দুর্গাপুরে ব্রিজের বেহাল অবস্থা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ২৩ গ্রামের মানুষের
ডিএনবি নিউজ ডেস্ক :
নেত্রকোনার দুর্গাপুরস্থ বিরিশিরি ইউনিয়নের হারিয়াউন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালে সেতুটি প্রায় ৯ বছর ধরে মুখ থুবরে পরে আছে। এতে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহতে হচ্ছে দু’টি ইউনিয়নের অন্তত ২৩ গ্রামের জনগনের। শুষ্ক মৌসুমে এ পথে সেতুর স্থানটি ধান ক্ষেত দিয়ে ঘুরে যাওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতকারীদের ৪ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়াও নারী-পুরুষ,বয়স্ক মানুষ ও রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার দাবী জানালেও এত দিনেও সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে বন্যার পানির তোড়ে আশপাশের ২৩ গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র সেতুটি ধসে পড়ে। এরপর ২০২০ সালের বন্যায় সড়ক থেকে বিছিন্ন হয়ে যায় সেতুটি। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ঐ ধসে পড়া সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের এখনও কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এতে দক্ষিন
জাগিরপাড়া,নাওদ্বারা,জাঙ্গালিয়াকান্দা,চরপাড়া,ভাদুয়া,মুন্সিপাড়া,হাতিমারাকান্দা,নন্দেরছটি,পূর্বনন্দেরছটি,বন্ধউসান,গৌরাখালী,কান্দাপাড়া,কৃষ্ণপুর,আটলা,নিশ্চিন্তপুর,বারইপাড়া,হারিয়াউন্দ সহ প্রায় ২৩টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরম আকারে ধারণ করেছে। প্রায় ৯ বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকা সেতুটি কবে নির্মিত হবে এমন আশঙ্কা ভুক্তভোগীদের। এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,দীর্ঘদিনের ধসে পড়া সেতুটি সংস্কার বা পূণঃনিম্মান না হওয়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। দীর্ঘদিন ধরেই এভাবেই সেতুটি মুখ থুবরে পরে থাকায় গাঁওকান্দিয়া ও বিরিশিরি এই দুই ইউনিয়নের লোকজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অপরদিকে ধসে পড়া সেতু ও রাস্তা-ঘাটের অবস্থা খারাপ থাকার কারণে যানবাহন ঢুকতে না পারায় এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।
জাগিরপাড়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ আজিজুল হক বলেন,’ছেলেমেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না’। কৃষক মোঃ হযরত আলী বলেন,এখানে সেতু না থাকায় তাঁদের মতো কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাঁরা কৃষিপণ্য শহরে সহজে নিয়ে যেতে পারেন না। কৃষিপণ্য গ্রামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে ভালো মূল্যও মিলছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সেতুটি পুননির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। শিক্ষার্থী মোমেন আহাম্মেদ বলেন, ‘এ সড়কে প্রতিদিন কয়েকশত ছাত্রছাত্রী স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। শুষ্ক মৌসুমে বেশি অসুবিধা না হলেও বর্ষা মৌসমে এদিক দিয়ে আমরা কলেজে যেতে পারি না। অন্য সড়কে অনেক ঘুরে যেতে বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়। সঠিক সময়ে কলেজে যেতে হলে সময়ের অনেক আগেই বাড়ি থেকে বের হতে হয়’। স্থানীয় ইউপি সদস্য হাতেম আলী বলেন,সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জানিয়েছি এরপরও কোন সুরাহা মেলেনি।
বিরিশিরি ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন,ওই সেতুর ওপর দিয়ে শহরে যেতে মানুষ চলাচল করত। সেতু ভাঙা থাকার কারণে এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছে। আমি অনেকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে জানিয়েছি ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন ব্রিজ সেংশন হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ খোয়াজুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন,এই সেতুটি আমাদের না। সেতুটি(এলজিইডি)করেনি। তিনি আরও বলেন,ওই এলাকার সড়কটিই এলজিইডি’র আইডিভুক্ত না তাহলে সেখানে সেতু নির্মাণ কিভাবে করবে। তবে ওই সড়কটি (এলজিইডি) আইডি ভুক্ত করার প্রস্তাবনা দিয়েছি এবং উল্টে থাকা ব্রীজটির জায়গায় একটি তিন ব্যাল্ড কালভাট তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।