
ভেনেজুয়েলার উপকূলে আরেকটি তেল ট্যাংকার আটক করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ডিএনবি নিউজ আন্ত: ডেস্ক-
ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন বাহিনী আরেকটি তেল ট্যাংকার আটক করেছে, যা দুই সপ্তা’রও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যে এইসব কঠোর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ভোরবেলায় চালানো অভিযানে যুদ্ধ বিভাগের সহায়তায় মার্কিন কোস্টগার্ড ভেনেজুয়েলায় শেষবার নোঙর করা একটি তেল ট্যাঙ্কার আটক করে। মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোম এই অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং একটি অশ্রেণীবদ্ধ ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে যে একটি মার্কিন হেলিকপ্টার সেঞ্চুরি নামে পরিচিত এক জাহাজে অবতরণ করছে।
তেল-ট্যাংকারটি পানামার পতাকা বহন করছিল, এটিকে সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে দেখা গেছে বলে মার্কিন সূত্র জানিয়েছে। জাহাজটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন ছিল কিনা তা উল্লেখ করেনি মার্কিন সূত্র।
নোম বলছেন, ‘নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন তেল’ আটক করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন, এইসব তেল মাদক-সন্ত্রাসে ব্যবহার করা হয় বলে মার্কিন সরকার অজুহাত দেখিয়ে আসছে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা এই পদক্ষেপকে ‘সম্মতিমূলক অবতরণ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ মাসের প্রথম দিকে বলেছিলেন ভেনেজুয়েলায় যাতায়াত করে এমন তেল-ট্যাংকারগুলোয় নিষেধাজ্ঞার আওতায় আটকানো হবে। মার্কিন সেনারা গত ১০ ডিসেম্বর ভেনেজুয়েলার ‘দ্য স্কিপার’ নামের একটি বিশাল তেল-ট্যাংকার আটক করেছিল।
ক্যারিবীয় এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অভিযানের পাশাপাশি ট্যাঙ্কার নিষেধাজ্ঞাগুলোও ঘটছে, যেখানে ট্রাম্প তার প্রশাসনের দাবি অনুসারে ফেন্টানাইল এবং অন্যান্য অবৈধ মাদক পাচারকারী জাহাজগুলোতে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে, ২৮টি হামলায় কমপক্ষে ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এমনকি কংগ্রেসের সদস্যরাও এই অভিযানগুলোকে তদন্তের মুখোমুখি করেছেন, তারা বলেছেন যে মার্কিন প্রশাসন এ ব্যাপারে সীমিত প্রমাণ সরবরাহ করেছে যে টার্গেটকৃত জাহাজগুলো মাদক পাচারে জড়িত ছিল এবং তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই হামলাগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শামিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অঞ্চলে প্রচুর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে, যা কয়েক প্রজন্মের সময়ের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ-প্রস্তুতিমূলক সামরিক আয়োজন। ট্রাম্প বারবার সতর্ক করেছেন যে স্থল-ভিত্তিক অভিযান চালানো হতে পারে। মাদুরো মার্কিন সরকারের তোলা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তিনি জোর দিয়ে বলছেন যে ওয়াশিংটনের আসল লক্ষ্য হল তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া এবং ভেনেজুয়েলার তেল-সম্পদ দখল করা।
ভেনেজুয়েলার তেল-খাতে এক সময় মার্কিন তেল-কোম্পানিগুলো সক্রিয় ছিল। কিন্তু দেশটির তেল-সম্পদ জাতীয়করণের ফল এইসব কোম্পানি ভেনেজুয়েলা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। এখন ট্রাম্প সেইসব ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কথাও উল্লেখ করছেন। #
সূত্র: পার্স টুডে