর্ণনাসূত্রে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁর সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)

হাদিসবিশারদদের ভাষ্যমতে, হাদিসটির মান সহিহ তথা বিশুদ্ধ। এ জন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তাঁর প্রসিদ্ধ হাদিসে রচিত কিতাব ‘কিতাবুস সহিহ’-এ হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।

ভিত্তিহীন কাজ পরিহার : বিভিন্ন হাদিস থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়, এই রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষ পদ্ধতিতে কোনো ইবাদত করেননি এবং সাহাবায়ে কেরামকেও তা করার নির্দেশ দেননি। সুতরাং আমাদের সমাজে প্রচলিত শবেবরাতের বিশেষ পদ্ধতির যে নামাজের কথা বলা হয় তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট। এগুলো বিশ্বাস করা এবং এগুলোর ওপর আমল করা কোনোভাবেই জায়েজ নেই; বরং ফজিলতপূর্ণ এই রাতের আমলের ব্যাপারে হাদিসের যেসব নির্দেশনা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা সবই ব্যক্তিগত নফল ইবাদত। তাই আমাদের উচিত মনগড়া ইবাদত-আমল পরিহার করে যথাসম্ভব রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাওবা-ইস্তিগফার ও জিকির-আজকারে মশগুল থাকা।

দীর্ঘ নফল নামাজ আদায় : বেশি বেশি নফল নামাজ ও দীর্ঘ ইবাদত প্রসঙ্গে আয়েশা (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি জবাবে বললাম, না, হে আল্লাহর রাসুল, আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন! নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থায়।’ (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৫৫৪)

এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে নফল নামাজে দীর্ঘ কিরাত পড়া এবং লম্বা সিজদা করা এ রাতের বিশেষ একটি আমল।

আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা : এই রাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফার করা। কারণ বরকতময় এই রাতে আল্লাহ তাআলা প্রথম আকাশে নেমে বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। তাদের গুনাহ মাফ করেন। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন অর্ধ শাবানের রাত আগমন করে তখন আল্লাহ তাআলা প্রথম আকাশে অবস্থান করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া অন্যদের ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে বাজজার, হাদিস : ৮০)

তাই সংকটময় পরিস্থিতিতে এই রাতে আমাদের আল্লাহর দিকে মনোযোগী হওয়া, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং করোনাভাইরাস থেকে হেফাজতের দোয়া করা উচিত।

শবে বরাতের পরদিন রোজা রাখা : এ প্রসঙ্গে আলী (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৮৮)

এই বর্ণনাটির সনদ দুর্বল হলেও তা গ্রহণযোগ্য। হাদিস বিশারদদের মতে, ফজিলতপূর্ণ বিষয়ে জয়িফ হাদিস আমলযোগ্য। তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে এবং আইয়ামে বীজ অর্থাৎ প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

তাই আসুন, বিশুদ্ধ আমলের মাধ্যমে এ রাতের ফজিলত, বরকত ও মাগফিরাত অর্জনে সচেষ্ট হই। সব ধরনের বিদআত বর্জন করি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের এ রাতে সব ধরনের কল্যাণ দান করুন। আমিন।