যদি আজ ফিলিস্তিনিদের নির্বাসিত করা হয় তাহলে আগামীকাল কার পালা?

ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক:

সোমবার একদল ফরাসি বুদ্ধিজীবী লে মন্ডে পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন যেখানে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকারের চরমপন্থী নীতির নিন্দা জানানো হয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পরিকল্পনার প্রতি প্রতিক্রিয়া জানাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। পার্স টুডে অনুসারে, এই দলটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের নীতির সমালোচনা করে ঘোষণা করেছে যে, ইহুদিবাদী ইসরাইরি সরকার চরমপন্থী গোষ্ঠীর প্রভাবে গাজা এবং সম্ভবত পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের নেতৃত্বে একটি নতুন ‘অভিবাসন সংস্থার’ মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া এই পরিকল্পনাটি জাতিগত নির্মূলের লক্ষ্যে কাজ করছে। লেখকরা এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক নিয়ম, নৈতিক নীতি এবং মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করেন এবং সতর্ক করে দেন যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ফরাসি বুদ্ধিজীবীরা যুক্তি দেখান যে, ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকার আমেরিকার সহায়তায় বোমাবর্ষণ এবং অনাহারের মুখে অমানবিক পরিস্থিতিতে দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে গণ-নির্বাসনের জন্য প্রস্তুত করছে। গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো শব্দ দিয়ে বর্ণনা করা এই কর্মকাণ্ডগুলো ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর একটি নতুন আধিপত্যবাদী মতাদর্শের অংশ যা অন্যান্য জাতির অধিকারকে সম্মান না করে কেবল তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করে।

ফরাসি চিন্তাবিদরা জুন মাসে ইমানুয়েল ম্যকরন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছেন। কিন্তু একইসঙ্গে জোর দিয়ে বলছেন যে ফিলিস্তিনিদের বাঁচানোর জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিলে এই পরিকল্পনাগুলো অকার্যকর হয়ে পড়বে।

লেখকরা সতর্ক করে বলেছেন যে ইসরাইলি সরকারের চরমপন্থী নীতি গ্রহণ অন্যান্য সরকারের জন্য একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে এবং জিজ্ঞাসা করেন: যদি আজ ফিলিস্তিনিদের নির্বাসিত করা হয় তাহলে আগামীকাল কার পালা?

এই গোষ্ঠীটি গাজার ট্র্যাজেডিকে সরকারি নীতির বাইরে এবং বৈশ্বিক মূল্যবোধের পতনের লক্ষণ বলে মনে করে। তারা ইউরোপীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং দলগুলোকে এই মতাদর্শের স্পষ্ট নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ এই জরুরি অবস্থার মুখে নীরব থাকা অপরাধ।

লেখকরা জোর দিয়ে উপসংহারে পৌঁছেছেন যে,পতনের দ্বারপ্রান্তে থাকা বিশ্বে ফিলিস্তিনিদের একটি রাষ্ট্র এবং জীবনের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সমতা ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধ রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই নিবন্ধে যারা সাক্ষর করেছেন:

মিশেল ডুক্লোস, জাতিসংঘে সাবেক ফরাসি প্রতিনিধি এবং সিরিয়ায় সাবেক ফরাসি রাষ্ট্রদূত এবং মন্টেইন ইনস্টিটিউটের বিশেষ উপদেষ্টা

জিন-পল চেনিওলু, বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আইআরএমএমও  (iReMMO-)ইনস্টিটিউটের সভাপতি (ভূমধ্যসাগরীয় ও পশ্চিম এশীয় গবেষণা ও অধ্যয়ন ইনস্টিটিউট)

বার্নার্ড অরকেড, ফরাসি জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র (CNRS)-এর বিশিষ্ট গবেষণা পরিচালক এবং iReMMO-এর সদস্য

জ্যাক হান্টসিঙ্গার, এস্তোনিয়া, ম্যাসেডোনিয়া, ইসরাইলে ফরাসি রাষ্ট্রদূত এবং বার্নার্ডিন কলেজের সদস্য

জামাল আল-শালবি, হাশেমি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জারকা, জর্ডান) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক

ব্রিজিট করমি, লিবিয়া, মাল্টা এবং সিরিয়ায় প্রাক্তন ফরাসি রাষ্ট্রদূত

অ্যান্টোইন আরঝাকোভস্কি, গবেষণা পরিচালক, কলেজ বার্নার্ডিন প্যারিস

অ্যানি ইয়েস লোভালোয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট, আইআরইএমএমও

 

সূত্র: পার্সটুডে